somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিলিপাইনের ডায়েরী = পর্ব - ১৩ সুবিক এ অফিসিয়াল আউটিং !! (পিকনিক) !!

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি খুব একটা ভ্রমন বিলাসী নই, তাই বলে কোথায় ও ভ্রমনে যে খারাপ লাগে তা ও কিন্তু না। তবু ও কেন যেন যাওয়া হয় না। আসলে সমস্যাটা টাকা পয়সার ঠিক নয়, কেন যেন শেষ মুহুর্তে যাওয়া হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যাওয়ার অগের দিন কোন না কোন খারাপ ঘটনা ঘটে। আর ছোট খাট বেড়ানো মানে কাছে ধারে যাওয়া হয় না আসলে আমার ঘুম প্রীতির জন্য। কারন ছুটির দিনটা ঘুমিয়ে পার করাটা আমার পছন্দের তালিকায় এক নম্বর। মহান দয়াময়ের কাছে এই একটি ব্যাপারে আমি খুব কৃতজ্ঞ। অনেকে অনেক টাকা পয়সা খরচ করে ও ঘুমাতে পারে না, আমার কিন্তু ভাই পিঠে আর মাথায় একটা সাপোর্ট হলেই হলো। তবে এখানে ও ব্যতিক্রম আছে, আমি কিন্তু কোন প্রকার জার্নিতে ঘুমাতে পারি না। আবার আমি জাহাজ তৈরির মানুষ হয়ে ও এখনো কোন জাহাজে রাত কাটাইনি। সাপ্তাহিক ছুটির দিন গুলোতে শুধু ঘুমাতে পারবনা বলে গত ৪/৫ বছর ঢাকায় থেকেও, গিন্নির অনেক অনুরোধের পরেও যাওয়া হয় নি নন্দন কিংবা ফ্যন্টাসি কিংডম। যমুনা রিসোর্টে অনেক বন্ধুর যাওয়ার গল্প শুনে ও হয়ত ঐ কারনে যাওয়া হয় নি।

ফিলিপাইনে আসার পর থেকেই অবসর নেই, শারিরিক পরিশ্রম যেমন বেড়েছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ঘুমের আধিপত্য।বাংলাদেশে তৈরী হওয়া জাহাজগুলির তুলনায় এখানে তৈরী হওয়া জাহাজগুলি তুলনা মুলক ভাবে বেশ বড় এবং তৈরী করতে সময় ও কম লাগে, তাই এখানে আমাদের মত সার্ভেয়ারদের কাজের চাপ অনেক বেশী। সপ্তাহে পাঁচ দিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শীপইয়ার্ডে ইন্সপেকশন থাকে। অফিস থেকে অ্যাপার্টমেন্টে আসা আর আবার অফিসে যাওয়ার মাঝের সময়টা মোটামুটি ঘুমিয়েই কাটে, আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন গুলোতে ঘুমানোটাই প্রধান কাজ। পাঁচ দিনের ক্লান্তি যেন এই দুই দিনেও কাটে না। কিন্তু নভেম্বরের মাঝমাঝি আমার এই ঘুমের উপর প্রথম আঘাত নিয়ে আসল একটি অফিস অর্ডার। ১৬ ও ১৭ ই নভেম্বর ২০১৩ অফিসিয়াল আউটিং (পিকনিক বলতে পারেন) সকলের ফ্যামিলি সহ অংশগ্রহন বাধ্যতামুলক। শনিবার আর রবিবার দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটির দিন, কোথায় একটু আরামকরে ঘুমাব! তা আর হলো না। এখানে এখনো নতুন, না বলার সাহস পাচ্ছিলাম না। তবে যখন শুনলাম একটা রিসোর্টে সবকিছু বুকিং দেয়া আছে, ইন্টারনেট থেকেও দেখলাম সুবিকের অন্যতম ভালো রিসোর্ট। তখন না শব্দটা আর উচ্চারিত করলামই না। গিয়েই দেখি কি হয় !!!

এই সুবিক বে (বে মানে হল স্হল ভাগের ভিতর সমুদ্র ডুকে যাওয়া, ফলে তিন দিকে স্থল আর এক দিকে জল) কিন্তু রিসোর্টের জন্য পরিচিত, তিন দিকের স্থলভাগ জুড়ে এখানে প্রচুর রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। আর এই রিসোর্ট গুলিই সুবিক বে কে ফিলিপাইনের অন্যতম হলিডে স্পট হিসাবে পরিচিত করেছে। প্রাকৃতিক ভাবে সমুদ্র আর পাহাড় মিলন মেলা আর কুলে সকল নাগরিক সুবিধার সুবিক আর অলংগাপো শহর। এই সুবিক বে মেট্রোপলেটন শহরে এখনো আমেরিকান নৌঘাটির নিয়মকানুন প্রচলিত, তাই এটিকে ফিলিপাইনের সবচেয়ে নিরাপদ শহর বলে ধারনা করা হয়। আমাদের অফিসিয়াল আউটিং (মানে আমাদের পিকনিক), এটি ছিল এ সুবিকেই হোয়াইট রক বীচ হোটেল এন্ড ওয়াটার পার্ক। ভার্সুয়ালী ঘুরে আসতে এখানে ক্লিকান। whiterock

১৬ ই নভেম্বর ২০১৩ শনিবারের সুন্দর সকালে আমরা প্রবেশ করলাম হোয়াইট রক বীচ হোটেল এন্ড ওয়াটার পার্কে। রিসেপসন থেকে হাতে একটা সবুজ রং এর ওয়াসযোগ্য ব্যান্ড পরিয়ে দেয়া হলো। এই সবুজ রং এর ব্যান্ড এর মাজেজা হলো এই পার্কের সকল রাইড আমাদের জন্য উন্মুক্ত। অনেক কথা হলো এবার বলুন দেখে আসি হোয়াইট রক বীচ হোটেল এন্ড ওয়াটার পার্ক , আমি ছিলাম বাস্তবে আর আপনারা থাকেন ছবিতে। আরেকটি কথা অধিকাংশ ছবিই কিন্তু আমার তোলা, তবে আমার কাছে কিছু ছবি না থাকায় ইন্টারনেট থেকে ও ধার করতে হলো।

প্রথমে চলুন মেইন গেট ও লবি ।



মেইন গেট থেকে প্রাপ্ত ইনসাইড ম্যাপ।



আমার রুম। দ্বন্দে পড়বেন না। সব রুমই ডাবল (:P) কাপল বা ফ্যামিলির জন্য।



রুম থেকে বাইরের দৃশ্য।



অফিস আয়োজিত বাচ্চাদের গেম। বেলুন গেম। এই বেলুন গুলো বাচ্চাদের ফুটাতে হবে এর উপর বসে, অন্য কোন ভাবে নয়। আর প্রতিটি বেলুন এর ভিতর টাকার নোট ডুকানো আছে। যে বাচ্ছা যে বেলুন ফুটাবে ঐ টাকাটা তার। আরেটা গেম চেয়ার রেস আমরা সবাই জানি।



সুইমিংপুল (সাধারন নয়, কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা বড় বড় ঢেউ সহ), মানে সার্ফিং পুল। খুবই মজা পেয়েছি এখানে।




বাচ্চাদের জন্য সুইমিংপুল। সাথে থিম পার্ক।




দুপুরের খাবার সাথে বিনুদুন (সঙ্গীত)



বড়দের জন্য জিপলিং (আমি জানি রোপ ওয়ে নামে)।



বড়দের জন্য ওয়াল ক্লাইম্বিং (ওয়ালে উঠা)



বড়দের জন্য কায়াকিং (নৌকা চালানো)



বড়দের ও ছোটদের সবার জন্য রামপাগে (স্লোপ স্লাইডিং )



বড়দের ও ছোটদের সবার জন্য বিগ বাউল (স্লাইডিং ইন এ বাউল )



এবার আসুন পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আপলোড কৃত পার্কের উপর ভিডিও চিত্র দেখি।







এভাবেই কেটে গেল দুইটি দিন। অনেক গুলো রাইডে ২/৩ বার ও উঠেছি। সুইমিং পুলে ঘন্টার পর ঘন্টা থেকেছি। আর ভেবেছে না এলে কতই না মিস করতাম। আর মনে হলো বাড়ির গিন্নি আর মেয়ের কথা। এখন মনে হয় তাদের বেড়ানোর আবদার তো কখনো রাখিনি। মনে মনে সিদ্বান্ত নিলাম তারা যখন জুনে ফিলিপাইন বেড়াতে আসবে অবশ্যই এই পার্কে নিয়ে আসব।

ধন্যবাদ।


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:০৯
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×