somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই নেত্রীর ফোনালাপ.... টেক্সট কপি

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে। প্রধানমন্ত্রীর এডিসি এমরানের মোবাইল থেকে বিরোধী দলীয় নেতার বিশেষ সহকারী এডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের মোবাইলে এই ফোনালাপ হয়। দীর্ঘ ফোনালাপে দুই নেত্রী ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিক্ত অভিজ্ঞতাও বিনিময় করেন।শুরুতেই

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপা কেমন আছেন? আমি আপনাকে দুপুরে ফোন দিয়েছিলাম।

জবাবে খালেদা বলেন, আপনার কোন ফোন আমি পাই নি।

শেখ হাসিনা : আমি নিজে ফোন করেছি। কিন্তু আপনি ধরেন নি।
খালেদা জিয়া : রেডফোন তো অনেকদিন ধরে বিকল। আমার অফিস থেকে চিঠি দেয়ার পরেও এই ফোন ঠিক করা হয়নি।

শেখ হাসিনা : কেন আমি তো রিংয়ের শব্দ শুনেছি। আপনি শুনেন নি।
খালেদা জিয়া : না না কোন রিং হয়নি। আমিতো বাসায়ই ছিলাম। রিং হবে কিভাবে? ওই ফোনতো নষ্ট দু’বছর ধরে।

শেখ হাসিনা : ফোন নষ্ট ছিল, না নষ্ট করে রেখেছেন?

খালেদা জিয়া : কেমন কথা বলছেন। আপনার লোকদের জিজ্ঞাস করেন। লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। টিএ্যান্ডটির কর্মকর্তা বলেছেন ফোন নাকি ঠিক আছে। কিন্তু এটা মিথ্যা কথা।

শেখ হাসিনা : কিন্তু আমিতো রিং এর শব্দ শুনেছি। অনেকক্ষন রিং হয়েছে। কেউ ধরে নি। আপনি মিথ্যা বলছেন কেন? আপনার হয়তো কানে সমস্যা আছে।

খালেদা জিয়া : আমার মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস নেই। এসব অভ্যাস আপনার আছে।

শেখ হাসিনা : আচ্ছা বিষয়টি আমি দেখবো। যদি নষ্ট হয়ে থাকে আগামীকাল ১১টার মধ্যে ওটা ঠিক হয়ে যাবে। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে গণভবনে এসে কথা বলার জন্য আমি ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় আপনাকে দাওয়াত করছি। আপনি জানেন আমি ইতিমধ্যে অন্যদের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি। আমার সঙ্গে রাতের খাবার খাবেন।

খালেদা জিয়া : আপনি কি র্নিদলীয় সরকার নিয়ে আলাপ করার জন্য আমাকে ডেকেছেন ? যদি এটি নিয়ে ডাকেন তাহলে আমি আসব।শেখ হাসিনা : আমিতো সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছি। ওটা নিয়ে যদি আপনার কোন সাজেশন থাকে, আমরা সেটা শুনব।

খালেদা জিয়া : এটা আপনার প্রস্তাব। জনগনের এই প্রস্তাবে সায় নেই। এতে তো সমস্যার সমাধান হাবে না। আপনি র্নিদলীয় সরকারের প্রস্তাব নীতিগতভাবে মেনে নেন।

শেখ হাসিনা : আমি যে প্রস্তাব দিয়েছি। তাতে তো আপনার দলের লোকও থাকবে। রাজনীতিবিদরা মিলে এই সরকার হবে। রাজনীতিবিদদের প্রতি আপনার আস্থা নেই কেন ? আপনি র্নিদলীয় সরকার দেখেন নি ? তারা কি করেছে আপনার মনে নেই ?

খালেদা জিয়া : সেটা ভিন্ন বিষয় ছিল। এখন র্নিদলীয় সরকারের দাবি আমার একার না। এটা দেশের সব মানুষের দাবি।

শেখ হাসিনা : আপনি আগে আসেন। আপনার দলের যতজন খুশী সব নিয়ে আসেন। তালিকাটা আগে পাঠিয়ে দেবেন। তবে আসার আগে দেশের স্বার্থে হরতাল প্রত্যাহার করে আসবেন।

খালেদা জিয়া : আপনার বাসায় আসতে আমার কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু হরতাল এথন প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। আপনি যদি আমাকে একদিন আগে বলতেন বা আজ সকালেও বলতেন, তাহলেও আমি চেষ্টা করে দেখতাম। হরতাল তো আমি একা ডাকেনি। ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের পুলিশ তাড়া করছে। তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আলোচনা করার জন্য এখন তাদেরতো পাবো না।


শেখ হাসিনা : দেখেন আমি আন্তরিকতা নিয়ে ফোন করেছি। আপনিতো আমারে গ্রেনেড হামলা করে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। আরো কতকিছু করেছেন। তারপরেও তো আমি ফোন দিয়েছি।

খালেদা জিয়া : কে কি করেছে তা আপনিও জানেন, আমিও জানি, দেশের মানুষও জানে। এগুলো বাদ দেন। অতীত নিয়ে বসে থাকলে আমরা সামনে অগ্রসর হতে পারব না। আজো আমার ৮ জন লোককে হত্যা করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা : দেখেন আপনি তো ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন। কিন্তু ওটা তো আপনার জন্মদিন নয়। আপনি আমাদের বাসায় বহুবার এসেছিলেন। আমার ছোট ভাই রাসেলকে দেখেছেন। ছোট্ট এই শিশুটিকে হত্যার দিনে আপনি কি করে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন ?

খালেদা জিয়া : দেখেন ১৫ আগস্ট কারো মৃত্যুদিন যেমন হতে পারে, তেমনি অনেকেরই জন্মদিনও হতে পারে। ১৫ আগস্ট কারো জন্মদিন হলে সে কি দিনটি পালন করবে না ? আমার জন্মদিনে আমি পালন করবো, এটা তো আমার নিজস্ব ব্যাপার। আমি তো আপনার কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করি না।

শেখ হাসিনা : যাই হোক, এখন আলোচনার জন্য আমার আন্তরিকতা আছে। তাই ফোন করেছি। আপনি আসেন। আমরা আলাপ-আলোচনা করি।

খালেদা জিয়া : আপনার আন্তরিকতা থাকলে, আরো আগেই ফোন দিতেন। এখনো যদি নীতিগতভাবে র্নিদলীয় সরকারের দাবি মেনে নেন, তাহলে হরতালসহ সব কর্মসূচি বন্ধ করার দায়িত্ব আমি নেবো। সমাধান হয়ে গেলে তো আর কোন কর্মসূচির দরকার হবে না।

শেখ হাসিনা : আপা আপনি আগে আসেন। হরতাল প্রত্যাহার করে আসেন।

খালেদা জিয়া : ২৯ তারিখ পর্যন্ত তো আমার কর্মসূচি আছে। ২৯ তারিখের পর যেকোন দিন যেকোন স্থানে আপনি ডাকলে আমি আসবো।

শেখ হাসিনা : হরতাল প্রত্যাহার করে আসেন। আমরা বসলে একটা সমাধান হবে।

খালেদা জিয়া : না না না আগে আপনি ঘোষণা দেন। তাহলে আমার বসতে কোন অসুবিধা হবে না।

শেখ হাসিনা : আপনি আপনার দলের নির্বাচিতদের নাম দেন। বাইরের লোকদের নাম প্রস্তাব করছেন কেন। দেশ চালাবো আমরা। বাইরের লোকের দরকার কি ? আমাদের উপর আস্থা রাখছেন না কেন।

খালেদা জিয়া : আপনিও তো আমার উপর আস্থা রাখেন নি। সে কারণেই এখন দলের বাইরের লোক লাগবে। দেশের মানুষ র্নিদলীয় সরকার চায়। আপনি এ দাবি মেনে নিলেই সমস্যা শেষ হয়ে যাবে। আপনি যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পছন্দ নাই করেন, তাহলে কেন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে এই দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন ? ২০০৭ সালে কেন ওই সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এটা আপনাদের আন্দোলনের ফসল। এরপর সেই সরকারের অধীনে নির্বাচনেও গিয়েছিলেন। কিন্তু আজ বলছেন অন্য কথা।


শেখ হাসিনা : দেখেন আপা, অভিজ্ঞতা যেমন আমার আছে, তেমনি আপনারও আছে। আমরা তো আপনাদের লোক নিয়েই অন্তবর্তী সরকার করতে চাচ্ছি। আপনি এখন চিন্তা করে দেখেন।

খালেদা জিয়া : এখানে চিন্তার কিছু নেই। আপনি দাবি মেনে নিন। দেশের মানুষকে শান্তি দিন। এই দেশটা আপনারও না, আমারও না, ১৬ কোটি মানুষের। তাদের শান্তির কথা, স্বার্থের কথা চিন্তা করেন। আমি তো সেসময়ে আপনার দাবি মেনে ছিলাম। আমি তো এখন আমার দলের সরকার চাই না। আমার নিজের সরকারও চাই না। চাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় লোকদের সরকার। সেটা মানতে আপনার আপত্তি কেন বুঝতে পারছি না।

( আরও আছে হাতে পেলেই জানাচ্ছি )
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:০৯
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×