নিকট ভবিষ্যতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যেসকল সমস্যার সমাধান হবে না বলে মনে হয়, তার মধ্যে প্রধান একটি সমস্যা হলো অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা। এই সমস্যা যত সহজে সৃষ্টি হয়েছে তত সহজে এর সমাধান বাংলাদেশের কোন সরকারই করতে পারেনি, আর পারবে বলেও মনে হয় না।
ড. আকবর আলী খান এখানে দুটি কারণ দেখিয়েছেন। প্রথমত, গণতান্ত্রিক চর্চা যেখানে কিছুটা হলেও বিদ্যমান, সেখানে পানি বণ্টনের মতো জাতীয় ইস্যুতে ব্যাপক জনসমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে যা ভারতের মতো প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থায় অর্জন করা অত্যন্ত দুরূহ। তাঁর এই বক্তব্য নিশ্চিতভাবেই গ্রহণযোগ্য। কারণ, ভারতের একেকটি অঙ্গরাজ্যের জনমত একেক রকম। পানি বণ্টন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের মধ্যে রয়েছে বিতর্ক এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে নদীর পানি বণ্টনের উপযুক্ত পরিকল্পনা না থাকায় অধিকাংশ লোকের কাছেই এর কোন সমাধান নেই। ড. খান তাই মনে করেন যে, চটজলদি বাংলাদেশের মানুষ এর কোন সমাধান পাবে না। দ্বিতীয়ত, ভারতের জাতীয় পানি পরিকল্পনাকারীরা অববাহিকাভিত্তিক পানি বণ্টনে বিশ্বাস করে না। বিশেষ করে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করে, যেসকল অঞ্চলে উদ্বৃত্ত পানি রয়েছে, সে পানি অববাহিকা-নির্বিশেষে তাদের নিজস্ব পানি ঘাটতি অঞ্চলে প্রেরণের অধিকার রয়েছে। আর সে জন্যই তারা ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার উদ্বৃত্ত জলরাশি পশ্চিমবঙ্গে প্রেরণের পক্ষপাতি। আমরা বার বার দেখেছি দাদা যতই বলবেন যে, অতি শীঘ্রই পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান হবে, দিদি বরাবরের মতোই বৃদ্ধঙ্গুলী দেখিয়েই যাবেন। গোটা বাংলাদেশকে ট্রানজিট বানিয়ে দিলেও বাংলাদেশের সরকারের পক্ষে এই সমস্যার সমাধান পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ, ভারতের অভ্যন্তরীণ সহযোগিতা অর্জনে আমাদের সুদৃঢ় অবস্থান নেওয়া ছাড়া পদ্মার রুপালি ইলিশ খাইয়ে খাইয়ে দাদাদের মন গলানো সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭