শুরুতে তুমি আমার খোঁপায়
শিউলি সাজিয়ে বলেছিলে,
"তোর মেঠোপথের সিঁথিতে,
শিমুল রঙা সিঁদুরকে পথিক সাজিয়ে
আমার অনামিকায় চড়িয়ে ভ্রমণে পাঠাবো।
ঢুকতে দিবি তো আমার অনামিকাকে?"
আমি স্বলজ্জে মাথায় আঁচল টেনে
তোমায় প্রণাম করতে ব্রত হলাম।
তুমি থামিয়ে দিয়ে বললে,
"ও কি করছিস পাগলী?
আমার অমন কুচ্ছিত পায়ে
তোর নরম তুলতুলে হাত ছোঁয়ালে
আমার পাপ হবে যে!"
আমি "যাও!" বলে তোমায় সরিয়ে দিতেই
তুমি বুকের একদম গভীরে টেনে নিলে!
যতটা গভীর হলে
আমি তোমার অস্তিত্বের আস্থা পাবো।
সেখান থেকেই মাঝপথের যাত্রা।
পথটা সোজা কিংবা ঋজু নয়; বন্ধুর।
এরপর কতদিন গেলো!
আমি শিউলি ফুলের অপেক্ষায় থেকেছি।
আমার খোঁপা তো ছাঁই,
শাড়ির আঁচল সরে আসা
উদাম কোমরখানিও
তোমায়
আর আকৃষ্ট করে না।
তোমার মনে আছে?
আমি কৃষ্ণচূড়া কুড়োতে পছন্দ করতাম।
একদিন ডেকে বললে,
"গিন্নি বউদের এত কিসের উঠোনে দৌড়োদৌড়ি?
মালতী তো আছেই সব কাজের জন্য।
তাকে কুড়োতে বোলো।"
আমার খুব হাসি পেয়েছিলো তা শুনে!
মনে হচ্ছিলো,
খিদে পেয়েছে আমার,
আর খেতে দিতে বলছো ঝি কে!
কিন্তু আমি হাসিনি।
বুঝতে পারছিলাম,
আমার মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে।
শেষ দৃশ্যে,
আমার হাসি দেখার অপেক্ষায়
আজ তুমি দাঁড়িয়ে নেই।
ভীষণ ব্যস্ত তুমি।
শুরুতে তোমায় না করতে পারা,
তুলে রাখা প্রণামটা
আজ তোমার ব্যস্ততাকে দিলাম!
আমি তোমায় ছাড়া বাঁচতে শিখে গেছি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৭