somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্কুলের মজার দিনগুলি

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুলে জীবনটা অনেক বেশি সহজসরল ছিল। মজার ঘটনাই ঘটেছে স্কুলেই বেশি। কয়েকটি ঘটনা শেয়ার করি-

১)

আমি তখন দশম শ্রেণীতে পড়ি। আমাদের সেকশনে একজন মাস্টারমশাই অংক পড়াতেন; তাঁর মাথাজোড়া টাক আর তোতলা কণ্ঠস্বরের জন্যই তিনি বিখ্যাত।

একদিন আমরা সাত আটজন মিলে ওনার বাড়িতে গেছি পড়া বুঝতে। গিয়ে শুনি যে উনি ঘরে নেই। কাজেই ফিরতে ফিরতে আমরা ওনার ম্যানারিজম ও তোতলামি গুলো নিয়ে চরম মজা করলাম।

জানি না কেমন করে সেগুলো স্যারের কানে পৌঁছে গিয়েছিল।

পরের দিন স্যার ক্লাসে এসেই খাপ্পা হয়ে আমাদের গ্রুপের একজনকে চেপে ধরলেন "তো-তো-তো-তোমাদের এতবড় আস্পর্ধা, আমার তো-তো-তোত (ঢোক গিলে) মানে কথা বলার অসুবিধে নিয়ে মজা করো! দাঁ-দাঁ-দাঁ-দাঁড়াও, তোমার বা-বা-বা-বাবার নাম আর ফোন নম্বরটা বলো।"

মুশকিলটা কি, স্যার যাকে ধরেছেন সে নিজেও এমনিতে জেনুইন তোতলা । এবার টেনশনে পড়ে গিয়ে সে বলতে আরম্ভ করল "না-না-না মানে স্যা-স্যা-স্যার,....."- এরপর বুঝতেই পারছেন কী হতে পারে।

স্যার খেপে আগুন, হেডস্যার আমাদের সবাইকে ডেকে পাঠালেন, বিশেষ আপ্যায়নেরও (পড়ুন বেত) ত্রুটি হল না, ভাবলাম গল্প ওখানেই শেষ।

কিন্তু ছ মাস বাদে মাধ্যমিক দিতে যাবার সময় দেখি স্যার ঐ বন্ধুটিকে বাড়িতে ডেকে বিশেষ ভাবে অংক বুঝিয়ে দিয়েছেন। ব্যাটা তার জোরে ১০০য় ১০০ পেয়ে গেল যেখানে আমি পুরোপুরি নিশ্চিত স্যার ওকে না পড়ালে ও ৮০% র বেশি কিছুতেই পেত না।


২)

তখন ক্লাস এইটে পড়ি, একজন স্টপগ্যাপ হেডমাস্টার হলেন। তাঁর কাছে যে কোন অপরাধের শাস্তি ছিল গার্জেন কল। এক মাসের মধ্যে ক্লাসের ৪৫ জন ছেলের মধ্যে বেশির ভাগেরই অন্তত এক- দু বার গার্জেন কল হয়ে গিয়েছিল। বেশির ভাগই ক্লাসে কথা বলা, হোমটাস্ক না করে আসা, মারামারি, শিক্ষাপঞ্জীতে অ্যাবসেন্সের কারণ বাবা মাকে দিয়ে সই না করানো এরকম জাতীয়। তবে একটা কেস সত্যিই অদ্ভুত ছিল।

সেদিন খুব মেঘলা ছিল। টিফিনে আমাদের একটা করে পেয়ারা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের খেলার ক্যাম্বিস বলটা হারিয়ে গিয়েছিল বলে টিফিনের খেলাটা শুরু করতে পারছিলাম না ( বাই দ্য ওয়ে, স্কুলে গিয়ে টিফিনে খেলা হবে না- এটা সত্যিই অকল্পনীয় ছিল)।

একজনের উর্বর মাথা থেকে প্রস্তাব এল যে ইটের মত শক্ত একটা পেয়ারাকে বল বানিয়ে খেলা হোক। প্রস্তাব কার্যকর হতে সময় লাগল না। কিন্তু কিছু্ক্ষণ খেলার পরই হেডস্যারের ঘর থেকে স্যার বেরিয়ে কড়া নির্দেশ দিলেন যেন আমরা পেয়ারা দিয়ে খেলা বন্ধ করি (খাবারের অপচয় টপচয় নিয়ে কিছুক্ষণ জ্ঞানগর্ভ ভাষণের পর)।

উনি তারপর গেম স্যারকে বললেন যাতে আমাদের একটা স্টাম্পার বল ( ক্রিকেট বলের মতই, খালি শক্ত রবারের) দেওয়া হয়। আমরা খুশিমনে ওটা দিয়ে ক্যাচ লোফালুফি খেলতে শুরু করলাম। (দুটো দল মাঠের দুদিকে দাঁড়ায়, একদল অপর দলকে হাই ক্যাচ দেয়, পয়েন্টে খেলা, ক্যাচ লুফলে +১ পয়েন্ট, মিস হলে -১ পয়েন্ট)

টিফিনের ঘণ্টা কখন পড়ে গেছে, আমরা খেলার উত্তেজনায় বুঝতে পারিনি, কিন্তু একটা সময় দেখি, গোটা মাঠ ফাঁকা এবং হেডস্যার আমাদের অপোনেন্ট গ্রুপের দিকে যাচ্ছেন। আমাদের থ্রোয়ার ব্যাপারটা ঠিক খেয়াল না করে ওদের দিকে একটা খুব হাই ক্যাচ দিল। বলটা পড়বি তো পড় পুরো স্যারের মাথায়, স্যার ওখানেই প্রায় ফ্ল্যাট।


আর বাকিটা বলছি না, অনুমান করে নিন।


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×