ব্যাচেলরদের জন্য রাতের রান্না করাটা কষ্টকর, আর আমার মত অলস ব্যাচেলর হলে তো “গোদের উপর বিষ ফোঁড়া” অবস্থা। গার্লফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকআপ হলে সারাদিন যতটা না মানসিক কষ্ট, তার চেয়ে বেশি কষ্টকর লাগে চুলার পাড়ে থাকার সময়টায়। তাই সেই সব ব্যাচেলরের সুবিধার্থে আজকে আমি রান্নার সহজ তিনটা রেসিপি দিবো, যাতে করে তারা অল্প সময়ে রাতের খাবার তৈরি করতে পারে। হাজার হলেও, অলস অলস ভাই ভাই।
অটো পদ্ধতিতে খিচুড়ী রেসিপিঃ প্রথমেই একটু কষ্ট করে পেঁয়াজ আর মরিচ কেটে নিতে হবে। বাজার থেকে আগেই রসুন আর আদা বাটা কিনে রাখতে হবে। এরপর একটা হাঁড়িতে পরিমান মত চাল আর ডাল নিতে হবে। যদি খুব বেশি অলস না হোন, তবে অবশ্যই ধুয়ে নিবেন। না ধুইলেও সমস্যা নেই, রান্না করলে কোন জীবানু থাকে না। অতঃপর চাল-ডালের মিশ্রণে পেঁয়াজ, মরিচ, আদা-রসুন বাটা, তেল, মরিচের গুড়া, হলুদের গুড়া আর লবন দিয়ে মাখিয়ে দিতে হবে। এরপর তার মধ্যে বেশি করে পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে। আর হ্যা, মনে করে অবশ্যই চুলায় আগুন ধরিয়ে নিতে হবে, তা না হলে খিচুড়ী কাচা কাচা থাকবে, আর স্বাদও হবে না। এরপর যতক্ষণ পর্যন্ত হাড়ির পানি না শুকায়, ততোক্ষণ পর্যন্ত ফেসবুক চালাতে পারেন বা ইউটিউব দেখতে পারেন। পানি শুকিয়ে গেলেই নামিয়ে ফেলতে হবে। আর এভাবেই হয়ে যাবে “অটো খিচুড়ী”।
নুডলস রেসিপিঃ এই রেসিপি তুলনামুলক বেশি অলসদের জন্য। দোকান থেকে “২ মিনিটে প্রস্তুত ম্যাগী” নুডলসের প্যাকেট কিনে এনে পরিমানমত গরম পানিতে ছেড়ে দিতে হবে। ব্যাস, তৈরি হয়ে গেল আপনার রাতের ডিনার।
ডায়েটিং রেসিপিঃ এর জন্য দরকার রান্না না করার প্রচণ্ড ইচ্ছা আর না খেয়ে থাকার অভ্যাস। মনে মনে চিন্তা করুন ’মানুষ শুধুমাত্র দুবেলা খেয়েই বেঁচে থাকে, রাতে না খেয়ে থাকলেও সমস্যা নেই’। এভাবে কয়েকদিন না খেয়ে থেকে প্র্যাকটিস করুন, দেখবেন রাতের রান্না করার হাত থেকে রেহায় পেয়ে যাবেন। আর হ্যা, এই রেসিপিটা শুধুমাত্র সর্বোচ্চ পর্যায়ের অলসদের জন্য। আপনাদের জন্য এর চেয়ে ভাল কোন রেসিপি পেলাম না। সেই সাথে তাদের হতে হবে পাক্কা সিঙ্গেল। গার্লফ্রেন্ড থাকা অবস্থায় এই রেসিপি ফলো করতে যাবেন না, তাহলে গার্লফ্রেন্ড সরাসরি আপনার বাসায় চলে আসবে। না, না, রান্না করে দেয়ার জন্য না, আপনাকে ঝাটা পিটা করার জন্য। আর মানুষের কাছে “হ্যাংলা”, ”পাতলা”, ”রোগা”, ”শুটকী” এমনকী ”টেলি সামাদ” উপাধী পাওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আমার এই সহজ রেসিপিতে একজনেরও যদি উপকার হয়, তাতেই ব্যাচেলর সমাজ ধন্য। হাজার হলেও, ব্যাচেলরের কষ্ট একটু হলেও বুঝি।