somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একলা ছায়ার জাতিকা ........

১৪ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শেষ বিকেলে অবাক করে দিয়ে অপ্রত্যাশিত ভাবেই কেউ দরজায় কড়া নেড়ে গেলেন। উঁকি দিয়ে দেখি কেউ নেই , ছড়িয়ে আছে বাসি বকুলের ঘ্রান। মন সায়রে ঝাঁপ দিয়ে তার ঘ্রানের আদল খুঁজতে চেষ্টা করি। মিলেও যায় একসময়। তার সাথে দেখা হয়েছিলো চার বছর আগের এক সোনাঝড়া বিকেলে, সংস্কৃতি বিকাশ চত্বরের ব্লগীয় মিলনমেলায়। চোখে মুখে অনেকটা দুষ্টু হাসির ঝিলিক। কবিতার প্রতি যেমন জোড়ালো আস্থায় তার অবস্থান তেমনি নিজের উপরেও দেখলুম তার আস্থার জায়গাটি। একজন মনিরা সুলতানা, যিনি চলে গেলে রেখে যাবেন নিজের একলা ছায়া, হারানো চিবুক। নিজের কথা যিনি লিখেছেন এমন করেই।

ব্লগ মিলনমেলার শুরু থেকে শেষতক অবধি তাঁর সাথে পরিচিত হইনি। শেষে উপস্থিত প্রায় সবার হাতেই দেখি এক একখানা বই। বিলিয়েছেন নাকি সেই দুষ্টু হাসির ঝিলিকওয়ালী। আমাকে দেয়া হয়নি বলেই কাছে গিয়ে বই চাইতেই অবাক তাকিয়ে রইলেন মুখের দিকে। মনে হয়, আমার আদল- চেহারা সুরৎ দেখে সেখানে আমার উপস্থিতিকে মানিয়ে নেয়ার অবাক চেষ্টা করছেন। বললুম , আমি জী এস... আহমেদ জী এস।
বিস্ময়ে ফেটে পড়ে কপাল চাপড়ে বলে উঠলেন-- ও মাই......জী এস ভাই আপনি!

সেই একবারই তাকে দেখেছিলুম, প্রথম এবং হয়তো শেষবারের মতো। জানিনে স্বশরীরে আর দেখা হবে কিনা! কিন্তু দেখা আমাদের নিত্য হয়েছে ব্লগের পাতায়- লেখায় লেখায়। সে তো সবার সাথে সবারই হয়! কেউ কি আর তেমন করে মনে রাখেন! তিনি রেখেছেন! যদি দূরে যাই চলি, সেই পুরাতন স্মৃতি যদি এককালে হয়ে ওঠে দূরাশ্রিত কাহিনী কেবলি, সে কথা মনে রেখেই হয়তো সেই একলা ছায়ার জাতিকা আমারই দুয়ারে রেখে গেছেন কিছু বকুলের ঘ্রান।

এই বই মেলায় প্রকাশিত তার দু’দুখানি বই আমায় পাঠিয়েছেন তিনি, মনে রেখে। যে দু’টো বইয়ের কথা উনি ব্লগের পাতায় “ কিছু মনকথা একেবারেই নিজের গল্প” পোস্টটিতে বলে গেছেন।
সবেমাত্র পাঠানো সেই বই দু’খানি সম্ভাব্য কারনেই পড়া হয়ে ওঠেনি এখনও। তবে ব্লগের পাতায় তারই লেখা সেই পোস্টটিতে আমি বলেছিলুম --
“এমনি করেই এক একটা স্বর্ণালি সকাল, প্রাণ হুহু করা কোকিলের ডাক, বুকে কাঁপন তোলা শীতল হাওয়ারা কিছু মনকথা হয়ে থেকে যাক ব্লগারদের মনমলাটে বন্দী হয়ে।
প্রাপ্তি এটাই - চলে গেলে তবু কিছু থাকবে আপনার! আপনার একলা ছায়া, চিবুক, চোখ সবই রোদ্দুরের মতো প্রতিদিন সোনাঝরা রং ছড়াবে ব্লগের জানালায়!”

সেই চিবুক,চোখ আর তার একলা ছায়াটি এবারে ভালো করে দেখে নেয়ার চেষ্টা করলুম।
চেষ্টা করতে গিয়ে বুঝলুম, সে আমার কাজ নয়। বায়ান্নো বাজার তেপ্পান্নো গলিতে যার বিচরণ, বুড়িগঙ্গা থেকে ধলেশ্বরীর পাড় ঘেঁষে যার ছায়া পড়ে আছে তাকে চিনে ওঠা খুব চাট্টেখানি কাজ নয়। তার বই দু’টি “মন সায়র” আর “বাসি বকুলের ঘ্রান”য়ে হয়তো তার পুরোপুরি দেখা মিলবে। বইয়ের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে হয়তো আপনাদের পূর্ণিমার বাদলে স্নান হয়ে যাবে, আঙুলের ভাজে ওঠে আসবে কিছু শিউলি কিম্বা কাঠ গোলাপ, দেখা মিলবে কোজাগরী পূর্নিমার আনন্দ সঙ্গমে ডোবা একদল জোনাকির ।
মনে হবে “সামুর বয়বৃদ্ধা” নয়। স্বর্ণচাপা গোঁজা এলোচুল, আপনার পাশাপাশি হেটে যেতে চাওয়া কয়েক লাইন দুর্দান্ত জীবনের বেনী দুলানো কেউ, যার ফুলছাপ ফ্রকের কোঁচরে ঝুমকো জবা,হাজারী গোলাপ!

ভাববেন না, এটুকু কোনও বই রিভিউ । সে ক্ষমতা বা ধৃষ্টতা আমার কখনও, কোনকালেই ছিলোনা আর সে আমার কাজও নয়। আমি শুধু অপ্রত্যাশিত ভাবে তার বিলিয়ে যাওয়া আনন্দটুকু পাবার কৃতজ্ঞতা থেকে বলে যেতে চাই -
“যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায়
ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি..........
এবার পুজোয় তাই
আপনারে দিতে চাই বলি...... “
( শেষের কবিতা )



সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৪:৫৩
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×