somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আমি রানা
বাস্তব এবং সাধারন মানুষ আমার লিখার জীবন। এখানে রানা নামের একজন অতি সাধারন ব্যক্তির দৈনিক জীবন এবং তার দৃষ্টিতে সমাজের বর্তমান অবস্থা এবং এর প্রভাব তার নিজের ভাষায় প্রকাশ করা হবে।

১৮৬/বি শিরিয়া মন্জিল, ছোটবেলার ডায়রি।

৩১ শে মে, ২০২০ রাত ৮:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
১৮৬/বি শিরিয়া মন্জিল, ছোটবেলার ডায়রি।
২ (কহিনূর নামা)


ছবি: গুগল
হঠাৎ করেই টিনের ঘর ছেড়ে আমরা দালান ঘরে উঠলাম। জমিদার খালাম্মা ঢাকা চলে গিয়েছিল বলে একতলা দালানটা খালি হয়ে গিয়েছিল। আমরা পাকা ঘরে উঠার পর পরই মেইন গেইটে "ঘর ভাড়া দেওয়া হবে" সাইন বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হলো। আমি অনেক খুশি পাকা ঘরে থাকি বলে। হঠাৎ করেই নিজের ভেতর একটা ভাব কাজ করতে লাগল। বাড়িতে তখন আমার সমবয়সি কেউই নেই, থাকলে তাদের নেতা নিশ্চিত ভাবে আমিই হতাম। (ছোট বেলার ভাবনা গুলো কতোই অদ্ভুত আর হাস্যকর ছিল)
কদিন পরই আমাদের পুরনো ঘরে নতুন ভাড়াটি আসলো, ঘর ভাড়া নিয়েছে মোল্লা কাকা। বাসার সামনে যে ছোট দোকানটা নতুন হয়েছে সেটাও মোল্লা কাকা ভাড়া নিয়েছে । কাকার তিন ছেলে দুই মেয়ে। বড় ছেলে হুজুর ভাই মেজ ছেলে কাদের মোল্লা তারপর বড় মেয়ে শাহিনূর, ছোট মেয়ে কহিনূর আর সবার ছোট ছেলে বাবু।
বাবুর সাথে কদিনেই ভাব হয়ে গেল গলায় গলায় ভাব, বাবুর অনেক শক্তি। সেই সময়ে বিটিভিতে "রিপলিস বিলিভ ইট অর নট" নামক একটা অনুষ্ঠান দেখাত সেখানে অদ্ভুত সব মানুষ আর অদ্ভুত তাদের সকল কাজ দেখাত। সেখান থেকে দেখে দেখে নিজের মত নানা কৌশল আবিষ্কার করে বাবুর শক্তি পরিক্ষা করতাম। বাবুকে টিভিতে যা হত তা বলতাম আর বাবু অবাক হয়ে তা শুনত। বাবুদের ঘরে কোন টিভি ছিলনা। একদিন আমি আর বাবু বিকেলে বাড়ির পেছনের যে ডোবাটা ভরিয়ে ফেলেছে তাতে খেলতে গিয়েছিলাম।(ডোবার ইতিহাস বিশাল পরে বলবো) ডোবার মাঝেই চলে গিয়েছিলাম আমরা, হঠাৎ করেই বাবু ডোবার একটা চোরা খাদে পড়ে গেল, আমার বাবুকে তোলার মত শক্তি বা সাহস কোনটাই ছিল না। বাবু নোংড়া কালো পানিতে একবার ডুবছিল আবার ভেঁসে উঠছিল। কি করবো বুঝতে না পেড়ে এক দৌড়ে বাবুর মার কাছে চলে গেলাম। বাবুর মা দ্রুত এসে বাবুকে উদ্ধার করলো, আর বাবু যে গর্তে পড়ে গিয়ে ছিল তাতে একমুষ্টি চাল, একটা কাচাঁ ডিম এর একটা একটাকার মোটা কয়েন ফেলে দিয়ে এসলো। কেন এইসব দিল তার কোন ব্যাখা আমি আজো পাইনি।


ছবি: গুগল
কালো ছিপ ছিপে দেহ আর কাধঁ পর্যন্ত কালো-বাদামি রংয়ের চুল ছিল কহিনূরের। প্রথমে দু-চারদিন তার সাথে কথা বলিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সাথে আমার গভির ভাব হয়ে গিয়েছিল। কহিনূর পড়ালিখা করতনা। তার সাথে থাকা হতো অনেক, কহিনূরের সাথে বউ জামাই ই খেলতাম বেশি ,আমি বাজার করে আম পাতা, পেয়ারা পাতা, আতা পাতা,আমড়া পাতা নিয়ে আসতাম আর সে রান্না করে দিত সারা দিন অফিস করে আমি অনেক ক্লান্ত থাকতাম সে আমার হাত-পা ও টিপি দিত। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কহিনূরকে আমি সত্যিই বিয়ে করবো। হঠাৎ শুনি হুজুর ভাই বিয়ে করবে, নতুন বউ নিয়ে এই ছোট্ট ঘরে তাদের জায়গা হবেনা বলে তারা বাসা ছেড়ে চলে গেল। বাসা ছাড়ার পরও বেশ কদিন তাদের নতুন বাসায় যাওয়া আসা ছিল। তারপর হঠাৎ করেই যাওয়া আসা বন্ধ। এভাবেই ছোট্ট বেলার প্রেমিকাকে হারিয়ে ফেল্লাম। এখন হয়তবা কহিনূরের স্বামি আছে তিন-চার-পাচঁটা বাচ্চা আছে। সে কোথায় আছে, কেমন আছে, দেখতে কেমন হয়েছে কে জানে??

পর্ব ১ Click This Link
পর্ব ৩ Click This Link
পর্ব ৪ Click This Link
পর্ব ৫ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৪৬
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×