রানা প্লাজায় উদ্ধার তৎপরতার মধ্যে বিক্ষোভরত হাজার খানেক মানুষকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সাভারে এই বিক্ষোভ চললেও গাড়ি ভাংচুর শুরু হলে পুলিশ তৎপর হয়।
লাঠিসোঁটা হাতে ওই বিক্ষোভকারীরা পোশাক কারখানার শ্রমিক বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, এরা পোশাক শ্রমিক নয়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল উদ্ধার কাজ ব্যাহত করা।
এক সপ্তাহ আগের এই ভবন ধসে নিখোঁজদের স্বজনরা শুরু থেকেই অপেক্ষা করছেন রানা প্লাজার সামনে মহাসড়কে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা ভবন মালিক কথিত যুবলীগ নেতা সোহেল রানার ফাঁসির দাবিতে স্লোগানও দেয়।
এক পর্যায়ে লাঠিসোঁটা হাতে ওই বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কের গাড়ি ভাংচুর শুরু করলে পুলিশ লাঠি চালায়।
পুলিশ সদস্যদের ধাওয়ায় বিক্ষোভকারী কয়েকজনকে পাশের ডোবায়ও পড়ে যেতে দেখা যায়। পুলিশের লাঠিপেটায় পিছু হটে বিক্ষোভকারীরা কয়েকশ’ গজ দূরের সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে এনাম মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত এলাকায় নির্বিচারে গাড়ি ভাংচুর করে।
ঘটনাস্থলে থাকা ঢাকা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই বিক্ষোভকারীরা গার্মেন্ট শ্রমিক নয়, তারা উদ্ধার কাজ ব্যাহত করার চেষ্টা করছিল বলে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।”
অপেক্ষায় থাকা স্বজনরা লাশের দাবিতে সোমবারও সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ করেছিল। পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, এই ভবন ধসে নিখোঁজের সংখ্যা ১৩শ’ জন।
এদিকে রানা প্লাজার সামনে বিক্ষোভের সময়েই দেড় কিলোমিটার দূরে উলাইল এলাকায় মহাসড়কে বিক্ষোভ করে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা।
তাদের অবস্থানের কারণে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রাইম গ্রুপের আরএইচ গার্মেন্টের শ্রমিকরা প্রথমে বিক্ষোভ শুরু করে, পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পাশের আল মুসলিম গ্রুপ ও আল ইসলাম গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা।
আরএইচ কারখানায় আট হাজারের মতো শ্রমিক রয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, ভবনে ফাটল দেখা দেয়ার পরও তাদের কাজে বাধ্য করা হচ্ছিল।
নাহিদুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফাটল দেখা দেয়ার পরও কর্তৃপক্ষ গা করেনি। উল্টো ফটকে তালা দিয়ে দিয়েছিল। শ্রমিকরা তালা ভেঙে বেরিয়ে এসেছে।
ধসে পড়া ভবন রানা প্লাজায়ও ফাটল ধরেছিল। কিন্তু এরপরও পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ চলার মধ্যেই ভবনটি ধসে পড়ে।
এই ভবন ধসে নিহতের সংখ্যা ৩৮৮- পৌঁছেছে, যার প্রায় সবাই পোশাক শ্রমিক।