জ্বী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি সত্যিই জানেন না একটি দেশ কিভাবে চালাতে হয়। আপনি এর আগেও যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন (৯৬-০১) তখন আমরা দেখেছিলাম আপনার মন্ত্রীসভার ক্ষমতার অপব্যবহার। এর পরে আমরা দেখেছিলাম আপনার এমপি'রা কিভাবে নিজেরাই অস্ত্র হাতে রাস্তায় নেমে গিয়েছিলো। ক্ষমতায় থাকুন আর না থাকুন, আপনার মন্ত্রীসভার পুরাতন এবং নতুন কম বেশী সবাই নিজ নিজ দোষে দোষী।
আপনি আবার যখন ক্ষমতায় আসলে তখন মন্ত্রীসভায় বেশ বড় রকম রদবদল করলেন; এবং নতুন অনেক শিশুকে মন্ত্রীত্বের স্বাদ দিলেন। কিন্তু আমরা কি বুঝতে পেরেছিলাম যে কোন মন্ত্রীর নিজ থেকে কিছু করার ক্ষমতা নেই যতক্ষন না আপনি ইশারা (!) করছেন! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি একজন খুনী। আপনার সময়ে হাজারে হাজারে সাধারন মানুষ মারা গিয়েছে। আপনার সময়ে সাগর-রুনী হত্যাকান্ড বেশ বড়সড় মিডিয়া-ফিল্ম দেখেছি আমরা; আমরা দেখেছি আপনি কিভাবে মানুষ হত্যা নিয়ে খেলে থাকেন। আমরা এও জেনেছি যে আপনি সাধারন মানুষের বেডরুমের সিকিউরিটি দিতে পারেন না বা দেন না। আপনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রলায়ের ব্যার্থতার দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে মাননীয়। সেই দায়ের ভারেই কিনা আপনি সম্প্রতি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রলায় থেকে সরিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীসভার দায়িত্ব দিলেন! আমরা কি এখন ধরে নিবো যে আমাদের পরিবাররা এখন থেকে কোন ফোন বা চিঠি সময়মতো পাবেনা! নাকি আমরা ধরে নিবো মানুষ হত্যার জন্য এখন থেকে চিঠির ভেতর বোমা ভরে দেয়া হবে? বলুন প্রধানমন্ত্রী, আপনি আর কিভাবে আমাদের মারতে চান?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি একজন মিথ্যুক। হ্যাঁ, রাজনীতি খেলায় ভালোমতো খেলার জন্য আপনাদের ক্রমাগত মিথ্যে বলতে হয়। আমরা শিখে গেছি প্রধানমন্ত্রী, কিভাবে আপনাদের মিথ্যে কথা ধরে ফেলতে হয়। নাহলে আমরা কিভাবে জানি যে আপনি যুদ্ধপরাধী বিচারের নামে প্রহসন চালাচ্ছেন? নাহলে কিভাবে বুঝি আপনি ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তা আসলে মিথ্যে বাগাড়াম্বর? ২৯৪৪ মেগাওয়াট যুক্ত করার কথা থাকলেও আপনি প্রথম তিন বছরে মাত্র ১৪১৭ মেগাওয়াট যুক্ত করে আমাদের আশ্বাস দিচ্ছেন যে আমাদের দেশে বিদ্যুত সমস্যা প্রকট নয়! মাননীয়, আপনি কি জানেন, আমাদের কত ঘন্টা লোডশেডিং এ থাকতে হয়? আচ্ছা, আপনার বাসায় কি লোডশেডিং হয়? অথবা আপনার মন্ত্রীসভার কোন মন্ত্রীর বাসায়?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি একজন চোর। আপনার সময়ে হলমার্ক কেলেঙ্কারীতে কয়েক হাজার কোটি টাকা চুরীর খবর পড়ি আমরা। কুইক রেন্টাল কেলেঙ্কারীর কথা কি ভুলে গিয়েছি আমরা! নাকী আমাদের মনে নেই যে আপনার গোচরে ফার্নেস তেল পাচার হয়ে যাচ্ছে? ভর্তুকির টাকা কোথায় যায় প্রধানমন্ত্রী? ভর্তুকির টাকা আসলে কার পকেট থেকে আসে বলতে পারবেন? আহ, সুরঞ্জিত বাবুর নাম শুনলেই তো রেল বিভাগের কথা মনে পড়ে যায়। প্রধাননমন্ত্রী, আপনার কি কিছু মনে পড়ে? ডাক টেলিযোগাযোগ নিয়ে কিছু কথা বলি, ম্যাডাম? ২০০৯-১০ এবং ২০১০-১১ অর্থ বছরে এই ডিপার্টমেন্ট এর আর্থিক লোকসানের পরিমান যথাক্রমে ১৯৪ কোটি ৪৩ লাখ এবং ২১১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। কি ভাবছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
এমনিভাবে আপনার সকল সরকারী ডিপার্টমেন্ট এর অবস্থা নাজুক। আপনি কি করেছেন গত (প্রায়) চার বছরে ম্যাডাম? হ্যাঁ, আপনি আপনার মন্ত্রী/এমপিদের (অথবা নিজের) দোষ ঢাকতে গিয়ে বড় বড় কথা বলেছেন। আপনার কথা শুনে আমাদের হাসি এসেছে, আমরা অতিব দুঃখে হেসেছি। কারন এছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই, ম্যাডাম। আমরা দেশবাসী আপনি ও আপনার রাজনৈতিক দলের কাছে এক প্রকার বন্দী। নাহলে ফেসবুক/ব্লগে কিছু বলার স্বাধীনতায় আপনি কিভাবে সময়ে সময়ে হস্তক্ষেপ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? আপনি কি ভীত? হয়তোবা।
আপনি যদি আমাকে চিনে থাকেন প্রধানমন্ত্রী, তাহলে আপনি জানেন আমার কথার প্রেক্ষিতে আমি কয়েকশো লিঙ্ক সরবরাহ করতে পারি। কিন্তু তাতে কি কোন লাভ হবে, ম্যাডাম? গুগলে আপনার নাম দিয়ে সার্চ দিলে খুব ভাল কিছু আসেনা, প্রধানমন্ত্রী। আপনার দেশ চালানোর অপটুতায় আমরা হতাশ। চরমভাবে হতাশ। দয়া করে আপনি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাড়ান। আমাদের রেহাই দিন। আমরা বাঁচতে চাই। দেশের সাধারন জনগন আজ বাঁচতে চায় আপনার খেলা থেকে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। দয়া করে আমাদের কথা শুনুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৪৬