somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ইশ্বর

১৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোট বেলায় মাকে দেখতাম হাঁস-মুরগি লালন পালন করতেন। এগুলো হাঁটে নিয়ে বিক্রির সময় মায়ের চোখে জল দেখতে পেতাম। বুঝতে পারতাম এদের সাথে থাকতে থাকতে মায়া জন্মে গেছে মায়ের। একবার বাড়িতে পালিত এক গাভী কুরবানী দিয়েছিলাম। সেবারও মায়ের চোখে জল দেখেছি। গাভীর শরীরে তেল দিতে দিতে আদর করে দিতেন আর আঁচলে চোখ মুছতেন। আসলে বোবা প্রাণীদের প্রতিও যে এতো ভালোবাসা জন্মাতে পারে তা সরাসরি না দেখলে টের পাওয়া যাবে না। যাদের টাকা আছে তারা ঈদের আগে নগদ টাকায় পশু কিনে কুরবানী করেন। পশুর প্রতি তাদের মায়া থাকে না অতটা। এজন্যই নিজের পালিত পশু কোরবানির প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।

প্রথম ছবিটি দেখে ছোটবেলায় ছাগল পালনের কথা মনে পড়ে গেল। বৃষ্টি আসলে ছাগলগুলো খুবই ডাকাডাকি করতো। মা বলতো ছাগলের দড়ি ভিজে যাবার ভয়ে নাকি ছাগল এমন ডাকাডাকি করে। আমরা ছাগল ছানা কোলে করে আনতাম আর মা ছাগল পিছন পিছন দৌড়ে আসতো। ছাগল পানিতে নামতে খুবই ভয় পায় এর আসল কারণ অবশ্য আমিও জানি না।

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে এক বৃদ্ধ চাচা তার পালিত ছাগল বিক্রির উদ্দেশ্যে হাটে নিয়ে এসেছেন। বৃষ্টি নামার পর ছাগলগুলো নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন একই ছাতার নিচে। প্রাণি দুটি তার মালিকের নিকট নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে। ওরা তো আর জানে না তাদেরকে বিক্রির উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে!

কয়েকদিন আগে প্রথম আলোর নিউজে দেখলাম বাসে করে নির্মম ভাবে কয়েকটা ছাগল আনা হয়েছে ঢাকায়। ছবিটি দেখে কিছুক্ষণ থমকে গিয়েছিলাম। চিন্তা করলাম কতই না কষ্ট হয়েছে ওদের!

প্রাণিদের জন্মই হয়েছে মানুষের জন্য, মানুষের খাদ্য হিসেবে ওদেরকে সৃষ্টিকর্তা হালাল করেছেন। কিন্তু অযথা কষ্ট দিতে নিষেধ করেছেন। এক মহিলা কুকুরকে পানি পান করানোর জন্য ক্ষমা পেয়ে যাবেন আবার আরেক মহিলা বিড়ালকে খাবার না দিয়ে কষ্ট দেবার জন্য জাহান্নামে যাবেন।

কুরবানি আল্লাহর পক্ষ থেকে সামর্থ্যবান বান্দার উপর ফরজ ঈবাদত। হযরত ইসমাইল আ. এর কোরবানীর ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রতি এই বিধান আবশ্যক করে দেয়া হয়েছে। ইব্রাহিম আ. কে নির্দেশ দেয় হয়েছিল প্রিয় বস্তু কোরবানী করতে। ইব্রাহিম আ. তাঁর প্রতি আরোপিত হুকুম পালন করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম আ. এর আনুগত্যে খুশী হয়ে ইসমাইল আ. এর পরিবর্তে দুম্বা কোরবানির মাধ্যমে মুসলিম জাতির পিতার কোরবানি কবুল করে নেন।

অনেকেই কোরবানি দেবার নিয়ত করেছেন। ইতিমধ্যে কোরবানির প্রাণীটিও ক্রয় করেছেন অনেকে। সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে প্রাণিটির প্রতি খেয়াল রাখবেন। তাকে ঠিক মতো পানি এবং খাদ্য দিবেন। যথাসম্ভব কম কষ্ট দিয়ে কোরবানি করুন। আর একটি কথা মনে রাখবেন, কোরবানির পশুর রক্ত, চামড়া কিংবা গোশত আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না। পৌঁছাবে আপনার তাকওয়া, আল্লাহর প্রতি আপনার আনুগত্য। সবার প্রতি অনুরোধ কোরবানির গোশতে ফ্রিজ না ভরে গরীবদের যথাসম্ভব দান করে দিন। যারা বছরের এই একটি দিনের আশায় বসে থাকে গোশত খাওয়ার জন্য।

কোরবানি মানে ত্যাগ। কোরবানির মাধ্যমে মনের পশুরও কোরবানি হোক। জাগ্রত হোক মনুষ্যত্ব। ঈদের ছুটিতে ভুলে গেলে চলবেনা আমরা করোনা অতিমারির কঠিন সময় পার করছি। যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। অন্যকেউ উৎসাহিত করুন।

এই মাসে হয়তো আর পোস্ট দেয়া হয়ে উঠবেনা। ঈদের পর আবার ব্লগিংয়ে ফিরবো। কিন্তু আপনাদের লেখা পড়বো। ভালো থাকবেন সবাই। সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। তাকাব্বালাল্লাহু মিন্নি ওয়া মিনকুম।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:০১
১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×