somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতিশয় নীরস পোস্ট ! =p~ ছবি দেখে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ রইল । শিক্ষণীয় কিছুর তালাশে যারা পোস্টে ঢুকবেন , তারাও হতাশ হবেন ।

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দান দান তিন দান ।
সেলিম এবারে আর ব্যর্থ হতে চাইল না । স্যান্ডেল, শার্ট খুলে আমার হাতে ধরিয়ে দিল ।
লুঙ্গীতে কায়দা করে বিশাল এক ''জাইল্লা গোছ'' ।
আমাকে বলল , তুইও গোছ মার ।
বললাম - আমি দূরে দাঁড়িয়ে থাকবো , আমার গোছ মারার দরকার কি ?
সে অনেকটা ধমকের সুরে বলল - কথা বাড়াইছনা , গোছ মারার দরকার আছে, গোছ মার ।
ধমক ধামকের পরে আর কথা চলে না । তাই মারলাম !
সে যেভাবে লুঙ্গীটাকে মেয়েদের প্যানটির মত প্রায় অদৃশ্য করে ''গোছ'' মেরেছে ,
আমারটার কোয়ালিটি তার ধারে কাছেও যায়নি ।

এবার সে আমাকে আমার রোল বুঝিয়ে দিল । ধাক্কা ধাক্কিতে সে যখন লাইন থেকে ছিটকে পড়তে চাইবে , তখন আমি তাকে প্রতিধাক্কা দিয়ে লাইনে স্থির থাকতে সাহায্য করবো ।আমি আমার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করছি । চারদিক থেকে গেছিরে ! খাইছেরে ! আল্লারে ! মা'রে ! ইত্যাদি শব্দ আসছে ।
এরকম পরিস্থিতিতে আধা ঘণ্টা পিষ্ট হয়ে অবশেষে সেলিম ''সাপের মাথার মণি'' নিজের হস্তগত করল ।

উপরের বর্ণনা শুনে যারা ধারণা করছেন , আমরা যাকাতের কাপড় নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম , তাদের ধারনা ভুল ।
আমি নাইনটি এইটি সিক্স এর কথা বলছি ।
আমি সিনেমা হলের টিকিটের লাইনের কথা বলছি ।
এক রমজান ঈদের পর জেলা শহরের সুরত মহলে চলছিল আংশিক রঙ্গিন এক ছায়াছবি , নাম মনে নাই ।

সেকালে সিনেমা হলের গেটের এক পাশে এক প্রস্থ খোলা জায়গা থাকতো ।
সেখানে সব সময় দেখতাম ১/২ জন লোক মূর্ছিত হয়ে পড়ে আছে । টিকিট কাটার ধকল সইতে না পেরে যারা ''কাইয়া মরা''(আধমরা) হয়ে যেতো ,তাদের চ্যাংদোলা করে এখানে শুইয়ে দেয়া হতো ।
সেলিমকে চ্যাংদোলা করে আনতে হয়নি । হাফাতে হাফাতে সে নিজে এসেই ওখানে শুয়ে পড়লো ।তার ডান পাশের মূর্ছিত লোকটার অবস্থা দেখে মনে হল , আজরাইলের সাথে দর কষাকষি চলছে ।বাম পাশের জনের অবস্থার চেয়েও তার লুঙ্গির অবস্থা ভয়াবহ ! বড় আপত্তিকর ভাবে লুঙ্গিটি বিপদ সীমা অতিক্রম করে আছে ।
বেহুঁশ লোকের হুঁশ ফেরাতে ''মেশিনপত্রে'' খোলা হাওয়া লাগানোর প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা আমার জানা ছিলনা ।

কিছুক্ষণ পর ইয়াহু বলে সেলিম উঠে আমাকে তাড়া দিল - চল চল শো শুরু হয়ে গেছে ।ভিতরে সরিষা ধারণের ঠাই নাই । ওই অবস্থায় আমাদের দুই জনকে গুদামজাত করা হল ।ভিতরে ১০৯ ডিগ্রি উত্তাপ , ফ্যান গুলি ফুজিয়ামা থেকে আমদানি করা বাতাস সাপ্লাই দিচ্ছে । ঘামে সবার লুঙ্গি জামা ভিজা ।রূপালী পর্দার দিকে যেভাবে হা করে আছে , গরমের দিকে কারো ভ্রুক্ষেপ আছে বলে মনে হল না ।
ঈদের পরে দর্শক অত্যাধিক হওয়ায় তখন কোনরূপ বিরতি ছাড়াই শো চলছিল ।

আলফ্রেড হিচকক বলেছিলেন , মুভির দৈর্ঘ্য হতে হবে দর্শকের মূত্রাশয়ের ধারণ ক্ষমতার সমানুপাতিক ।
এই ব্যাটা ইংরেজ । তাই ইংলিশ ছবির দৈর্ঘ্য কম । আমাদের পরিচালকরা হিচকক কে চিনে না ,দর্শকের মূত্রাশয়ের ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কেও এদের কোন ধারনা নাই ।সেলিম কে আমার তারল্যস্ফীতি জনিত নিন্মচাপের কথা বললাম ।
সে বলল এখানে সারিয়ে ফেল !
- এখানে ? হলের ভিতরে ? কস কি ? তাছাড়া দাঁড়াতেই পারছিনা , এখানে বসবো কিভাবে ?
- তোরে বসতে কইছে কে? খাড়াই কাম সারাই দে । সামনে দাঁড়ানো ছাগলা দাঁড়ি ওয়ালা এক হুজুরকে দেখিয়ে বলল এই শালার পুতের লাফ ঝাঁপের জন্য ছবি দেখতে পারছিনা । এর গায়ের উপর ''কাম সারা'' কর ।

- এইটা কি বললি ?
- বলা বলির কিছু নাই ,গানের সিন আসলে ব্যাটা হুম্ম ! হাম্ম! করে লাফ ঝাপ করে বড়ই ডিস্টার্ব করে , তখন কামটা সারাই দিস । এখন দিগদারী করিস না , ছবি দেখতে দে !
- না না ,বলছিলাম যদি টের পেয়ে যায় ?
- টের পাইবো না । দেখছিস না ? ঘামে সবার লুঙ্গী এমনিতেই ভিজা । ছবিতে গান কয়টা গেছে ?
আমি বলি কি আমার সারিন্দায় বলে কি ! মেজাজ খারাপ করে বললাম- দুই টা ।
- ওই দুই গানের সময় আমি ওর গায়ের উপর দুইবার ''কামসারা'' করছি ।
পরবর্তী গান শেষ হওয়ার পূর্বেই আমি উপলব্ধি করলাম , ''ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।''

আহারে ! সেই যে আমার সোনা রঙের দিনগুলি----

(রি-পোস্ট : প্রথম প্রকাশ ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫)

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৩
৪৬টি মন্তব্য ৪৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×