মধ্যরাতে কুয়াশা নেমেছে আসর জমিয়ে
হেঁটে চলেছি আমি আনমনে
কুয়াশার বুক চিরে,
মনে পড়ে পুরনো স্মৃতি
বুকের গভীরের ভাঁজে ভাঁজে।
.
কোন এক কুয়াশার রাত্রিতে
রিকশায় চেপে দুজনে
পাড়ি দিয়েছিনু বহুদূরের পথ
বুকের কাছে টেনে নিয়ে হাত
নীলা বলেছিল,আমাদের এই স্মৃতি
হৃদয়ে তোমার অমলিন থাক।
.
নীলার বুকে সেদিন মাংসপিন্ড ছিল না
ছিল আমাকে নিয়ে একটি সংসার
চোখে ছিল এক মুঠো সমুদ্র
ঠোঁটের কোণে হাসি ছিল অব্যক্ত কামনার।
.
ভালবাসার বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে
বলেছিল সে,আজ থেকে ঐ হৃদয়টা আমার
তারপরে কেটেছে অনেকদিন
সময়ের কাল স্রোতে হারিয়েছে নীলা
তবুও এই হৃদয়টা এখনো রয়েছে তার।
.
বুকের কাছে মুখ লুকিয়ে
মাঝে মাঝেই কাঁদি
সকলের অগোচরে,
জানিনা সে এখনো মনে রেখেছে কি না আমারে।
.
নুর আমার বাল্যবন্ধু
ঝগড়ার ছলে বলেছিল,আজ থেকে তোর সাথে আমার আড়ি
সেই আড়িতেই বন্ধু আমার
পরপারে জমিয়েছে পাড়ি।
তারপরে কত বন্ধু এসেছে এই ক্ষুদ্র জীবনে
নূরের জায়গায় নূর-ই রয়েছে
ভাগ বসাতে পারেনি অন্য কেউ সেখানে।
.
বাবা-মা মরণের কালে
বলেছিল,দেখে রাখিস তোর এই আদরের বোনটিকে,
বিঘাখানেক জমি বেচে
বিয়ে দিয়েছিনু তারে; বনিয়াদি ঘর দেখে,
বছর দু'য়েক নাই যেতে
কেড়ে নিল তারে মরণ ক্যান্সারে।
.
মরিবার কালে বিনুকে কোলে দিয়ে
বলেছিল সে,ভাইরে!কোলে পিঠে মানুষ করিস মোর কলিজার টুকরাকে।
.
পারিনি! আমি পারিনি!
বিনুকেও ধরে রাখতে পারিনি
মরণ কামড়ে সেও চলে গেছে
বুকটা শূণ্য করে।
.
ভালবেসে যাকেই করেছিনু আপন
সেই গেছে ছাড়ি
অকৃতজ্ঞের মতন।
.
ভয় হয় এখন ভালবাসতে গেলে
ভালবাসার দাবি নিয়ে তাই
কাউকেই দাঁড়াতে দেই না আর
এই দুমড়ানো মোচড়ানো হৃদয়ের আদালতে।
.
ধীরে ধীরে রাত্রির বয়স বাড়ে
ঝড়ের বেগে কুয়াশা নামে
তবুও পথচলার শেষ হয় না
একলাই চলি আমি পৃথিবীর পথে।