somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুদ্ধতম পরকীয়া (উপন্যাসিকা)

১২ ই মে, ২০১১ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(পূর্ব প্রকাশনার পর- ২)
দুই / (প্রথম অংশ )
“ না পিনা হারাম হ্যায়, না পিলানা হারাম
পি কে হোস্ মে আনা হারাম হ্যায় ।”
বেশ কাটছিলো দিনগুলি । এক একজনকে এক এক রকমের খেলায় মজিয়ে রেখেছিলাম । খেলছিলাম এক এক রকমের খেলা । নেশার ঘোর যে সর্বনাশা । মাঝখানে ঐ ব্যাপারটা না ঘটলে একটা আত্মতৃপ্তি পাওয়া যেত । কে বুঝেছিলো তখন ! এভাবে ফেঁসে যাবো বুঝতে পারিনি । কেন যে এমন একটা জঘণ্য মিথ্যে দিয়ে শুরু করলাম ব্যাপারটা ! নিজের সত্যিকারের জীবনটাকে ঐ একজনের কাছে মিথ্যে বানিয়ে দিলাম । এটা কি আমার একার দোষ, দোষ তো নভেরা’র ও । ও তখন এই নতুন খেলায় আমাকে ঠেলছিলো বলেই না ! এতো লজ্জা আমি এখোন কোথায় রাখবো । এভাবে হেরে গেলাম, খুব বিশ্রী ভাবে ! পৃথিবীর একজন মাত্র মানুষের কাছে হলেও খুব নোংরা হয়ে গেলাম যে । যাকে ভালোবাসিনি, শুধু অভিনয় করে গেছি, তার জন্যে আমার এতো ভাবনা কিসের ! এতো কষ্ট কেন ! একটা নিষিদ্ধ নেশার ঘোর থেকে কেন যে বেড়ুতে ইচ্ছে করছেনা !

নিজেকে ধরা না দিয়েও বেশ তো চলছিলো প্রেম প্রেম খেলা । ক’জনার সাথে যে এরকম খেলা খেলছিলাম, নিজেরই মনে নেই । ইন্টারনেটে এই এক সুবিধে । হাযারো সাইট রয়েছে বন্ধুত্ব পাতানোর । নিজের একটা প্রোফাইল খোলো, চোখে বা মনে ধাঁধা লাগে এমন একখানা রহস্যজনক ছবি দাও, দেখবে পতঙ্গের মতো প্রজাপতি হাজির । তারপর বাঁধভাঙ্গা প্রেমের জোয়ার । যতোদিন ভালো লাগে চালিয়ে যাও । শ্লীল-অশ্লীল যা কিছু আছে মেইলে বা ছবিতে তা পাঠাতে থাকো । দেখবে, শরীর-মন কেমন কেমন যেন শিরশির করে উঠছে । এ এক ধরনের নিষিদ্ধ খেলা, নেশার মতো । এরপরে একদিন না বলে-কয়ে ডুব দাও । দু’পক্ষই জানে, এরকম খেলা হঠাৎ করেই জ্বলে উঠে আবার হঠাৎ করেই নিভে যায় । দমকা বাতাসের মতো । একটুখানি ঘূর্ণি তোলা, উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া সবকিছু তারপরেই সুনসান চারদিক । নো হার্ড ফিলিংস্ ।
নভেরা’র পাল্লায় না পড়লে এ জগতটা আমার জানা হতোনা । কেমন যেন একটা নেশায় পেয়ে গেছিলো । আসলে পুরুষগুলো কি বোকা ! নাকি বোকা বোকা ভান করে থাকে ? সট্কেও পরে কেউ কেউ মিথ্যের সত্যটা বুঝতে পেরে । আমিও তো কতজনকে সিক্নীর মতো ঝেড়ে ফেলেছি মজাটা লুটে নিয়ে । কিন্তু এ ভাবে তো কেউ বলেনি আমাকে কোনদিন । আমার নির্জলা মিথ্যেটা বুঝতে পেরেও সট্কে পরেনি বরং আরো বেশী কাছে এসেছে । আরো গভীর করে আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে রেখেছে নিজের কাছে । সবার সাথে তো শুরু থেকেই বানানো গপ্পো বলে গেছি । এক একজনের কাছে একেক রকম । এই ফাঁদটা পাততে গিয়েই যতো বিপত্তি । কেন যে অজস্র মিথ্যের মধ্যে আসল নিজেকে কিছুটা মিশেল দিয়ে তাকে কাছে টানলাম ! আসলে সবটাই কি নভেরা’র দোষ, আমার নিজের কি কোনই ভুমিকা ছিলোনা সেখানে ! একটু যেন মন কেমন কেমন করা !

সেদিন গুমোট গরম ছিলো । ইলেক্ট্রিসিটি নেই বলে ঘামছিলাম খুব । আমার আবার ঐ একটি দোষ, গরম সইতে পারিনা একদম । নাক ঘেমে যায় সবার আগে । নাক ঘামলে নাকি ভালোবাসা পাওয়া যায়, সবাই খুব ভালোবাসে । তাই কি ! এইমাত্রই তো একজনের সাথে এই ভালোবাসা-ভালোবাসা খেলাটাই খেলছিলাম, তাকে কি ভালোবাসা বলে ? টোয়েন্টি - টোয়েন্টি ক্রিকেটের মতো খন্ডকালীন খেলা । অথচ দারুন উত্তেজনাময় । দু’জনেই বেশ জানি এটা ফাঁকি । তারপরেও খেলতে হয় । নেশার লাটিম ঘুরতেই থাকে যে । ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেল , নইলে ব্যাটাকে আর একটু নাচাতে ইচ্ছে ছিলো । আর তক্ষুনি নভেরা এসে হাজির । নভেরা এলে সময় যে কোথা দিয়ে কেটে যায়, টের পাইনা কেউ । ঘর সংসারের কাজ বাক্সবন্দী পড়ে থাকে । কি উচ্ছল, প্রানবন্ত মেয়ে । আমার মাঝে মাঝে ওর মতো হ’তে ইচ্ছে করে । সেদিন নভেরাই বলেছিলো, “শীলা, এতোদিন তো কেবল লালটু আলু আলু মার্কা অল্প বয়েসী ছেলেদের সাথে প্রেম প্রেম খেলেছিস । এবার একজন বেশী বয়সের পুরুষ ধর । দেখবি আলাদা এক মজা । বয়স্ক পুরুষের প্রেম যখন উৎলে ওঠে না, তখন দেখবি তোর দু’কুল ভেসে গেছে। এবার দেখি একা একা তুই কদ্দুর যেতে পারিস সাঁতরে ।”

আমি যে কোথাও যেতে পারিনি । আমি যে ডুবতে বসেছি । এতো লজ্জার পরে তো আমার ডুবে মরার ই কথা ছিলো ।

( চলবে..... অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন তিন/চার দিন )
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×