somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাবেকুব জাতক কথন - আট

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ক'দিন ধরে দেখছি, ব্লগে একজন ব্লগারকে নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার ভাষা যাই-ই হোক ব্যাপারটি নিয়ে বারংবার কচলানোতে তা বিষম তেঁতো লাগছে অনেকের কাছেই, আমার কাছেও! বেকুব বলে হয়তো!
আজকের ১৪ই জানুয়ারী'২০২২ এর রাত ১১:৩৪ মিনিটে দেখছি, ব্লগে "আলোচিত ব্লগ" এর ৫ টির ৪ টিই এ সংক্রান্ত। এই মহা বেকুবের কাছে মনে হয়েছে, সেই আলোচিত এক ব্লগার এবং ব্লগের সুষ্ঠতা নিয়ে এসবই অহেতুক আলোচনা মাত্র ।
"অহেতুক" বলছি এ কারনে যে-
যারা বাঁকা চোখে এই ব্লগকে দেখেন তারা জেনে রাখুন , যে লেখক আবেগময়তার সাথে মানুষের পূর্ণতাকে বুঝতে অক্ষম, নিজের সৃজনশীলতার শোভনীয়তা , অশোভনীয়তা বুঝতে অপারগ, ব্লগে তার আত্মনিবেদন নেই নয়তো প্রবেশাধিকার । তাই একজন সত্যিকারের সামুব্লগারকে সতর্ক, সংযত, রূচিশীল হতেই হয় , আজকের জন্যে এবং আগামীকালেরও ।
এই মহা বেকুবের মতো আপনিও নিশ্চয়ই জানেন, ব্লগটিকে আজকের এ অবস্থায় ( ভালো কিম্বা মন্দ ) উদ্ভাসিত বা অনুদ্ভাসিত হয়ে উঠতে পথের বেছানো কাঁটা মাড়িয়ে , সকল খানাখন্দ পেড়িয়ে আসতে হয়েছে । সে পথের দিশারী ছিলেন কিন্তু আপনি নিজেই । সবলে আপনিই তাকে হাতে ধরে এতোটা পথ পাড়ি দিয়ে নিয়ে এসেছেন । তাকে এখানে নিয়ে এসেছেন বটে কিন্তু তাকে এগিয়ে দিতে হবে সামনের আরও অনেক বন্ধুর পথ, আপনারই প্রয়োজনে, ভালোবেসে । এই অস্থির সময়ে দ্রুত বদলে যাওয়া চারিপাশ, সুস্থ্য মানসিকতার অনুপস্থিতি , অশোভনতার - অসহিষ্ণুতার চাষাবাদ, শিষ্টাচারের প্রকট অভাব এসবের কারনে তার পথ চলা থেমে থাকবেনা নিশ্চয়ই ! এবং আপনিও নিশ্চয়ই তা চাইছেন না? অথচ এইসব না জেনে, না বুঝে অহেতুক আলোচনা (যার কোনও শেষ নেই) আপনার অজান্তেই ব্লগকে থামিয়ে দেয়ার পথে নিয়ে যাচ্ছে বারেবারে।

গত কয়েক দিনের ব্লগ দেখে মনে হলো, ব্লগে লেখার মতো আর কি কোনও বিষয়বস্তু নেই ? কেমন যেন এইটুকু একটি ডোবার নোংরা কাদাপানিতে ঘুরে ফিরে সাঁতার কেটে যাওয়া বারবার! এসব লেখায় সুষ্ঠ আলোচনার কোনও আলামত আমি দেখিনি, দেখেছি পারষ্পারিক বিষ্যোৎগার, একে তাকে দোষ চাপানো । এবং সেই সাথে আরও মনে হলো - লেখা তো যে কেউই লিখতে পারেন , দিতেও পারেন । লিখতে পারাটা ব্লগের জন্যে কঠিন কিছু নয়, কঠিন হলো আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন তা, আর আপনাকে তুলে ধরছেন কি ভাবে । আপনার রূচি -আপনার শিক্ষা , আপনার স্বকীয়তা , আপনার নিজস্ব ধ্যানধারনার সুন্দর এবং সত্যিকারের একটি ছবি সেখানে দেখা যায় কি ? 
যে ব্লগারকে নিয়ে এতো আলোচনা তাকেনিয়ে কি এতো আলোচনার আদৌ কোনও প্রয়োজন ছিলো বা আছে? এটাতো ব্লগের কমবেশী অনেকেই জানেন ব্লগের জন্যে উল্লেখিত ব্লগার তেমন আশীর্বাদ জনক নন। ব্লগে তার ছবি তো পরিষ্কার! সে ছবি কারো পছন্দের হতে পারে আবার কারো কাছে - না। এসব জেনেও পক্ষে বিপক্ষে গিয়ে কেন ব্লগপাতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো লেখা দিচ্ছি আমরা? ব্লগে কি তিনি ছাড়া আর কেউ নেই? তাদের ভালোটুকু নিয়ে আমরা লিখছিনে কেন ? এসব কি আমাদের মানসিকতার বৈকল্য নাকি আমাদের সকল সৃজনশীলতা রূদ্ধ হয়ে গেছে কোথাও?

ভেবে দেখুন -
“সামু” আপনাকে একটি রাস্তা খুলে দিয়েছে । যে রাস্তায় হাটতে হাটতেই কেউ কেউ শিখে নিয়েছেন , লেখার যাবতীয় কৌশল । কাঁচা থেকে পরিপক্ক হয়ে উঠেছেন স্বকীয়তায় । নিজেকে নিয়ে গেছেন শীর্ষে । কিন্তু মাঝেমাঝে মন্দ কারো ভাবনার অসুস্থ্যতার কারনেই সামু দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে বলে মনে হয় । সে তো বহমান নদীতে দু’চারটে দুর্গন্ধে ভরা কচুরীপানা ভেসে যাওয়ার মতো । এতে কি নদীকে নষ্ট হয়ে গেছে বলে ধরে নেবেন ? সে তো হবে আপনারই দৃষ্টিশক্তি, বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা । ব্লগ চলুক নদীর মতো । সেই নদীতে ভেসে যাকনা সেই ব্লগারের সব দুর্গন্ধ! আমি আমার দৃষ্টিশক্তি, বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা দেখাতে যাচ্ছি কেন ? কেন আমরা সেই দুর্গন্ধে ভরা কচুরীপানা এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা-সাহস-ইচ্ছে কোনটাই পোষন করতে পারছিনে? কেনই বা বারবার তাতেই ঠোক্কর খেয়ে যাচ্ছি ? দুর্গন্ধ পছন্দ করি বলে?

ভাবুন তো, নোংরামী কোনখানে নেই ? রাজনীতি, মাঠঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস -আদালত সবখানেই তো ভালোর পাশাপাশি নোংরামীও সমপরিমানে নয় বরং বেশী পরিমানেই বিদ্যমান । তাই বলে কি আপনি ঐ সবের সংষ্পর্শ এড়িয়ে চলেন ? সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে তাদের বাতিল করে দেন জীবন থেকে ? গুটি কয়েক রাজনীতিক যখোন বস্তির বুলি নিয়ে নোংরামী ছড়ান তখোন আপনি কি সকল রাজনীতিকদের নির্বাসনে দিতে চান ? আঙুলে গোনা কিছু ছাত্রের উশৃঙ্খলতা, সন্ত্রাসের দায়ে সারা ছাত্রসমাজকে কি বয়কট করে চলেন ? পথভ্রষ্ট কিছু উগ্র ধর্মবাদীদের উগ্র কাজের দায়ে আপনি কি সকল বিশ্বাসীদের ফাঁসি চান ? 
আপনি সবাইকে এক কাতারে ফেলেন না । আসলে আপনার চারপাশে বিরাজিত সব নোংরামীর সাথে আপনি সবাইকে গুলিয়ে ফেলেন না। আর গুলিয়ে ফেলাটা বুদ্ধিমানের কাজও নয় । আপনি তো এই নোংরামী ভরা সমাজ-রাষ্ট্র থেকে নিজের অস্তিত্বকে এখনও বিসর্জন দেন নি ! নাকি দিয়ে বনবাসী হয়েছেন ?

আমি বেকুব বলে হয়তো এমন করে ভাবছি! ভাবছি এতে করে নতুন যারা সামুকে নিজেদের মনের কথা লেখার শ্লেটখানি ভাবতে শুরু করেছিলেন এর মধ্যেই তারা পেছিয়ে যাবেন কিনা। ব্লগের পাতা থেকেই তো জানি পুরোনোরাও পেছিয়ে গেছেন এমন হওয়াতে।
এমন একেক করে যদি সবাই পেছিয়ে যাই তবে এই মহা বেকুব মাঝে মাঝে যে দু'চারখানা মনের কথা লিখে ব্লগ পাতা ভরিয়ে ফেলতো পাঠকদের জন্যে, তার কি হবে ? পড়বে কে, মন্তব্যই বা করবে কে ? তখন কি এই মহাবেকুবের বেকুবীয় ভাবনাদের মরন হবে ??????????

পূনশ্চঃ
এই লেখাতে "কাল্পনিক_ভালোবাসা"র মন্তব্যের উত্তরে যা বলেছি, প্রাসঙ্গিকতার কারনে সেটুকুও তুলে দিলুম এখানে --

আসলে, ব্লগে অশ্লীল পোস্ট বা কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমন করে লেখা পোস্টের সমালোচনায় দেখা যায় অনেক সমালোচনাকারীরা নিজেরাও অশ্লীল ভাষা - শব্দ বা ইঙ্গিত করে আলাদা পোস্ট দেন বা আলোচিত পোস্টে মন্তব্য করেন। ভাবেন যে, বেশ জোড়ালো প্রতিবাদ করা গেছে। অথচ তারা নিজেরাও যে একই দোষে দুষ্ট তা ভেবে উঠতে পারেন না। এরকম করে করে যখন কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি চলতে থাকে তখন সব দোষ ব্লগকর্তৃপক্ষের ঘাড়ে উঠিয়ে দেয়া হয়। কারা দেন ? যারা নিজেরাই অশ্লীল ভাষা - শব্দ ব্যবহার করে "প্রতিবাদ" নামক হাস্যকর কিছু করেন , তারাই।
আমার প্রশ্ন - কেন ?
কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করবেন ব্লগারেরা আর তার জবাব দিতে হবে ব্লগকে! কেন? আমরা কি ব্লগের নিয়ম কানুন জানিনে ? নাকি অন্যকে খোঁচানোর অভ্যেস বদলাতে পারিনে আমরা ? আমরা নিজের নিজের জায়গা থেকে সচেতন থাকলেই তো আর এমন ঘটনাগুলো ঘটার কথা নয়! কেন আমরা নিজেদের "সচেতন", "শিক্ষিত" আখ্যা দিয়েও তার মর্যাদা রাখতে পারিনে ?

আমাকে এসব বেশ বিব্রত করে। বিব্রত করে , এসবের সাথে আমাকে ব্লগিং করতে হয় মনে হলেই লেখার হাত থেমে যায়, লেখার ইচ্ছেরা মরে যায় । আমার মতো অনেক ব্লগারদেরও তা হয়, এটা তাদের লেখা আর মন্তব্যেই বোঝা যায়। সেই বিব্রত ভাবটাকে বোঝাতে আর তা থেকে কি ভাবে সরে আসা যায় তা বলার জন্যেই এই পোস্ট।

পাশাপাশি যে দায়িত্ব ব্লগারদের নিজেদের, সে দায়িত্বের ভার ব্লগকে বইতে হবে কেন কর্তৃপক্ষ যেখানে পরিষ্কার করে সতর্ক করেছেন এই বলে - এখানে প্রকাশিত লেখা, মন্তব্য, ছবি, অডিও, ভিডিও এবং যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায় শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকের।?
তাহলে এসব ঘটনা কেন বারে বারে হচ্ছে এবং ব্লগ কর্তৃপক্ষ কেন বারে বারে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাঁড়াচ্ছেন ? ব্লগ কর্তৃপক্ষের দায় আছে কি কোনও? এতে আমরা নিরিহ ব্লগারেরা বিবেকের দংশনে আর অপ্রস্তুততায় পড়ে যাচ্ছি বারবারে।
যারা এসব করে বেড়ান তাদের লেখা/মন্তব্য মডারেশন করলেই বা সরিয়ে দিলেই তো হয়! যা কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারেই আছে।


ছবি - ব্যবহৃত ইমোজী ইন্টারনেটের সৌজন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:১৮
৩৯টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×