somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আমি রানা
বাস্তব এবং সাধারন মানুষ আমার লিখার জীবন। এখানে রানা নামের একজন অতি সাধারন ব্যক্তির দৈনিক জীবন এবং তার দৃষ্টিতে সমাজের বর্তমান অবস্থা এবং এর প্রভাব তার নিজের ভাষায় প্রকাশ করা হবে।

রবিবার নীলার বিয়ে.......(৬)

২১ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
এরপর থেকে...............


দারিদ্রতা এমন পর্যায়ে আমাকে নিয়ে গিয়েছে যে, বিশ খেয়ে মারা যাব ভাবছি কিন্তু এই বিশ কেনার টাকাটাও কাউর কাছ থেকে ধার করতে হবে। আত্মহত্যা করতে রাজি আছি কিন্তু ঋণের বোঝা নিয়ে মরতে চাইনা। তাই আর মরা হলোনা।

নীলা আমার জন্মদিন নিয়ে খুবই উত্তেজিত, ফোন করে এবং মেসেজ দিয়ে বার বার বলছিল "প্লিজ কালকের দিনটা আমার জন্য" আমি তাকে কোন ভাবেই সিউর করছিলামনা যে কাল তাকে আমি সময় দিব।
কারন আমি ঈদ এবং আমার জন্মদিনে কোথাও বের হইনা।এর দুটি কারন ১) ছোটবেলা থেকে বের হবার জায়গা নেই । এবং আমার পরিবারে এই নিয়ে কাউর তেমন কোন মাথা বেথ্যা নেই, জন্মদিনের দু-চার দিন আগে থেকে মায়ের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করলে মা বড়জোর সেদিন মাংস আর পোলাও রান্না করে খাওয়াত। খাবার ভালো হতো তবে ভায়েরা লজ্জা দিতো। আমি ছাড়া আমার জন্মদিন পালনের কেউ নেই। ছোটবেলাই রাফাত(বন্ধু) এই দিনটার কথা মনে রাখতো আর আমাকে উপহারও দিত। একবার উপহার হিসেবে পেয়েছিলাম একটা ছোট আয়না, চিরুনি, একটাকা দামের দু-প্যাকেট সেম্পু, দু-টাকা দামের দুটি ব্লেড আর একটি প্লাস্টিকের রেজার। এই উপহারে আনেক খুশি হয়েছিলাম আবার লজ্জাও পেয়েছিলাম। লজ্জা পেয়েছিলাম কারন প্রতিটির সম্ভাব্য ব্যাবহার সম্পর্কে লিখা ছিল কিন্তু তা ব্যাবহার করার মতো কিছুই আমার ছিলনা।
২) গত পাচঁ বছর বড় করে পালন করা হয় তাই কোথাও যেতে পারিনা। কিন্তু এই অনুষ্ঠান আমার ভালো লাগেনা। অনুষ্ঠান বড় হয়, কেক বড় হয়, মানুষও অনেক হয় অনুষ্ঠানে সব কিছুই থাকে একমাত্র আমার স্বাধীনতা ছাড়া। আর এটার অভাববোধ আমাকে জন্মদিনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে। কিন্তু বাধ্য হয়েই থাকতে হয় অনেকটা বিয়ের পর ধর্ষনের মতো।
শেষে রাজি হলাম কাল সারাদিন নীলার জন্য। নীলাতো মহা খুশি, কোথায় যাবে তাই ভেবে পাচ্ছিল না। শহরে যতো জায়গা আছে সবগুলোর নাম একনাগারে বলতে লাগলো। আমি কোননা কোন কারন দেখিয়ে সবই বাদ দিতে থাকলাম। শেষমেশ কথা হলো সেই রেস্টুরেন্টে যাবো আগে যেটাতে গিয়েছিলাম । রাত বারোটা বাজতে এখনো আরো দশ মিনিট বাকি আছে, নীলা একের পর এক মেসেজ পাঠিয়ে যাচ্ছে,
Happy Birthday to you
My dear Rana..................
Many Many happy returns of the day
Wish you good luck..............
I m not so much special for you, may be
But you are special...............
I love you so much janaman................

এটায় শেষ নই আরো আছে......

আজকে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ন দিন কিনা জানিনা কিন্তু আমার জন্য গুরুত্বপূর্ন
এই জন্য না যে আপনি আমার ক্রাস,
এই জন্য যে আমার রানার জন্মদিন।
আপনার নাম যখন থেকে শুনছি
ভালো লেগেছে,
কিন্তু ভাবছিলাম আপনি অন্যরকম হবেন
তবে আপনি এসেতো অবাক করে দিলেন সেদিন,
ভাবতেই পারিনি এইটাই সেই রানা।
(এই কথা গুলো নীলাকে প্রথম যে দিন দেখেছি সেই দিনের কথা)


হঠাৎ তোমাকে এভাবে কেমনে চাওয়া শুরু করলাম????
কেমনে এইটা হয়ে গেল যানিনা,
আমি নিজেই ওবাক।
শুরুটা এইভাবে হতেপারে পাগলের মতো,
কিন্তু আমি শেষটাও পাগলের মতো করতে চাই।
তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা মূহুর্ত
তোমার হাসিমুখের মতো ছিল।
তোমাকে না পেলে কি করবো জানিনা
তবে আমি বিশ্বাস করি আমি তোমার,
তুমি আমার,
আমি তোমাকে পাবো।
এভাবে আরো দুটি পাঠালো । হয়তবা আগেই লিখে রেখেছে এখন শুধু পাঠিয়ে যাচ্ছে।

রাত বারোটা হার্ট বিট বেরেই চলছে। বার বার ফোনের দিকে তাকাচ্ছি, নীলা বার বার মেসেজে জিঞ্জাসা করছে ফোন করবে কিনা?
আমি সিন করছিনা।১২:১..২...৩..৪...৫ মিনিট আমি ফোনের দিকে তাকিয়েই আছি। মেসেন্জারে একের পর এক মেসেজ আসছে , জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা, আমি কোনটাই সিন করছিনা। ১২ বেজে ১০ মিনিট হয়ে গেল মনটাও খারাপ হয়ে গেল। মনে মনে বলতে লাগলাম এটা ঠিক হয়নি। গত পাচঁটি বছর জন্মদিনে প্রথম মেসেজ টি ছিল রুপার, সাধারন ভাবে লিখা থাকতো "শুভ জন্মদিন" এতেই আমার জন্মদিনের সকল পাওনা পাওয়া হয়ে যেত। খুশিতে আত্মহারা হয়ে পরতাম। আজ এখনো আসেনি, হয়তবা অন্যকোন প্লেন আছে তার। অন্যকোন ভাবে সারপ্রাইজ দিবে। নীলাকে ফোন করলাম, প্রথমে দেরী করলাম কেন জিঞ্জাসা করলো, তারপর উত্তরের অপেক্ষা না করেই সেতার কথা বলতে থাকলো। আর আমিও ভাবছি মানুষের মন আসলেই অদ্ভুত, আমাকে নিয়ে কে সপ্ন দেখছে, আর আমি কার চিন্তাই বিভোর।! এমন করেই হয়তবা হাজারো মানুষের সপ্ন ভাঙ্গা গড়া চলে ........................................................................

সকাল ৮টায় আমি বের হয়ে গেলাম, নীলা আমাকে ফোন করলো কোথায় আছি তা জানার জন্য, আমি বললাম রিক্সায় আছি। আমি রিক্সা থেকে নেমে দাড়িঁয়ে আছি, সিগারেট ধরালাম। সিগারেট শেষ করার আগেই নীলা চলে আসলো। এসেই বললো চলেন, আমি বললাম কোথায়? "কাল রাতে কোথায় যওয়ার কথা ছিল?" বলেই নীলা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। আমিও কিছুই জানিনা এমন একটা ভাব করে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। শেষে একটা পার্কে যাওয়ার সিদ্ধন্ত হলো। পার্কে দুপুর পর্যন্ত বসে ছিলাম। তারপর সেখান থেকে বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেতে ঢুকলাম। খাবার খাওয়ার সময় নীলা আমার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল, বুঝতে পারছিলাম সে আমাকে খাওয়াতে পেরে এবং আমার সাথে খেতে পেরে খুবই আনন্দ পাচ্ছে। কিন্তু আমার ভেতরটা লজ্জায় ফেটে যাচ্ছে।
সেদিন নীলাকে বিদেয় দিয়ে আমি বাসার দিকে যাচ্ছি আর ভাবছি নীলাকে প্রোপজ করবো কাল।
চলবে..................
ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ১০:০৩
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

Testimony of Sixty- By Edward Kennedy বাংলাদেশের রক্তাক্ত সত্যের এক আন্তর্জাতিক স্বীকারোক্তি

লিখেছেন কিরকুট, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩




১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর বৈপরীত্যের বছর। এটি যেমন ছিল অন্ধকার ও রক্তাক্ত, তেমনি ছিল সত্যের প্রতি অবিচল এক সময়কাল। এই বছরের গণহত্যা, শরণার্থী স্রোত ও মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×