সবসময় সব স্থানে, সব সাধারণ মানুষের ভিড়ে সব সময় অন্যভাবে সবকিছু দেখবার চেষ্টা করেছি। একথা জানি, সবাই যা ভাবে তার উল্টো পথে কথা বলে সেটাকে স্ট্যাব্লিস করা অনেক কঠিন। তবুও বলে যাই, কেননা, সবাই যেমনটা ভাবে তেমনটি করে কোনদিনও কোন কিছু সফল হয় না। এটাই সত্য।
একটা বড় রকমের উদাহরণ দিতে গিয়েও দিলাম না। শেষটায় কার সাথে শত্রুতা রেখে যেতে চাই না।
আমার মানসিকতা বেশ সাধাসিধা। কারও দোষ ধরার আগে আমি নিজের দিকে তাকাই। আমার কোন কাজটার জন্য এমনটা হলো তা ভাবি। নিজেকে ঠিক করে অনেক সুফল পেয়েছি। এই জিনিসটাই সবার ক্ষেত্রে করতে বলেছি।
কিছু ব্যপার খোলসা করে যেতে চাই
আমি আওয়ামি লীগ
বাংলাদেশের জন্ম যে মানুষটার হাত ধরে, সে মানুষটাকে অসীম শ্রদ্ধা করি। ২০০১ সালের নির্বাচন অবধি আমার রাজনীতি বোঝার কোন ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে নিজেই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে যেতে থাকি। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা, আহসানুল্লাহ মাস্টার হত্যা, কিবরিয়া হত্যা, বাংলা ভাইয়ের বোমাবাজিতে আমি অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। তাই আওয়ামীলীগকে আমার জীবনের প্রথম ভোট টা দিয়েছিলাম।
অথচ, তখনও এটুকু বুঝার বয়স হলো না, যে আওয়ামীলীগ বিএনপি একই মুদ্রার এপিট ওপিট।
আওয়ামীলীগের আত্মঘাতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, ছাত্রলীগের উলঙ্গ তান্ডব, দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অসহনীয় অবনতি আমাকে নাড়িয়ে যায়। এখন আমার বিশ্বাস এই দেশের মানুষগুলো অনেক স্বার্থপর। এরা কেউ দেশের জন্য কিছু করবে না। সুতরাং ভোটের দিন, বাসায় বসে বসে একটা অনর্থক কারফিউ টাইপ দিন কাটিয়ে দেব এর পর থেকে!
আমি ভারতের দালাল
আমি ভারতের দালাল, একথা এই ব্লগে অনেকে বলেন। এখানে দুইটা জিনিস স্পষ্ট হওয়া দরকার। কলকাতা, আর ঢাকাকে আমি এক বাংলার দুই শহর মনে করি। তাই কলকাতার মানুষের সাথে আমার কোন বিদ্বেষ বা রাগ নেই। কলকাতার সিনেমা, গান, বাঙ্গালী সংস্কৃতিকে তারা যতটা ধরে রাখতে পারে, তা আমার কাছেও গ্রহণযোগ্য। তা পরিত্যাজ্য নয়।
অবাক লাগে, বাংলার এই দুই রাজধানী থেকেই কিনা ভারত ও পাকিস্তান নামক দুই জারজ সন্তানের জন্ম হয়। একথার ব্যাখ্যা আমি আর দিতে যাবো না। তবে, এই দুই অসভ্য জাতির জন্য আমরা আমাদের বাংলাকে হারিয়েছি চির তরে। যা হয়ত কোনদিন আর জোড়া লাগবে না।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের বর্তমান যে সমস্যাগুলো চলছে, তা অনর্থক, এবং দুই দেশের মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরী হয়েছে। ভারতের পক্ষ আপোষহীনতা, এবং বাংলাদেশকে তুচ্ছ জ্ঞান করার প্রবণতা যেমন এর জন্য দায়ী, তেমনি দায়ী বাংলাদেশের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি। বাংলাদেশ ভারতের উপর পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ যে ভারতের উপর পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল, তার একটা ছোট্ট দিক হলো আমাদের দেশের ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি এর সমস্ত র' ম্যাটেরিয়ালের একমাত্র কমদামি উৎস হলো ইন্ডিয়া। আর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের কথা বাদই দিলাম।
বাংলাদেশের মানুষ ১৬ কোটি এ কথা বিশ্বাস করি না। সরকার যাই বলুক। ২০ কোটির খাওয়ার কথা সরকারকে চিন্তা করেই ভারতের সাথে আতাত করে চলতে হয়। এত এত ইন্ডাস্ট্রির কাঁচামালের উৎসকে যেমন ব্যবসায়ীরা খুশি রাখতে চায় তেমনি সরকারও। এইখানেই বাংলাদেশের সব থেকে বড় ভুল। জনগণ যতই চিল্লাক, ভারতকে বয়কট করব, দিন শেষে তারা যে কারখানায় কাজ করতে যাবে, সেই কারখানার কাঁচামাল বন্ধ হয়ে গেলে, কত লোক চাকরি হারাবে এই খবর তো কেউ রাখে না।
ভারত-পাকিস্তান ও বাংলাদেশের আলিঙ্গন
বিপিএল, ওয়ার্ল্ড কাপ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে এই তিন দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক শীথিল করার একটা চাপা উদ্যোগ কাজ করে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সেটা বেশ বুঝতে পারি। তবে এই আলিঙ্গন যদি তিন দেশের মানুষকে কাছেই না আনতে পারে, আর তা যদি শুধু কর্পোরেট লেভেলে থেকে যায়, তার কোন লাভ আমি দেখতে পাইনা। তবে, যখন উদ্যোগ চলছে, তখন চলুক। আমিও চাই, এই তিন দেশের মানুষ একসাথে হোক। এই এলাকা একদিন ইউরোপের মত ফ্রি হয়ে যাক।
সামহোয়ার সত্যি পুরোপুরি ছেড়ে যেতে কষ্ট লাগছে। তবে কিছু করার নেই। আমাকে যেতেই হবে! সবার জন্য শুভকামনা। আমাকে যারা গালি দিতে চান, তারা প্রাণ খুলে দিন, আপনাদের কমেন্ট মুছা যাবে না! ধন্যবাদ!