somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তালেবান

০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আফগানিস্তানে এখন আছেটা কি?

তালেবানরা কি এখনও অবশিষ্ট আছে?

আফগানিস্তানে ইরান, তুরস্ক ও সৌদি আরবের ভুমিকা কি?

ফিরে দেখাঃ
মৌলভি হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা (সুপ্রিম কমান্ডার)
মোল্লা মুহাম্মাদ রসুল এর নেতৃত্বে ইসলামী মৌলবাদ( অনেকটা সালাফি সংস্করণ) এবং পশতুন জাতীয়তাবাদ এর ভিত্তিতে তালেবানরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সম্পুর্ন ইসলামিক শরীয়াহ অনুযায়ী আফগানিস্তানকে পরিচালনা করে!
উল্লেখ্য প্রথম যুগের এই তালেবানরা সম্পুর্ন সুন্নিভিত্তিক দল ছিল! এবং এদের মাঝে খারেজিপানাও বিদ্যমান ছিল না!
যদিও মেজরিটি জনগনের আক্বিদাহ তালেবানদের ইসলামি মৌলবাদ এর মতো ছিলো না! তালেবানদের মৌলবাদ অনেকটা সালাফি সংস্করণ এর মতোই ছিলো! তথাপি তালেবানরা মেজরিটির বিরুদ্ধে গিয়েই শরীয়াহ প্রনয়ণ করে! তবে পশ্চিমারা তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছিলো তার অধিকাংশই প্রোপাগাণ্ডা! তালেবানরা কখনও কোনো নারীকে বোরকা পরতে জুলুম করেনি, কখনও কোনো পুরুষকে দাড়ি রাখতে জোর করেনি! মূলত আফতানিস্তানে হামলা করার ইস্যু তৈরির জন্যই পশ্চিমারা এসব প্রোপাগাণ্ডা তৈরি করেছিলো!

পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে তালেবানরা আফগান রাজধানী কাবুলে ক্ষমতাসীন ছিল। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে মাত্র তিনটি দেশ তাদেরকে স্বীকৃত দিয়েছিল: পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। মানবাধিকার লংঘনের জন্য আফগানিস্তান জাতিসংঘের স্বীকৃতি হারিয়েছিল এবং ইরান, ভারত, তুরস্ক, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্য এশিয়ার অধিকাংশ দেশ তালেবান শাসনের বিরোধিতা করেছিল এবং তালেবান বিরোধী আফগান নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে সাহায্য করেছিল।

হিলারি ক্লিন্টন অাফগানিস্তানে আমেরিকার আগ্রাসনের মূল কারন হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তালেবানদের মাধ্যমে আফগানিস্তানে সৌদি আরবের "ওহাবি ইসলাম " প্রতিষ্ঠার প্রয়াসকে! আর সচেতন মুসলমান মাত্রই বুঝতে পেরেছেন সালাফিয়াতকেই পশ্চিমারা ওহাবি ইসলাম বলে থাকে! আমেরিকা যদি সৌদি আরবের এতোই ভালো বন্ধু হয়ে থাকে তাহলে পৃথিবীর যেকোনো স্থানে তাদের কথিত ওহাবি ইসলামকে প্রতিরোধ করতে লেগে পরে কেনো? যেখানে জামায়াতে ইসলামের মত দল আমেরিকায় তাদের মতাদর্শ দিব্যি প্রেকটিস করছে সেখানে কথিত ওহাবি ইসলাম অামেরিকার জাতশত্রু কেনো?
আমেরিকার আফগান হামলার আরেকটা কারন ছিলো সেখানে রাশিয়ার প্রভাব খর্ব করা!

২০০১ সালে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স এবং ন্যাটো দেশগুলো কর্তৃক পরিচালিত এক যৌথ অভিযানের মাধ্যমে সেদেশে তালেবান শাসনের অবসান ঘটানো হয়, তালিবান নেতারা অনেকেই বন্দী হন, বাকিরা পালিয়ে যান।
সচেতন পাঠকরা নিশ্চয়ই উপরে খেয়াল করেছেন তালেবান কর্তৃক মৌলবাদী ইসলাম যা আমাদের মতে বিশুদ্ধ ইসলাম তা প্রতিষ্ঠিত করার পর কোন কোন দেশ তাদেরকে সমর্থন দিয়েছিলো অার কোন কোন দেশ তাদেরকে প্রতিহত করতে চেয়েছিলো!
সৌদি আরব তালেবানদের এই তাওহীদ প্রতিষ্ঠাকে বিনা বাক্য ব্যয়ে সমর্থন দেয় এবং সৌদির অনুরোধে পাকিস্তান ও আরব আমিরাতও তালেবানদের সমর্থন দেয়। কিন্তু এই কথিত ওহাবি ইসলাম ইরান কিভাবে কবুল করবে? তুরস্ক কিভাবে কবুল করবে? এই ওহাবি ইসলাম তো পারস্য ধ্বংস করেছে! এই ওহাবি ইসলাম তো অটোমান তথা তুরস্কের চক্ষুশূল!
তাই ইসলামের(!) মহান কান্ডারী এই দুই দেশ মানে ইরান ও তুরস্ক আমেরিকা, ভারত,রাশিয়া... সবার সাথে হাত মিলিয়ে তালেবান উৎক্ষাতে লেগে পরলো! তুরস্ক তো সরাসরি ন্যাটোর সদস্য আর ইরান নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে সব ধরনের সাহায্য করলো!

তালেবান সরকারের পতন হলো! কিন্তু যুগে যুগে অপ্রতিরোধ্য তালেবানদের আক্বিদাহর তো পরিবর্তন হলো না! এই আক্বিদা আবার এক সময় ঘুরে দাঁড়াবে এবং আফগানিস্তানে তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করবে যেমনটা আলে সৌদরা বারংবার মার খাওয়ার পরও সৌদি আরব প্রতিষ্ঠা করেছে- এই ভয় থেকেই তালেবানদের আক্বিদা ধ্বংসের কাজ চলতে থাকে! উৎখাত হওয়া তালেবানদের সাহায্য করলো তাদের ধ্বংসে সাহায্য করা ইরান ও তুরস্ক ! লক্ষ্য হলো আক্বিদার পরিবর্তন করা না হয় তালেবান দলে নিজেদের লোক অন্তর্ভুক্তিকরন!

অবশেষে সফল হলো ইরান-তুরস্ক! অনেক তালেবানদের আক্বিদা ও কর্মপন্থা পরিবর্তিত হয়ে খারেজি পন্থি হলো আর তালেবানদের লিডিং পর্যায় থেকে শুরু করে তৃনমুল পর্যায়ে শিয়াদের অধিভুক্তি হলো! এমন অবস্থা দেখে শুরু থেকে তালেবানদের সাহায্য করে আসা সৌদি আরব ২০১৩ সালে তালেবানদের সকল সাহায্য সহযোগীতা বন্ধ করে দেয়!
কারন তালেবান তো আর তালেবান নেই!

আমেরিকা ১৪ মাস পর আফগানিস্তান ত্যাগ করবে বলে চুক্তি করেছে! ধরে নিলাম চুক্তির শর্ত পুরন হওয়ায় আমেরিকা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেল!
কিন্তু আফগানিস্তানে কি আর প্রকৃত তালেবানরা আছে? থাকলেও তারা কি আর কখনও তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে?

আমেরিকা কি সেই জাতি যারা উদ্দেশ্য পূরন না করে আফগানিস্তান ছেড়ে দিচ্ছে?

মোরালিটি বিবর্জিত তালেবান আর বিধ্বস্ত শহর-বন্দর ছাড়া অাফগানিস্তানে এখন আছেটা কি?

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×