somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘- আচ্ছা চে জানি কোন কান্ট্রির ? - ইয়ে….. মনে পড়তেশে না তো এখন…..’

১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

View this link গতকাল আমড়া এমন মজা করশি । কি আর বলব । হইল কি , তখন দুপুর তিনটা বাজে । আমি ভার্শিটি থেকে এইসে ঘুমাইতেশি । এমন টাইমে আমার সেলটা বাজল । আমি আমাড় নোকিয়া এন এইটটা হাতে নিয়ে ডেখি আদনানের নাম্বার । আমড়া অবশ্য আমাদেড় ফ্রেন্ড সার্কেলে নামটাকে ছোট কড়ে “আডস” ডাকি । আমি ফোন টুলে বললাম
- এই , কি হইশে ?
- রশ , ম্যান টুই কি করতেশিশ ? বাইর হবি না ?
- কেন ?
- ওহ ডুড , টুই কি ভুলে গেশিশ , আজকে চে গুয়েভারা নিয়ে অনুষ্ঠান আছে না ……
- ফাক ম্যান !! আমি টো ভুইলাই গেশিলাম । এই তোরা খাড়া , আমি আশতেশি ।
আমি তাড়াতাড়ি উঠলাম । আমার কাশে চে গুয়েভারাকে ড্যাম কুল লাগে । ওর ফেসটা অনেক ম্যনালি । আমিও কিশুদিন দাড়ি রেখে ওর মত করার ট্রাই করশিলাম , কিন্তু আমাকে অত ভাল লাগে নাই । চে গুয়েভারা পুরা নামটা যেন কী ? উফ শিট ভুইলা গেশি । প্রটিডিনই ভাবি যে নেট থেকে চে গুয়েভারার উপ্রে সব জানব , কিন্তু শেষে খেয়াল থাকে না ।
আমি আমাড় আলমাড়িটা খুললাম । চে’র ছবিওয়ালা দশটা গেন্জি আছে । আমি বাইছা বাইছা লাল রঙেরটা পড়লাম । ধানমন্ডি লেকে আজকে ফারিয়াও আসবে , ও বলশে যে সোলড্যান্স থেকে কিনা বারশ টাকার এই লাল গেন্জিটাতে আমাকে খুব কিউট লাগে । বাই দা ওয়ে , ফারিয়া আমার গার্লফ্রেন্ড এন্ড দা বিচ ইজ ড্যাম হট !
গেন্জি আড় জিন্স পড়ে আমি পনড় মিনিট ধরে আয়নাড় সামনে নিজেকে দেখলাম । তারপর আধাঘন্টা ধরে ডিসিশান নেয়ার ট্রাই কড়লাম চুল কিভাবে আচড়াব ।
শেষ পর্যন্ত চুল আচড়ে , শেভ করে গায়ে পাচটা বডিস্প্রে ছিটায়ে আমি ঘর থেকে বেড় হলাম ।
আব্বার ঘর নীচতলায় । এই সময় বাসায় আব্বাকে পাওয়া যায় না । বাট আই ওয়াজ লাকী । দেখলাম আব্বা ঘড়েই আছে । আব্বার অনেক টাকা । বিজনেস কড়ে কড়ে আব্বা টাকা বানাইশে । টবে আব্বা আমাড় মত কুল না । আমি যেন কুল হইতে পারি সেজন্যে আব্বা আমাকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াইশে , আড় এখন একটা প্রাইভেট ভার্শিটিতে ভর্তি করশে । এখানে ভর্তি হইতেও প্রচুড় টাকা লাগশে ।কত লাগশে আমি জানি না । আব্বা বলশে ঢাকা ভার্শিটির পড়িবেশ ভাল না । আমাড়ও টাই মনে হয় । গ্রাম থেকে শব ক্ষ্যাত পোলাপান এখানে পঢ়তে আশে । এদের সাথে বসে ক্লাস করব এটা আমি ভাবতেই পারি না । আব্বা বলশে কোন ভাবে বিবিএ ডিগ্রী নিতে পারলেই আমাকে বিজনেসে ঢুকাই দিবে ।
আমি আব্বাকে বললাম
- আব্বা তিনহাজার টাকা দাও ….
- কেন কি করবি ?
- বাইরে যাইতেশি , ডাও টো………
আব্বা টাকা বের করে দিল । আব্বা কখনও টাকা নিয়ে ঝামেলা কড়ে না । আমি একমাত্র ছেলে তো আমাকে টাই আব্বা আম্মা খুব আদর করে । আমি আম্মাকে ‘বাই’ বলে বাইড়ে চলে এলাম । গাড়ি নিলাম না । আদনান বলশে ও গাড়ি নিয়ে আসবে ।
দেখলাম আমার বাসার সামনেই আদনান গাড়ি নিয়ে দাড়ায়ে আছে । আমি লেট কড়ার জন্য সরি বলে গাড়িতে উঠলাম । গাড়ি আদনান চালাইতেশে । আদনানের পাশের সিটে ওর গার্লফ্রেন্ড রিমি । রিমি মেয়েটা অনেক কিউট । ও একটা স্কিন টাইট গেন্জি আর জিন্স পড়শে । গেন্জিতে চে’ আঁকা । ওকে এত্ত জোস লাগতেশে । ও আমার ডিকে টাকায়া হাসল । আমিও হাসলাম ।
আদনানের এই সেলিকা গাড়িটা নতুন । আমারও সেলিকা আছে । আমারটা আজকে বাইড় করা হইল না । গাড়িতে আরো দুটা ছেলে আর একটা মেয়ে আছে । একটা ছেলেকে আমি চিনি না । ওজানি একটু কিড়কম । মুখ ভর্তি দাড়ি । আমি পরিচিত হলাম । জানলাম ওড় নাম রাশেদ ( কিড়কম ক্ষ্যাত একটা নাম না ?) । ও আমাকে বলল
-তুমি কি কম্যুনিজম কর ?
- অফকোর্স ম্যান.. আমরা সবাই কম্যুনিস্ট । আমরা সবাই সাম্যবাদী ।
এই কথাটা আগে বলা হয় নাই । আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের আমরা সবাই কম্যুনিস্ট । আমাদের এফবির প্রোফাইলে এটা লেখা আছে । political view - communist , religious view - atheist……………. । আমাদের একটা ‘গ্যাং’ আছে । কম্যুনিস্ট গ্যাং । নাম হল BIPLOBIZ । আমড়া ড়াতের বেলা ধানমন্ডিড় ডেয়ালে ডেয়ালে এই নামটা লিখি স্প্রে পেন্ট ডিয়ে । আমরা এত্তো খাড়াপ !
আমি গত একবছর ধরে ‘এথিস্ট’ হইশি । আজকাল ‘এথিস্ট’ না হইলে সবাই কুল বলে না ।ধানমন্ডি লেকে অনুষ্ঠান হইতেশে । ড্যাম ম্যান । এখানে এত্ত ক্রাউড । রিক্সাওয়ালা টাইপেড় নোংরা নোংরা লোকগুলা হাঁ করে তাকায়া থাকে , গায়ে গা লাগায়ে ডাড়ায় । ওদেড়কে দেখলেই আমার কেমন জানি ঘিন্না লাগে । আমি ফারিয়াকে খুঁজে পাইলাম ।ফারিয়ার সাথে আরও ডুটা ফ্রেন্ড আশছে । ইফতি আর অনিক । ফারিয়া আমাকে দেখেই ‘হায় বেবি’ বলে চিৎকার ডিল । ও যে কি করে না! তারপর আইশে জড়ায়ে ধরল । আশেপাশের সব লোক হাঁ করে তাকাচ্ছে । কতগুলা বস্তির মাস্তান টাইপের ক্ষ্যাত পোলাপান কমেন্ট করতেশে । এইশব ফালতু পোলাপানগুলারে নিয়ে সমস্যা । যেখানেই যাই , ছোটলোকের বাচ্চাগুলা আমাদের সাথের মেয়েগুলার ডিকে হাঁ করে টাকায়া থাকে , চান্স পাইলে গায়ে হাত ডেয় ।
আমি লেকের ডিকে টাকালাম । একটা বড় ডিজিটাল স্ক্রীনে লালের মধ্যে চে গুয়েভারার ছবি জ্বলজ্বল করতেশে । কবিটা আবৃত্তি হইতেশে , গান হইতেশে কিন্তু আমাড় মনে হয় না স্টেজের কাছাকাছি থাকা কয়েকজন ছাড়া আর কেউ এগুলা শুনতেশে ।আমি আশেপাশের লিকজনকে কয়েকটাভাগে ভাগ কড়লাম । একদল হল রিকসাওয়ালা চাওয়ালা টাইপের লোকজন , এরা মজা দেখতেশে কিন্তু কিশুই বুজতেশে না । আরেকদল হল ওর্গানাইজারদের বন্ধু-বান্ধব-ভাই-বেরাদার । কবিটা , গান এইসব শিট্ গুলা এরাই ইন্টারেস্ট নিয়ে শুনতেশে । আরেকদল হল আমাদের মত কুল পোলাপান ,যারা চে’র ব্যপারে আসলেই সিরিয়াস । আর বাকী অংশ হল সাধারণ মানুষজন যারা যেকোন জায়গাতেই কোন ফ্রি অনুষ্ঠান এমনকি একটা মাইক দেখলেও ওইখানে বসে যাওয়াটা দ্বায়িত্ব বলে মনে কড়ে ।
ফারিয়া আমাকে বল্ল
- জানু চে গুয়েভারা অন্নেক কিউট , টাই না ?
-হুঁ
-টুমি ওর মত করে দাড়ি রাখ না কেন ?
- রাখশিলাম না একবার , ভাল লাগেনা তো ডেখতে….
- আরে ধুড়…তোমাকে অবশ্যই ভাল লাগবে…..
ফারিয়া আরও কিছুক্ষণ চে’র ছবির ডিকে টাকায়া থেকে বল্ল
- আচ্ছা চে জানি কোন কান্ট্রির ?
- ইয়ে….. মনে পড়তেশে না তো এখন…..
- আচ্ছা বাদ দাও……
আমরা ওখানে দাড়ায়ে ছবি তুললাম ,অনেকগুলা । আশেপাশের লোকজন এমনভাবে টাকায়তেসে যেন আমরা কতগুলা জোকার । শালার এই সোসাইটিটাই ফাউল…. ।
প্রথমে যে মাস্তান টাইপের ছেলেগুলা ফারিয়াকে ডেখতেশিল ওড়া এখনও আশেপাশে ঘুরঘুর করতেশে । আমি খেয়াল রাখতেশি । ওড়া যদি আমাদেড়কে ‘চকলেট’ পোলাপান ভেবে থাকে তাহলে ওরা মিসটেক কড়ল । আমরা খূব খাড়াপ ছেলেপেলে । ধানমন্ডিতে আমাদেরও লীগ করা বড়ভাই আছে । আমাদের মত বড়লোকের পোলাপানদেরকে - যারা বড়ভাইদের বিড়িসিগারেটের খরচ দিয়ে দেয় , কেএফসিতে খাওয়ায় , টাকা ধার ডিয়ে ফেরত চায় না , মাঝেমাঝে এসি গাড়ি করে ঘুরতে দেয় - তাদেরকে লীগের বড়ভাইরা খুব পছন্ড করে । কারণ তারা জানে যে আমড়া বিপ্লবী । আমড়া বারশ টাকা ডিয়ে চে’র ছবি আঁকা গেন্জি পড়ে , পিঠে আটশ টাকা দিয়ে কেনা চে’র ছবি আঁকা ব্যাগ ঝুলায়ে ,বেনসন লাইট টানতে টানতে ঘুড়ে বেড়াই । আমরা এরকম বিপ্লবী । আমাদেড় সাথে ঝামেলা কড়লে খবড় আছে , আমাদের বড়ভাইরা টান দিয়ে ওদের পাছার চামড়া ছিড়ে ফেলবে ।
লেকের এই বাল অনুষ্ঠানে বসার আর কোন মিনিং পাইতেশিলাম না । টাই আমরা রাইফেলস্কয়ারে আসলাম ,সীসা খাইতে । সিসার ধুয়া ছাড়তে ছাড়তে আমরা প্রত্যেকেই আমাদের গার্লফ্রেন্ডের সাথে মেকাউট কড়লাম । ছবি তুললাম । ধুয়া মুখে নিয়ে ছবি , গার্লফ্রেন্ডরে জড়ায়ে ধরে ছবি । এগুলা সব ফেসবুকে আপলোড যাবে । রাত আটটার দিকে মেয়েরা সবাই বাসায় চলে গেল । আমরা ছেলেড়া চলে আসলাম আদনানের বাসায় । আদনান আগেই উইড যোগাড় করে ড়াখশিল ।প্রত্যেকে একটা করে স্টিক ফাটাইলাম আর হারায়া গেলাম ।
রাত হইশে । আকাশে চাদের আলো । ছাদে আমড়া সবাই পিনিকে । অনিক আর আদনান গিটার বাজায়ে কি জানি একটা গান গাইতেশে । চাদের আলো পইড়া সবার গেন্জিতে চে গুয়েভারার সাদা সাদা মুখগুলা জ্বলজ্বল করতেশে । আমার মনে হল মুখগুলা আমাকে ডেখে মজা পেয়ে ঠোঁট টিপে হাশতেশে ।
এত মজা পাওয়ার কি হইল , বুঝলাম না ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ২:০৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×