somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রশানমন্ত্রীর মুখে মদিনা সনদ এবং রবীন্দ্র চেতনার কথা।আসলে কোনটা তিনি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চান?রবীন্দ্রচেতনা নাকি মদিনা সনদ

১৩ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"রবীন্দ্রনাথের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ গড়বো" ===================> প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কয়েকদিন আগে রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনছিলাম।সেখানে তিনি বলেছিলেন তিনি "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়বেন"
তো ঠাকুর সাহেব কি ধরনের বাংলাদেশ চাইতেন তা তা নিয়ে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলাম আমি।আগে থেকেই ঠাকুর সাহেবের যে ইতিহাস আমার জানা ছিলো তার সাথে ইন্টারনেট এ তার রাজনৈতিক আদর্শের ব্যাপারেও সামান্য ধারনা লাভের চেস্টা করলাম।আলোচনার প্রথমেই বলে নেওয়া ভাল যে একজন সাহিত্যকার এবং কবি হিসেবে তার অবদান বাংলা ভাষায় চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে এই বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই।আমি নিজেও তাকে একজন বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকার মনে করি।তাই কোন রবীন্দ্রপ্রেমি যদি আমার লেখাটি পড়ে থাকেন তাহলে তার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে আমার এই লেখার আলোচনার বিষয়বস্তু শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক আদর্শ এবং বর্তমান ভূখণ্ডের বাংলাদেশ নিয়ে তার চেতনা।তাই এই লেখাটিকে অন্যকোন ভাবে না নেওয়ার অনুরোধ রইলো
রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয় কোলকাতা শহরে।মানে বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সীমানার বাহিরে।তার আব্বা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন জমিদার ছিলেন।রবি ঠাকুরও পেশা হিসেবে জমিদারিকেই বেছে নেয়।তার জমিদারি সীমানার বেশীরভাগ ছিলো বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভেতরে।কিন্তু তা সত্তেও তার জীবদ্দশায় তিনি ঢাকায় এসেছিলেন মাত্র ১ বার ।মানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে লোকের আদর্শে বাংলাদেশ গড়তে চান তার পদধূলি সেই দেশের রাজধানীতে পড়েছিলো one and only বার।কলকাতার একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র বলেছিলেন "ঢাকায় ৩ টা প্রাণীকে সবচেয়ে বেশী দেখা যায় ১ কুকুর, ২ কাক, ৩ মোসলমান"।যাক আমি বিশ্বাস করি আমাদের অসাম্প্রদায়িক ঠাকুর সাহেব বঙ্কিম আদর্শে বিশ্বাসী লোক নয়।বিলেত,আমেরিকার,ইউরোপের বহু দেশ রবি ঠাকুর বহুবার ভ্রমন করেছেন।ইংল্যান্ড এ তিনি অনেকবার গিয়েছেন এবং অনেক সময় সেখানে কাটিয়েছেন।এমনকি এশিয়ার দেশ চীন,জাপানেও গিয়েছেন।যাক তিনি ঢাকায় ১ বার এসেছেন সেটাই আমাদের পরম ভাগ্য :D
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিদারী এলাকার বেশীরভাগ প্রজা ছিলো মুসলিম।কিন্তু আমরা যদি তার সাহিত্য পড়ি তাহলে সেখানে গুটি কয়েক মুসলিম চরিত্রও খুজে পাওয়া দুস্কর হবে।তিনি শ খানেকের উপরে বই,ছোটগল্প কিংবা কবিতা লিখলেও সেখানে মুসলিম চরিত্র খুব বেশী একটা নেই।দেখুন যার জমিদারী এলাকার বেশীরভাগ মানুষ একটি সম্প্রদায়ের হলেও তার সাহিত্য খুজলে সেই সম্প্রদায়কে মৃত মনে হবে।এখন প্রস্ন হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কি আমাদের সেই চেতনায় নিয়ে যেতে চাচ্ছেন :P
এইবার বঙ্গভঙ্গর ব্যাপারে আসি।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি সরাসরি আন্দোলনে নেমে পড়েন।১৯০৫ সালে পশ্চিম বাংলা থেকে পূর্ববাংলাকে আলাদা করে একটি নতুন প্রদেশ সৃষ্টি করা হয়।উদ্দেশ্য ছিলো অর্থনৈতিকভাবে পূর্ববাংলার মানুষের উন্নতি।বাংলাদেশের প্রায় সব জমিদারই ছিলো হিন্দু এবং এ অঞ্চলের বেশীরভাগ মানুষ ছিলো মুসলিম।হিন্দু জমিদারেরা এই ভূমি থেকে অর্থ জোগার করে তা সব কোলকাতায় চালান করতো।পূর্ববাংলার মানুষের ঘাম এবং রক্তে গড়া হয়েছিলো কোলকাতা শহর।এই অঞ্চলের সব অর্থ কোলকাতায় চালান হওয়াতে যা উন্নতি হবার সেখানেই হত এবং অভাগা বাংলাদেশের মানুষ অশিক্ষা এবং অনুন্নতির মাঝেই বেচে থাকতে হত।ব্যাপারটা অনুধাবন করেই কোলকাতা থেকে বাংলাদেশকে ভাগ করার সিধান্ত নেই।রবীন্দ্রনাথের জমিদারী অঞ্চল যেহেতু বেশীরভাগ ছিলো বাংলাদেশ অঞ্চলে তাই তিনি এই ব্যাপারে তেলে বেগুলে জ্বলে উঠেন।তার জমিদারী অঞ্চলের টাকা আর কোলকাতায় আনতে পারবেন না এই কস্টে তিনি ভুগছিলেন।পূর্ব বাংলার বাঙালি মুসলিমদের কোন উন্নতি হোক তা তিনি চান নি।বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হলে রাগে দুঃখে আরও একটু হলে তিনি আত্মহত্যাই করতেন

এইবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে আসি।বঙ্গভঙ্গ সিধান্ত রহিত হলে ঢাকার মুসলিম নেতারা ব্রিটিশদের চাপ দেয় যেন এই অঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা কয় মুসলিমদের জন্য।এখানেও বাধ সাধেন কোলকাতা নিবাসি রবি ঠাকুর।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাতে না হতে পারে সে জন্য সব চেস্টাই তিনি করেছেন। না পেরে ঢাবির নাম দিয়েছেন মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়, কারণ এখানে মুসলমানেরা পরবে। বাংলাদেশের মানুষকে অন্ধকারে রাখাই ছিল তার উদ্দেশ্য।এই অঞ্চলের কৃষকের ছেলে গবির মুসলিমরা লেখাপড়া করে কোলকাতার হিন্দু বাবুদের সাথে একই চেয়ারে বসবে এইটা তিনি মনে প্রানেই চাইতেন না
প্রশ্ন আরও থেকে যায় যে
১ তিনি কি বর্তমান বাংলাদেশের সীমানায় বিশ্বাস করতেন?
২ তিনি কি চাইতেন বাংলাদেশ অখন্ড ভারতের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে স্বাধীন দেশ হোক?
৩ তিনি কি চাইতেন ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হোক?
৪ তার কোন লেখায় কি তিনি বাংলাদেশ নামক দেশ চায় এ কথা উল্লেখ করেছেন?
৫ বাংলাদেশ শব্দটা তার লেখায় কয়বার আছে?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে লোকের লেখা বা কবিতায় স্বাধীন বাংলাদেশের কোন অস্তিত্ব নেই তার আদর্শে প্রধানমন্ত্রী কিভাবে দেশ গড়বেন?যেই লোক মনে প্রানে চাইতেন বাংলা হবে ভারতের একটা অঙ্গরাজ্য এবং যিনি নিজে সর্বভারতীয় আদর্শে বিশ্বাস করতেন তার আদর্শে কিভাবে বাংলাদেশ গড়তে চান শেখ হাসিনা?তার মানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী কি চায় বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য হোক?তিনি কি চান শিক্ষা-দিক্ষায় সব দিক দিয়ে মুসলিমরা পিছিয়ে থাকুক?হ্যাঁ মুসলিমদের প্রধানমন্ত্রী কি দৃষ্টিতে দেখেন তার প্রমান ইতিমধ্যে নিশ্চয় আমরা পেয়েছি :)
অথচ কিছুদিন আগেই তিনি বলেছিলেন দেশে তিনি মদিনা সনদ বাস্তবায়ন করবেন আর আজ বলছেন রবীন্দ্র চেতনা প্রতিষ্ঠা করবেন।আসলে কোনটা তিনি প্রতিষ্ঠা করতে চান?
ছোটবেলায় ধর্ম বইয়ে পড়েছিলাম...

মুনাফিকের তিনটি গুন... এ তিনটি/যেকোন একটি থাকলেই সে ... সে..ই মাত্রার মুনাফিক:

১. সে যা বলে মিথ্যা বলে
২. ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে
৩. আমানত রাখলে তা খেয়ানত করে

বাকিটা এইবার বুইঝা নেন
;););););)
৩৬টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×