পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি যাঁদের অতীত-বর্তমান সরকার, আমলাগণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ কখনো ভুল, অন্যায়, অনিয়ম ও অপরাধ করেন না, যে জাতির সামনে নত হয়ে ভুল স্বীকার করতে হবে! ভুল করে সাধারণ জনতা এমনকি সকল অপরাধও তাঁরা-ই করে থাকে। তবে এঁদের সবচে' বড় ভুল মগেরমুল্লুক নামক একটি দেশে জন্মগ্রহণ করেছে। যেখানে প্রাচীন থেকে বর্তমান পর্যন্ত সাধারণ মানুষ শুধু অধিকার হীনতায় ভুগছে। সাধারণ মৃত্যুর গ্যারান্টি খুঁজে বেড়াচ্ছে।
অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত কোনো সরকার স্বীকার করিনি তাঁর দেশের মানুষের সর্বপ্রকার অধিকারহীনতা ও অসহায়ত্বের কথা। বাঙালির পরাজয়ের মহাকাব্য গাঁথা। এজন্য সুইডিশ একাডেমির উচিত মগেরমুল্লুকের যেসব সরকার প্রধান এখনো বেঁচে আছেন তাঁদের, নিতে না চায়লেও, জোর করে শান্তিতে নো-বেল পুরষ্কার দেওয়া। যেভাবে পুরষ্কার গ্রহণের হিড়িক পড়েছে রাতে কেউই নো-বেল নিতে, যাই তাই পুরষ্কার হোক না কেন, অস্বীকৃতি জানাবে না। যদি তা করা হয় তবে জাতির বুকে শান্তির ছোঁয়া লাগবে চারবারের মতো(ইউনুসের সাথে বর্তমানের তিনজনকে দিয়ে) বাস্তবে না হোক অন্তত মুখেই শান্তি ফিরে আসুক হাজার পথ পেরিয়ে হতভাগাদের বুকে।
অস্বীকার করার উল্লম্ফন বাঙালির সর্বজনীন প্রবণতা। প্রশ্নফাঁস নতুন কিছু নয়। ইহা অতি প্রাচীন কাল থেকে প্রতিটি বাঙালির কাছে সমান পরিচিত ও সমাদৃত একইসাথে গ্রহণীয়। মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিবারই হয় কিন্তু এবার একটু বেশি প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে। বেশি বেশি প্রচার ও প্রসারে রোগ উপশমের একমাত্র ও জনপ্রিয় উপায়। যা গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাটে মাইকের শব্দে সহজে উপলব্ধি করা যায়। হয়তো প্রশ্ন পাওয়া আগামীর সচেতন ডাক্তাররা তাদের ব্যাপক প্রচার ও প্রসারে ভুল করেননি। এজন্য তারা সামাজিক যোগাযোগব্যবস্থা ও মিডিয়াকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে। সর্বোপরি নিজেদের গর্বের সহিত জাতির সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে যে তারা প্রশ্ন পেয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই তা উচ্চবাচ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন পাওয়া ও দাতা উভয় দলই সার্থক। মধ্যখান থেকে সমগ্র জাতি বিনোদনের খোরাক গোগ্রাসী করছে।
যে দেশের ডাক্তার একটি জীবিত শিশুকে মৃত ঘোষণা করে, রোগীর পেটে অপারেশন করে যন্ত্রাদি পেটের মধ্যে রেখেই সফল অপারেশন শেষ করে, পায়ের ব্যথার জন্য ডাইরিয়ার ওষুধ দেয়, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সার্টিফিকেট না নিয়েও হাসপাতালের উচ্চ বেতনভুক্ত ডাক্তার হয় সে দেশে মেডিকেলের প্রশ্নফাঁস দূরে থাক পরীক্ষা নেওয়ার প্রয়োজনবোধ আছে বলে আমি অন্তত মনে করি না।
সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের অভিভাবক মান্যবর রাষ্ট্রপতি। যথাযোগ্য নিয়মের মধ্যে আটক থেকে তিনি নিয়ত তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে যান। যদি জাতির অভিভাবক অসহায় হোন তবে জাতির জন্য সুসংবাদ ইহজনমে প্রত্যাশা করা মারাত্মক ভুল। যায়হোক তিনি এবং রাষ্ট্রীয় সুবিধাপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তির সামান্য মাথাব্যথা ও সর্দিকাশি হলেই যখন বিমান ভ্রমণ করে বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসেন তখন এ দেশের ডাক্তারদের মান ও চিকিৎসা নিয়ে অতিরিক্ত কিছুই বলার থাকে না। কিংবা বলাও যুক্তির মধ্যে পড়ে না। অতএব মেডিকেলের প্রশ্নফাঁস নিয়ে উচ্চবাচ্য করা সমীচীন নয় বরং ইহাই সর্বজনীন ইহাই স্বাভাবিক।
"মেডিকেলের প্রশ্নফাঁস সর্বজনীন ও স্বাভাবিক"
শেওড়াপাড়া, ঢাকা
বিকাল ৩. ১৫ মিনিট
০২.১০.২০১৫