নীলক্ষেত থেকে ফিরছিলাম। হাটতে তেমন মন্দ লাগেনা কখনোই। উত্তপ্ত রোদ্দুরটা একটু ডিস্টার্ব করছিল এই যা।
বলাকার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকগুলো স্টুডেন্ট দেখলাম পুরো রাস্তা দখল করে হাটছে। ভেবেছিলাম ঢাকা কলেজের ছেলেরা, তাই পাশ কাটিয়ে অন্য পাশে চলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কি যেন মনে করে ওদের পেছনে পেছনেই হাটতে লাগলাম।
যা বুঝলাম তা হল, ছেলেগুলো ঢাকা কলেজের না, অন্য কোথাও পড়ে হয়ত। নীলক্ষেত থেকে বই কিনে ফিরছিলো, দোকানীকে খিস্তী দিয়ে অল্প দামে নিয়ে এসেছে এই নিয়ে হাসাহাসি করছিল ওরা। ভালই লাগছিল ওদের কথাগুলো শুনতে।
পিচ্চি ছেলেগুলো সিগেরেটের ধোয়া উড়িয়ে নিজেকে কুল কিংবা থাগ উপস্থাপন করার চেষ্টায় মত্ত তারা।
কাহিনী শুরু করল এরপর থেকে, কথার সুর পরিবর্তন হয়ে মেয়েদের সম্পর্কিত কোন দিকে মোড় নিল। কিছুক্ষণ পর শুধু কথা নয় বরং কাজে মোড় নিল। যত মেয়ে ওদের ক্রস করছে সবাইকেই কিছু না কিছু শুনিয়ে দিচ্ছে ফ্রিতে।
মাঝবয়সী এক মহিলা প্রতিবাদ করেছিল, তাকে বলা হয়েছিল আন্টি, আপনার বাস ছেড়ে দিচ্ছে, তাড়াতাড়ি উঠেন নয়ত জায়গা পাইবেন না।
ভদ্রমহিলা ৩০-৪০ সেকেন্ডের মত চেষ্টা করেছিল। সংখ্যায় ওরা প্রায় ৮-১০জন। আমার গায়ে সাদা শার্ট থাকার কারনে ভদ্রমহিলা ধারনা করেছিলেন আমিওও ওদের সাথে। যাওয়ার সময় একটা কথাই বলেছিলেন উনি যা এখনো কানে বাজে।
'আমি দুয়া করি, তোমাদের প্রত্যেকের যেন মেয়ে হয়, আর প্রত্যেকটা মেয়েকে যেন তোমাদের সামনে বসেই তোমাদের মত ছেলেরা উত্তক্ত করে। তোমরা তখন মজা নিও ভাল করে।'
কথাটার প্রতুত্তরে দাত কেলানো আওয়াজ বের হলেও আমার শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেল। একদিন সবাইকেই বাবা হতে হবে। কারো পরিচয় হবে উত্তক্তের শিকার মেয়ের বাবা, কারো পরিচয় হবে উত্তক্তকারী ছেলের বাবা।
একদিন সবাইকেই বাবা হতে হবে.।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮