আমার ভাবলে খুব হাসি পায়, এ দেশের মানুষ এতো বোকা কিভাবে হয়? নাকি বোকা ইচ্ছে করেই সাজে?! নাকি কামকাজ নাই তাই আজাইরা কোনো বিষয়ে ব্যস্ত থেকে বোকা হয় !?
আসলে ঘটনা কি!? ঘটনা কিছুঁই না, এদেশের মানুষ কোনো একটা ছুতা পাইলেই হইলো ব্যাস উইঠা পইরা তার পেছনে লেগে যাবে। তারপর ফেসবুকে দুই-চার কলাম লিখবে, কেউ কপি করে চালিয়ে দিবে, লাইক কমেন্টের জন্য মনে মনে ভিক্ষা বৃত্তি শুরু করে দেবে, ইত্যাদি ইত্যাদি! ( আশ্চর্য জনক এক জাতি)!
সম্প্রতি এক বিষয় নিয়ে জাতি খুব মেতে উঠেছে, তার নাম হলো "মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ" । প্রথমে খুব সমাদর করা হলো এই মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশকে নিয়ে। পরে জানা গেলো মেয়েটা ছলছাতুরি করেছে মানে মিথ্যে বলেছে। এরপর তার মাথা থেকে মুকুট খুলে নেয়া হলো এখন আরেকজন কে মানে তার সাথের জন যে রানারআপ হয়েছিলো তাকে "মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ" খেতাব ও মুকুট দেয়া হলো। আমি এখানে বলবোনা কি নাটকটা না করলো কারন এই অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই আমার। বরং প্রশ্ন এরকম অনুষ্ঠান এই দেশে কিভাবে আয়োজন করার অনুমতি দেয় কিভাবে!? এ নিয়েও কথা বাড়াবো না। কারণ এসকল অনুষ্ঠানে নারীকে পণ্য ব্যাতিত আর কোনো কিছু ভাবেই উপস্থাপন করে না!
আমার মাথা ব্যাথা হলো আমাদের ফেসবুক জাতি লাইক এবং কমেন্ট পাওয়ার জন্য এই একটা ভোগাস, থার্ড ক্লাস একটা ইস্যু নিয়ে কিভাবে মেতে উঠে তা আমার বুঝে আসে না। মানুষের কি কাজ নেই আর নাকি এইটাই মূল কাজ।
এই এভ্রিল মেয়েটা নাকি বাবার সাথে কোনো সম্পর্ক নাই! মা নাকি এই মেয়েকে পুরো কন্ট্রল করে।
নেপোলিয়ন বলেছিলেন, "তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেব"
এ নিয়ে আর কথা বাড়ানোর ইচ্ছে নেই, যা বলার তা এই কথার ভেতর অন্তর্নিহিত।
এখন জেসিয়া ইসলাম নতুন "মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ" জান্নাতুল নাঈম বাদ। বিতর্ক শেষ?! না বিতর্ক শুরু, মানে আরেকটা নতুন ইস্যু নতুন করে নাচানাচি করে শুরু করবে।
বিতর্ক ও নাচানাচি অলরেডি শুরু হয়ে গেছে! জেসিয়া ইসলামের দাঁত বাঁকা! এরকম একটা মেয়ে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় যায় কীভাবে! অনলাইন পত্রিকায় নিউজ দেখলাম জেসিয়া ইসলামও নাকি বিবাহিত। যদিও এই বিষয়ে খবর ভুয়া হয় তারপরও একটা কথা বলার থাকে যে, আরেকটু ভালো করেই বলি- এই নিম্নমানের বিষয় নিয়ে জাতি এতো মাতামাতি করার সময় পায় কোথায়? জাতির এ নিয়ে এতো মাথা ব্যাথা কেন!? হায়রে জাতি..!!
বড় ছেলে নাটক দেখে অনেকেই কেঁদে সমুদ্র বানিয়ে ফেলেছে। আপনি এখানে বলতেই পারেন, কেন ভাই নাটকটা তো ভালোই, একটা রিভিউ তো দেয়া যায়। তা দেয়া যায় ঠিক, কিন্তু লাফালাফি টা বেশি হয়ে গেলে তখন কি আর ঠিক হবে!? এ ঝরে তো ফেসবুক উতলা হয়ে উঠেছিলো, ভাগ্য ভালো শেষে ছেলেটা মারা যায় নাই।
কয়েক মাস আগে সাকিব-অপুর বিয়ে নিয়ে কত লেখা লেখি না হইলো! সাকিব নাকি অপুকে ধোকা দিছে, অপুর এখন কি হবে?! অনেকেই অপুকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছে, ফেসবুকে। যাই হোক, মূল কথা হইলো ফেসবুক বা ব্লগ সব নেটওয়ার্ক গরম করে ফেললো! আবার ইভেন্টও বের করলো, 'সাকিবকে অপুকে মেনে নিতে হবে'! পারেও এ জাতি!! এতো এনার্জি পায় কোত্থেকে?
বেশ কয়দিন আগের ঘটনা, বার্সেলোনা থেকে নেইমার চলে গেলো কেন তা নিয়ে খুব মাতামাতি হলো। ফেসবুক তো তখন শোকে মাতোয়ারা!
বর্তমানে সবচেয়ে গরম ইস্যু প্রধান বিচারপতি ইস্যু। প্রধান বিচারপতির অপসারন নিয়ে খুব মাতামাতি হলো। একপক্ষ বলছে সত্যি কথা বলার কারণে উনাকে অপসারণ করা হয়েছে আরেকদল বলছে উনি নিজেই একজন দুর্নীতিবাজ। হায়রে দেশ, এখন উনাকে ক্যান্সারের রোগী বানিয়ে ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছে!! ক্যান্সার হওয়ার সময় পেলো না, আর কি টাইমিং ক্যান্সার হওয়ার। ...মারাত্মক!
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সরকার হঠাৎ যেভাবে এগোচ্ছেন নোবেল না পেলে আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রী, শিল্প মন্ত্রী সহ সবাইই পুরো বিশ্বের সাথে সম্পর্ক চ্যুত করবে। অথচ কিছুদিন আগেও রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকার বিন্দু মাত্র মাথা ঘাময়নি। রোহিঙ্গাদের জন্য আমার মন কাঁদে, আমিও চাই ওরা ওদের অধিকার ফিরে পাক। কিন্তু এই রোহিঙ্গা ইস্যু দিয়ে দেশের আরও কিছু মেজর ইস্যু ঢাকা পড়ে গেছে! যেমন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের মানুষের অবশ্য এখন আর এ নিয়ে একটুও মাথা ব্যাথা নেই। তাই আমি এবং আমার বন্ধুরা এই ব্যাপারে শাহবাগ গিয়ে আন্দোলন করার জন্যে আর অনুপ্রানিত না।
সামিয়া রহমানের লেখা চুরির ঘটনা নিয়ে আমি পুরাই হতাশ! আসলে লেখা চুরির ব্যাপারে যতটা না হতাশ তার চেয়ে বেশি হতাশ উনি নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। সামিয়া রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কেমনে সম্ভব?!
ফেসবুক যে যুগে ছিলো না সে যুগে ছিলো চা'য়ের দোকানে আড্ডা। আর এখন ফেসবুককে বানিয়ে ফেলেছে চায়ের দোকান!
উপরে শিরোনামের সাথে এখনও বক্তব্যের মিল খুঁজে পান নাই তাহলে আপনি মঙ্গল গ্রহে আছেন।
একটা ইস্যু কিভাবে আরেকটা ইস্যুর জায়গা দখল করে নেয় তা নিয়ে অনেক দিন আগে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। তখন খুব জোরালো করে লিখেছিলাম জাতিকে জাগ্রত করার জন্যে। এখন সেই জোর কমে আসছে, এর কারণ এই জাতি শুনেও না শুনার ভান করছে!!
কেউ হয়তো বলবেন, এগুলো না ঘটলে আপনি লেখার বিষয় হয়তো পেতেন না। কথাটা ভুল। লেখার অনেক ভালো বিষয় আছে চারিদিকে।
.
এই জাতিকে নিয়ে আমার মঙ্গলজনক বক্তব্য নাই! শুধু কিছু দুঃখ আছে। এই জাতিকে নিয়ে আমি হতাশ। আমি মৃত্যু দূতের অপেক্ষায় আছি, কোন সময় আমার চির প্রস্থান হবে সেই আশায়!
শেষে, এই পোষ্ট কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে উদ্দেশ্য করে বলা না।
*খুব দ্রুতই আরেকটা পোষ্ট আসতেছে আমার।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:১০