এই বারই প্রথম বাবা কে ছাড়া বাবা দিবস পালন করতে যাচ্ছি। গত বছরও বাবাকে নিয়ে একটি লেখা দিয়েছিলাম। তখন বাবা জীবিত ছিলেন এই বছর বাবা দিবসে বাবা নেই মনে হয় কিছুই নেই। বাবার শেষ-নি:শ্বাস ত্যাগের সময় তার পাশেই ছিলাম। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় মৃত্যুর একদিন আগেই এশিয়ার উন্নত দেশের অতি উন্নত হাসপাতালে বাবার কাছে ছুটে গিয়েছিলাম। খুব কাছ থেকে দেখেছি কিভাবে ইনটেভসিভ কেয়ার ইউনিটে বাবার বেডের পাশে থাকা মনিটরের টিক্ টিক্ শব্দ আর গ্রাফিক লাইন বাবার রক্তচাপ, হৃদসন্পন্দনের দ্রততার সাথে পতনের জানান দিচ্ছিল। ছোট বোন আর ভাইটা বাবার মাথার শিয়রের কাছে দাঁড়িয়ে জোড়ে জোড়ে চিৎকার করে কাঁদছিলো আর বলছিলো "বাবা তুমি যেও না বাবা.... আমাদেরকে ছেড়ে যেও না"। বোনটা সাথে রাখা দরুদ শরীফের বই খুলে জোড়ে জোড়ে পড়ছিলো আরা বাবাকে নিয়ে না যাবার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছিল। অন্যদিকে এই আমি কাঁদতে ভুলে গিয়ে বার বার বাবার মুখের দিকে আর একবার মনিটরের দিকে তাকাচ্ছিলাম। মনে মনে প্রার্থনা করছিলাম "হে প্রভু, তুমি আমার বাবার পরিবর্তে আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাও। বাবাকে আরো কিছু দিন সময় দাও। আমি চলে গেলে দেশের এই জগতের কিছুই হবে না কিন্তু বাবা চলে গেলে দেশ হারাবে সত্যিকারের একজন দেশ-প্রেমিক, সৎ আর সাহসী যোদ্বাকে আর আমরা হারাবো আমাদের প্রিয় বাবাকে"। কিন্তু মহান(!) সৃষ্টিকর্তা পরিবারের সদস্যদের পাশা-পাশি বাবার লক্ষ লক্ষ অনুরাগী-ভক্তদের দোয়া কবুল না করে তাঁকে তুলে নিয়ে যান। অবশ্য মৃত্যুর পরে আমার এই মুক্তিযোদ্বা, একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা-সৈনিক বাবা দল-মত নির্বিশেষে মানুষের যে ভালবাসা ও শ্রদ্বা পেয়েছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে হাতেগোনা খুব কম জনই পেয়েছে এই মনে করে নিজেকে প্রবোধ দেবার চেষ্টা করলেও থেমে থেমে প্রতিদিন বাবার সাথে কাটানো সুখ-দু:খের স্মৃতি ভেসে উঠে। মনে পড়ে ছোট বেলা থেকে কিশোর বয়সের সন্ধিক্ষণ পর্যন্ত বাবাকে ছাড়া ঘুমাতে পারতাম না। বাবা পাশে শুয়ে আমার পিঠ আলতো করে বুলিয়ে দেবার পাশাপাশি হালকা করে পিঠ চুলকিয়ে দিতেন যতক্ষন পর্যন্ত না চোখে ঘুম না নেমে আসতো। আমার বাবার এই অভ্যাসটা যে দুর হয় নি সেটা গত ২০০৮ সালের জানুয়ারী আর অক্টোবরে বাবার সাথে একসাথে এক বিছানায় ঘুমিয়েও টের পেয়েছি। সেই সময়ের দু:সময়ে সারাদিন-রাত বাবার উপর মানসিক ও শারিরীক চাপের পরেও তাঁকে দেখেছি রাত্রে ঘুমানোর আগে সেই আগের মতই আমাকে আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে দেবার পাশাপাশি পিঠও চুলকিয়ে দিতেন। আজ যা শুধুই স্মৃতি!!!
আলোচিত ব্লগ
ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা
সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না
...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না
ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন
লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?
মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)
সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন