somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুহূর্ত কথাঃ ফিরে দেখা

১২ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দিনের একটা উল্লেখ করার মতো সময় ফেসবুকেই কেটে যায়। আমাদের হয়ত যাওয়ার জায়গা কমে আসছে। দিন দিন আমরা ছোট একটা বাক্সে বন্দি হয়ে পড়ছি! সেই সাথে বরণ করে নিচ্ছি স্ট্রেসে ভরপুর জীবন।
একটা সময় ছিল, আমাদের ছোটবেলার কথা বলছি, হতে পারে সেটা আশির দশকের মাঝামাঝি কোনো সময়। মা মাঝেমাঝে এদিক সেদিক ঘুরতে যেত। মায়ের একমাত্র সঙ্গী হিসেবে আমিই তখন টিকে ছিলাম। বোনরা ততদিনে বড়সড় হয়ে গেছে। বাবা কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আমার ঐ বয়সে পড়ালেখায় তেমন ব্যস্ততা ছিল না। তাই মায়ের সঙ্গী হতাম।

মা আমাকে নিয়ে এখানে সেখানে ঘুরতে যেত। মাঝে মাঝে যেত মার্কেটে। সেই মার্কেট আমাদের এখনকার এসিযুক্ত শপিং মল ছিল না। ছোট ছোট মফঃস্বল শহরে গেলে এখনো সেই মার্কেটের সুবাস ফিরে পাই।
ইদানিং ছুটিছাটায় বোনের বাড়ি দিনাজপুরে যাই। সেখানে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া সেই সময়টাকে হুটহাট খুঁজে পাই।
আমাদের পিতামাতা অর্থশালী ছিল না। অল্পস্বল্প টাকায় সাধ আর সাধ্যের মধ্যে টানাটানি করতে করতেই তারা তাদের জীবনের স্বপ্ন দেখার দিনগুলো হারিয়ে ফেলেছিল। বছর শেষে পুরো পরিবার মিলে নানাবাড়ি দাদাবাড়ি ঘুরতে যাওয়াই ছিল আমাদের একমাত্র বাইরে বেড়াতে যাওয়া। এর বাইরে পাড়া প্রতিবেশী আর কালেভদ্রে বাইরে খাওয়া। একেবারেই কালেভদ্রে।
আমরা কি তখন অসুখী ছিলাম? এই প্রশ্ন মাঝে মাঝেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করি। মনের ইতিউতি আলো ফেলে খুঁজতে চেষ্টা করি, কোথাও কোনো অপূর্ণতা ছিল কী না!

আমার মাকেই মাঝে মাঝে আক্ষেপের সুরে বলতে শুনেছি, 'এটা হলে ভালো হতো' 'এই ঈদে তোকে জামা দিতে পারলাম না!' ... কিন্তু মা জানত না, এসব ছোটখাট না পাওয়াগুলো তাকে ভেতরে ভেতরে পোড়ালেও আমাদের এতটুকু আহত করতে পারেনি! ওই অপ্রাপ্তিগুলো ছিল বলেই হয়ত জীবনে একটা উন্মাদনা ছিল, সামনে কিছু একটা করার আশাটা বেঁচে ছিল। যে জীবন সবকিছু এক ক্লিকেই পেয়ে যায়, জানি না সেই জীবনে মানুষ কীসের আশায় পরের দিনের সূর্যোদয়ের অপেক্ষা করে!
আশা থাকে। আশা থাকে বলেই মানুষ বাঁচতে পারে। বিধাতা এক দিকে দিয়ে আরেকদিকে অপূর্ণতা রেখে জীবনের চাকাটাকে চলমান রাখেন।

অন্য একটা বিষয় নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কী বোর্ডে হাত রাখার পরে সে আমাকে দিয়ে এসব কথাই লিখিয়ে নিলো।

একটু আগে ফেসবুকে একজন ডাক্তারের একটা লেখা পড়ছিলাম। অবিবাহিতা দুজন মেয়ে এসেছে তার চেম্বারে। একজন অসুস্থ। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব এসব লক্ষণ। অবিবাহিতা বলে ডাক্তার সরাসরি কিছু জিজ্ঞেস করতে পারছেন না। কিন্তু তিনি ভালো করেই জানেন কী হয়েছে। সনোগ্রামে সেটা ধরাও পড়ল।

সমস্যা হয়ে গেল এবরশনের সময়। ডাক্তার সেটা করবেন না। হাত পা ধরাতে মেয়েটাকে পাশের রুমে পাঠিয়ে দিলেন। মাঝে একটা পার্টিশন দেওয়া পাশের রুমের কথা তিনি পরিষ্কার শুনতে পারছিলেন। এবরশনে তিন হাজার টাকা লাগবে শুনে মেয়েটার সঙ্গে আসা আরেকজন অবিবাহিত মেয়ে বলে উঠল, 'আপনাদের এখানে এত বেশি কেন? গত মাসেই আমি এর চেয়ে কমে করিয়েছি!'

এ যেন অনেকটা এরকম কিছু বলা, 'গত মাসেই তো আমি এর চেয়ে কম দামে কিনেছি। এখন এত বেশি কেন চাইছেন!'


সমাজে গোপন পাপ কী ভীষণ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, আমরা হয়ত তার আসল খবরটাও জানি না!
যখন গোপন পাপ বেড়ে যায়, সমাজটা তখন অসুস্থ হয়ে যেতে শুরু করে। আমাদের এই সমাজটা অনেকদিন ধরেই অসুস্থ হতে শুরু করেছে। ছোট একটা ঘা বাড়তে বাড়তে গ্রাংগ্রিন হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। হাত পা কাটা শুরু হয়ে গেছে।

কোনদিন মাথাটাই কাটা পড়ে, আমরা হয়ত সেই দিনের অপেক্ষা করছি!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×