সদ্য পদত্যাগকারী নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা রেবেকা ব্রুকসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডে থাকাকালীন পুলিশের ফোন হ্যাকিং, ঘুষ লেনদেন, দুর্নীতির চক্রান্তকারী হিসেবে সন্দেহভাজন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ রোববার লন্ডন পুলিশ তাকে ডেকে নেয়। তিনি লন্ডন পুলিশের হেফাজতে আছেন।
৪৩ বছর বয়সী রেবেকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের ফোন হ্যাকিংয়ের ঘটনায় চলমান সংকটে চাপের মুখে গত শুক্রবার পদত্যাগ করেন। ২০০০-২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ট্যাবলয়েড সাপ্তাহিক নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের সম্পাদক ছিলেন, যখন হত্যাকাণ্ডের শিকার মিলি ডওলারের ফোনে আড়ি পাতা হয়।
বিবিসির বাণিজ্যিক সম্পাদক রবার্ট পেস্টন বলেছেন, নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেবেকার গ্রেফতারের ব্যাপারে সচেতন ছিল না। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও গর্ডন ব্রাউনসহ ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে রেবেকা ব্রুকসের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে এসব ঘটনায় তার ভাবমুর্তি কিছুটা হলেও বিপন্ন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এমন হেনস্থা হওয়ার এ চিত্রটি নতুন নয়। রাষ্ট্রযন্ত্র যুগে যুগে এমনটাই করে এসেছে। তবু প্রতিবেদন দুটি পড়ার পর আবারো মনে একটি বাক্য আসল- 'আহারে সাংবাদিকতা; হায়রে অনিশ্চয়তা'। ওহ; প্রথম নিউজটা তো বলাই হয়নি। এবার শিরোনামসহ ওই প্রধান প্রতিবেদনটি তুলে দিচ্ছি ::
দুর্নীতিবাজরা ঐক্যবদ্ধ: শীর্ষ কাগজ ও শীর্ষ নিউজ বন্ধের ষড়যন্ত্র
পাঠক নন্দিত অনলাইন নিউজ সার্ভিস শীর্ষ নিউজ ডটকম এবং সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আজ রোববার সচিবালয়ের বিভিন্ন স্থানে শীর্ষ কাগজের প্রকাশনা বন্ধ এবং সচিবালয়ে সম্পাদকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়ে ব্যানার টাঙানো হয়েছে।
সচিবালয় হচ্ছে সরকারের স্পর্শকাতর স্থান। সরকারের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়া সচিবালয়ে যেকোনো পোস্টার, ব্যানার বা লিফলেট লাগানো নিষেধ। এখানে ২৪ ঘণ্টার সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর নাকের ডগায় দুর্নীতিবাজরা ব্যানার টাঙানোর ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। শীর্ষ কাগজের বিরুদ্ধে অতীতেও বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) খাইরুল ইসলাম মান্নান এবং পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের যোগসাজশে চক্রটি শীর্ষ কাগজ ও শীর্ষ নিউজ ডটকমের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। সচিবালয়ে এ ধরনের ব্যানার দেখে সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যেই নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দুর্নীতি ফাঁস করে দেয়ায় দুর্নীতিবাজ চক্র শীর্ষ কাগজের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে বলে অনেকের অভিমত। তাদের মতে এ চক্রের অপকর্মের দায় সরকার কেন নিতে যাবে?
সরকার তথ্য অধিকার আইন করে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতিবাজরা সরকারের মধ্যে থেকে সংবাদ মাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরতে চাচ্ছে। নিজেদের দুর্নীতির দায় সরকারের উপর চাপানোর কৌশল অবলম্বন করেছে। এরা এখন ঐক্যবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রীর এপিএস খাইরুল ইসলাম মান্নানের নারী কেলেঙ্কারি ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদের দুর্নীতি নিয়ে শীর্ষ কাগজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তারা জোট বেঁধে শীর্ষ কাগজ ও শীর্ষ নিউজ ডটকমের সম্পাদক মো. একরামুল হকের উপর হামলার একাধিক চেষ্টা চালায়। এছাড়া শীর্ষ কাগজ ও শীর্ষ নিউজ ডটকমের সম্পাদককে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে।
গত ৩ জুলাই সচিবালয়ে মেহেরুন নেছাকে দিয়ে হামলার চেষ্টা চালানো হয়। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একই ধারাবাহিকতায় আজ শীর্ষ কাগজের প্রকাশনা বন্ধের হুমকি দিয়ে সচিবালয়ে ব্যানার টাঙানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজ ও শীর্ষ নিউজ ডটকমের সম্পাদক মো. একরামুল হকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। এখন তারা মাঠে নেমেছে শীর্ষ কাগজ ও শীর্ষ নিউজ ডটকম বন্ধের ষড়যন্ত্র নিয়ে।