প্রথম পর্ব
মেয়েটা সম্পর্কে আমার আত্মীয়, সেই ছোটবেলায় প্রথম দেখা। তারপর অনেক দুষ্টামি বাদরামি তাকে ঘিরে। দেখা হত প্রায় প্রতি ঈদ এ, ও থাকতো রাজশাহী তে আর আমি ঢাকা। তাদের নানুবারির পেছনে বিশাল খালি যায়গা, তারপরেই আমার নানুবারি।
প্রতিবার সিরাজগঞ্জ (আমার ও তার নানুবারি) যাওয়ার আগেই ভাবতাম ও এবার যাবে কিনা, যদি না যায় তাহলে তো এবার মজা হবে না। গেলেও দেখা হত অনেক দূর থেকে, আমি সারাদিন দারিয়ে থাকতাম আমার নানুবারির পিছনে আর সেও তার নানুবারির পেছনে, দূরত্ব টা মোটামুটি ভালই ছিল। তারপরও সেও ওখান থেকে নরত না আর আমিও না। আর মাঝে মাঝে কাছে থেকে দেখা হলেও চুপ করে তাকিয়ে থাকতাম একে অন্নের দিকে মাঝে মাঝে দুষ্টুমি ভরা আচরণ, যেমন ক্ষেতের বেরা ভেঙ্গে দেয়া লাল ঝাল ওয়ালা মরিচ খেয়ে তার সামনে বীরত্ব প্রকাশ করা। আবার ঢাকায় এসে পড়ালেখার মাঝে ওকে মনে করা, এভাবেই চলছিল দিনগুলো।
তারপর হঠাৎ করেই তার বাবা মারা গেলো, সপরিবারে তারা চলে এলো ঢাকাতে তার ভাই এর বাসায়। তারপরও তার সাথে দেখা হত সেই সিরাজগঞ্জেই।
২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাস, সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসবার জন্য বাস এ উঠেছি। উঠেই দেখি তারাও সেই বাস এ এবং আমার সামনের সিটেই সে এবং তার বোন। সেখানে তাকে ইমপ্রেস করার জন্য কত না বিফল চেষ্টা, কিতু কিছুতা সফল মনে হয় হয়েছিলাম। বাস থেকে নামার আগে সে আমার নাম্বার নিয়ে যায় এবং, ঘণ্টা তিনেক পরেই তার ফোন। বেশ খানিক খন কথা হল। ছতবেলার প্রশঙ্গগুলই বেশি ছিল সেই কথাতে। সেই নাকি খুব মিসস করত সেই ছোটবেলা গুলোকে । এভাবে কথা চলল দুইদিন তারপর সে বলে বসলো আমাকে নাকি সে ভালবাসে। আমি তো যারপরনাই খুশি, তারপরও একদিন সময় নিয়ে তাকে উত্তর দিলাম, বললাম আমার মনের কথাটা তুমি বলে দিয়ে আমার কষ্ট অনেকটাই কমিয়ে দিলে। তুমি না বললে জিবনেও আমার এ কথা বলা হয়ে উঠতো না। তারপর থেকে মাঝেমাঝেই দেখা করা, খুনসুটি শবমিলিয়ে ভালই যাচ্ছিলো দিন, কিন্তু মাঝে মাঝেই সে কি মনে করে জেন চলে জেতে চাইত। আমি দিতাম না আটকে রাখতাম ওকে আমার অবস্থা টা বোঝাতাম, সে থেকে যেত। একবার সে চলেই গেলো, বুঝিয়ে কিছু করতে পারলাম না, তার নাকি তার ফ্যামিলি এর কাউকে কষ্ট দিতে ভাল লাগে না। আমি তাকে জেতে দিলাম, সে চলেও গেলো।
ফিরে এলো ২ মাস পরে, আবার ও তাকে বিশ্বাস করে দিন কাটাতে থাকলাম, আবার ভালই যাচ্ছিলো দিন।
হঠাৎ আবার সেই ফ্যামিলি এর গল্প, সে নাকি এগুলো ভুল করছে, তার বাশা থকে নাকি আমাকে কোনদিনই মেনে নেবে না, তাই সে আর আমার কাছে থাকবে না। আমি তাকে অনেক বুঝালাম, কন প্রেমের বিয়েতেই কেউ প্রথম প্রথম মেনে নেয় না, পরে সব ঠিক হয়ে যাবে, সে কিছুতেই বুঝলও না। চলে গেলো, তার মাকেও শব খুলে বলল, তার মা আবার তার ভাই কে বলল, তার ভাই এসে আমার বাসায় জানাল, সব দোষ নাকি আমার, আমিই নাকি ওকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ভালবাশার অভিনয় করে চলেছি। তারা আমার মামাদের (আমার মামাদের সাথে তাদের ফ্যামিলি এর আবার ভাল খাতির ) জানাল। শব মিলিয়ে আমার জন্য বিদিকিছছিরি অবস্থা। এভাবে মুখে কালি মেখে শরে গেলাম ওই অবস্থা থেকে।
তারপর অনেক মনে পরত তাকে, খুব মিস করতাম তার সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো কে, তারপরওতাকে ভুলেও একটি বার ফোন দেই নি, যদি সে আবার কাউকে বলে দেয় এই ভেবে এমনকি সিরাজগঞ্জ যাওয়াও প্রায় বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম ।আমিও আস্তে আস্তে পড়ালেখা নিয়ে ব্যাস্ত হতে থাকলাম, বন্ধুর সংখ্যা বাড়িয়ে দিলাম । সবমিলিয়ে খুব একটা খারাপ দিন যাচ্ছিলো না।
এভাবে চলল প্রায় ১.৫ বছর, ২০১১ এর রোজার ঈদের পরের দিন, আমি ঢাকাতে, হঠাৎ সেই পুরনো নাম্বার থেকে ফোন, অবাক হয়ে কিছুখন বসে রইলাম, পরে আমিই ফোন দিলাম ওপাশ থেকে হেলো শুনে মনে হল এই তো আমার সুখ, যা থেকে আমি এতদিন বঞ্ছিত ছিলাম। আমি পুরনো বাপার গুলো না টেনে, তার কুশলাদি জানতে থাকলাম। প্রথম কয়েক দিন আবেগ কে ধরে রেখেছিলাম তাকে বোঝাব না বলে, কিন্তু তার কাছে হার মানতে হল।
এবার তার মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখতে পেলাম, সে এখন আমাকে আগের থেকেও অনেক বেশি ভালবাসছে, অনেক কেয়ার করছে। আবারও আগের মত সব বন্ধু বাদ দিয়ে তার সাথে সময় কাটানো শুরু করলাম, বেশ কএক দিনেই হয়ে উঠলাম বন্ধুহীন। তারপরও আমি অনেক খুশি ছিলাম সে তো আমার সাথে আছেই আমার আর কিছুই দরকার নাই!!!!!
কিন্তু, আবারও সেই আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি, তাকে চলে যেতে হবে, তার ফ্যামিলি প্রব্লেম। আমি এবার তাকে জেতে দিলাম কিছু বলা ছারাই সে চলে গেলো এবং অইদিন রাতেই অনেক কান্নাকাটি করে সে আবার আসলো। আবার আগের মতই ভাল চলল দিন। তারপর আর কয়েকবার এইরকম ঘটনা ঘটল এবং আব্র তাকে বিশ্বাস করেই ছলতে থাকলাম।
এবারও সে চলে যেতে চাইল কিন্তু, এবার তার কাছ থেকে এবার দুই মাস সময় চেয়ে নিলাম, এই দুই মাস পরে সে চলে যাবে আর কোনদিন তার সাথে কথা হবে না। এই দুই মাস ই এখন চলছে শেষ হবে ডিসেম্বরের শেষের দিকে। কিন্তু এর মধ্যেও আজকে সে আবার চলে যেতে চেয়েছিল, অনেক বুঝিয়ে তাকে রেখে দিয়েছি।
সে যখন চলে যেতে চায়, তখন সে পুরদমে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে, কিছুই কেয়ার করে না, আমি বাঁচব না মরবো সেটিও না।
(পরিমার্জিত)
অভ্র দিয়ে লেখা, বানান ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থী।।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৩২