পৃথিবীর বর্তমান জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারে প্রতি বছর পৃথিবীর জনসংখ্যার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বৃটেন, সুইডেন এবং ডেনমার্কের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি শিশু। অতিরিক্ত এক প্রজন্মের পৃথিবীতে থাকা বা দেরি করা মানে প্রায় ৩০০০০০০০০০ অতিরিক্ত জনসংখ্যা। প্রত্যেকেরই প্রয়োজন খাদ্য, বাসস্থান, পরিষ্কার পানি, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুবিধা এবং একটি বাসযোগ্য পরিবেশ।
পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি
১ বিলিয়ন (১৮০২ সালে)
১২৫ বছর পর ....
২ বিলিয়ন (১৯২৭ সালে)
৩৪ বছর পর ....
৩ বিলিয়ন (১৯৬১ সালে)
১৩ বছর পর ....
৪ বিলিয়ন (১৯৭৪ সালে)
১৩ বছর পর ....
৫ বিলিয়ন (১৯৮৭ সালে)
১২ বছর পর ....
৬ বিলিয়ন (১৯৯৯ সালে)
৭ বছর পর ....
৬.৫ বিলিয়ন (২০০৬ সালে)
১৮০০ সাল ১ বিলিয়ন
পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবের পর থেকে জনসংখ্যা ১ বিলিয়নে পৌছতে ১৮০০ সাল পর্যন্ত লেগেছে। এ সময় শিল্প বিপ্লবের যন্ত্রপাতির খটখট শব্দ, বাষ্প আর ধোয়ার মধ্য দিয়ে জন্ম হয় আধুনিক পৃথিবীর। এ সময়েই প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়, রেলওয়ে চালু হয় আর মানুষ রোগকে জয় করা শুরু করে।
১৯০০ সাল ১৬৫০ মিলিয়ন
বিংশ শতাব্দীর ঊষালগ্নে পৃথিবীকে ১ হাজার ৬৫০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য যোগাতে হতো। এ সময় মোটরগাড়ি আবিষ্কার হয় এবং প্লেন আকাশে উড়া শুরু করে। আধুনিক প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়া শুরু করে ফলে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে মানুষের গড় আয়ু। এ সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা এতো বেশি বাড়তে থাকে যা আগে কখনো হয়নি।
১৯৭৬ সাল ৪ বিলিয়ন
এ সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা ৪,০০০ মিলিয়ন বা চার বিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়। খুব দ্রুত এই জনসংখ্যা বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাহিদার কারণে বিভিন্ন অনবায়নযোগ্য (নন রিনিউয়েবল) জ্বালানির ব্যবহার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ফলে পৃথিবীর চেহারা পাল্টে যায়। বিপুল এই পরিবর্তনে যে পরিমাণ সম্পদের প্রয়োজন হয় তা দিয়ে প্রায় এক লাখ রোমান সাম্রাজ্যের খরচ জোগানো যেতো।
এ সময়ের পৃথিবীর প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়ায় অনুন্নত দেশগুলোর দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং উন্নত দেশগুলোর ভোগ-বিলাস বৃদ্ধি। ফলে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক দম্পতি পরিবার পরিকল্পনার কোনো সুযোগই পায় না।
১৯৯৯ সাল ৬ বিলিয়ন
পৃথিবীর জনসংখ্যাকে ছয় বিলিয়নে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়নি। গত ১২ অক্টোবর ১৯৯৯-এ তা অতিক্রম করেছে ৬,০০০ মিলিয়নের (বা ছয় বিলিয়ন) মাইলফলক। জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনান এদিন রাত ১২টা ২ মিনিটে পৃথিবীর ছয় বিলিয়নতম শিশুটিকে জন্ম দেয়ার জন্য বসনিয়া সারায়েভোর ফাতিমা নেভিক এবং তার স্বামী জাসমিনকোকে অভিনন্দন জানান।
২০০৬ সাল ৬.৫ বিলিয়ন
পৃথিবীর জনসংখ্যা সাত বিলিয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। জাতিসংঘের হিসাবে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৬-এ পৃথিবীর জনসংখ্যা ৬.৫ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে।
ভবিষ্যৎ পৃথিবী
পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির এ হার কমবে না অদূর ভবিষ্যতে। বিশেষ করে আফ্রিকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে অত্যন্ত বেশি।
পৃথিবীর সব মানুষ যদি এই মুহূর্তে রিপ্লেসমেন্ট ফার্টিলিটি গ্রহণ করে বা দুটি করে সন্তান নেয়া শুরু করে তাহলেও পৃথিবীর জনসংখ্যা স্থিতিশীল হতে সময় লাগবে আরো কমপক্ষে ৬০ বছর। এই ৬০ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর জনসংখ্যা বেড়ে আট বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। রিপ্লেসমেন্ট ফার্টিলিটি যদি ২০২০-২৫ সালে শুরু হয় তাহলে পৃথিবীর জনসংখ্যা বেড়ে প্রায় ১১ বিলিয়নে পৌছাবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১০:৩৯