somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিখ্যাত একটি উপকথা “পশু বিদ্যালয়”।

৩০ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্ববিখ্যাত একটি উপকথা “পশু বিদ্যালয়” লিখেছেন শিক্ষাবিদ ডক্টর আর. এইচ. রিভিস। এখানে তিনি ভিন্ন ভিন্ন গুণাবলির গুরুত্বের মূল্যায়ন সম্বন্ধে চমৎকার ভাবে তুলে ধরেন। আমরা একটি সমাজে বাস করি। এখানে অনেক পুরুষ এবং নারী রয়েছে, যাদের চিন্তা একে অপরের থেকে ভিন্ন হতে পারে। একজন পুরুষের গুণাবলি অপর পুরুষের গুণাবলি থেকে ভিন্ন হতে পারে। এই ভিন্ন ভিন্ন গুণাবলিকে আমাদের বুঝতে হবে যে আমার নিজের গুণাবলি থেকে অন্য একজনের গুণাবলি ভিন্ন হতে পারে। এই চিন্তা করার মতন সক্ষমতা তৈরির জন্য আমাদের আজকের এই উপকথা (মিথ্যা রচনা) “পশু বিদ্যালয়”।

একদা, পশুরা সকলে নিলে সিদ্ধান্ত নিল যে এই “নতুন বিশ্বের” সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার জন্য তাদেরকে অবশ্যই কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে, তাই তারা একটি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করলো। তারা একটি কার্যকলাপ ভিত্তিক পাঠ্যসূচি গ্রহণ করলো যা গঠিত ছিল দৌড়, গাছে চড়া, সাঁতার এবং উড়া সম্বন্ধীয়। তদারকি করার সুবিধার্থে সব পশুরা সবগুলো বিষয়ই নিলো।



হাঁস সাঁতারে ছিল দক্ষ, এমন কি তার শিক্ষকের চেয়েও উত্তম এবং উড়াতেও বেশ চমৎকার নম্বর নিতে সক্ষম হয়। কিন্তু সে দৌড়ে খুবই অদক্ষ ছিল। যেহেতু সে দৌড়ে নম্বর কম পেয়েছে তাই তাকে বিদ্যালয় শেষে থাকতে হয় এবং দৌড় অনুশীলন করতে হয়। এভাবে দৌড় অনুশীলন করতে গিয়ে তাকে সাঁতারও ছাড়তে হয়। ইহা চালু ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত না তার বুনট পাগুলো (জলচর পক্ষীর পায়ের আঙুলের মাঝখানের চামড়া) ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন সে সাঁতারে মধ্যম বা গড় নম্বর পায়। কিন্তু বিদ্যালয়ে গড় নম্বর গ্রহণযোগ্য, তাই এই নিয়ে একমাত্র হাঁস ব্যতীত আর কেউ উদ্বিগ্ন নয়।

খরগোশ শুরুর দিকে দৌড়ে শ্রেণির মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেত, কিন্তু তার স্বাস্থ্য ভেঙে গেল সাঁতারের এত গঠনপ্রণালী শিখতে গিয়ে।
কাঠবিড়ালি গাছে চড়ায় অত্যন্ত দক্ষ ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত না সে উড়া শ্রেণির পাঠ নিতে গিয়ে হতাশ হয়। যেখানে তার শিক্ষক তাকে মাটি থেকে গাছে চড়তে না দিয়ে গাছের চূড়া থেকে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করে। তাই সে দিন-রাত প্রয়াস চালাল। উড়া পাঠের প্রতি তার অতি প্রয়াসে সে গাছে চড়ায় পেল সি (C) এবং দৌড়ে পেল ডি (D)।

ঈগল ছিল একটি দুষ্ট বালক এবং তাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হত। গাছে চড়া শ্রেণিতে সে সকলের চেয়ে আগে গাছের চূড়ায় পৌঁছাতো, কিন্তু সে অন্যান্যদের মতন না করে তার নিজস্ব পন্থায় চূড়ায় পৌঁছে যেত।

বছরে শেষের দিকে, একটি প্রতিবন্ধী বানমাছ যে অতীব ভালো সাঁতার পারতো এবং অল্প কিছুটা দৌড়, গাছে চড়া, এবং উড়তে পারতো সে গড়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেল এবং তার প্রতি সকলের বিদায়কালীন শুভ কামনা রইল।



কুকুরগুলো অবশ্য বিদ্যালয়ের বাইরে ছিল এবং তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের (যারা বিদ্যালয় তদারকি করার জন্য অর্থ সংগ্রহ করে) সাথে লড়াই করছিল, কারণ প্রশাসন মাটি গর্ত করা এবং ভরাট করাকে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করে নাই। তারা তাদের শিশুদের নিজেরাই শিক্ষা দিতে আরম্ভ করলো এবং পরবর্তীতে গর্তকারী শূকররা, এবং ইঁদুররা একত্রিত হয়ে একটি সফল ব্যক্তিগত বিদ্যালয় চালু করলো।
এই উপকথায় যে সূত্রটি রয়েছে তা হচ্ছে আমাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব বল রয়েছে এবং আমাদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে সেগুলোকে বৃদ্ধি করতে হলে, আমাদের সম্ভাবনাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না এমন কোন কাজে ভালো হওয়ার চেষ্টা দ্বারা যা আমাদের জন্য স্বাভাবিক নয়।

যদি আপনি একজন নেতা বা অগ্রপথিক হয়ে থাকেন তবে চিন্তা করুন যে আপনার সংগঠনে বা প্রতিষ্ঠানে কোন কোন ব্যক্তি এই উপকথার হাঁস, খরগোশ, কাঠবিড়ালি এবং ঈগলের মতন, এবং সবার কাছ থেকে একটি গড় কর্মক্ষমতা পাওয়ার চেষ্টা না করে কিভাবে আপনি তাদের বিশেষ দক্ষতাগুলো এবং বলগুলো উত্তমভাবে প্রয়োগ করতে পারেন।

ভিন্ন ভিন্ন গুণাবলিকে মূল্যায়নের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য একটি উপকথা (মিথ্যা রচনা) “পশু বিদ্যালয়”। রচনাটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং কোন মতামত থাকলে অনুগ্রহ করে জানান। আমরা আপনার মতামত জানতে আগ্রহী। ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্র –
১। Covey. Stephen R. (1989). The 7 Habits of Highly Effective People. Free Press.
২। ঠিক ধারণা ব্লগ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:০১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×