"ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।" কথাটার মধ্যে দুটা ভাব খুঁজে পাইঃ বিশাল উদারনৈতিকতা, আর ভয়াবহ সুবিধাবাদিতা।
সকল ধর্মের কথাই নাকি এক। সেই ছোটোকাল থেকে শুনে আসছি। এটা অনেক 'বিশাল উদারনৈতিক' লোকের মুখে শোনা যায়। কথা ঠিক বটে একটু। সবাই চায় স্রষ্টার নিকট পৌঁছাতে। কিন্তু আজ্ঞে দাদা, 'মাধ্যম'টাও যে বিবেচনার বিষয়! যেতে চান টেকনাফ, রওনা দিলেন তেঁতুলিয়ার পথ ধরে, যিন্দেগীতে পৌঁছাবেন আকাংক্ষিত স্থানে?
এখন এখানেই ধর্মের ডিফারেন্সগুলো। কেউ বলে এদিকে স্রষ্টা, কেউ বলে ওদিকে স্রষ্টা। এখন খুঁজে বের করা দরকার, আসলেই স্রষ্টাকে কোন পথে গেলে পাওয়া যেতে পারে।
যেহেতু এদেশের অধিকাংশ ইসলাম অনুসারী, সেহেতু সেই অনুযায়ী কিছু বলি। দুর্গাদেবী সুপ্রিম গড নন, ডেমি-গড অথবা সিম্বল অফ সুপ্রিম গড'স পাওয়ার বলা যেতে পারে। বর্তমানে সামাজিকভাবে হিন্দুরা যা মানেন সে অনুযায়ী দুর্গাদেবীর আকার আকৃতি দিয়ে তাঁকে পূজা করা হয়, যেটাকে পরোক্ষভাবে সুপ্রিম গডের পূজা হিসেবেই অনেকে ধরেন। আর এ সমগ্র ব্যাপারকে কেন্দ্র করেই পূজা উৎসব।
অথচ মুসলিমদের ইসলাম মতে সুপ্রিম গড একজনই। তাঁর আলাদা কোনো ফর্ম নেই, অবতার নেই। এটাই যখন মৌলিক ব্যাপার, তখন দূর্গাপূজার উৎসব 'মুসলিমদের' হতে পারে কিভাবে?
একই কথা ঈদের জন্যেও প্রযোজ্য। মুসলিমদের বিধানে সারা বছরে দুটি ঈদ দেয়া হয়েছে, এবং দুটি ঈদের চেতনাই যথাক্রমে সাওম এবং কুরবানী থেকে এসেছে। তাহলে এই চেতনা যদি অন্য ধর্মাবলম্বীদের না থাকে, তবে মুসলিমদের উৎসব কিভাবে 'অন্যদের' হতে পারে?
সুবিধাবাদীদের কথা না বললেই চলে। সেসব মহামতিরা না মানবেন নিজের ধর্ম, না বুঝবেন অন্যের ধর্ম, সবখানে গিয়ে শুধু মজা নিবেন। কুরবানীর গোস্তও খাবেন, পূজার প্রসাদও খাবেন।
তবে বলছি না যে এবার মারামারি 'লাগায়ে দেন' দুই সম্প্রদায়। সবাইই চেষ্টা করতে থাকুন স্রষ্টাকে পাওয়ার, শেষে দেখা যাবে কার পদ্ধতি আর রাস্তা ঠিক ছিলো। সবার মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক থাকুক, এটাও কামনা। কারণ সকলেই এক স্রষ্টারই সৃষ্টি, এক পরম পিতামাতারই সন্তান। তবে, খালি সুবিধাবাদিতা আর হোপলেস উদারনৈতিকতা অফ থাকলে ভালো হয় আই থিংক।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:১৪