দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে আমার নম্বরে আসা এসএমএস......
Sobai Miley Sopoth Kori, Durniti Bajder Ghrina Kori - Anti Corruption Commission
"সবাই মিলে শপথ করি, দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করি- দুর্নীতি দমন কমিশন।"
আপাতদৃষ্টিতে এটিকে একটি সাধারণ বাক্য মনে হলেও এ বাক্যের মধ্যে অসাধারণ ছল-চাতুরী কপটতা ও ভণ্ডামি লুকিয়ে রয়েছে। যার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির অন্তরালে দেশের জনগনকে বোকা বানানো হয়েছে ও হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ক্ষেত্রই আজ দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের ছায়ায় ভরে গেছে। আগে সবাই প্রশ্ন করতো "কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে?" কিন্তু এখন সবার মুখে যে প্রশ্ন বারেবারে আসে "কোথায় দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজ নেই?" অর্থাৎ প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের আপাদমস্তক আজ দুর্নীতির গেঁড়াকলে আবদ্ধ হয়ে গেছে।
ঈশ্বর যেমন সর্ববিরাজমান তেমনই আমাদের দুর্নীতিও দেশের সর্ববিষয়ব্যাপী সর্ববিরাজমান। যা বর্তমানে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন। কিন্তু এ সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার সময় হতে কখনই সরকার ও সরকারের সাথে যুক্ত বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের কালো থাবা থেকে আজও মুক্ত হতে পারিনি ফলে সংস্থার দায়িত্ববান ব্যক্তিরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারিনি। হয়তো ভবিষ্যতেও সম্ভব হবে না। এটিই বাংলাদেশের প্রকৃত ও চিরন্তন রাজনৈতিক নিয়ম।
উক্ত উক্তিটির মাধ্যমে জনগনকে দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করতে বলেছে। কিন্তু বার্তাটি হওয়া উচিত ছিলো, দুর্নীতির সাথে সখ্যতা নয়, দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ধরিয়ে দিন, নিজে দুর্নীতি করবেন না অন্যকেও নিরুৎসাহিত করুন, দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিকে আইনানুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে সকলের সাহায্য প্রয়োজন অতএব আপনি এগিয়ে আসুন অন্যকেও উৎসাহিত করুন, ব্যক্তি যেই হোক দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে এবং শাস্তি প্রদান করা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু না দুর্নীতি দমনে এমন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করে শুধু-ই দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করতে বলা হয়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে এটি একটি হতাশাজনক ও অকার্যকরী পদক্ষেপ। এতে দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিরা আরো বেশি বেশি উৎসাহী হবেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের সচেতনতার অন্তরালের গূঢ় অর্থ দুর্নীতিকে সমর্থন করা এবং জড়িত ব্যক্তিদের রক্ষা করা। তা নাহলে এমন ভুয়া একটি বাক্য দেশব্যাপী মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতো না। যদিও দুদকের কাজ অনেক আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে কিন্তু সেটিকে আরো বেশি পরিষ্কার করে দিলো এই ভণ্ড সংস্থাটি।
ধর্মে বলা হয়েছে, 'পাপীকে নয় পাপকে ঘৃণা করো।' এসব দুর্নীতিবাজদের কেবলমাত্র আইননের দিক দিয়ে নয়, ধর্মীয় দিক দিয়েও সহায়তা লাভের পথ দেখিয়ে দিলো দেশের সবচে' ভণ্ড ও ভুয়া সংস্থা দুদক। দেশে ঘটে যাওয়া বড় বড় দুর্নীতি আজ লালসার নিচে চাপা দিয়েছে এবং দিচ্ছে দুদক। যা ক্রমে বেড়েই চলেছে। শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে হলমার্ক কেলেংকারির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে প্রমাণ করেছে দুদক সত্যি ভুয়া সংস্থা। এটিকে দিয়ে দেশ ও জাতির কোনো উপকার ও ভালো কাজ হবে না। তাই এটি থাকা ও না থাকা সমান কথা। এবং অচিরেই সংস্থার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ঝাঁটিয়ে দূর করা উচিত।
শেওড়াপাড়া, ঢাকা
রাত ১০.০০ মিনিট
২৯.০৩.২০১৫