somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প : ‘কৃষ্ণ কবর’

১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মঙ্গলবার মধ্যরাত । বাইরে বৃষ্টির চেয়ে ঝড়ের প্রকোপ বেশি । ফার্স্ট প্রফেশনাল পরীক্ষা শেষ, কথাটা আরেকবার মনে হতেই ভিতর থেকে একটা লম্বা শ্বাস ধীর গতিতে বেরিয়ে আসল । এই দীর্ঘশ্বাসের কারণ হয়ত কিছু একটা হারিয়ে ফেলার। অথবা এমন কিছু পেয়েছি যা হারিয়ে ফেলব । আমি হারিয়ে ফেলেছি গত এক মাসের দীর্ঘ মেয়াদি অস্থিরতা । আর যা হারিয়ে ফেলবো, তা হলো আগামি দিনের অবসর সময়টা।
আমি বেশ অবহেলার সাথে, খাটের নিচে পড়ে থাকা আমার কঙ্কালের বাক্সটার দিকে একবার তাকালাম। কতগুলো বেঢপ অস্থি বিশৃংখলভাবে পড়ে আছে। আমি এগিয়ে গিয়ে সেগুলো গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করি। কত শক্ত, কত কঠিন আর বইয়ের পাতায় কত জটিল ছিল এই শুকনো জিনিসগুলা। আজ এসবের প্রয়োজন একেবারেই শেষ। আমার ভিতর থেকে আরেকবার লম্বা শ্বাস বেরিয়ে আসল। তবে এটা পুরোটাই স্বস্তির!
পরীক্ষা শেষে আমাদের ঘরের পাঁচ জনের তিন জনই এরি মধ্যে বিদায় নিয়েছে । যাওয়ার সময় ওদের সবার মুখেই ছিল রাজ্য জয়ের হাসি । পরীক্ষা নামের যুদ্ধটা আমরা সবাই করেছি। কিন্তু যারা এই যুদ্ধটা করেছে একান্ত অনিচ্ছায়, আমি তাদের দলের একজন ।
আজ সন্ধ্যা বেলার পর থেকেই আকাশ খারাপ । তবে বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। ঘরের ভিতরে দুজনের মধ্যে শুধু আমিই বৃষ্টি পড়ার শুরুটা দেখেছি । এই ঘরে তিন তিনটা জানালা থাকলেও খোলা থাকে মাত্র একটা । তাও আবার মাঝে মধ্যে । ঘরের দ্বিতীয় ব্যক্তি ঘুমানোর আগে সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে ।
আমি দরজা ঠেলে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম । উথাল পাতাল বৃষ্টি। যেন কোন অসীম শক্তি সবকিছুকে নাড়িয়ে দিতে চায়। তবে আমি একটুও আঁচ করতে পারিনি, এর চেয়েও অদ্ভুত কোন ব্যাপার আজ এখানেই ঘটতে পারে।
কিছুসময় একা একা দাঁড়িয়ে থাকার পর আবার ভিতরে ঢুকলাম । দরজা লাগাতে গিয়েও কী মনে করে একটা কপাট কিছুটা ফাঁক করে রাখলাম । ঠিক করলাম, একটুপর আরেকবার বাইরে যাওয়া যায়।
বাতিটা নিভিয়ে দিয়ে ঘর অন্ধাকার করে ফেললাম। বিছানায় চুপচাপ শুয়ে পড়তেই অগোছালো কিছু চিন্তা মাথা চাড়া দিয়ে উঠল ।
বাইরে এখন বৃষ্টি পড়ার জোরালো শব্দ শোনা যাচ্ছে । প্রথমে বৃষ্টির ফোটাগুলো পড়ছে গাছের পাতায়। তারপর গাছের ডালে । যেগুলো আশেপাশে কিছু হাতরে পাচ্ছে না, সরাসরি আছাড় খাচ্ছে সমতল ভূমিতে । বৃষ্টির অনক গুণের মধ্যে একটা খারাপ গুণ হলো, বৃষ্টি নিজে বাজে না অন্যকে বাজায় ।
চোখ দুটা হালকা করে বন্ধ করতেই আমার মনে পড়ল ছোটবেলার এক রাতের কথা । তখন মধ্যরাত না হলেও অনেক রাত । প্রচণ্ড রকমের এক দফা ঝড় বৃষ্টি যখন প্রায় শেষের দিকে তখন আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ি । পাড়ার শেষ প্রান্তে জঙ্গলের মত একটা জায়গা । দশ বারোটা আম গাছ, সাথে আরো কতগুলো গাছ গা ঘেঁষাঘেঁসি করে দাঁড়িয়ে আছে । আমাদের পাড়ার মড়লদের আম বাগান। আমি ব্যাগের ভিতরে একটার পর একটা আম ঢোকাতে শুরু করেছি এমনসময় এক দমকা হাওয়া ছুটে আসে । হারিকেনটা দম ধরে রাখার অনেক চেষ্টা করেও পারে না । ঝপ করে বন্ধ হয়ে যায় আমার চোখের সামনে । নিমিষের মধ্যে চারপাশ অন্ধকারে ঢেকে যায় । এদিক সেদিক তাকাতেই চোখ পড়ে এক উঁচু তাল গাছের দিকে। দমকা হাওয়া এখন তাল গাছের মাথার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে । ঝাপটা বাতাসে পাতাগুলো একবার থরথর করে কেঁপে ওঠে । এক হাতে হারিকেন আর অন্য হাতে ব্যাগটা শক্ত করে ধরে আমি এবার দৌড় শুরু করি । কাঁদা পানির উপর দিয়ে জীবনে এর আগে বা পড়ে কখনো এত জোরে দৌড়াইনি ।

‘ঠক, ঠক, ঠক !’
চোখ খুলব খুলব করেও পারলাম না । তবে আরেকবার জোরালো শব্দ হতেই খুলে ফেললাম । তাড়াতাড়ি বিছানায় উঠে বসতেই বুঝতে পারলাম, বাইরে ভীষণ রকমের ঝড় উঠেছে । একটা জানালার দুটা পাল্লায় আধখোলা হয়ে আছে । তৃতীয় বারের মত কড়া নাড়ার শব্দ হতেই দরজার দিকে ফিরে তাকালাম। বাতাসের চাপে একটা কপাট হালকা শব্দে খুলে গেল । মনে হলো, বাইরে আবছা অন্ধকারে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে ।
এত রাতে কে আসতে পারে? এই কথা ভাবতে ভাবতে দরজার কাছে এসে দাঁড়ালাম । এরপর দ্বিতীয় কপাটটা আস্তে আস্তে খুলতে গিয়ে থেমে গেলাম । শরীরের সমস্ত লোমকুপগুলো একবার শিরশির করে উঠল । ওপাশে যে দাঁড়িয়ে ছিল সে নড়ে উঠল। কোন কথা না বলেই আমার সামনে দিয়ে ধীর পায়ে ঘরের ভিতরে ঢুকল। এরপর মাঝখান থেকে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল সেই আধখোলা জানালাটার পাশে । বাহিরের আছড়ে পড়া বৃষ্টি জানালা দিয়ে ছিটকে পড়ছে ভিতরের দিকে । আমি তখনো দরজার পাশে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছি । আমি দাঁড়িয়ে আছি বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের সেতু বিন্দুতে । সেখান থেকে কোন দিকে পা বাড়াব, সেটা বুঝে উঠতে পারছি না ।
জানালার ফাঁক গলে বিজলী ছটা এসে লাগল আগুন্তকের চোখে মুখে । একটুপরেই কড় কড় শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠল । অপরিচিত মানুষটা তার দৃষ্টি জানালার বাইরে রেখেই মুখ খুলল, ‘আমাকে চিনতে পেরেছ?’
কেউ যেন ধাক্কা দিয়ে আমার গভীর ঘুম ভাঙ্গালো। আমি তাকে চিনতে পারলাম । মনে পড়ল এক বছর আগের এক দিনের কথা। সেদিনও আকাশে মেঘ ছিল । মেঘের পড় ছিল ঝড়ো-বৃষ্টি ।


কলেজে ক্লাস শুরু হওয়ার পর সবার মত আমিও বুঝতে পারল একটা কঙ্কাল দরকার, এবং তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব । অনেক খোঁজ খবর নেওয়ার পর এক ছুটির দিনে আমি কঙ্কাল কিনতে বের হলাম । একদিনের যাত্রা, ঢাকা থেকে রাজশাহী । এই অতিরক্ত পরিশ্রমটুকু মুধুমাত্র পকেট বাঁচানোর জন্য ।
রাজশাহীতে এসে ট্রেন থামল বিকেলের দিকে । আমি ক্লান্ত চোখে একবার আকাশের দিকে তাকালাম । সেখানে ধূসর কালো মেঘের অবিরাম ছুটাছুটি । বুঝাই যাচ্ছে, ক্লান্তিতে জমে থাকার সময় ওদের শেষ হয়েছে । আমিও আর সময় নিতে চাইলাম না । স্টেশন থেকে রিক্সা নিয়ে সোজা চলে আসলাম মেডিকেল কলেজে । যা দেখব ভেবেছিলাম ঠিক তাই। মেডিকেল কলেজ বন্ধ । আশে পাশে মানুষ জন এক রকম নেই বললেই চলে । মোবাইল ফোনে কয়েকবার ডাক হাক দেওয়ার পর, এবং আরো ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পর এনাটমি বিভাগের সেই কর্রচারীর দেখা পেলাম । লোকটা কাছে এসেই হাসিতে গাল মুখ ভরে তুলল । অল্প কথায় যা বুঝাল তার মানে হলো, সে এতক্ষণ আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলো!
একে একে তিনটা দরজার তালা খোলার পর লোকটা তিন তলার উপরে এসে দাঁড়াল । এরপর এক সরু বারন্দা ধরে আমরা হাঁটতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পা চালানোর পর একটা বড় দরজার চাবি খুলে সে ঢুকে পড়ল লম্বা চওড়া এক ফাঁকা ঘরে । ভিতরে টেবিলের উপরে চার পাঁচটা লাশ কাপর দিয়ে ঢেকে রাখা । খুব কাছ থেকে না দেখলে বুঝার উপায় নেই লাশটা ছেলে মানুষের নাকি মেয়ে মানুষের । তবে এদের ভিতরে বাইরে অনেক কিছু চেনার জন্য এগুলোকে আরো বেশি অচেনা করে দেওয়ার দায়িত্বটা কিন্তু আমাদেরই ।
লোকটা সব শেষে এসে থামল ফাঁকা ঘরটার পাশেই একটা ছোট ঘরের সামনে । দরজা খুলে বাতি জ্বালাতেই হলুদাভ আলোয় চারপাশ পরিষ্কার হয়ে আসল । ঘরের ভিতরটা হরেক রকমের জঞ্জালে ভরা । একটা আধাভাঙ্গা আলমারি, কয়েকটা পা ভাঙ্গা চেয়ার। ঘরের এক কোণায় দাঁড় করানো দু’টা টিউব লাইট, পাশে একটা বাঁশের লাঠি । এসবের ভিতরে এক জীর্ণ শীর্ণ টেবিলের নিচ থেকে লোকটা বেশ পুরাতন একটা বাক্স টেনে বের করল । এরপর সেটা টেবিলের উপর রেখে দড়ির প্যাঁচ খুলতে শুরু করল । আমি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি বাক্সটার দিকে। পুরাতন কিছু নতুন করে দেখার ইচ্ছা । লোকটা প্রথমে মাথার খুলিটা বের করে টেবিলের উপর রাখল । এরপর সবকিছু জোড়ায় জোড়ায় বুঝিয়ে দিতে লাগল । আমি তাকিয়ে আছি কঙ্কালের খুলিটার দিকে । দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না এই অস্থির উপর একসময় সযত্নে মাংশপেশী আটকে ছিল । তার উপরে ছিল মসৃণ চামড়া । এই মানুষটা কি সাদা ছিল নাকি কালো ছিল ? রাজা নাকি প্রজা ?
একটুপর মাথার খুলিটা আমার চোখের সামনে থেকে টেনে নিয়ে লোকটা ভিতরে ঢুকিয়ে ফেলল । তারপর বাক্সটা আবারো শক্ত করে বেধে আমার হাতে তুলে দিল । হাতে নিতেই আমি কিছুটা অবাক হলাম। চোখ সরু করে বললাম, ‘এটা এত পাতলা কেন? ’
‘মেয়ে মানুষের কঙ্কাল!’
লোকটা দাঁত বের করে সশব্দে হেসে উঠল । এক বিচিত্র ভঙ্গির হাসি । নিচের ঠোঁটের আকার পরিবর্তন বুঝা গেলেও উপরেরটা তেমন গেল না । প্রায় দেড় ইঞ্চি পুরো গোঁফ সেখানে জায়গা দখল করে বসে আছে ।
আমি বাক্সটা টেবিলের উপর রেখে দিয়ে বললাম, আমাকে ছেলে মানুষের কঙ্কাল দিতে হবে।
সে কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল, ঘুরেফিরে তো একই কথা।
একই কথা না। আমার মজবুত ক্ঙ্কাল দরকার। এইসব হালকা, পাতলা আর মোলায়েম জিনিস আমার পছন্দ না।
লোকটার চোখ মুখ থেকে শুকনা হাসি হারিয়ে গেল। তবে সে হতাশ হলো না। নিচু হয়ে সেই টেবিলের নিচ থেকে আরেকটা বাক্স বের করে আনল। প্রায় আগের মতেই পুরাতন। এরপর ঝাপ খুলে সবকিছু আগের মতই বুঝিয়ে দিতে লাগল।
চলে আসার আগের আমার কেন জানি মনে হলো, আগের কঙ্কালটাই ভালো ছিল। তবে কেন এমন মনে হলো, এর পিছনে কোন যুক্তি নেই।



ট্রেন ছাড়তে ছাড়তে রাত লেগে গেল । চাকা ঘোরার সাথে সাথেই বৃষ্টি পড়তে শুরু করছে । আমি জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছি । সেখানে আলো আর আঁধারের খেলা চলছে । বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা যেন সেই খেলার মাঝে একমাত্র প্রাণের ছোয়া। অনেকক্ষণ পর আমার সামনে বসে থাকা বয়স্ক লোকটা কথা বললেন, কী নাম তোমার?
’আবদুল্লাহ আল আহসান।’
‘ঝড় উঠতে পারে কি বল ?’
‘আমার মনে হয়, না’
আমার উত্তরে বৃদ্ধ মনে হয় একটু বিরক্ত হলেন । তবে তিনি বিরক্তি দেখানোর জন্য কোন সময় নিলেন না । সাথে সাথেই মাথা মগজ সব কিছু তার পত্রিকার মাঝে ডুবিয়ে দিলেন । আমি ভালো করে তাকিয়ে দেখি লোকটার হাতে সেদিনের তিন তিনটা দৈনিক পত্রিকা । সেই মিটমিট আলোতে সব গুলোই তিনি খুব যত্ন করে পড়ছেন ।
প্রথম যাত্রা বিরতির পর ঝড়ের বেগ তেমন না বাড়লেও বৃষ্টির বেগ অন্য রকম বেরে গেল । মাঝেমধ্যে সেই বৃষ্টির বড় বড় ফোটা জানালা দিয়ে ভিতরে এসে ঢুকছে । বৃদ্ধ লোকটা তার পাশের জানালার পাল্লাটা সশব্দে লাগিয়ে দিয়ে চশমার উপর দিয়ে আমার দিকে তাকালেন । লোকটা চোখ ফিরানোর আগেই আমি আমার কঙ্কালের বাক্সসহ জানালা থেকে একটু দূরে সরে আসলাম । তারপর আবারো প্রায় পলকহীন দৃষ্টিতে তাকালাম জানালার বাইরে । একটুপরেই পলক পড়ল এক মেয়ের কণ্ঠস্বরে,
‘তোমার জায়গা মনে হয় ওপাশে।’

ওপাশে বসে শাড়ি পড়া এই মেয়েটার দিকে আরেকবার তাকালাম। বেশ ফর্সা রঙের। তবে তার পড়নের কটকটে লাল শাড়ি তাকে আরো বেশি ফর্সা করে তুলেছে। বয়সে প্রায় আমার কাছাকাছি। দু-এক বছরের বড়ও হতে পারে। সে এখন তাকিয়ে আছে জানালার বাইরে । বৃষ্টি পড়া দেখছে । আমি ওপাশে বসার আগেই বৃদ্ধ লোকটা আমাকে অতিরিক্ত জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন । এই অতিরিক্ত জায়গায় কঙ্কালের বাক্সটা এক হাতে ধরে রেখেছি । আমার মত বৃদ্ধও এবার কিছুটা বিস্মিত চোখে মেয়েটার দিকে তাকালেন । বিস্ময়ের কারণ তেমন অসাধারণ কিছু না । সে তার শাড়ির আঁচল পুরো গলায় শক্ত করে পেঁচিয়ে রেখেছে ।
অনেকক্ষণ পর মেয়েটা একবার আমার দিকে তাকাল । তারপর মুখটা কঠিন করে প্রশ্ন করল,
‘তুমি কি ঢাকায় যাচ্ছ?’
‘হ্যাঁ, ঢাকায় যাচ্ছি ।’
এরপর আরো বললাম আমি ঢাকায় কেন যাচ্ছি। কারণ আমি এখন ঢাকাতেই থাকি। পড়াশোনা করি, মেডিকেল কলেজে। তারপর বললাম, আমি কেন রাজশাহী এসেছি। এসেছি একটা কঙ্কালের খোঁজে। এ মুহূর্তে যেটা খুবই জরুরি। বিশেষকরে আমি যখন মেডিকেল কলেজের ছাত্র।
আরো অনেক অপ্রয়োজনীয় কথা বলার পর বুঝতে পারলাম, আমি একটু বেশিই বকেছি। আসলে আমাকে তখন এসব কথা বলতে হত। কারণ, আমি তখন এক প্রথম বর্ষের ছাত্র। আর মানুষ হিসাবে বড়ই আনাড়ি!
সবশেষে বললাম, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
এর উত্তরে সে কোন কথা বলল না । এমনকি বলার কোন আগ্রহও দেখাল না । তবে তার চেহারায় কোন বিরক্তিভাব নেই। দেখলাম, তার দৃষ্টি তখন অনেক দূরে। কত দূরে সেটা আন্দাজ করাও সম্ভব না ।



চারপাশ কাঁপিয়ে তুলে আবারো মেঘ ডাকার শব্দে আমি যেন নতুন করে চেতনা ফিরে পেলাম । আমি যে কখন আমার বিছানার উপর এসে বসেছি নিজেও টের পাইনি । ওপাশে জানালার কপাটদুটা বাতাসের চাপে একটু পর পর বারি খাচ্ছে । মেয়েটা তার চেয়ার জানালার দিকে আরেকটু টেনে নিয়ে গেল । বাইরের আছড়ে পড়া বৃষ্টির ফোটা এখন তার গায়ে এসে লাগছে । এভাবে আরো কিছুটা সময় পার হয়ে গেল । এরপর আরেকবার বিদ্যুৎ ঝলকানি তার মুখে পড়তেই সে কথা বলতে শুরু করল। সেই পুরাতন গল্প নতুন করে বলছে । একটুও বদলায়নি। যেন একি গল্পের হুবহু পুনুরাবৃত্তি হচ্ছে ।
আমি ঢোক গিলতে গিয়ে টের পেলাম গলা ভীষণ রকম শুকিয়ে গেছে । মাথা ঘুরিয়ে একবার দরজার দিকে তাকালাম । দরজার একটা কপাট তখনো পুরোপুরি খোলা । একবার ভাবলাম দৌড় দিব কিনা । কারণ, এই গল্পের শেষ অংশটা আমি শুনতে চাই না । মেয়েটা খুব স্বাভাবিক গলায় শুরু করল, ‘আমার নাম মিতালি দাস । আমার বাড়ি একসময় রাজশহীতেই ছিল, এখনো আছে।’
আমি অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে আর ঘরের ভিতরে ধরে রাখতে পারলাম না । এক নিমিষেই ঝড়ের মত উড়ে গেলাম সেই ট্রেনের কামরায় । আমি এখন সেই বৃদ্ধ লোকটার পাশে বসে আছি । আমার পাশে আছে এক নর কঙ্কালের বাক্স । সামনে বসে থাকা মেয়েটা শুরু করল তার শৈশব আর কৈশরের গল্প দিয়ে । অনেক সাজানো গোছানো কথা । একটা অংশের সাথে আরেকটা অংশ অবিচ্ছেদ্য ভাবে জড়িয়ে আছে ।

’দেশটা সরাসরি জাহান্নামের দিকে যাচ্ছে!’
এই কথা বলে বৃদ্ধ লোকটা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে প্রথমে মেয়েটার দিকে তারপর তাকালেন আমার দিকে। এরপর তার প্রত্রিকা পড়ায় সংক্ষিপ্ত বিরতি নিলেন । প্রথমে চশমাটা একটানে খুলে চোখের সামনে ধরলেন। কিছুক্ষণ চোখ সরু করে তাকিয়ে থাকার পর সেটা নিচে নামালেন । তারপর সাদা পাঞ্জাবির একাংশ দিয়ে খুব যত্ন করে মুছে নিলেন । এরপর শুভ্র দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে চারপাশে কি যেন হাতরাতে লাগলেন । মাথা এদিক ওদিক ঘুরাতেই এক সময় চোখ পড়ল পত্রিকার দিকে । সাথে সাথে চশমাটা আবার চোখের সামনে তুলে নিলেন।
‘আমাদের বিয়েটা হঠাৎ করেই হয়ে গেল । তেমন কোন কারণ নাই। বাবা এসে বলল বিয়ে করতে হবে, তাই।’
মেয়েটা তার মাঝ জীবনের গল্প শোনাতে গিয়ে কেন জানি থেমে গেল । তার কথাগুলো হাঠাৎ করেই অগোছালো হতে শুরু করেছে । বলতে বলতে বার বার থেমে যাচ্ছে । কিন্তু থেমে গিয়েও থেমে থাকতে পারছে না । একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও আবার শুরু করতে হচ্ছে ।
‘আমাদের নতুন জীবন ভালোই চলছিল । পড়াশোনা ফাঁকি দিয়ে সংসার, আবার সংসার ফাঁকি দিয়ে পড়াশোনা।’
একটুপর সে প্রায় পুরোপুরি থেমে গেল । দীর্ঘক্ষণ আর কোন কথা বলল না । আমি থেমে থেমে দম ছাড়তে শুরু করেছি । মেয়েটা হয়তো আবারো মুখ খুলবে । কিন্তু তার কোন সম্ভাবনা আর দেখা গেল না । এই সময় আমার মাথায় নতুন এক চিন্তা এসে জায়গা দখল করল । সে এত কথা আমাকে কেন শোনাচ্ছে? এসব শুনে আমার লাভ কি? আমি কি এসব গল্প শোনার জন্য এখানে এসেছি? মোটেও না । আমি এসেছিলাম কঙ্কাল কেনার জন্য এবং কিনেও ফেলেছি । রক্তমাংশ ছাড়া প্রাণহীন কতগুলো অস্থি । তা এখনো আমার সাথেই আছে । আমি কঙ্কালের বাক্সটা আরেকটু শক্ত করে চেঁপে ধরলাম ।
‘আমাদের সংসারে নতুন আর পুরাতনের মিশেলে প্রতিদিনগুলো ভালোই কাটছিল । ঠিক কত দিন পার হয়ে গেল আমার মনে নেই।’
সে আবারো কথা বলতে শুরু করেছে । বাহিরে ঝড়ের সাথে বৃষ্টিও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে । অস্থির হয়ে ছুটে চলা বৃষ্টির ফোটাগুলো এখন ট্রেনের খোলা জানালা দিয়ে অনবরত ভিতরে ঢুকছে । মেয়েটার বসে থাকার জায়গাটা ভিজে উঠছে । আমি সেদিকে একবার মনযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করতেই সে মাথা ঘুরিয়ে আমার কঙ্কালের বাক্সটার দিকে তাকাল । তার সেই দৃষ্টিতে একধরনের ক্রোধ মিশে আছে যা ব্যক্ত করা যায় না । সে মনে হয় অনেক কিছুই বিশ্বাস করতে পারছে না।
এই প্রথম মেয়েটার অনুভূতিতে একটু পরিবর্তন আসল । একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে এক মেঘলা আকাশের গল্প শোনাল । ওরা দুজন এক ছুটির বিকেলে ঘুরতে বের হয়েছিল। রিক্সা নিয়ে ঘুরাঘুরি। সেদিন বিকেল বেলা থেকেই ছিল আকাশ খারাপ।
’আমরা ঠিক করলাম, আজ রিক্সা নিয়ে শুধু সোজা দক্ষিণ দিকে যাব। যতদূর ‍যেতে পারি!’
মেঘলা আকাশকে উপরে রেখে এরা সোজা দক্ষিণ দিকে যেতে লাগল। ব্যস্ত শহরটাকে পিছনে ফেলতে ঘন্টাখানেক সময়ও লাগল না। তারপরও তারা যেতেই থাকল। রিক্সাওয়ালা কিছুটা অবাক হয়ে একবার পিছনে তাকাল। তবে সে তাদের ভিতরে অস্বাভাবিক কিছু দেখল না। সে এবার মাথা তুলে উপরে তাকাল। সেখানে কালচে মেঘের ভিতরে মেঘের ডাকাহাক শুরু হয়েছে।
রিক্সাওয়ালা থেমে গেল। তার বিচিত্র মুখভঙ্গি বলে দিচ্ছে, এটাই তার শেষ সীমানা।
'আমরা জোরাজুরি করলাম না। তবে থামলামও না। ভাড়া মিটিয়ে ও আমার হাত শক্ত করে চেঁপে ধরল। একরম জোর করে টানতে লাগল।’
আমি কঙ্কালের বাক্সটা থেকে হাত সরিয়ে নিলাম। একটু হাসার চেষ্টা করলাম। তবে দেখলাম মেয়েটার অনুভূতিতে কোন পরিবর্তন আসেনি। সে আগের মতই বিষণ্ন ।
একসাথে তারা আরো কিছুদূর হেঁটে গেল। চারপাশে ফাঁকা মাঠ। মাঝে মধ্যে দু একটা ছোট বড় গাছ। তারা আরো দেখল, আশেপাশে মানুষ জন নেই বললেই চলে।এরপরই হালকা বাতাস ‍দিয়ে বৃষ্টি নামল। এবং খুব তাড়াতাড়ি তা ঝড়ো-বৃষ্টিতে রূপ নিল।
ওরা রাস্তার পাশে একটা উঁচু গাছের নিচে দাঁড়াল। তবে তেমন কোন লাভ হল না। ভিজে চুপসে উঠতে তাদের পাঁচ মিনিট সময়ও লাগল না।
‘আমার পেটে তখন আমাদের পরিবারের নতুন অতিথি। এখনো আছে। আমি অবশ্য আসার আগেই একবার নিষেধ করেছিলাম।’
কখন বৃষ্টি ‍থামবে আর কখন গাছের তলা থেকে বের হয়ে আসবে, ওরা দু’জন সেই অপেক্ষাই করছিল । দীর্ঘসময় অপেক্ষা করার পরও বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণ দেখা গেল না। হঠাৎ বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠল। তাদের পুরোপুরি চমকে দিয়ে খানিকদূরেই বাজ পড়ল। দুজন এবার তাদের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা গাছটার দিকে তাকাল। বুঝতে পারল, এসময় এরকম বিচ্ছিন্ন আর উঁচু একটা গাছের নিচে দাঁড়নো কোন ভাবেই উচিৎ না। কে জানে হয়ত পরেরটা এই গাছের দিকেই ছুটে আসবে।
তারা রাস্তার ওপাশে অপেক্ষাকৃত নিচু এবং ঝোপালো একটা গাছের দিকে পা বাড়াল। দু’জন একসাথেই রাস্তা পার হচ্ছিল । তবে শেষ করতে পারল না। রাস্তার মাঝখানেই তারা আটকা পরে গেল । অল্প দূরেই কোন গাড়ির হর্নের কর্কশ আওয়াজ হলো। একটা ট্রাক। সামনে আর এক পা বাড়ানোর আগেই গাড়িটা এসে সজোরে ধাক্কা মারল!
মেয়েটার চোখে এক ভয়ঙ্কর অনুভূতির ছাপ নেমে আসল । সে তাকিয়ে আছে আমার কঙ্কালের বাক্সটার দিকে । ট্রেনের গতি প্রথমবারের মত কমতে শুরু করেছে।
‘গাড়ির ধাতব দেহটা আমাদের থেকে তখন প্রায় দেড় হাত দূরে । জোরে যে একবার চিৎকার দেব সে সময়টুকুও পেলাম না। এরপর প্রায় দশ মিনিটের মাথায় আরেকটা গাড়ি এসে আমাদের পাশে দাঁড়াল। পিক-আপ ভ্যানের মত একটা গাড়ি। সেখান থেকে নেমে আসল মাঝবয়সী দুজন মানুষ। ‍দুজনের চোখই ভয়াবহ রকমের লাল। আমাদের কিছুক্ষণ নেড়ে-চেড়ে ভালো করে পরীক্ষা করে দেখল। তারপর তুলে নিল গাড়িতে। এরপর আমরা কয়েকবার হাত বদল হলাম। কিন্তু তারপরেও একসাথেই ছিলাম। সারা জীবন থাকতে চেয়েছিলাম, পাশাপাশি, গা ঘেঁষে। কিন্তু আজকের পর বোধহয় আর সম্ভব হচ্ছে না।’
একবার ঘটাং শব্দ করে ট্রেনটা থেমে গেল। আমি ডান হাতে কঙ্কালের বাক্সটা হাতড়াতে গিয়ে টের পেলাম হাত কাঁপছে। বাক্সটা হাত নেওয়ার আগেই সেটা নিচে পড়ে গেল । ভিতর থেকে অস্থিগুলো একবার ঠনঠন করে বেজে উঠল । একেবারেই অপরিচিত শব্দ । অপরিচিত কারণ এই শব্দ শোনার ভাগ্য সবার হয় না । বাক্সটা উঠাতে যাব এমন সময় বৃদ্ধ লোকটা চোখের সামনে থেকে পত্রিকাটা সরিয়ে আমার দিকে তাকালেন । গম্ভীর গলায় বললেন ‘কী আছে এই বাক্সের ভিতর?’
আমি তাকিয়ে আছে মেয়েটার দিকে । এক অশরীরী আতঙ্কে আমার ভিতরটা জমে গেছে। মেয়েটা তার গল্প শেষ করেই উঠে দাঁড়িয়েছিল । কিন্তু বৃদ্ধ লোকটার প্রশ্ন শুনে উৎসাহী হয়ে উঠল। সেও হয়ত আমার উত্তরটা শুনতে চায় । কিন্তু আমি সন্তোষজনক কোন উত্তর দিতে পারলাম না । তেমন কিছু না, এরকম কিছু একটা বলতে গিয়েও শেষ করতে পারলাম না ।
মেয়েটা চলে গেলে আমি স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলাম। এবং খুব দ্রুত সফল হলাম। এরপর আমার মাথায় খেলেতে লাগল অদ্ভুত সব চিন্তা। প্রথমে ভাবলাম, এই মেয়েটার মাথায় নির্ঘাত কোন সমস্যা আছে। তারপর মনে হলো, খোঁজ নিলে হয়ত দেখা যাবে কোন গল্পবাজ থিয়েটার কর্মী। আমাদের সহজ সরল পেয়ে গুল মেরে মজা নিয়ে মজা নিয়ে গেল। অথবা সত্যি সত্যিই কোন...
কিন্তু আমি যতদূর জানি দুনিয়াতে সত্যিকার অর্থে ভূত বলে কিছু নাই। আমার মতামত জানাতে বৃদ্ধ লোকটার মনোযোগ আকর্ষণ করলাম। কিন্তু তিনি আমার কোন কথাই মনোযোগ দিয়ে শুনলেন না। বুঝতে পারলাম, এই ভদ্রলোক মেয়েটার ভূতুরে গল্পের এক দানাও শোনেন নি। তিনি এখনো পড়ে আছেন তার পত্রিকা নিয়ে। হয়ত আজকের পত্রিকাগুলো এরচেয়েও কোন লোমহর্ষক দূর্ঘটনার খবর ছেপেছে। যেরকম প্রতিদিনই ছাপে। হয়ত একটা না, কয়েকটা!
কেন জানি এই অদ্ভূত মেয়েটাকে আরেকবার দেখার ইচ্ছা হলো। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। তবে স্টেশনে ব্যস্ত মানুষের তাড়াহুড়া ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ল না।




আমি আমার বিছানার এক কোনায় গুটিসুটি মেরে বসে আছি । এবং এই প্রথম বুঝতে পারলাম, আমি আসলে স্বপ্ন দেখছি। বাইরে ঝড় বৃষ্টির রীতিমত তাণ্ডব শুরু হয়েছে । কেবল শোঁ শোঁ শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দই আমার কানে ডুকছে না । অনবরত বিজলী চমক আর মেঘের ডাকে চারপাশ কেমন জানি অস্থির হয়ে উঠেছে । মেয়েটা কিছুক্ষণ আগে তার গল্প বলা শেষ করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে । দম ধরে খানিকক্ষণ জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকার পর দরজার ‍দিকে পা বাড়াল। দরজার একটা কপাট শব্দ করে লেগে যাওয়ার পর আবার খুলে গেল । আমি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার পায়ের দিকে । তার প্রতি পদক্ষেপে সমস্ত ভবনটা যেন দুলে দুলে কাঁপছে । সে যখন দরজা পার হয়ে যাচ্ছিল তখন হঠাৎ বিছানা থেকে নেমে পড়লাম । তারপর মেয়েটার পিছনে দ্রুত কয়েক পা যাওয়ার পর আবার চট করে দাঁড়িয়ে গেলাম ।
চেয়েছিলাম তাকে একবার ডাক দিতে। পারলাম না । কত অল্প সময়ের ব্যবধানে মেয়েটার নাম আমি আবারো ভুলে গেছি ।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫৫
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×