somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সভ্য বাংলাদেশের, অসভ্য এক অঞ্চল।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেবার গিয়েছিলাম বড় ফুপুর বাড়িতে।প্রতিবছর একবারই ওখানে যাওয়া হয়।সেখানকার পরিবেশ তেমন ভালো না।বলতে গেলে ৮০% লোকই অশিক্ষিত।১০বছরের বালক থেকে শুরু করে ৬০ বছরের বৃদ্ধা,সবাই ধূমপান করে।আপনারা হয়ত হতবাক হয়েছেন নিশ্চয়?হ্যাঁ,ঐ অঞ্চলে ধূমপায়ীদের সংখ্যা এত বেশি যে,ঐখানে আপনি ১মাস থাকলে আপনিও ধূমপানে পারদর্শী হয়ে উঠবেন।এখানে ছোট-বড় কেউ কাউকে পরোয়া করে না।সবাই এক রকম বেপরোয়া টাইপের।

প্রতিদিনকার মত সেদিনও বিকেল বেলা রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম।সামনে কয়েকজন অল্পবয়স্ক ছেলেদের দেখলাম।বয়স বেশি হলে ১২ কি ১৩ হবে।ওরা আপন মনে ধূমপান করছে।আমি তখন বিস্মিত হই নি।এগুলো দেখে দেখে আমি অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিলাম।আমি ওদের সামনে গেলাম।কিন্তু কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম না।আমি বিব্রত বোধ করলাম।

ঐসময় রাস্তা দিয়ে ছোট ছোট মেয়েরা হেঁটে যাচ্ছিলো।মেয়েগুলোর বয়স ঐ ছেলেগুলোর বয়সের মতই হবে।আমি হতবাক হলাম!! ছেলেগুলো ঐ মেয়েদেরকে উদ্দেশ্য করে শিস দিতে লাগলো।আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারলাম না।যারা এখনো প্রাইমারী লেভেল অতিক্রম করতে পারেনি তাঁরা কি করে এরকম করতে পারে? মেয়েগুলা একটু সামনের দিকে এগুলো। ছেলেগুলো বাজে বাজে মন্তব্য করতে লাগলো।আমি আর বসে থাকতে পারলাম না।আমি আর আমার ফুফাতো ভাই তখনই দুইজনকে ধরে শাসাতে লাগলাম।(উল্লেখ্য আমার ফুফাতো ভাইও ধূমপায়ী।অবশ্য উনি ১৮+ :P )

কি অদ্ভুত!!যারা এখনও প্রাইমারী লেভেল অতিক্রম করে নি তাঁরা কি করে বড়দের সামনে সিগারেট খেতে জানে?তারা কি করে মেয়েদের উত্যক্ত করতে জানে?
এরকম হাজারো প্রশ্ন হয়ত আপনাদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।আমারও প্রথমে এরকম মনে হয়েছিল।কিন্তু এখন সবকিছু বুঝতে পেরেছি।

এসব কিছুর জন্য সামাজিক প্রভাবটাকে দায়ী করা যায়।দেখুন,ঐ ছেলেগুলো থেকে যারা বয়সে বড়। তারা তাদের থেকে বয়সে ছোটদের সামনেই সিগারেট খায়+মেয়েদের উত্যক্ত করে।তাদের এই সিগারেট খাওয়া+মেয়েদের উত্যক্তকরণ ছোটদেরকে প্রভাবিত করেছে।
সত্যি কথা বলতে কি,আমি যে অঞ্চলের কথা বলছি, সে অঞ্চলে সন্তানদের উপর মাতা-পিতার শাসন নেই বললেই চলে।এদের মাঝে ছন্নছাড়া ভাব।কেউ কাউকে পরোয়া করে না।এটা আজব এক অঞ্চল।

ঐ অঞ্চলে ২০১৪ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট শুনলে আপনারা অবাক হবেন।৭০জন শুধুমাত্র গণিতে ফেল করেছে।কৃতকার্য হয়েছে মাত্র ৮জন!!তাহলে কি আমি বলতে পারি যে,তাদের মধ্যে শিক্ষার অভাব?

এরা পড়ালেখা করে না।কারণ ওরা ভালো করেই জানে যে,কিছুদিন পর তাদেরকে হয়ত কোন রেস্টুরেন্টে মেসিয়ারের কাজ করতে হবে,নয়ত কোন গ্যারেজে গাড়ি ধোয়ার কাজ করতে হবে।
ঐ অঞ্চলে থাকাকালীন আমি পুরো দমিয়ে যাই।এদের মধ্যে মূল্যবোধ নামক বস্তুটা নেই বললেই চলে।আমাদের অঞ্চলে ছোটরা,বড়দের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়।কিন্তু ঐ অঞ্চলে বড়-ছোট সব একরকম।

এদেরকে সভ্য করতে একটি সুষ্ঠু সমাজের প্রয়োজন।আর সেই সুষ্ঠু সমাজ তৈরি করে দিতে পারে একমাত্র শিক্ষা।একমাত্র শিক্ষাই পারে ওদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসতে।একমাত্র শিক্ষাই পারে ওদেরকে সচেতন করতে।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে,ঐ অঞ্চলে শিক্ষাব্যবস্থা খুবই অনুন্নত।৭-৮ গ্রামের মধ্যে মাত্র একটাই হাইস্কুল আছে।প্রতিটি গ্রামে প্রাইমারী স্কুল থাকলেও ঠিকমত পড়াশুনা হয় না।

এই অসভ্য অঞ্চল তো বাংলাদেশের মধ্যেই পড়ে।এদেরকে রেখে তো আর আপনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করতে পারবেন না।আস্তে আস্তে 'মোর ডিফিকাল্ট বাংলাদেশ' হয়ে উঠবে।
যেখানকার শিক্ষায় ঘাটতি রয়েছে,সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা।আর যেখানে শিক্ষাক্ষেত্রে ঘাটতি নেই বললেই চলে,সেখানে শিক্ষার উন্নয়নের কথা বলে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা খরচ করা হচ্ছে।

[বিঃদ্রঃ আমি যে অঞ্চলের কথা বলছি সেটা মৌলভীবাজার জেলার অন্তর্গত বড়লেখা উপজেলার কোন এক প্রত্যন্ত অঞ্চল]
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×