somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কী প্রয়োজন ছিল এই বিয়ের? আমি তো ভালো ছাত্রী ছিলাম

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রিমা তার চাচা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসিকে বড় আব্বা বলে ডাকতেন।

শোকাহত চাচা রিমার জবানিতে নিজের ও স্বজনদের কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন-

বড় আব্বু! আমার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কান্না করছো? নাহ্ কান্না নয়, দোয়া চাই। এখন কবরে পৃথিবীর আলো-বাতাস থেকে মুক্ত হয়ে খোলা মাঠে আমি খেলা করছি। খেলা থামিয়ে তোমার কান্নার শব্দ শুনে আবার কবরে এসে শুয়ে পড়লাম।

পৃথিবী আমাকে বাঁচতে দিলো না। কী প্রয়োজন ছিল এই বিয়ের? আমি তো ভালো ছাত্রী ছিলাম। তোমার ইচ্ছা পূরণ করে মাস্টার্সে ভালো ফল বয়ে এনে শিক্ষকতা করে তোমাদের মুখ উজ্জ্বল করার বাসনা আমার পূর্ণ হলো না।

পৃথিবী এতো স্বার্থপর যে, সব মানুষের আশা এখানে পূর্ণ হতে দেয় না। একটা না একটা বাধা নেমে আসে। আমি তো মা-বাবার কাছে বিয়ের কথা বলিনি। কেন আমাকে বিয়ে দেওয়া হলো? তাও একজন প্রবাসী ছেলের সঙ্গে। না পেলাম স্বামীর সুখ, না পূরণ হলো মনের আশা। মানুষের মনে অনেক সুপ্ত বাসনা থাকে। আমারও ছিল, কাউকে ব্যক্ত করিনি।

থাক, আজকেও তোমার কাছে ব্যক্ত করলাম না। পরকালে দেখা হলে একদিন খুলে বলবো।

মেয়েরা যখন গর্ভবতী হয়, তখন কতো সমস্যা থাকে। সব সমস্যার কথা মা-বাবাকে খুলে বলা যায় না। স্বামীও নেই, কাকে বলি? এটাকে বিয়ে বলা হলো কেন বুঝি না। অল্প সময়ের জন্য স্বামীকে কাছে পাওয়া, তারপর আবার দূরে চলে যাওয়া- এর নাম কি বিয়ে? বাবার সংসারে এসে সময় কাটানোর নাম কি বিয়ে? আমি এত্তো বোঝা ছিলাম যে, আমাকে বিদায় করার জন্য স্বার্থপরেরা এক হয়ে এ কাজ করলেন?

বড় আব্বা! আমার জন্য কোনো দুঃখ করো না। আমি এখানে ভালোই আছি। তুমি শুধু নেই, নেই মা-বাবা। মাঝে মধ্যে স্বপ্নে এসে হাজির হলে বিরক্ত হবে না তো? তুমি তো একটুতেই নার্ভাস হয়ে যাও। আমি এলে নার্ভাস হয়ো না। তোমাকে দেখতেই শুধু আসবো। তুমিই আমাদের গর্ব, তুমি আমাদের সম্বল।
পৃথিবীর ডাক্তারগুলো যেন কেমন! আমার পেট ওপেন করে সেলাই না দিয়েই আরেক রোগী দেখতে ভোঁ-দৌড়। নার্স কি সেলাই করবেন, না আমার রক্তক্ষরণ বন্ধ করবেন? নার্স কি অক্সটার্জিন ব্যবহার করতে জানেন?

আমার রক্তে আমি যখন গোসল করছি, ওই সময় কে একজন এসে আমার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে চেষ্টা করছেন। তখন আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত। চোখ ভরে বাচ্চাকে দেখার সুযোগ হল না। কে একজন চাদর উল্টিয়ে টের পান, এখন আমার শরীরে আর রক্ত নেই। ওই সময় হাজার বোতল রক্ত দিলেও কিছুই হওয়ার নয়।

মৃত্যু যে এতো সুখের, তা আগে জানতাম না। আমি উড়ে যাচ্ছি মহাকাশে, কী আরাম, কী উপলব্ধি! এ আরাম ছেড়ে কি কেউ পৃথিবীর দিকে আসবে? আমি কিন্তু আসবো শুধু তোমাকে দেখতে।

আমার জন্য কেঁদো না, চোখের পানি মুছে ফেলো, না হলে আমার ক্ষতি হবে।

এখন আমি এক বাগান থেকে অন্য বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। পৃথিবীতে শুধু স্বর্গের বর্ণনা শুনেছি। ওই বর্ণনা সঠিক নয়, স্বর্গ তার চেয়েও বেশি সুন্দর।
এই সৌন্দর্য উপলব্ধি করা থেকে আমাকে বিরত করো না। তুমি কাঁদলে আমার তো সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। দোহাই বড় আব্বা, কেঁদো না, আমি ভালো আছি। এটাই ছিল আল্লাহ’র ইচ্ছা। এটাকে মেনে নাও। শান্ত হও। সবাই সুখে থাকো।

নুরুল ইসলাম বিএসসি: প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীরিমা তার চাচা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসিকে বড় আব্বা বলে ডাকতেন।

শোকাহত চাচা রিমার জবানিতে নিজের ও স্বজনদের কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন-

বড় আব্বু! আমার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কান্না করছো? নাহ্ কান্না নয়, দোয়া চাই। এখন কবরে পৃথিবীর আলো-বাতাস থেকে মুক্ত হয়ে খোলা মাঠে আমি খেলা করছি। খেলা থামিয়ে তোমার কান্নার শব্দ শুনে আবার কবরে এসে শুয়ে পড়লাম।

পৃথিবী আমাকে বাঁচতে দিলো না। কী প্রয়োজন ছিল এই বিয়ের? আমি তো ভালো ছাত্রী ছিলাম। তোমার ইচ্ছা পূরণ করে মাস্টার্সে ভালো ফল বয়ে এনে শিক্ষকতা করে তোমাদের মুখ উজ্জ্বল করার বাসনা আমার পূর্ণ হলো না।

পৃথিবী এতো স্বার্থপর যে, সব মানুষের আশা এখানে পূর্ণ হতে দেয় না। একটা না একটা বাধা নেমে আসে। আমি তো মা-বাবার কাছে বিয়ের কথা বলিনি। কেন আমাকে বিয়ে দেওয়া হলো? তাও একজন প্রবাসী ছেলের সঙ্গে। না পেলাম স্বামীর সুখ, না পূরণ হলো মনের আশা। মানুষের মনে অনেক সুপ্ত বাসনা থাকে। আমারও ছিল, কাউকে ব্যক্ত করিনি।

থাক, আজকেও তোমার কাছে ব্যক্ত করলাম না। পরকালে দেখা হলে একদিন খুলে বলবো।

মেয়েরা যখন গর্ভবতী হয়, তখন কতো সমস্যা থাকে। সব সমস্যার কথা মা-বাবাকে খুলে বলা যায় না। স্বামীও নেই, কাকে বলি? এটাকে বিয়ে বলা হলো কেন বুঝি না। অল্প সময়ের জন্য স্বামীকে কাছে পাওয়া, তারপর আবার দূরে চলে যাওয়া- এর নাম কি বিয়ে? বাবার সংসারে এসে সময় কাটানোর নাম কি বিয়ে? আমি এত্তো বোঝা ছিলাম যে, আমাকে বিদায় করার জন্য স্বার্থপরেরা এক হয়ে এ কাজ করলেন?

বড় আব্বা! আমার জন্য কোনো দুঃখ করো না। আমি এখানে ভালোই আছি। তুমি শুধু নেই, নেই মা-বাবা। মাঝে মধ্যে স্বপ্নে এসে হাজির হলে বিরক্ত হবে না তো? তুমি তো একটুতেই নার্ভাস হয়ে যাও। আমি এলে নার্ভাস হয়ো না। তোমাকে দেখতেই শুধু আসবো। তুমিই আমাদের গর্ব, তুমি আমাদের সম্বল।
পৃথিবীর ডাক্তারগুলো যেন কেমন! আমার পেট ওপেন করে সেলাই না দিয়েই আরেক রোগী দেখতে ভোঁ-দৌড়। নার্স কি সেলাই করবেন, না আমার রক্তক্ষরণ বন্ধ করবেন? নার্স কি অক্সটার্জিন ব্যবহার করতে জানেন?

আমার রক্তে আমি যখন গোসল করছি, ওই সময় কে একজন এসে আমার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে চেষ্টা করছেন। তখন আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত। চোখ ভরে বাচ্চাকে দেখার সুযোগ হল না। কে একজন চাদর উল্টিয়ে টের পান, এখন আমার শরীরে আর রক্ত নেই। ওই সময় হাজার বোতল রক্ত দিলেও কিছুই হওয়ার নয়।

মৃত্যু যে এতো সুখের, তা আগে জানতাম না। আমি উড়ে যাচ্ছি মহাকাশে, কী আরাম, কী উপলব্ধি! এ আরাম ছেড়ে কি কেউ পৃথিবীর দিকে আসবে? আমি কিন্তু আসবো শুধু তোমাকে দেখতে।

আমার জন্য কেঁদো না, চোখের পানি মুছে ফেলো, না হলে আমার ক্ষতি হবে।

এখন আমি এক বাগান থেকে অন্য বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। পৃথিবীতে শুধু স্বর্গের বর্ণনা শুনেছি। ওই বর্ণনা সঠিক নয়, স্বর্গ তার চেয়েও বেশি সুন্দর।
এই সৌন্দর্য উপলব্ধি করা থেকে আমাকে বিরত করো না। তুমি কাঁদলে আমার তো সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। দোহাই বড় আব্বা, কেঁদো না, আমি ভালো আছি। এটাই ছিল আল্লাহ’র ইচ্ছা। এটাকে মেনে নাও। শান্ত হও। সবাই সুখে থাকো।

নুরুল ইসলাম বিএসসি: প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৭
৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×