এক.
ফ্যাশনের ক্যাটওয়াক থেকে টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকা। হ্যাঁ, এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছেন পাকিস্তানের হিজড়া মারভিয়া মালিক। প্রথম কোনো হিজড়া হিসেবে তিনি পাকিস্তানের কোহিনূর টেলিভিশনে সংবাদ উপস্থাপন করেছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পাকিস্তান সহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে যেমন ভারত, বাংলাদেশে হিজড়াদের ওপর আক্রমণ করা হয়। তাদেরকে হত্যা করা হয়। ধর্ষণ করা হয়। যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। নর্তকী বানানো হয়। না হয় ভিক্ষা করতে বাধ্য করা হয়।
দুই.
গুলিতে আহত হবার পর প্রথমবারের মতো নিজ দেশ পাকিস্তানে ফিরলেন নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই।
তখন তার বয়স মাত্র ১১। তখনি তালিবান শাসনে তার জীবন কেমন চলছে তা নিয়ে বিবিসি উর্দু সার্ভিসে লেখা শুরু করেন তিনি।
নারী শিক্ষা ও জঙ্গিদের নিপীড়ন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন তিনি।
তালেবান জঙ্গিরা ২০১২ সালে স্কুল থেকে ফেরার পথে তার মাথায় গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায়। ঐ ঘটনা তাকে বিশ্বজোড়া পরিচিতি এনে দেয়। ভয়াবহ ওই হামলার পরে প্রাণে বেঁচে যান মালালা।
পরে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা নেন এবং পরিবারের সঙ্গে সেখানেই বসবাস করতে শুরু করেন।সুস্থ হওয়ার পর শিশুদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। পিতা জিয়াউদ্দিনের সাথে শিশুদের জন্য কাজ করতে মিলে গঠন করেন মালালা তহবিল।
২০১৪ সালে সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরে পাকিস্তানে এখনো সক্রিয় আছে তালিবান।
স্কুল ও কলেজে অনেকগুলো হামলার জন্য তাদেরকেই দায়ী করা হয়।
মালালা বহুবারই পাকিস্তানে ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন বিশেষ করে তার এলাকা সোয়াতে- যেটি তার ভাষায় “পৃথিবীতে একটি স্বর্গ”। কিন্তু পাকিস্তান ধর্মীয়ভাবে চরম রক্ষণশীল একটি দেশ।
তিন.
বিউটির লাশটা যেখানে পড়ে ছিল তার চারপাশে সবুজ ঘাস, আর বিউটির গায়ে লাল জামা। সবুজের বুকে লাল, যেন প্রিয় স্বদেশের প্রতিচ্ছবি! ধর্ষিতা বিউটি বিচার পায়নি, তাই তাকে পুনরায় ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে। স্বাধীনতার মাসে যখন উন্নয়নশীলতার উৎসব করছি আমরা তখন বিউটির এ ঘটনা বড্ড বেমানান।
চার.
সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে রাজনীতি, ব্যবসা, শিল্প-সংস্কৃতির জগতের বেশ কয়েকজন শীর্ষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন অত্যাচারের অনেকগুলো ঘটনা প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন বেশ কয়েকজন নারী এবং পুরুষ। হলিউডের শীর্ষ একজন প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল নীরবতা ভাঙার পালা।
বিভিন্ন পেশায় যৌন নির্যাতনের বা হয়রানির প্রতিবাদে ‘মি টু’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে জনপ্রিয় ক্যাম্পেইন চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বাংলাদেশেও অভিযোগ উঠেছে যে, পারিবারিক পরিবেশ, শিক্ষাক্ষেত্র, কর্মক্ষেত্র কোনো অঙ্গনেই নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা থেমে নেই।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্র বলছে, ২০১৭ সাল জুড়ে ধর্ষণের ঘটনার সংখ্যা যেমন বেড়েছে, সেই সাথে বেড়েছে যৌন সহিংসতায় নিষ্ঠুরতা ও ভয়াবহতা।
কিন্তু বাংলাদেশে কেন জোরালোভাবে গড়ে ওঠেনি কোন ক্যাম্পেইন?