১/ ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার নবজোত সিং সিধু বলেছিলেন আমার সব সময়ই মনে হয়, ক্রিকেট পিচ হলো বউয়ের মতো। কেমন আচরণ করবে, তা আগেভাগে বোঝার উপায় নেই। আসলেই ঠিক,বউরা কখন কি বলে বসে তার ঠিক নেই।
সেদিন বউ বসে বসে ইন্ডিয়ান এক চ্যানেল দেখছে। সেখানে কচ্ছপের কি একটা রেসিপি দেখাচ্ছে। আমি এসেই রিমোট নিয়ে কৃকেট খেলার চ্যানেল দিলাম। বউ রেগে বলল- চ্যানেল পালটালে কেন?আমি রেসিপির অনুষ্ঠান দেখছিলাম।
বললাম: এসব কচ্ছপের রেসিপির অনুষ্ঠান দেখে কি লাভ, তুমি কোনো দিন ওসব রান্না করবে নাকি?
বউ জবাব দিলেন: এই বুড়ো বয়সে তুমিই বা ক্রিকেট খেলা দেখ কোন আক্কেলে? তুমি কৃকেট খেল?
খেলাম ধরা! একেবারে শ্রীকান্ত ধরা; মানে ভারতীয় কৃকেটার শ্রীকান্তও একবার ধরা খেয়েছিলেন। সে গল্পই বলি-
শারজায় ওয়ান-ডে ক্রিকেট সিরিজে ভারত গো-হারা হেরে দেশে ফিরেছে।ভক্তরা ক্ষুব্দ,'দেখলেই মাইর' অবস্থা। দুতিন জন 'গনমাইরের' ও শিকার হয়েছে। ভয়ে, লজ্জায় খেলোয়াড়রা কেউ মুখ দেখাতে পারছে না। সবাই বাড়িতে লুকিয়ে বসে থাকে।এভাবে আর কাহাতক ঘরে বসে বউএর সাথে লতি কুটা যায়। শ্রীকান্ত আর থাকতে না পেরে দাড়ি গোঁফ লাগিয়ে শিখ পাঞ্জাবি সেজে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ল। খানিক দুর যাবার পর একজন মহিলা জিজ্ঞেস করল, এই যে শ্রীকান্ত, কোথায় যাচ্ছ?
শ্রীকান্ত অবাক। মহিলা তাকে চিনল কী করে? পরদিন সালোয়ার-কামিজ পরে মাথায় পরচুলা লাগিয়ে মেয়ে সেজে রাস্তায় বের হল। সেই মহিলার সাথে আবার দেখা। বলল, কি শ্রীকান্ত, কোথায় যাচ্ছ?
শ্রীকান্ত অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাকে চিনলেন কীভাবে?
মহিলা উত্তর দিল, আমি রবি শাস্ত্রী।
২/ হাফ সেঞ্চুরি মানে ৫০। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন আজহার হোসেন শান্টু। ১৯৮৯ সালে শারজায় অস্ট্রেলেশিয়া কাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ।
এর ঠিক ১০ বছর পরে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশে পক্ষ হয়ে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন এই আজহার হোসেন শান্টুর আপন ভাতিজা মেহরাব হোসেন অপি। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন হাবিবুল বাশার।
সেঞ্চুরি/হাফ সেঞ্চুরি শুধু ক্রিকেটাররাই হাঁকাবেন এমন নয়, আমজনতাও মাঝে মাঝে হাঁকায়। এই যেমন গত ৩রা জুলাই আমি হাফ সেঞ্চুরি পুর্ন করলাম; তবে ক্রিকেট নয় জীবনের, রানের নয় বয়সের।
জরা,ব্যাধি,দুর্ঘটনারা যেভাবে গুগলি, ইয়র্কার,স্পিন ডেলিভারী দিচ্ছে সেখানে নিজের উইকেট টিকিয়ে রাখাইতো মুশকিল।এই বিধ্বংসী বল ঠেকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি করা চাট্টিখানি কথা নয়। আল্লাহ পাকের দরবারে অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই সাধারণের জন্ম দিনে আমার অনেক সুহৃদ আমাকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন (ফেবুতে), অনেকে মন্তব্যে, অনেকে স্বশরীরে দেখা করে, আবার অনেকে ইনবক্স বা ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সকলের নিকট কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম। বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞতা জানানোর ছিল একজনকে, যিনি আর আমাদের মাঝে নেই। আবু হেনা আশরাফুল ইসলাম ভাই। গত বছর আমার জন্মদিন উপলক্ষে সামুতে পোস্ট দিয়ে তিনি আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ ও ঋনী করে রেখেছেন। যে ঋন আর কখনো শোধ করা হবেনা।
সকলের নিকট ব্লগার মরহুম আবু হেনা আশরাফুল ইসলাম ভাইএর জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি, আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুন।
পুনশ্চঃ শেষ প্যারার উপরের লিখাটা ২০১৯ সালের ফেবু পোস্ট থেকে নেয়া)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪১