somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেলা শেষে

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাবা,দুইটা টাকা দিবেন?সকাল থেকে কিছু খাই নাই।
লোকটা জানালা দিয়ে ভিক্ষা চাচ্ছে।আজকাল ভিক্ষুকরা বেশি জ্বালাতন করে বলে রফিক অনেক খুজে এই মেস বের করেছে।নীচতলায় তার রুম।গেইট সবসময় লাগান থাকে।সমস্যা একটাই,আগে ভিক্ষুকরা দরজা ধাক্কাতো ভিক্ষার জন্য আর এখন জানালা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে ভিক্ষা খুজে। একবার তো এক ভিক্ষুক হাত ঢুকিয়েই ক্ষান্ত হয় নি, হাতের কাছে যা পেয়েছে নিয়ে গিয়েছে।অবশ্য রফিকের ঘর থেকে নেওয়ার মতো কিছু তেমন নেই।তার বিছানা জানালার কাছেই।বিছানার পাশেই চেয়ার।ঐ রাতে সে তার আন্ডারওয়ার টা চেয়ারে রেখেছিলো। ভিক্ষুক তথা চোর এসে জানালা দিয়ে হাতড়িয়ে সেই আন্ডাওয়ার টাই নিয়ে গিয়েছিলো।পরে রফিক অন্রক চিন্তা করেও বের করতে পারে নাই, চোর টা আন্ডারয়ার টা কেন নিলো।মনে হয় চোর ও তার মতই খুব বাজে অবস্থায় দিনাতিপাত করছে, চুরির সুযোগ খুব একটা পাচ্ছে না। আজকাল বাড়ি গুলোতে যা সিকিউরিটি, সুযোগ কম ই থাকার কথা।তবে রফিক ঐ ঘটনার পর থেকে সাবধান হয়েছে।
কিন্তু আজকের ভিক্ষুক বেটা তো দেখি যাচ্ছেই না।অন্যদিন হলে তো দুই একবার ডাক দিয়েই চলে যায়।
সে কাল অনেক রাত করে ঘুমিয়েছে, এম্নিতেই।এই সাতসকালে ভিক্ষুকের ডাকে ঘুম ভাঙ্গাটা কারো জন্যই সুখকর নয়।সে অতি কষ্টে চোখ মেলে তাকালো।বেশ বলশালী ভিক্ষুক।ওর এক বাহু রফিকের দুই বাহুর সমান।রফিক বললো, মাফ মাফ করেন। ভিক্ষুক কে খুব একটা বিচলিতো মনে হল না।সে দিগুন উৎসাহ নিয়ে বললো, বাপ আজ জুম্মাবার, খালি হাতে ফেরত দিবেন?সারাদিন কিছু খাই নাই।
বলে কি এই লোক।সবেমাত্র সকাল ৮টা বাজে।সারাদিন টা কিভাবে হলো? যাই হোক রফিক অনেক কষ্টে উঠে জানালা টা লাগিয়ে আবার শুয়ে পড়লো।কিন্তু ঘুম একাবার কেটে গেলে তা আনা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ।মনে হয় আজকের সকালের ঘুম টা গেলো।
তার মেস টা ফার্মগেটের কাছাকাছি।এই মেস খুজে বের করতে তার অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।ঢাকা শহরে মাসে ২০০০ টাকায় এখন মেস পাওয়া আর কোরবানির বাজারে ২০০০ টাকায় উট পাওয়া একই কথা। সে একটা টিউশনি করে।সেটা দিয়ে তার চলতে হয়।তাই ভিক্ষুক কে দান করার মতো মহান কাজে অংশগ্রহন করা তার পক্ষে সম্ভব না।এমন ও হতে পারে শেষ পর্যন্ত তাকেই হয়তো এই কাজে নামতে হবে। ক্রমাগতোই বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেই যাচ্ছে।লাভের মাঝে লাভ এটাই হচ্ছে যে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট টাকা অহেতুক খরচ হচ্ছে।অহেতুক এই কারনে যে। আজ পর্যন্ত খুব কম যায়গা থেকেই তাকে ডাকা হয়েছে।কিন্তু চেষ্টা তো আর থামিয়ে রাখা যায় না। অবশ্য এখন আর সে খুব একটা বেশী আবেদন করেও না।যা আছে কপালে।সমস্যা একটাই, প্রায়ই মাসের শেষ কয়েকটান দিন তাকে বোনদের বাসায় দুপুরে বা রাতে খাওয়ার জন্য উপস্থিত হতে হয়। প্রথম প্রথম দুলাভাই রা খাওয়ার টেবিলে বসে গল্প টল্প করতেন।চাকরির জন্য উৎসাহ দিতেন।কিন্তু যখন তারা দেখলেন ব্যাপারটা প্রতি মাসেই ঘটছে,তখন তারা ইশারা ইংগিতে বুঝিয়ে দিতেন যে, তুমি এই বাসায় আস আমরা চাই না। শুধু ফেরেশতারূপী ( মেয়েদের কি ফেরেশতা বলা যায়?) দু’টো বড়বোন ছিলো বলে রক্ষা। বোনরা মাঝে মাঝেই আসার সময় তার পকেটে ৫০ ১০০ টাকা গুজে দেয়।সে অবশ্য কনদিন ই না বলে না।এসব ব্যাপারে না বলা টা ভুল,এটা সে বুঝে গেছে। মাঝে মাঝে তার ওদের জন্য খুব খারাপ লাগে যাদের তার মতো এমন বড়বোন নেই।এবং পরমূহুর্তেই নিজেকে খুব সুখি মনে হয়।অবশ্য এই সুখ বেশিক্ষন স্থায়ী হয় না,কারন বোনদের কথা মনে পড়ার সাথে দুলাভাইদের মুখ ও মনে পড়ে কিনা।
আজ মাসের ২৩ তারিখ। এবং আজ কোনো এক বোনের বাসাতেই যেতে হবে।পকেটে মাত্র ১০ টাকার একতা নুতন নোট আছে। যেতে হবে বড় বোনের বাসায়।তার বাসা ধানমন্ডি।হেটে যেতে ৩০/৩৫ মিনিটের মতো লাগবে।যেতে হবে দুপুর করে।তখন দুলাভাই বাসায় থাকেন না।দুপুরে উনি বাইরে খান। বড়বোনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আগামীকাল যাবে ছোট বোনের বাসায়।ওর বাসা মীরপুর।ওর ওখানেও দুপুরেই যেতে হবে।এবং বাকি মাস রাতে উপোষ করতে হবে। অসুবিধা নাই।ব্যাপারটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।
নাহ,এইবার উঠা যায়।প্রথমেই যেতে হবে কাওরান বাজার।এইসময়ে গেলে বাবর হোটেলে নিশ্চিত সাব্বির কে পাওয়া যাবে।তাহলে সকালের নাস্তা টাও হয়ে যাবে।মাঝে মাঝে রফিক ভাবে সাব্বির ছেলেটার জন্মই বোধহয় হয়েছে রফিক কে খাওয়ানোর জন্য।সে রফিকের চাকরির জন্য কম দৌড়ায় নাই।কিন্তু রফিকের চাকরি ভাগ্য এতোই খারাপ যে বেশীরভাগ সময়েই তার বায়োডাটা খুলেই দেখা হয় না।অন্ততো রফিকের এটাই ধারনা।নাহয় তাকে ডাকবেনা কেনো?
টেবিলে টুথপেস্ট থাকার কথা।ওটা যায়গামতোই আছে কিন্তু ভিতরে পেস্ট নেই।পাশের রুমের করিম ভাইর কাছে নিশ্চয় পাওয়া যাবে। সমস্যা একটা উনার ব্যাবহার খুব খারাপ।
টক টক টক।
কে?
করিম ভাই আমি রফিক
এতো সকালে কী?
ভাই টুথপেস্ট হবে?
তোমার কাছে কী মনে হয় আম,ই মনোহরি দোকান খুলে বসছি?
না তা কেনো হবে?আসলে আমার পেস্ট শেষ।
তো আমি কি করব?আমি কি তোমার জন্য পেস্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো?
করিম ভাই ,দরজা টা তো খুলেন
না, আমি ঘুমাচ্ছি।যাও।
মনে মনে করিম ভাই কে সুন্দর ভাসায় কিছু গালি দিয়ে রফিক রুমেই চলে আসলো।থাক,একদিন দাত না ব্রাশ করলে তার খুব একটা ক্ষতি নেই।সে তো আর টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন করতে যাচ্ছে না যে তার দাত সবসময় ঝঝকে থাকতে হবে।আর হলুদ দাত ও খারাপ না।একটা ভেরিয়েশন আসবে।
শার্ট মোটামোটি সব ই ময়লা।সব বলতে তিনটা শার্ট।তিনটা ই বড় আপা দিয়েছে। অবশ্য পাঞ্জাবী পরে বের হওয়া যায়।সে পাঞ্জাবীটা পরেই হাটা দিলো।
ঢাকা শহরে পাপ বেশী হচ্ছে।তাই বেশী বেশী রোদ দিয়ে আল্লাহ মানুষ কে কষ্ট দিচ্ছেন।ছোট বেলায় তার হূযুর এই কথাই বলতেন।ঘটনা বোধহয় আসলেও তাই।এখন হুডতোলা ছাড়া কোনো রিকশাই দেখা যায় না।এবং প্রতি টা রিকশাতেই একজোড়া তরুন তরুনী।প্রায়ই মেয়েগুলো গভীর প্রেম নিয়ে তাদের প্রেমিকের দিকে তাকিয়ে থাকে আর প্রেমিকরা গভীর ভালোবাসার প্রতিদান সরূপ তাদের প্রেমিকার পিঠে হাত রেখে খুব ঘনিষ্ট হয়ে বসে।বাকীটা আর না ভাবাই ভালো।
বাবর হোটেলে ঢুকতেই সাব্বির কে কোনার টেবিলে দেখা গেলো।সোজা গিয়ে ওর টেবিলের সামনে দাড়ালো রফিক।
কীরে বেকার হাবার মতো দাড়িয়ে আছিস কেন?
তুই অনুমতি দিলে বসবো।
আমি অনুমতি দিবো কেন?
কারন তোর টাকায় এখন নাস্তা করবোতো তাই।
কেন?আমি কী হাজী মহসীন?
না তুই হাজী সাব্বির।
লাত্থি মেরে শালা তোর পেট ফাটাই দেওয়া উচিত।
দে।আমি মেয়ে না যে আমার পেটে বাচ্ছা থাকবে।আমার পেট ফাটালেও সমস্যা নাই।কিন্ত এখন নাস্তার অর্ডার টা তো দে।
ওটা আর আমার জন্য বাকী কেন?ওটাও নিজেই করে নেন না।তো চাকরির কিছু হলো?
নাহ
তোর একটা সিভি তো আমার কাছে আছেই।দেখি।
এই দেখি তো অনেকদিন ধরে শুনতেছি।
চুপ থাক শালা
কেন?
চুপ।







বেলা ১২টা।বড় আপার বাসায় যাওয়ার এটাই উত্তম সময়।
দরজা খুললো ভাগ্নী ফারহা।আজকাল বাচ্ছাদের বিদেশী নাম রাখাটাও ফ্যাশন।
কিরে বুড়ী আজ তোর স্কুল নেই?
মামা তোমাকে কতবার বলেছি আমাকে বুড়ী ডাকবেনা।
তাহলে কি ডাকবো?
আমার নাম নেই?
হুম, তা তো আছেই।তোর আম্মু কই?
রান্নাঘরে।
আয়েশা রান্না করছিলেন।রফিক কাছে যেয়ে দাড়ালো। কেনো জানি বড় আপাদের গা থেকে মা মা গন্ধ আস সবসময়।
আপা কি করছো?
কাবাডি খেলছি।
কাবাডি তো মেয়েদের খেলা না আপা।
ফাজলামি করতে খুব ভালো লাগে?
ওমা তুমি করতে পারবা আমি করতে পারবো না?
না, পারবি না।আমি পারবো।কারন আমি তোর মতো বেকার না।অপদার্থ একটা জন্মেছিস।দিন যতো যাচ্ছে লাজ লজ্জ্বা ততোই কমছে যেন।
আপা,তোমার সাথে বেকারত্তের মতো গুরুত্তপূর্ণ আলাপ চালিয়ে যাওয়া বোকামি।কারন তুমি ডালে নুন ঠিকমতো হয়েছে কিনা এটা নিয়েই নিজেকে সাকার ভাবছো।
সাকার কী জিনিষ?
বেকারের উল্টা।
বাংলা বিশারদ হচ্ছিস নাকি?
হুম।দুলাভাই নেই?
ও নেই জেনেই তো এসেছিস।থাকলে কি আস্তি?আর ও তো তোর মতো বেকার না।ওর অফিস আছে।
আপা তুমি এমন অপমান করে কথা বলছো কেন?
তো কি আপনাকে প্রনাম করে কথা বলতে হবে? সকালে খেয়েছিস কিছু?
হুম।ভাত হয়েছে?
কেন? দুপুরে খাওয়ার টাকা নেই বলেই তো এসেছিস।ভাত হয়েছে কিনা তা জানার দরকার কি?
তোমার সাথে কথা বলাটাই বৃথা।
বলতে বলেছে কে?যা, রাস্তায় ঘুর, দেখি তোকে কে খাওয়ায়।
হুম যাচ্ছি।খেয়েই রাস্তায় নামবো।আর আসবোনা তোমার বাসায়।
এই কথা তো প্রতিবার ই শুনি।
উফফ।
যা, টিভি দেখ।খাওয়া হলে ডাকবো।
এই বাসায় বসার যায়গা নেই।বসলে হয় টিভির রুমে বসতে হবে নাহয় ফারহার রুমে।ফারহা এইবার ক্লাস এইট এর পরীক্ষা দিবে।ওর সাথে অবস্য গল্প করা যায়। ও এমন ভাব দেখাবে যে সে রফিক কে পছন্দই করে না।কিন্তু আসলে সে মামা বলতে অজ্ঞান।প্রায় ই সে বাবা কে বলে তার মামা কে এখানে নিয়ে আসার কথা।কিন্তু রইসউদ্দিন সাহেব ব্যাপার টা সযত্নে এড়িয়ে যান।
কিরে বুড়ী কী করছিস?
মামা,আমার এক্সাম। ডিস্টার্ব করনাতো।আর আমাকে বুড়ী ডাকলে আমার সাথে কথা বলার দকার নেই।
তো বুড়ী কে কী ডাকব?ছুড়ি?
মামা প্লীজ যাও তো।
কই যাবো ? তোদের বাসা টা তো আর ফুটবল মাঠ না যে এক কোনায় যেয়ে বসে থাকবো।
তাহলে না আসলেই হয়।
এই তোর কাছে ২০ টাকা হবে?
মামা, ভাগ্নীরকাছে টাকা চাইতে লজ্জ্বা করে না?
আমার করে না।কারন আমার ভাগ্নী টা অনেক লক্ষী।
হয়েছে টাকার জন্য আর পাম্প দিতে হবে না।টাকা দিয়ে কী করবা?
ওমা পিচ্ছি মেয়ে কইফিয়ত চায়।
না বললে দিবো না।নিশ্চয়ই সিগারেট খাওয়ার টাকা শেষ, তাই না?
শুধু সিগারেট না রে, টুথপেস্ট কিনার টাকাও নাই।
আমার কাছে নেই।আম্মুর কাছ থেকে নিয়ে নিও।।
তুই ও কিছু দে না।
উফফ মামা।
এমন সময়ে আয়েশা এসে দুজনকেই খাওয়ার জন্য ডাকলেন,আয়োজন সামান্য।ভাত, ডাল, মাছ, সবজি।
তো আর কোনো ডাক পেয়েছিস?
হু পেয়েছি,আজ সকালে ভিক্ষুকের ডাক পেয়েছি।
মানে কি?
মানে যা অবস্থা তাতে আর দুই দিন পর হয়তো এই পথেই নামতে হবে।
তাও ভালো নাম।
আপা তুমি বোন হয়ে ভাই কে ভিক্ষা করতে উৎসাহ দিচ্ছ?
হু, দিচ্ছি,তোর মতো ভাই থাকার চেয়ে না থাকা ভালো।
এমন সময় মুখ বিকৃত করে ফারহা বলে উঠলো ,
মামা, তুমি সত্যি সত্যি ভিক্ষা করবে?
দেখি চিন্তা করে।করতেও পারি
খাওয়া শেষ।আসলে খুব আরাম করে খেয়েছে রফিক।বড় আপার রান্না খুব উচুশ্রেনীর যে তা না,কিন্তু ভালোই লাগে।হাত ধুতে ধুতে বললো,
আপা যাই
রফিক হাত ধোওয়ার সময় ই আপা ভিতরে গিয়েছিলেন।এখন আসলেন।এসেই রফিকের হাতে ২০০টাকা দিলেন।
নে ধর,এটা দিয়ে ইচ্ছামতো সিগারেট খাস আর দুই দিন পর আমার ভাত খেতে আসিস।অপদার্থ কোথাকার।
আপা টাকা দিয়েছো বলে অপমান করবে না কিন্তু।
এতো বড় বড় কথা জানিস কিভাবে?একটা চাকরি যোগাড় করতে পারস না? মা বাবার সাথে কথা হয় না কয়দিন?
উনাদের সাথে কথা হতে যাবে কেনো?উনারাতো আমাকে বের ই করে দিয়েছেন।
ও, উই লাটসাহেব হয়েছেন,তাই উনার অভিমান হয়েছে।
আপা গেলাম।

দুপুর বেলার তীব্র রোদ রাস্তায়।পিচ মনে হয় গলেই যাবে।মোড়ে এসে সে একটা গোল্ডলীফ ধরালো।এইটুকুন একটা সিগারেট ৫ টাকা দাম এবং প্রতি বছর ই দাম বাড়ছে। বাজেট এ সব কিছুর দাম বাড়ুক কিন্তু সিগারেটের দাম বাড়বে কেনো?সিগারেট ধরিয়ে এই রোদেই সে হাটতে লাগলো।মেসে যাওয়া দরকার ।কিছুক্ষন শুয়ে থাকবে।সন্ধার পর টিউশনি তে যাবে।

রুমে ফিরেই দেখলো সাকিব বসে আছে।সাকিব ও তার মতোই বেকার।তার অনেক পুরান বন্ধু। একবার সে আত্মহননের চেষ্টাও করেছিলো। লাভ হয় নাই।পরিবারের লোকজন খুজে বের করে ফেলেছে।তারপরেই বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। মাঝেমাঝে রফিক চিন্তা করে ওরা যদি ওকে বের ই করে দিবে তাহলে কষ্ট করে ওকে খুজে বের করার দরকার কি ছিলো?
কিরে বেকার কী এখানে?
শালা নিজে বেকার আরেকজন কে বেকার ডাকতে লজ্জ্বা লাগে না?
না লাগে না।তোর অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছে নেশাপানি করে এসেছিস।
হুম
শালা পকেটে খাওয়ার টাকা থাকে না আবার নেশা।শালা বেশরম।
পানি একটু আছে এখনো।
সাথে?
হু।
রেখে দে,রাতে হবে।
আচ্ছা ।
আমার পাশে এসে শুয়ে থাক।আমি একটু শুবো। বিকেলে আবার টিউশনি আছে।
বাধ্যছেলের মতো বোতলটা একপাশে রেখে মেঝেতে রেখে রফিকের পাশে এসে তাকে জরীয়ে শুয়ে পড়লো সাকিব।ওর মনে হয় আজ মন খারাপ।মন খারাপ হলেই ও নেশা করে আর রফিকের জন্যেও নিয়ে আসে একটু।তার এই বন্ধুটির মতো মহৎপ্রাণ মানুষ খুব ই কম দেখেছে রফিক।তার সবচেয়ে ভালো গুণ হলো সে পথেঘাটে যেখানেই গরিব আসহায় কাউকে দেখবে সাহায্য করবে।২টা টিউশনি করে চলে সে।টিউশনির টাকার অর্ধেক ই সে এই কাজে ব্যায় করে।যেদিন টাকা থাকেনা সেদিন ই সে করতে পারে না এবং সেদিন ই তার খুব মন খারাপ হয়।সেদিন ই সে বাকীতে অথবা ধার করে নেশা করে।মনেমনে ভাবে রফিক,উপরওয়ালা এমন কেনো?যাদের অনেক আছে তাদেরচ দেওয়ার মন দেন নি আর যাদের নেই তাদের আকাশ সমান একটা মন দিয়েছেন।এ কেমন অবিচার?
ঘুম ত্থেকে উঠে দেখলো ৬টা বাজে।টিউশনির দিকে এখন যাওয়াই যায়।সাকিব ঘুমাচ্ছে এখনো।ঘুমাক।মনে হয় কয়েকদিন থাকবে।প্রায়ই থাকে।যখন পাওনাদার রা তার খোজে মেসে যাওয়া শুরু করে তখন।সব শালা ফকির ।এটা ভেবেই খুব হাসি পেলো।

এইবাড়ির কলিংবেল টিপলেই একটা পাখির ডাক বেজে উঠে । শুনতে ভালোই লাগে।কাজের বুয়া দরজা খুলে দিলো এবং প্রতিদিনের মতো অত্যন্ত বিরক্তি সহকারে বললো , আহেন,ভিতরে আইয়া বহেন। বসতে বসতে রফিক বললো , বুয়া এক গ্লাস ঠান্ডা পানি আনতো।অনেকদূর হেটে আস্লাম।বুয়া ,”বহেন” বলে ভিতরে উধাও হয়ে গেলো।সে জানে পানি আনতে বুয়া কমপক্ষে এক ঘন্টা লাগাবে।কিভাবে কিভাবে যেন কাজের লোক, দারোয়ান,মালী এরাও বুঝে কাকে সম্মান করতে হবে কাকে করতে হবে না।তার অবস্থাও তেমন ই।বুয়া বলতে গেলে তাকে পাত্তাই দেয় না।অথচ সে জেরিন এর টীচার।জেরিন তার ছাত্রীর নাম।এই মেয়ের কাজ হচ্ছে দীর্ঘ এই একটি ঘন্টা তার টীচারের সাথে গল্প করা।ব্যাপার টা কি সে শুধু রফিকের সাথেই করে নাকি অন্য টীচারদের সাথেও করে তা বুঝা যাচ্ছে না।শুধু রফিকের আর কন টাকা উপার্জনের উপায় নেই বলে,নাহয় সে অনেক আগেই এই টিউশনি টা ছেড়ে দিতো।মেয়েটা অতিরিক্ত বজ্জাত মেয়ে।বেশীরভাগ সময়েই সে শুধু টী শার্ট আর স্কার্ট পরে আসে।এবং যতক্ষন থাকে শুধু ক্লাসের গল্পই করে।পড়া কোনোদিন ই শিখে না।প্রথম সাময়িকের আর এক মাস বাকী।তারপ্র রেজাল্ট যখন বের হবে এবং এই মেয়ে জকজন ফেল করবে তখন তো তার এই টিউশনি টা ও যাবে।তখন যে কিভাবে চলবে তা চিন্তা করে এখন ই রফিকের হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে। তাই সে অনেক কষ্ট করে মেয়ে টা কে পড়া শিখানোর জন্য কিন্তু লাভ হচ্ছে না।আজ থেকে খুব কঠিন ব্যবহার করতে হবে,তাতে যদি কিছু হয়।

স্লামালিকুম স্যার
আমি এসেছি ২০ মিনিট হলো।তোমাকে কি কেউ খবর দেয় নি?
দিয়েছে স্যার।
তাহলে দেরী করলে কেনো? জানো না আমি ব্যাস্ত?এখান থেকে আমাকে অন্য একটা টিউশনি তে যেতে হবে? ( এগুলো সব রফিকের ইদানিং এর বানানো।যাতে তারা মনে করে রফিকের টিউশনি অনেক এবং তাতে বুঝবে যে সে টীচার হিসেবে খারাপ না বলেই তার টিউশনি অনেক।এতে করে তাকে বাদ দেওয়্র আগে চিন্তা ভাবনা করবে।)
জ্বী জানি।
তাহলে?
সরি স্যার
বোসো।কি পড়া ছিলো?
গনিত।
বারীর কাজ করেছো?
( মাথা নিচু)
চুপ করে আছো কেন?একটু পর তো রাজ্যের গল্প শুরু করবা।
(মাথা নিচু)
স্যার আমি একটু ভিতরে যাবো।এইমাত্র না আসলে?
(মাথা নিচু)
আচ্ছা যাও।
রফিকের মনে সন্দেহ হলো মেয়েটি তার মা’র কাহে নালিশ দিতে যায় নি তো?তাহলে তো সাড়ে সর্বনাশ হবে।দুই মাস আগেই টুইশনি চলে যাবে।ছাত্রীর মা কে আসতে দেখা যাচ্ছে।ব্যপার সুবিধার না।
রফিক সাহেব,
জ্বী আন্টি স্লামালিকুম
হুম বসুন
জ্বী।
আপনি নাকি জেরিন কে বকা দিয়েছেন?
ও কি তেমন ই বলেছে?
না ও কিছুই বলে না। যেয়ে দেখি কাঁদছে।যেহেতু আপনার কাছ থেকেই ভিতরে গিয়েছে তাই অনুমান করলাম।
আপনার অনুমান সঠিক।
কেনো বকা দিলেন?
ও কখনোই পড়া শিখে না।
এটাই কি কারন?
এটাই কি যথেষ্ট না?
শুনুন ওকে আমরা খুব আদর করে মানুষ করছি।বকা না দিয়ে অন্যভাবে বুঝান।আর নাহয় আমরা আন্য গৃহশিক্ষক দেখব।
আচ্ছা।
আজ আপনি চলে যান। আয আর ও পড়বে না।
আচ্ছা।
রফিক রাস্তায় নেমে আসলো।আচ্ছা ওরা কি জানে না যে বাসায় টীচার আসলে তাকে এক কাপ চা হলেও খাওয়াতে হয়।এরা তাও খাওয়ায় না।মাত্র ৭টা বাজে।কি করা যায়?মেসে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না,গেলেই সাকিবের পেনপেনানি শুনতে হবে।শামসুন্নাহার হলে যেয়ে রুনু কে খবর দেওয়া যায়।অবশ্য রুনু নামবে বলে মনে হয় না।রুনুর বাসা থেকে বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে।সে কেদে কেদে রফিক বলেছে।রফিক তখন ই রনর বাবা কে ফোন দিলো একটা দোকান থেকে।তাদের কথাবার্তা নিম্নরূপ
হ্যালো স্লামালিকুম
কে?
জ্বী আমি রফিক ।
রফিক কে?
জ্বী আমি আপনার মেয়ের পাণিপ্রার্থী।
মানে কি?আমার সাথে সাহিত্য কপচাতে হবে না।কে তুমি?
আপনার মেয়ের সাথে আমার দীর্ঘ ৩ বছরের পরিচয়।তাকে আমার ভালো লাগে।আমি কি প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারি?
ও আচ্ছা,তাই?তা তুমি কি কর?
কিছু না
মানে?
মানে করার চেষ্টা চালাচ্ছি।
ও আচ্ছা, আর কিছু বলবে?
জ্বী না
বাই।
এই কথা বলে উনি ফোন রেখে দিলেন।পরবর্তি ফলাফল সরূপ রুনুকে হল থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো।এখন তার ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা তাই তাকে আসতে দেওয়া হয়েছে।এর মাঝে রফিক কম চেষ্টা করেনি চাকরির।কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। কে জানে বাড়িতে যাওয়ার পর রুনুর আংটি পরানো হয়ে গিয়েছে কিনা।সে যে ঢাকা শহরে এই খবর পাওয়া গেছে রুনুর বান্ধবীর কাছ থেকেই।যাওয়া যাক ওখানেই।অনেকদিন রুনু কে দেখা হয় না।

কেমন আছ রুনু?
তা জেনে তোমআর লাভ?
সবসময় লাভের চিন্তা করতে নেই।
তোমার বড় বড় কথা এখনো বন্ধ হয় না?
রাগ করছো কেন?
না রাগ করব না।প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে , প্রেমিক গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর প্রেমিকা টা হাসবে, এমন মনে হয় তোমার?
ঢাকায় আসছো এই খবর দিলে না যে?
দিলে কি করতে?
কিছু করতাম না,তারপরেও...
হু করতে,এসে এসে আমার কাছ থেকে নির্লজ্জের মতো তাকা নিয়ে যেতে।
অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বুঝা যাচ্ছে।এই অবস্থায় চুপ থাকাই ভালো।তারা বসে আছে সংসদ ভবনের সাম্নে।রিকশায় আসার সময় রুনু একটা কথাও বলেনি।একটা সিগারেট ধরালোসে।
সিগারেট খাওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পার?
পৃথীবীর অনেক জ্ঞাণী ব্যক্তিরাই সারা জীবন এক কাজ ই করে গেছেন।
তোমার কি নিজেকে খুব জ্ঞাণী মনে হয়?
উহু।আর কথা বাড়ানো যাবে না।সিগারেট টানতে টানতে রফিক রাস্তার গাড়ী দেখতে লাগলো।এই এলেকায় বোধহয় সবাই খুব বড়লোক।এতো টাকা মানুষের?তারপরেও নাকি বাংলাদেশ গরীব দেশ।বাইরের কাউকে যদি জিজ্ঞেষ করা হয় বাংলাদেশ চিনো? বলবে, ইন্ডিয়ার পাশে ছোট্ট দেশ টা?যেখানে প্রতি বছর দুর্ভিক্ষ হয়? আজিব সব উত্তর।
তোমার যতক্ষন খুশী এখানে বসে বসে গাড়ী দেখ।আমার পরীক্ষা আছে ।আমি উঠলাম।
আরেকটু বস।
কেন?নিজের প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, কিছু করতে পারছনা,তাকে আনার বসতে বলতে তোমার একটুও লজ্জ্বা লাগছে না?
এই কথা বলে রুনু একটা রিকশা নিয়ে উঠে চলে গেলো।মাঝে মাঝে মেয়েরা খুব নিষ্ঠুর হয়ে যায় কেনো কে জানে। অনেক্ষন একা একা বসে রইলো রফিক। আসলেই কী করবে সে? কে যেন বলেছিলো পৃথীবীতে খুব অল্প কিছু লোক ই তাদের ভালোবাসায় সফল হয়।রফিক আর সেই অল্প কিছুদের মাঝে যেতে পারবে বলে মনে হয় না।
রুনুর সাথে তার পরিচয়টা খুব অদ্ভূত ভাবে।রুনুদের বাসা এক মফসসল শহরে।সেখানেই রফিকের ভার্সিটি ছিলো।সে রুনুদের বাসায় রুনুর ছোটবোন কে পড়াতো।সেখানেই রুনুর কে প্রথম দেখা।রুনুর ছোটবোন মহা গাধা।একজন মানুষ যে দেখে দেখেও ভূল পড়তে পারে তা ঐ মেয়েকে না দেখলে বুঝার উপায় নাই।রুনা তখন সবে মাত্র কলেজে উঠেছে।একদিন সে রুনু কে ডেকে পাঠালো।
এই মেয়ে তুমি সারাদিন ঘরে বসে কর কি?তোমাদের এই বোন টা যে একটা গাধা এটা কি তোমরা জানো না?একে একটু ঘরে পড়ানো যায় না?
সে তাকিয়ে দেখলো মেয়েটার চোখে পানি।সে শুধু বললো , স্যার আমার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে না।তারপর চলে গেলো।
রফিক খুব অবাক হলো।দেশ টা কন্দিকে যাচ্ছে?হিন্দি সিরিয়াল দেখে দেখে এখনকার মেয়েগুলো কথায় কথায় কান্না শিখে গেছে।
এটা হলো পরিচয়।এরপর আস্তে আস্তে কথা।তারপর পরিণয়। শেষদিকে এমন হত যে তার ছোটবোন পড়া পারলেও তাকে কানে ধরে দরজার বাইরে পাঠিয়ে দাড় কর্যে রাখতো।আর অন্য দরজা দিয়ে রুনু এসে দাড়াতো আর ইশারায় তারা কথা বলতো।আহা কত সুখের দিনগুলোই না কেটেছে।আজ সেই রুনুর বিয়ের কথা হচ্ছে।অথচ সে কিছুই করতে পারছে নাএর থেকে অপমানের বিষয় আর কি হতে পারে? দীর্ঘদিন বেকার থাকার কারনে বাবাও বলে দিয়েছেন , চাকরি নিয়ে এই ঘরে ঢুকো ,তার আগে নয়।আমার এটা লঙ্গরখানা নয়।
কী আর করা।তখন থেকেই এই পুতিগন্ধময় ঢাকা শহরে তার বসবাস।












রুনু টেবিলে মাথা দিয়ে বসে আছে।মানুষ এতো দুর্ভাগাও হয়, রফিক কে না দেখলে বুঝা যায় না।বেচারী কতো চেষ্টাই না করছে,কিন্তু কোনো লাভ ই হচ্ছে না।এদিকে বাসায় বিয়ের কথা যেভাবে হচ্ছে মনে হয় পরীক্ষার পরপর ই বিয়ে দিয়ে দিবে।কি করবে রুনু?আজ যদি রফিক খুব ভালো একটা চাকরি করতো তাহলে নাহয় বাবা কে রাজি করানো যেত।কিন্তু যে ছেলে কে বাসা থেকে বের করে দেয়,যে ছেলে বোনের টাকা দিয়ে প্রেমিকার টাকা দিয়ে সিগারেট কিনে খায় তাকে আর যাই হোক কোনো মেয়ের বাবাই মেয়ে দিবেন না।রুনুর রেজাল্ট অনেক ভালো।ক্লাসে তার অবস্থান তৃতীয়।তার বাবার ইচ্ছা তাকে বিদেশ থেকে এম বি এ করানোর।তাই বলতে গেলে বিদেশী পাত্রই দেখা হচ্ছে। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে সব ছেড়ে দিয়ে রফিক নামের ছেলেটার সাথে পালিয়ে যাওয়ার জন্য।কিন্তু ওটা গল্প উপন্যাসের নায়িকাদের দ্বারাই সম্ভব,তার দ্বারা নয়।মাঝেমাঝে এচ্ছে হয় গলা ছেড়ে কাদতে।কিন্তু তাও সম্ভব নয়।একটু শুয়ে থাকলেই সায়মা এসে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করবে কি হয়েছে,কেনো অবেলায় শুয়ে আছে,আরও হাবিজাবিসায়মা রুনু কে আসম্ভব ভালোবাসে।মানুষের ভালোবাসা যে কখনো অসহ্যের কারন হতে পারে তা সায়মার সাথে পরিচয় না হলে রুনুর জানা হতো না।
ক্রিং ক্রিং।বাবা ফোন করেছে।
হ্যালো বাবা
কি করছিলে?
পড়ছিলাম
সত্যি তো?
জ্বী বাবা
দেখ মা তোমাকে বাবা অনেক কষ্ট করে পড়িয়েছি,আসা করি তুমি আমার আত্মীয়দের কাছে আমার মান সম্মান শেষ করে দিবে না।
না বাবা।
আচ্চা রাখি,খেয়ে নিও
আচ্ছা বাবা

কিরে আংকেল ফোন দেয়ছিলো?
কথা বলার সময় কখন যে সায়মা এসে দাড়িয়েছে টের পায় নি।এই হল আরেকটা বিরক্তিকর স্বভাব।আরে তুই কি বিড়াল নাকি যে এভাবে চলাফেরা করবি?
হু বাবা ফোন দিয়েছিলো।
তুই সন্ধ্যা থেকে কই ছিলি?
রফিক এসেছিলো
ও তাই?কি বললেন উনি?কোনো ব্যাবস্থা করতে পারলেন?
না রে।তুই না বলেছিলি তোর এক মামা আছেন অনেক বড়লোক,উনার কাছে রফিকের সিভি দিবি,দিয়েছিলি?
হু
কি বললেন উনি?
কিছুই না।আমি যেদিন সিভি দিয়েছি তার পরদিনই উনি জার্মানী চলে গিয়েছেন।
ও।
দোস্ত চিন্তা করিস না,সব ঠিক হয়ে যাবে।
কবে?
ধৈর্য ধর দোস্ত।
আর কতো ধৈর্য ধরব দোস্ত।অবস্থা খুব খারাপ।পরীক্ষা না থাকলে আর বাসা থেকেই আসতে পারতাম না।
দেখা যাক না কি হয়।এখন চলতো ডাইনিং এ খাওয়া দিছে ,খাবি চল।
হুম......চল।


দিন যত যাচ্ছে রইসউদ্দিন সাহেবের টাকা পয়সা ততোই বাড়ছে।কিন্তু উনি এমনভাবে থাকেন যে তাকে দেখে বুঝার উপায় নেই তার ব্যাংকে ২ কোটি টাকা আছে।কারন তিনি সরকারী চাকুরি করেন।অতএব তাকে অনেক বুদ্ধি বিবেচনা করে চলতে হয়।আজ তিনি রফিক কে অফিসে ডেকে পাঠিয়েছেন।গত কয়েকদিন আয়েশা তার মাথাটা শেষ করে দিচ্ছে রফিক কে একটা চাকরি দেওয়ার কথা বলতে বলতে।মনে হয় যেন তিনি বাজার খুলে বসেছেন।
দুলাভাই আসতে পারি?
হু বসো।
হঠাৎ কি মনে করে দুলাভাই?
তোমার বোন তোমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলতে বলতে তো আমার মাথা খারাপ করে ফেললো।
আপা সহজ সরল মানুষ,এতোকিছু তো আর বুঝে না।
তোমার সিভি সাথে এনেছ?
না দুলাভাই।
একদিন নিয়ে এসো , দেখি কি করা যায়।
আচ্ছা।
এখন যাও
আচ্ছা

রফিক অফিস থেকে বের হয়েই বুঝলো দুলাভাই শুধু আপার মন রক্ষার জন্য তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন।উনি অনেককেই আজ পর্যন্ত চাকরি দিয়েছেন এবং সবই টাকার বিনিময়ে।তাকে একটা চাকরি মুফতে দেওয়া মানে তার কিছু টাকা মার যাওয়া।এই কাজ ভূলেও তিনি কোনোদিন করবেন না।অবশ্য রফিক ও এই ব্যাপারে তাকে আর কিছু বলবে না।সে বেকার থাকা অবস্থায় আর কিছু না হোক,মানুষ চিনেছে।কতো বড়ভাই ,কতো বন্ধু তার সিভি নিয়ে গেলো।কিন্তু ঐ নেওয়া পর্যন্তই।তারপ আর কারো খোজ থাকে না।এখন বাজে বেলা বারোটা।কিছু করার নাই।ছোট আপার বাসায় যাওয়া যায়।গেলে কিছু টাকাও হয়তো আপা দিবে,কিন্তু এতোদূর যেতে ভাল্লাগে না।তারচেয়ে মেসে যেয়ে শুইয়ে থাকাটা অনেক ভালো।সে মেসের দিকেই রওনা হলো।

আজ রুনুর শেষ পরীক্ষা।আজকেই বিকেলে সে বাড়ী চলে যাবে।পরীক্ষার হলে আসার আগে সায়মা কে দিয়ে খবর পাঠিয়েছে যাতে ওকে একটু আসতে বলে।সে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে বট গাছের নীচে অপেক্ষা করছে।কিন্তু মানুষটার দেখা নাই। মানুষটার কাছে মোবাইল ও নেই যে ফোন করবে।মোবাইল ছিলো।কিন্তু সেটাও এক্সময় বিক্রী করে দিতে হয়েছে। ঐতো মানুষ টা আসছে।কেমন হেলেদুলে আসছে, যেন তার কোনো চিন্তাই নেই।
কি খবর? হঠাৎ জরুরী তলব?
আজ আমি চলে যাবো।

শুধু ও?
আর কি বলবো?চল তোমাকে বাসে তুলে দিয়ে আসি।
মানে কি এর?তোমার কি কোনো ভাবান্তর নেই?তুমি কি বুঝছোনা যে আমি এবার গেলে আমার বিয়ে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী? তোমার কি কিছুই করার নেই?
জানি না রুনু।আমি তো কম চেষ্টা করছি না।
এমন কেনো হলো?
জানি না।হয়তো ভাগ্য আমাদের এক হতে দিতে চায় না।
সাহিত্য কপচাবা না।অসহ্য লাগে।
চলো তোমাকে বাসে তুলে দিয়ে আসি।সব গোছানো আছে?
নাহ।তুমি যেয়োনা।
মানে?
মানে কি আর।তুমি যেয়োনা।
ওহ...আচ্ছা।
উঠি রফিক।
আচ্ছা।
জানিনা এটা আমাদের শেষ দেখা কিনা।তারপরেও বলছি,আমি এমন পরিণতির কথা কোনোদিন ভাবি নাই রফিক।
আমিও না।
যাই।
যাও।
আজকের আকাশটা খুব বেশী নীল।কেমন যেন লাগছে রফিকের।অবশ্য লাগাটাই স্বাভাবিক।এতো চিন্তা করে আর কি হবে?তার মতো মানুষদের হয়তো এটাই ভাগ্য।সে বড় আপার বাসার জন্য রিকশা নিলো।আসার সদময় সাকিবের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে এসেছে।আর বড় আপাও জরুরী তলব করেছে।আজকাল সবাই দেখি তাকে জরুরী তলব করে।
দরজা খুললো আপা নিজেই।
কিরে এতো দেরী করলি যে?
এই তো ,তা এতো জরুরী কেন?
আরে সকাল থেকেই ফারহার খুব কাশি। একটু ডাক্তারের কাছে যাবো।
কেনো?দুলাভাই কই?
ও চিটাং।
আচ্ছা তোমারা তৈরী তো?
হু
তাহলে চলো।আমার বুড়ী টা কই?
মামা তোমাকে না কতোবার নিষেধ করলাম?
তোর নিষেধ শুনতে হবে নাকি?

ডাক্তার খুব চিন্তিতো মুখে অনেক্ষন ফারহা কে দেখলেন।রফিক বুঝতে পারছেনা আসলে কি ডাক্তার চিন্তা করার মতো কিছু খুজে পেয়েছে?নাকি এটা রুগীর কাছ থেকে পয়সা নেওয়ার জন্য মূখোষ।সে জিজ্ঞেষ করেই বসলো
ডাক্তার সাহেব,কি হয়েছে?
আপনি কি হোন রুগীর?
মামা।
আপনি থাকুন। আর আপনারা বাইরে যান।
কেনো উনারা বাইরে যাবেন?যা বলার সবার সামনেই বলুন।
ও ছোটবাচ্ছা,এখানে বেশীক্ষন আমার নিজের ই ভালো লাগে না,আর ও তো রুগী।তাই যেতে বললাম।
আপা বাইরে যেয়ে বোসতো।
আয়েশা তার মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পর,
হু ডাক্তার এইবার বলুন
দেখুন,এখনো নির্দিষ্ট কোঁড়ে বলা যাচ্ছে না ওর অসুখ টা কি,কিন্তু মার ভালো ঠেকছেনা।আমি কিছু টেস্ট লিখে দিচ্ছি,ওগুলো আজ ই কোঁড়ে ফেল্বেন।আর নেক্সট টাইম শুধু আপনি আসবেন।রুগীকে আনার দরকার হলে আমি বলবো।
ডাক্তার খুব সিরিয়াস কিছু?যদি তাই হয় তাহলে বলুন,টাকা ওদের কাছে কোনো ব্যাপার না।কিন্তু চিকিৎসা হওয়া চাই।
আপনি রিপোর্ট তো নিয়ে সুন আগে।

রফিক বের হয়ে এসে ওদের কে নিয়ে ডায়াগোনিস্টিক সেন্টারে গেলো।সবগুলো টেস্ট করালো। এবং অবাক হয়ে দেখলো এই ২/৩টা টেস্ট করাতেই তারা ৫/৬ হাযার টাকা চায়।একটা ডায়াগোনিস্টিক সেন্টার খুললে কেমন হয়?ব্যাপারটা নিয়ে সাকিবের সাথে আলোচনা করতে হবে।সে তার যাবতীয় দরকারি ব্যাপার গুলো সাকিবের সাথেই আলাপ করে এবং আলাপের শেষ পর্যায়ে তা মোটামোটি মারামারি তে রূপ নেয়। অবশ্য ঐ রাতে সে আলাপ করা সুযোগ পেলো না কারন বাসায় কেউ নেই বলে বড় আপা তাকে রাতে থেকে যেতে বলেছেন।এবং রাতে ফারহার কাশি অনেক বাড়লো।


রুনাদের বাড়িটা একতলা ছিমছাম বাড়ি।গেইটের সাথেই একটা বিশাল কাঠাল গাছ।এই গাছ অত্যন্ত ফলবতী।রুনার বাবা আমিন সাহেব একটা এনজিওর জোনাল ম্যানেজার।টাকা পয়সা ভালোই বানিয়েছেন।তার জানাশোনাও কম না।তাই রুনার জন্য বিদেশী পাত্র খুজে পেতে তার খুব একটা বেশী বেগ পেতে হলো না।আজ পাত্র পক্ষের আসার কথা মেয়েকে দেখার জন্য।বাসায় অবশ্য তিনি এখনো জানান নি।এখন জানাবেন।তার বিবেচনায় তার স্ত্রীকে আগে থেকে কিছু জানানো মানে তা পুরো এলেকায় জানানো।তিনি তার ৫২ বৎসরের জীবনে তার স্ত্রীর মতো এমন গাধা মহিলা আর দেখেন নি।তিনি কাজের বুয়া কে ডেকে পাঠালেন।
মাকসুদা
জ্বী খালুজান।
তোর খালাম্মা কে বল যে আমি ডাকছি।
আইচ্ছা খালুজান।
আমিনা বেগম পান খাচ্ছিলেন।তার সারাদিনের প্রধান কাজ পান খাওয়া আর পাড়ার সব মহিলার সাথে গল্প করা।সংসারের সব কাজ ই মাকসুদা করে।কিন্তু ইদানিং কারো সাথেই গল্প করতে তার আর ভালো লাগছে না।কারন তার মেয়ের বিয়ে ঠিক হচ্ছে।অথচ মানুষটা তার সাথে কিছুই আলাপ করছেনা।আশ্চর্য,তিনি তো মা, তার ও তো কথা বলার অধিকার আছে।তিনি যখন মনে মনে এসব বিদ্রহী মূলক কথা চিন্তা করছিলেন অখন ই তার ডাক পড়লো।
কি?ডেকেছো কেনো? ( একটু ঝাঁঝের সাথে বললেন)
বসো।
হু বলো।
তোমার মেয়ে কি করছে?
তা আমি কিভাবে বলবো।
তাহলে কে বলবে? সারাদিন মানুষের সাথে গল্প করা ছাড়া আর কিছুই কি পারো না তুমি?
ডেকেছো কি ঝগড়া করার জন্য?
তোমার কি মনে হয় তোমার মতো একটা মাথা মোটা মেয়ে মানুষের সাথে আমি ঝগড়া করে সময় নষ্ট করবো? ডেকেছি এটা বলার জন্য যে আজ তোমার মেয়ে কে দেখতে আসবে।
মানে কি?আমি মেয়ের মা, আমার মেয়ে কে দেখতে আসবে আর আমি কিছুই জানি না? আমি কি আদৌ এই সংসারের কেউ?
তোমার জানার খুব একটা দরকার নেই। তুমি অবশ্যই এই সংসারের কেউ,কিন্তু তোমার সংসারের কাজ টা কি তা আমি নিজেও এতোদিনে বুঝে উঠতে পারি নি।আর এখন তো জানলাই।
ছেলে কি করে?
ছেলে কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সের উপর পিএইচডি করেছে।বর্তমানে ওখানেই এক কোম্পনীতে আছে।সম্প্রতি দেশে এসেছে।ছেলের বাবা আমার বন্ধু মানুষ।আমাদের রুনিউ ও তো অনার্স ফাইনাল হয়ে গেলো।
সে কি রুনু কে নিয়ে যাবে?
আগে তো পছন্দ হোক।সব ঠিকঠাক থাকলে বিয়ের পর নিয়ে যাবে।তুমি যথা সময়ে রুনু কে হাযির করবা,এবং হাযির করাটা যেনো এলেবেলে না হয়।
তা হবে না।
এবং এই কথাটা যেনো আমি এলাকার আর কারো কাছ থেকে না শুনতে হয়।আমি চাই একদম সব ঠিকঠাক হওয়ার পর সবাই জানুক।
আচ্ছা
অবশ্য তার এই “আচ্ছা” র উপর আমিন সাহেব যে খুব একটা বেশী ভরসা করতে পারছেন তা নয়।হয়তো বিকেলেই দেখা যাবে পাশের বাসার মকবুল সাহেব বল্বেন,কি ভাই?মেয়ের বিয়ের কথা হচ্ছে বুঝি?আপনার ভাবির কাছে রুনার মা বললো।

রুনাকে যখন তার মা খবর টা দিলো তখন সে ঘুমাচ্ছিলো।ঘুম ভাঙ্গিয়ে এই খবর দেওয়াতে তার খুব একটা বেশী বিকার হলো না।সে জানতো এমন কিছু একটাই হবে।তার বাবা বসে থাকার মানুষ নন।সে খুব দীর্বল মেয়ে,সাহসী মেয়ে না।যদি সাহসী হতো তাহলে সে তার বাবার মুখের উপরেই বলতে পারতো সে বিয়ে করবে না,অথবা রফিক কে নিয়ে পালিয়ে যেতো। অবশ্য সে চাইলেও রফিক তার সাথে পালাতো কিনা তা চিন্তার বিষয়।এখন সে কি করবে?ওরা আসবে বিকেল ৪টায়।এখন বাজে সকাল ৯টা।সায়মাকে বলবে রফিক কে একটু খবর দিতে?যাতে সে একটা ফোন দিতে? সে সায়মাকেই ফোন দিলো
হ্যালো দোস্ত
কি খবর তোর?
ভালো না
কেনো?
আজ আমাকে দেখতে আসবে
কি বলিস?
হু
এখন কি করবি?
সে জন্যই তো তোকে ফোন দিলাম।কোনো বুদ্ধি দে।
আমি তো বুঝতেছি না
দোস্ত, তুই একটু কষ্ট করে রফিকের মেসে যেয়ে ওকে ফোনে ধরিয়ে দিতে পারবি?
হু তা পারবো।
একটু কুইক কর দোস্ত।
ওকে আমি এখন ই বের হচ্ছি।
আচ্ছা।
এখন বাজে বেলা বারোটা।রফিকের কোনো খবর নেই।সায়মা মেসে যেয়ে রফিক কে পায় নি।তার এক বন্ধুকে পেয়েছে,সে জানে না রফিক কোথায়।রফিকের বড় বোনের বাসার ঠিকানা ছিলো রুনুর কাছে।ঐ ঠিকানায় সাকিব কে পাঠালো ,কিন্তু ওখানেও কাউকে পাওয়া গেলো না। দুপুরে ভাত ও খেতে পারলোনা রুনু।আর এক ঘন্টা বাকী ছেলে পক্ষ দেখতে আসার।কিন্তু রফিকের খজ কেউ দিতে পারছে না।সাব্বিরের নাম্বারে কল দিয়েছিলো ।সাব্বির অ জানেনা।সাকিব সাব্বির দু জনেই ঘটনা শুনে রফিক কে খুজতে বের হয়েছে।কিন্তু ওকে খুজেই পাওয়া যাচ্ছে না।
ছেলে পক্ষ এলো ৪টা ২০ এ। ছেলের সাথে ছেলের মামা,বাবা আর মা এসেছে।তারা মেয়ে দেখে খুব ই খশী ।মেয়ে তাদের খুব ই পছন্দ হয়েছে।হঠাৎ ছেলের মামা বলে উঠলেন।আমাদে মনে হয় অদের আলাদা কিছুক্ষন কথা বলতে দেওয়া উচিৎ।অতএব সবাই ওদের ঐ ঘরে রেখে আমিন সাহেবের সাথে তার মাছের পুকুর দেখতে গেলো,বিশাল সেই পুকুর।

ইয়ে,আমার নাম তো আপনি জানেন ই,তাও বলছি,আমি আহ্নাব জামান।আসলে হঠাৎ ই আমার দেশে আসা...উমম...আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে কিন্তু আমাকে আপনার কেমন লেগেছে তাও তো জানার দরকার
রুনু কি বলবে বুঝতে পারছে না।তার মাথায় রফিকের কথা ঘুরছে।তার খগ শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায় নি।কথায় গেলো লোকটা?
কি ব্যপার।চুপ করে আছেন যে?
আসলে আমার শরীর টা ভালো নেই,আর কি বলবো তাও বুঝতে পারছি না।
হুম।বুঝতে পারছি আপ্নিও আমার মতোই অবস্থায় পড়েছেন।
রুনুর হাসি পেলো মনে মনে।আরে বেটা তুই যদি আমার অবস্থা জানতি.........আল্লাহ...
এমন সময়ে ঘরে সবাই ঢুকলো।ছেলের মামার উৎসাহের সীমা নেই।
কী কেমন কথা হচ্ছে?
আমিন সাহেব আমিনা বেগম কে এশারা করলেন মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ঐ দিন ই আংটি পরানো হলো,বিয়ে ঠিক হলো পরের মাসের ১২ তারিখ।






রফিকের গত ৩টা দিন কাটছে হাসপাতালে। ফারহার ঐ দিন রাত থেকেই কাশির সাথে রক্ত যাচ্ছে।পরদিন ই ফারহা কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।রিপোর্টে কি এসেছে ডাক্তার স্পষ্ট করে কিছু বলে নাই।শুধু এটা বলেছে ফারহার ফুসফুসে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে এবং ক্ষতের বয়স ২মাস।এতদিন পর কেন ক্ষত তার অবস্থান জানান দিলো কেন আগেই দেয় নেই ,এসব প্রশ্ন দাক্তার কে করা হয়েছিলো তিনি উত্তর দেন নি।ফারহার বাবা দাক্তার কে বলেছেন তিনি ফারহা কে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চান।দাক্তার বলেছে একটু অপেক্ষা করতে।রফিক ফারহার পাশে বসে আছে
বুঝলি বুড়ি তোর আসলে কিছু হয় নাই।তুই ভয় অয়াস না।মামা অনেক ম্যাজিক জানি।দেখবি ম্যাজিক দিয়ে তোকে ভাল করে দিব।
সত্যি মামা?
হু অবশ্যই সত্তি।তোর মামা মিছে কথা বলে নাকি?
মামা আমি পিচ্ছি না যে তুমি আমাকে ম্যাজিকের কথা বলে সান্তনা দিবে।
এই ,তোকে না ডাক্তার কথা বলতে নিষেধ করেছে?এতো কথা বলিস কেনো?
মামা আমি মনে হয় মারা যাবো।
চুপ থাকতে বললাম না তোকে?খালি আজেবাজে কথা।তোদের স্কুলে কি এসব আজেবাজে কথাই শিখায় নাকি?
মামা,আমার ড্রয়ারে ৮৩৫ টাকা আছে।তোমার জন্য জমিয়েছি।ওই টাকা দিয়ে তোমাকে এই ঈদে একটা পাঞ্জাবী কানি দিতাম।
তাই নাকি?ওকে। কিনে দিস।লাল পাঞ্জাবী হতে হবে কিন্তু।
মামা,আমি তো মারা যাবো,তুমি টাকা টা নিয়ে নিয়ো।
আবার আজেবাজে কথা।তোর সাথে কথা বলাটাই বৃথা।
মামা,বকা দিয়োনা।আর তো কয়েকটা দিন।
রফিকের চোখের কোণা ভিজে উঠতে শুরু করেছে।সে অখান থেকে উঠে গেল।একটু মেসে যাওয়া দরকার।
আপা তুই থাক।আমি এক ঘন্টার জন্য মেসে থেকে আসছি।ছোটাপা তো আছেই।
আচ্ছা।
মেসে সাকিব শুয়েই ছিলো।
কিরে তুই এই কয়দিন কই ছিলি?
কেনো?
কেন মানে?তোর খোজে আমি আর সাব্বির সারা ঢাকা শহর চষে ফেলেছি।কই ছিলি তুই?
বড় আপার মেয়েটা খুব অসুস্থ।হাসপাতালে।অখানেই ছিলাম। একটু পর আবার যাবো।
তোর জন্য ২টা খবর আছে।
কি?
তিনদিন আগে সায়মা এসেছিলো।তোকে নাকি খুব দরকার।
কি জন্য কিছু বলেছে?
না বলে নাই।তুই একবার ওর হলে যেয়ে খজ নিয়ে আয়।আর তোর একটা এপয়েন্টমেন্ট লেটার এসেছে।কাল ইন্টারভিউ।
তাই?যাক অনেক খারাপ খবরের মাঝেও একটা ভালো নিউজ পেলাম।চাকরি আত হলে রুনুর থেকে বেশী খুশী কেউ হবে না রে।
বিকাল ৩টার সময় রফিক শামসুন্নাহার হলে গেলো কিন্তু সায়মা কে পাওয়া গেলো না।সে দারওয়ানের কাছে আগামীকাল যেখানে তার ইন্টারভিউ সেখানের ঠিকানা দিএ এলো,যাতে ইন্টারভিউ দিয়ে বের হয়েই সায়মার সাথে দেখা করতে পারে।আজ তো আর সম্ভব না।এখন ই হাসপাতালে ছুটতে হবে।
সন্ধ্যায় ফারহার অবস্থার আরো অবনতি হলো।রাত ৮টার দিকে কিছুটা সুস্থ সে।তার মামার সাথে গল্প করছে।
মামা,বিকেলে কই ছিলে?
কই আর , একটু মেসে গিয়েছিলাম।জানিস কাল আমার একটা চাকরির ইন্টারভিউ আছে।
তাই মামা?
হু
জানো মামা,তোমার চাকরি হলে আমার থেকে বেশী খুশী কেউ হবে না।
কেন?তুই তো সারাদিন আমার সাথে ঝগড়া করিস,তুই খুশী হবি কেন?
মামা,তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি,কিন্তু সেটা দেখাই না,দেখালে তুমি আদর কমিয়ে দিবে।
কি যে পাগলের মতো কথা তোর।
আজকের আকাশ টা খুব পরিষ্কার।এটা কোন মাস? শরৎ না হেমন্ত?আজকাল আর বাংলা মাসের হিসেব থাকে না রফিকের। ইংরেজী মাসের ই হিসেব থাকেনা আবার বাংলা।কালকের চাকরিটা কি হবে? যদি হয় তাহলে বের হয়েই তো আশা করি সায়মার সাথে দেখা হবে,ওকে বলে দিতে হবে খবর টা যাতে রুনুকে দিয়ে দেয়।আহা কি খুশী না হবে মেয়েটা।আসার সময় সায়মার কাছ থেকে টাকা নিয়ে রুনুর জন্য কিছু গল্পের বই কিনে আনতে হবে।পরে সায়মা কে টাকা দিয়ে দেওয়া যাবে।রুনু গল্পের বই খুব পছন্দ কর।গল্পের বই বলতে বাচ্ছাদের বই আর কি।আহারে,মেয়েটা এই অল্প বয়সে কি কষ্টই না সহ্য করছে।আল্লাহ তুমি আমার এই ভাগ্নী টা কে ভালো করে দাও।রুনুর যখন ১বছর বয়স তখন সে রফিক ছাড়া আর কারো কোলেই যেতে চাইতো না।এমন কি তার আম্মুর কোলেও না।বলতে গেলে রফিকের কোলেই সে মানুষ হয়েছে।রুনু বাবা খুব দৌড়াদৌড়ি করছেন।ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না।যদিও ডাক্তাররা বলেছেন আরো কয়েকদিন দেখতে,কিন্তু উনি ঝুকি নিতে রাজি নন।একটাই মেয়ে তার।অনেকদিন হলো রফিক আল্লাহ কে ডাকে না।আজ সে মনেপ্রানে আল্লহ্র কাছে শুধু একটাই জিনিস ছাইছে,আল্লাহ যাতে তার এই অতি আদরে ভাগ্নিটিকে সুস্থ করে দেন।ল্লাহ কি কখনোই তার ডাক শুনবেননা?
সকাল ৮টার দিকে রুনুর অবস্থা খুব খারাপ হলো। প্রচন্ড কাশি হচ্ছে তার। ডাক্তাররা রুম থেকে সবাই কে বের করে দিয়ে কী কী যেন পরীক্ষা করছেন।রফিক বুঝতে পারছে না সে কি ইন্টারভিউ বোর্ডে যাবে?অবশ্য এখানে দাঁড়িয়ে থেকেও খুব লাভ নেই।ডাক্তার কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না ভিতরে।অবশ্য আগে মেসে যেতে হবে।জামা চেঞ্জ করে সাকিব থেকে টাকা নিয়ে সিএনজি করে অফিসটাতে যেতে হবে নাহয় টাইম মিস করবে।
তারপরেও তার ১৫মিনিট দেরী হয়ে গেলো।
রিসিপসনিস্ট মেয়েটি বেশ সুন্দরী।তার সিরিয়াল ১৩জন পরে।উফফ,তার তাড়াতাড়ি যাওয়া দরকার।না জানি হাসপাতালে কখন কি দরকার হয়।হঠাৎ মাথায় একতা অদ্ভূত চিন্তা হলো ,আচ্ছা বাংলাদেশের সুন্দরী মেয়েদের একমাত্র চাকরি কি রিসিপসনিস্ট।সে আজ পর্যন্ত কোনো অসুন্দর রিসিপসনিস্ট মেয়ে দেখে নি।আচ্ছা,তাকে তো কিছু জিজ্ঞেস করলেও সে পারবেনা।একবার এক ইন্টারভিউ তে জিজ্ঞেস করেছিলো,
বলুন তো ইথিওপিয়ার বর্তমান যে প্রেসিডেন্ট উনি কী কারনে এতো বেশীদিন ধরে খমতায় আসীন আছে?
রফিক উত্তরে বলেছিলো, স্যার আপনার কি ধারনা আমি ইথিওপিয়ার নাগরিক, নাকি আমার সিলেবাস এ এই ব্যপারে কিছু ছিলো বলে আমি আপনাদের বলছি।স্যার,বললেই তো হয় আপনাদের লোক নেওয়া আছে।
ফলাফল যা হোয়ার তাই হলো আর কি।অবশ্য সে যে শুরু থেকেই এই টাইপের উত্তর দিতো তা না,পারলে দিতো না পারলে চুপ থাকতো । কিন্তু আস্তে আস্তে যখন বুঝতে পারলো বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই লোক আগে থেকে নেওয়া থাকে ত্খন থেকেই সে এই টাইপের উত্তর দেওয়া শুরু করলো।সামনে একগাদা খবরের কাগজ।বাংলাদেশের সবচেয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলো সরবরাহ করে এই খবরে কাগজ নাওক অতি অখাধ্য বস্তুটি।
অবশেষে তার সিরিয়াল এলো।
স্লামালিকুম স্যার
ওয়ালাইকুমস্লাম।বসুন।
দেখি আপনার সার্টিফিকেট দেখান তো।
এই যে স্যার।
হুম...আপনি অনার্স কমপ্লিট করেছেন ৪ বৎসর আগে।তা এখন কোথায় চাকরি করেন।
কোথাও না স্যার।
মানে কি? ৪ বৎসর যাবত আপনি বেকার?
জ্বী স্যার।
কেনো ?
স্যার সবাই অভিজ্ঞতা চায়।কেউ অভিজ্ঞতা ছাড়া নিতে চায় না।চাকরি না পেলে অভিজ্ঞতা কিভাবে হবে স্যার।
হু তা ঠিক।তো মারাও তো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকের কথা আমদের এডভার্টাইজমেন্ট এ উল্লেখ করে দিয়েছিলাম।আপনি আবেদন করলেন কেনো ?যেহেতু আপনি জানেন অভিজ্ঞতা না থাকার জন্য আপনার চাকরি হচ্ছে না।
স্যার আপনারা বলে দিয়েছিলেন যাকেই আপনার নিয়োগ দিবেন তাকেই অন্তত ৩ বৎসর এখানে থাকতে হবে।সাধারনত কেউ এভাবে বন্ডিং নিয়ে ঢুকতে চায় না,কিন্তু আমার কোনো সমস্যা নাই।আমি বন্ডিং এ থাকতে পারবো।আর তাছাড়া exception বলে একটা কথা আছে।আমি সেই exception কোম্পানীর আশায় আছি স্যার। ( রফিক নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছে তার এই বাকপটুলতা দেখে)
আপনাকে খুব কনফিডেন্ট মনে হচ্ছে ?
যার হারানোর ভয় নেই স্যার সে তো কনফিডেন্ট হবেই।
ওকে রফিক সাহেব আপনার ভাইবা আমরা এখানেই শেষ করছি।
স্যার কিছুই তো জিজ্ঞেস করলেন না।
কে বললো?এই যে এতক্ষন করলাম।শুনুন আপনি যে পোস্টের জন্য এসেছেন সেটা মার্কেটিং সেক্টর।আর মার্কেটিং সেক্টরে কনভিন্সিং ক্ষমতা থাকতে হয়।আমরা মনে করি আপনার তা আছে।আপনার এক্সপেক্টেড সেলারি কতো?
স্যার কোম্পানী পলিসি অনুযায়ী দিবেন।
২০০০০?
থ্যাংক্যু স্যার।
আপনি কবে থেকে জয়েন করতে পারবেন?

আচ্ছা।আমরা আপনার সাথে খুব দ্রুত যোগাযোগ করব।আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত হউন।
থ্যাংকু স্যার।স্লামালিকুম
রফিক ঠিক বুঝতে পারছেনা ব্যপার টা কি?চাকরির বাজার কি একদম সস্তা হয়ে গেলো?এটা সাব্বিরের কাজ নয়তো?সাব্বির একবার তার একটা সিভি নিয়েছিলো।
আহা একটা চাকরি।সে আবার বাসায় যেতে পারবে।তার এই মাটিতে গুজে থাকা মুখ আবার তার বাবার সামনে তুলে ধরবে।আহা।ফারহা টা ও যে কি খুশী হবে।
বের হয়েই সায়মা কে অফিসের সামনে দাড়ানো পেলো সে।
সায়মা তোমার কাছে ঢাকা মেডিকেল পর্যন্ত যাওয়ার রিকশা ভাড়া আছে তো।
আছে রফিক ভাই।
তাহলে একটু দাড়াও আমি রিকশা ঠিক করি।যেতে যেতে কথা বলবো।
রিকশা ঠিক করে আনার পর তারা যাচ্ছে।সায়মা ঠিক বুঝতে পারছে না কিভাবে রফিক ভাই কে খবর টা দিবে।
রফিক ভাই আপনি গতো ৩দিন আগে কই ছিলেন?
আরে তোমরা তো জানো না।আমি যে কিসের মাঝ দিয়ে যাচ্ছি।আমার একমাত্র আদরের ভাগ্নীটার খুব অসুখ।ডাক্তার রা স্পষ্ট করে কিছু বলছে না।আমি গতো ৩দিন ধরেই হাসপাতালে।কাল এক ঘন্টার জন্য মেসে গিয়েছিলাম।শুনলাম তুমি নাকি আমাকে খুজছো।আর আজকের এই ইন্টারভিউর খবর পেলাম।তারপর তোমার হলে যেয়ে তোমাকে পেলাম না।দারোয়ান কে এই জায়গার ঠিকানা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে আসলাম।আর এখন যাচ্ছি আবার হাসপাতালে।
ইন্টারভিউ কেমন হলো?
বুঝলাম না,ওরা আমাকে কিছুই জিজ্ঞেস করে নি। কিন্তু ওদের কথা শুনে মনে হচ্ছে ওরা মাকে সিলেক্ট করেছে। বুঝলাম না ঠিক। অবশ্য সাব্বিরের হাত থাকতে পারে।ও আমার সিভি নিয়েছিলো একবার।
সাব্বির কে?
তুমি চিনবে না,যাই হোক,তুমি প্লীজ একটু রুনু কে খবর টা দিও।বলবে যে আমাদের আর চিন্তা নেই।এক কাজ কর,তুমি ওকে এখন ই ফোন দাও,আমি একটু কথা বলি।
তা ঠিক হবে না রফিক ভাই।
মানে কি?
ও বাসায়
তো কি হয়েছে? ফোন তো আমি দিচ্ছি না।কেউ ধরলে তুমি ই তো কথা বলবে।তারপর আমি কথা বলবো।
না রফিক ভাই।আমি আপনাকে কি জন্য খুজছিলাম তা শুনবেননা?
আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।কি জন্য?
রফিক ভাই , ৩ দিন আগে রুনুর এনগেইজমেন্ট হয়ে গিয়েছে।ওই দিন তাই আমি আপনাকে খুব খুজছিলাম।ও আপনার সাথে একবার কথা বলতে চাইছিলো।যদি আপনি কিছু করতে পারেন।কিন্তু ঐ দিন আমি অনেক খুজেও আপনাকে পাই নাই।হতো আপনাকে পেলে।জানি না কি হতো কিন্তু তারপরেও আপনাকে খুব দোরকার ছিলো।
রফিকের কেমন যেনো লাগছে।প্রেমিকার আংটি বিদিল হয়ে গিয়েছে এই খবর শুনে যতটা খারাপ লাগার কথা ঠিক ততোটা খারাপ বোধহয় ওর লাগছে না।নাকি অ বোধবুদ্ধিহীন হয়ে গেলো?
কি ব্যপার কিছু বলছেন না যে?
কি বলব?
চাকরি তো পেলেন ভাই কিন্তু আরেকটু আগে পেলেন না কেনো রফিক ভাই?
আমার মাথায় তোমার সব কথা ঢুকছে না সায়মা।শুনো তুমি ওকে বলো আমার উপর কোনো ক্ষোভ না রাখতে। ও নিশ্চয়ী আমার উপর রাগ করে তোমাকে দিয়ে দুষ্টমি করছে তাই না?
না, তা নয় রফিক ভাই।
ও আচ্ছা।হু তাই তো , ও তো দুষ্টমি করার মতো মেয়ে নয়।এই শুনো তুমি ওকে বলো আমি চাকরি পেয়েছি।
এখন আর বলে কি হবে রফিক ভাই?
হু, তাই তো।এই আমরা চলে এসেছি,রিকশা ভাড়া দাও।
দিচ্ছি রফিক ভাই।
এই আমাকে কষ্ট করে ৩০৯ নাম্বার কেবিনে নিয়ে যাও তো সায়মা, ওখানে আমার ভাগ্নী আছে।তুমিও চল।ও নুতন কাউকে দেখলে খুশী হবে।আমাকে ধরে ধরে নিয়ে চল।আমার মনে হচ্ছে আমি ঠিক ঠাক পা ফেলতে পারছি না।
মানে কি রফিক ভাই?
জানি না।খুব ক্লান্ত লাগছে।প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে কারো তো শরীর খারাপ লাগার কথা না।আমি তো মজনু না।কিন্তু তারপরেও আমাকে একটু ধরে নিয়ে যাও।
চলেন
৩০৯নাম্বার কেবিনের সামনে অনেক মানুষ দেখা যাচ্ছে।ভিতর থেকে তীক্ষ্ণ কান্নার একটা চিৎকার ভেসে আসছে।চিৎকার টা রফিকের বড়ো বোনের।



সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×