somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাগুবন্দনা (ছাগুদের অধিকার আদায়ের গল্প)

১৯ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৩:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জগৎসংসারের যেদিকেই তাকাই সবখানেই দেখি গরুর জয়জয়কার। সবাই খালি গরু নিয়াই মাতামাতি করে। গরু লইয়া রচনা লিখতে লিখতে পুলাপাইনের আঙ্গুলের চিপায় ফোসকা পইরা যায়। এমনকি শরৎচন্দ্র মামাও গরু লইয়া মহেশ লিখা থুইসে। টিভি চ্যানেলে গরুর দুধের বিজ্ঞাপনে গরুদের দিয়া মডেলিং করানো হয়। এমনকি সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেইকাও মডেল হিসাবে কাউ আমদানি করা হইতেসে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে গরুর দুধের ঝাকানাকা চায়ের দোকান।


চকলেটের বিজ্ঞাপনগুলাও গরুদের পুরা কন্ট্রোলে। গরুর জনপ্রিয়তার বানে হারিয়ে গেছে আমাদের আবহমান গ্রামবাংলায় অনাদরে বেড়ে উঠা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলদের (সংক্ষেপে ছাগু) জীবনের আত্মকথা, তাদের ছোট ছোট সুখ-দুঃখ, হাসি কান্না, মান-অভিমান, প্রেম, ভালুবাসা, বিরহ, সাহিত্য, দাবি আর অধিকারের কথা। যুগ যুগ ধরে ছাগুরা হয়ে এসেছে অবহেলিত, হয়েছে প্রবঞ্চনার শিকার। যুদ্ধঅপরাধী শুকরছানাগুলো বারবার নিয়েছে তাদের সরলতার সুযোগ।


তাইতো কবি বলেছেন,
"এই যে জাতির অনাদরে ক্লিষ্ট ছাগুগুলি
পেটে নাই দানাপানি সারাগায়ে ধুলি
এদের ফেলে ওগো নিজাম ওগো শান্তি-মাতা
কেমন করে রচে মুখে কাঁঠাল গাছের পাতা"


কাহিনি-১
প্রাইমারী স্কুলগুলোর বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নিম্নপর্যায়ে নেমে গেছে। একশ্রেণীর গরুপ্রেমী শিক্ষকদের তাণ্ডবে শিক্ষার্থীরা অন্যান্যসব প্রাণী, জেমন-ছাগু, কুত্তা, বিলাই এদের সম্পর্কে খুব একটা জানতে পারছে না। শিক্ষকরা সংবিধান লঙ্ঘন করে শিক্ষার্থীদের গরু রচনা মুখস্ত করতে বাধ্য করছেন। প্রিয় প্রাণী ছাগু হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষকরা মারধরের ভয় দেখিয়ে কোমলমতি শিশুদের গরুচর্চায় বাধ্য করছেন। এই বিষয়ে ঢাকা শহরের একটি স্বনামধন্য বালিকা বিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া এক সুন্দরী মিসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি "নো কমেন্টস" বলে দৌড়ে পালিয়ে যান। আমি সাথে সাথে তাকে ফলো করি। করিডোরে এসে দেখি কেউ নেই। হঠাৎ ডানপাশের বাথরুম থেকে খিলখিল হাসির শব্দ শুনতে পাই। বাথরুমের ভিতর প্রবেশ করতেই একরাশ সিল্কি চুল আমার চোখে এসে পড়লো। তীব্র প্রস্রাবের গন্ধের মাঝে প্যারাসুট মার্কা নারিকেল তেলের গন্ধে আমি মাতোয়ারা হয়ে যাই। মনের অজান্তে মুখ দিয়ে "হাম্বাআআ" ডাক বের হয়ে আসে। সাথে সাথে রমণীর উষ্ণ ঠোঁটের সিক্ত স্পর্শ পাই। আমার পার্সোনাল চারাগাছ যখন বৃক্ষ হবার তাগিদ দিল, তখনই নিজের ভুল বুঝতে পারলাম। ছাগুদের অধিকার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এ আমি কি করতে চলেছি। ঘাতবল ইউজ কইরা কসাইয়া এক চড় বসিয়ে দিলাম টিচারনীর লাল টুকটুকে গালে। ডায়লগ মারলাম,
"বাথরুমে সুন্দর ছেলেপেলে দেখলে মাথা ঠিক থাকেনা না। তোমাদের মতো বেহায়া মেয়েদের কারণে পুলারা ইজ্জতলেস হয়ে যায়। এই জীবনে যদি আর কোনদিন এমন কাহিনী করতে দেখি তাহলে...।"
মেয়েটি কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রাখল, তারপর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো। কান্নার ফাঁকে ফাঁকে তার কথা থেকে যা বুঝতে পারলাম, তাহল মেয়েটির নাম আনিতা, সে পরিমলের ছোটবোন। তার ভাইয়ের কুকামের জন্য তার বিয়েশাদী হচ্ছেনা। একদিকে সুউচ্চ হিমালয় পর্বতমালা, অন্যদিকে রহস্যময় সুড়ঙ্গের ছোঁয়া। আমার কান ঝাঁঝাঁ করতে লাগলো। আমি...
(এই কাহিনীর বিস্তারিত আপডেট পেতে গোপনে যোগাযোগ করুন)

কাহিনি-২
বিগত একদশক ধরে ছাগুরা মিল্কভিটা কোম্পানির বিপক্ষে আন্দোলন করে আসছে। নিয়মিত মানববন্ধন আর উপাস থেকেও যখন কোন সুফল পাওয়া গেলনা না, তখন ছাগুনেতা, কমরেড ঘুজামী অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।


দলে দলে ছাগুরা রাজপথে নেমে আসে। বাস ভাংচুরের পাশাপাশি ৬১জেলায় একসাথে গরুর খামারে তারা বোমাবিস্ফোরণ ঘটায়।

কাহিনি-৩
কিছুদিন আগে এক মহান ছাগুনেতা ঘাইদী বাংলা সাহিত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। এই সময় তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেন।


তিনি বলেন,
"শরৎচন্দ্রকে আমি লেদাকাল থেকেই চিনি। তাদের বাড়ির পিছনেই তো আমি আমার গুটি লেদাইতাম। অরে দেখলেই ম্যা ম্যা কইয়া ডাকতাম। তারপরেও অকৃতজ্ঞ হালায় কালা লেঞ্জার মহেশরে নিয়া গপ্পো বানাইসে। রাতারাতি মহেশ চুপারস্টার হইয়া যায়। আর আমি আজিবন লেদাইয়াই গেলাম, তারপরেও কিছু হইতে পাড়লাম না...।"
লেদাকালের কাহিনী বলতে গিয়ে ঘাইদির চোখ ছলছল হয়ে ঊঠে, এবং মিডিয়ার সামনেই তিনি লেদানো শুরু করেন।

কাহিনী-৪
জোট সরকারের আবির্ভাবে ছাগু-ছাগীদের দাম্পত্য জীবনে দুর্ভোগের পাহাড় নেমে আসে।


ওয়ান ইলিভেনের পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাগুদের কারাবন্দী করে। সেখানে তাদের উপর চলে পাশবিক অত্যাচার। পাছার কাপড় তুইলা বেদম পিটুনি দিয়েও পুলিশের মনে শান্তি আসেনা।


অতঃপর ছাগুদের আবুগারিব কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। গোপন অপারেশন থিয়েটারে ছাগুদের বিচি ফেলে দিয়ে সেখানে রসুনের কোয়া ভরে সেলাই দেয়া হয়। যার ফলে ছাগুদের দৈহিক সাধনা জনমের তরে ওফ হয়ে যায়, ইসরাইল ও বিভিন্ন এডুকেশনাল ওয়েবসাইটে শোকের মাতম বয়ে যায়।

কাহিনি-৫
বোকাসোকা পাবলিক পেলেই ছাগুছানারা তাদের পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।


তারপর তাদের পশ্চাৎদেশে পাকিস্তানি লেদা প্রবেশ করায়। ভিকটিমরা তাদের মানসিক ব্যালেন্স হারিয়ে নিজেকেও ছাগু ভাবা শুরু করে। যেখানে সেখানে লেদাইয়া পরিবেশ দূষণ করে।


কুকুরছানাকে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছেন ২জন ছাগুবিদ্বেষী।

কাহিনি-৬
হাতে কি বল দেখি। কি কি? চকলেট মিষ্টি? না, দুধ!
এমন বহু লোভনীয় পন্যের বিজ্ঞাপন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বাছুরছানারা।


তাই সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিজেদের স্থান করে নিতে ইসরাইলের ডাকে ঝাঁপিয়ে পরেছে অগনিত ছাগুছানা। উপরের ছবিটি দেখুন।

কাহিনি-৭
জোট সরকারের মাস্টার পিলানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্তিলিজেন্সের সিপাহসালা অয়ান ম্যান আর্মি মাসুদ রানা গণহারে ছাগুহত্যা শুরু করেন।


ইসরাইল এই গণহত্যার তীব্রনিন্দা জানায় এবং লাগাতার এক মাস শোক দিবস পালন করে। (তথ্যসুত্র দৈনিক মগবাজার)


উপরের ছবিটি দেখুন।
ইয়েস, আপনি চিনতে পেরেছেন।
ইনি মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) রাহাত খান।

কাহিনি-৮
ছাগুদের অধিকারের জোরদার দাবি নিয়ে ইসরাইলে ছাগু দিবস পালিত হয়।


উপরের ছবিতে, ছাগুদের নিয়ে লেখা গান "দিল তো ছাগু হে, দিলদিওানা হে" পরিবেশন করে শোনাচ্ছেন জনৈক ছাগুস্টার।

যুগে যুগে আমাদের বড় দুইটি রাজনৈতিক দলের মতভেদকে পুঁজি করে ছাগুছানারা দেশে আকাম কুকাম করে বেরাচ্ছে। প্রশ্রয় দিয়ে নিজের মাথায় উঠানো বন্ধ করুন, নতুবা মাথাই নোংরা হবে।

ছাগুদের সব আকাম কুকামের টাইমলাইন :



ছাগুছানাদের এসব আকাম বিষয়ে যখন এক ছাগুনেতাকে প্রস্ন করা হয় তিনি কৌশলে টপিক অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বলেন,
"...গরুর গোবর নাকি হেভি জিনিস। বহুত কামে লাগে। যে গোবরের উপর পা দিয়া কখনো ঠ্যাং ভরায় নায় সে আসল মর্ম কেমনে বুঝবে? যেইখানে চান্স পায় সেইখানে গরু এইসব আকাম বান্ধায়। অন্যদিকে ছাগুদের দেখেন কি সুন্দর ছোট ছোট নাইট্রোজেন জাতীয় পদার্থ ত্যাগ করে, সহজেই মাটির লগে মিশা যায়।গরু বহুত পাজি প্রাণী। সবসময় দড়ি দিয়া বাইন্ধা থোওন লাগে। এর লাইগাই, এর জেলার নাম হইসে, গাইবান্ধা।


আবার ছাগুপাল খুব নীট এন্ড ক্লিন থাকে, কেয়া সুপার বিউটি সোপ দিয়া ঘইসা ঘইসা গোসল করে। চিরুনি দিয়া দাড়ি আঁচড়ায়। এই কারণে যুবসমাজে ছাগইল্লা দাড়ির ফ্যাশন এতো জনপ্রিয়। ছাগলনাইয়া এলাকার ছাগলগুলা তো আরও ইস্টাইলিশ। এরা গোসলের পরে পারফিউমও ইউজ করে!

তাই সবাইকে আমি বলি ছাগল আমাদের জাতীয় পশু না হলেও খুব উপকারী একটা প্রাণী। তাই তাদের প্রতি আমাদেরও কিছু দায়িত্ব বর্তায়। ছাগুপাল লেদাইতে পছন্দ করে। লেদানো তাদের জন্মগত অধিকার। তাই, আসুন আমি, আপনি, আপনার গার্লফ্রেন্ড আমরা সবাই ছাগুদের লেদাইতে দেই। আর ছাগু আন্দোলনে ছাগুনেতাদের কাঁঠালপাতা দিয়ে সহযোগিতা করি।

দেশের এখন দরকার সত্যবাদী রাখালবালকের
যে এই বেয়ারা রামছাগলগুলিকে পিটাইয়া
সোজা করে দেশকে বিষাক্ত লেদা থেকে মুক্ত করবে।


পোস্টটি আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:২২
৩৮টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×