somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুকরো ভাবনা।

১২ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খুব ছোট্টবেলায় যখন বিজ্ঞান বইয়ে সৌরজগতের ছবি প্রথম দেখি তখন একটি প্রশ্ন আমাকে ভীষন আলোড়িত করে।শুক্র গ্রহটাতো মঙ্গল থেকেও কাছে।তাহলে সবাই শুক্র ফেলে মঙ্গলের পিছনে ছুটছে কেনো?বলাই বাহুল্য ভৌগোলিক অবস্থা প্রায় পৃথিবীর মত হওয়ায় মঙ্গল নামক গ্রহটাকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের তদপুরি সাধারন মানুষেরও আগ্রহের শেষ নেই।
যাই হোক,উওরটা কিন্তু তখন কারো কাছ থেকেই পাইনি ।আমার আশপাশের সবাই আমাকে এই প্রশ্নের উত্তর জানানোটা অপ্রয়োজনীয় মনে করেছে।কিন্তু ঘটনাটা থেকে আমি খুব সুন্দর একটা শিক্ষা পেয়েছি।এখন আশপাশের কোনো ছোট বাচ্চা যখন আনমনে কথা বলে,নিজের মনে প্রশ্ন করে,আমি মনোযোগ দিয়ে শুনি।প্রত্যেকবারই আমি বিস্মিত হয়ে লক্ষ করি বাচ্চা গুলোর মাঝে এক পবিত্র কৌতুহল খেলা করছে।চোখদুটোতে অজানাকে জানার আগ্রহ।আমি বিমোহিত হই।
.
কালজয়ী বিজ্ঞানী কার্ল সাগান একদা বলেছিলেন-
“প্রত্যেকটা শিশু প্রাকৃতিকভাবে বিজ্ঞানী হয়ে জন্ম নেয় এবং পরে তাদের থেকে সেই গুনাবলী আমরা তাড়িয়ে দিই।এরপর বিজ্ঞানের ব্যাপারে খুব কম পরিমান উৎসাহ তাদের মধ্যে রয়ে যায়।“
.
কথাটা আসলে শুধু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নয়,সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।মানুষ হিসেবে আমাদের মধ্যে অনেক ক্ষুদ্রতা,নীচতা,হিংস্রতা কাজ করে।আমরা কি কখনও ভেবে দেখি দিন দিন কেন এগুলো এতো অসহনীয় অবস্থায় পৌছে যাচ্ছে?পৃথিবীর জ্ঞান ভান্ডারে তিল তিল করে তো অনেক কিছুই জমা হয়েছে।আমাদের সভ্যতা,ইতিহাস,মানুষ হিসেবে আমাদের অস্তিত্বের তুচ্ছতা,জীবনের পরম সৌন্দর্যবোধ,প্রকৃত জীবন বোধ সব জ্ঞানই তো আমাদের নখদর্পনে।তবে আমরা কেন রূপকথাচ্ছলে আমাদের নবাগতদের তা বলিনা?কেনো তাদের বিবেক বুদ্ধিহীন শিক্ষা যন্ত্রের মাঝে ছেড়ে দিই, যেখানে তারা বিজ্ঞানের সৌন্দর্য,শিল্পকলার কলার জীবন বোধ না বুঝেই তথাকথিত শিক্ষিত হয়ে বের হয়।যেখান থেকে বের হয়ে সবাই অর্জিত শিক্ষা থেকে জীবন কে বোঝার চেষ্টা না করে শুধু ব্যবসায়িক ফায়টা লোটার অপেক্ষায় থাকে??
.
মহাবিশ্বের কথা বাদ।৪৫৭ কোটি বছরের পুরোনো আমাদের এই পৃথিবী।আধুনিক মানব সভ্যতার বয়স ৮০ হাজার বৎসর।কত সভ্যতা তৈরী হয়েছে,আবার মাটিতে মিশে গেছে।কত সুঃখ দুঃখের গল্পগাথা।কত নতুন প্রজাতির উন্মেষ আবার বিলুপ্তি ।কাদামাটির পৃথিবীতে কত ভালবাসার জন্ম হয়েছে,তৈরী হয়েছে কত বন্ধন।দিনশেষে তো এই গল্পগুলোই বেচে থাকে।হাজার হাজার বছরের সভ্যতা পেরিয়ে আসা এই আমাদের কেন এই ব্যাপারগুলো ভাবিত করবেনা?কেন সন্ধ্যার আকাশে টিপটিপ করতে থাকা তারাদের দিকে তাকিয়ে আমরা আমাদের মূল খোঁজার চেষ্টা করবোনা??যেইখানটায় দাড়িয়ে আছি,ঠিক সেখানেই হয়তো কয়েক হাজার বছর পূর্বে আমারই কোন এক পূর্বপুরুষ ঠিক আমারই মতো তারাদের দিকে তাকিয়ে আনমনে ভাবতো।সেই লোকটা নেই,অথচ তার চিন্তা ধারা এখনও আমার মাঝে বইছে,পরোক্ষভাবে সেই মানুষটার অস্তিত্ব এখননো বিদ্যমান।
.
মানব জীবন মানেই একদলা হাড় মাংসের স্তুপের মাঝে আত্না নামক ফিলোসফির উন্মেষ না,জীবন মানে কিছু অনুভূতির সংকোলন,কিছু চিন্তা ধারার উন্মেষ,একটা কৌতুহলী মন,নিজেকে জানতে চাওয়ার আকুলতা,মানবসভ্যতায় নিজের কিছু অবদান রেখে যাবার প্রত্যয়।নইলে সময়ের মহাকালে ক্ষনিকের আভাস এই মানবজীবন আসলেই মূল্যহীন।
.
তাই আমরা আমাদের নিয়ে ভাববো,আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে ভাববো।নতুন শিশুর কৌতুহলী মন আমাদের সুন্দর ভাবনা গুলো দিয়ে ভরিয়ে দেবো।তাদের সৌন্দর্যতাবোধ শেখাবো,ভাবতে শেখাবো।
যেনো ছোট্ট শিশুটা বাবার পকেটের বা মায়ের হ্যান্ড ব্যাগের একশো টাকার নোট টার দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে নয়,বরং পথের ধারের ফুলে ভর্তি কৃষ্ণচূড়া গাছটার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×