তোমার জন্য কিছু অর্কিড এনেছিলাম।
সাদা অর্কিড।
কিন্তু দিইনি তোমাকে, যদিও
আমার হাতে অর্কিডগুলো তুমি দেখেছ-
কোলের উপর, হাতের আড়ে পড়েছিল তারা।
হয়ত বুঝেছ, হয়তবা বোঝোনি সেগুলো কেন।
অনেকবার দিই-না দিই করে শেষ পর্যন্ত
আমি হেঁটে চলে এলাম।
ফিরে এলাম আবার আমার একলা ছাদে।
কেন দেব ওসব তোমাকে.....?!
আবার ওসব ফুলের কারবার.....
না।
জানো,
ও কে আমি কোচড়ভর্তী শিউলী দিয়েছিলাম,
ফরমায়েশী মালাও গেঁথে দিয়েছি।
আরও দিয়েছিলাম গন্ধরাজ, দিয়েছিলাম বেলী, দিয়েছিলাম জবাও-
রক্তজবা!
এখন আমি ফুল কুড়ানো বন্ধ করে দিয়েছি।
কতজন্মের অবসাদ এই মেরুদন্ডে...ফুল কুড়ানোর শক্তি তিরোহিত।
আমি ভুলে গেছি ফুলের গন্ধ নেয়া।
আমি এখন পৃথিবীজোড়া ন্যাড়াগাছ দেখি-
রুক্ষ, পাতাঝরা, মৃত্যুন্মোখ গাছ।
অথচ, যখন আমি আর ও পুষ্প-চন্দনে মাখামাখি তখন
আমার ঘরের উনুনেই আগুন ছিলনা।
ঝড়ে, কম্পনে আমার শনের ঘর এখনও যেমন কেঁপে কেঁপে ওঠে, তখনও কাঁপত।
ফুলকেলীতে মশগুল থাকলে কি আর অতশত ভাবা যায় আর???
আমি এখন আমার ঘরে দুয়ার দিয়ে বসে থাকি।
বন্ধ জানালার ওপাশে ঝড়ের কি তান্ডব!!
যেন অস্তিত্বটুকুও উড়িয়ে নিয়ে যাবে!!
আমি
হাঁটুতে মুখ ঢেকে বসে থাকি, একলাই।
কিছু করবার নেই বলেই গুণি ঝড়ের প্রতিটা নিঃশ্বাস,
কম্পনের প্রতিটা দোল।
বড় যন্ত্রণা হয়...! ভয় হয়...! ক্রোধ জাগে....!
নির্মম ক্রোধ.....!
প্রলয় হতে ইচ্ছে হয়......!
ব্রহ্মান্ড ধুলিস্যাৎ করে দিতে ইচ্ছে হয়.....!!
দরজার ওপাশেই তোমার আর তোমাদের মশাল মিছিল।
আমি স্লোগান শুনতে পাই।
এত তান্ডবের মধ্যেও, প্রাণের সে ডাক আমার কানে পৌছায় বৈকী..
কিন্তু আমি যাব না!!
আমি আর যাবনা মিছিলে......!
তোমার জন্য আমি সাদা অর্কিড এনেছিলাম, সেগুলো থাক, কিন্তু
আমি আর দেবনা স্লোগান!!!
তুমি ভাল থেক।
মিছিলেই থেক।
জান তো,
আমি স্লোগান বড় ভালবাসি....................................................................?