somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ লিনাক্সপ্যাড্‌ H047 (৩য় পর্ব, সায়েন্স ফিকশান/ ফ্যান্টাসি)

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ গুগল

রাফিক চোখ খুলল। বুঝতে পারল এখনও রাত্রি পার হয় নাই। রফিক উঠে রুমের লাইটটা জ্বালাল। ওর যেন কেন খুব অস্থির লাগছে। খুব অস্থির। রুমের জানালাটা খুলল। “ হায় হায় এটা কি? ” সমস্ত আকাশে ক্ষণে ক্ষণে নানা রঙের পটকা ফুটছে। বিচিত্র রঙ আর বিচিত্র সব শব্দ। হাজার হাজার আলোর বিন্দু আকাশের এ মাথা থেকে ওই মাথায় ছুটে যাচ্ছে। হচ্ছেটা কি এইসব ? রফিক বাবা-মার রুমে গেল। কেউ যে নেই। কয়েকবার ডাকল , “ মা-বাবা , বাবা- মা” কোন সাড়া শব্দ নেই। দরজা খুলে উঠানে নামল। পুরা গ্রামটা হু হু করছে। কিন্তু রফিক কেন ভয় পাচ্ছে না ? ভয় লাগাটাতো স্বাভাবিক, না লাগাটাই তো অস্বাভাবিক। নিশ্চয় কোথাও কোন একটা গণ্ডগোল হচ্ছে। কিন্তু সেটা কি ! তার খালি অস্থিরই বা লাগছে কেন! সে চেষ্টা করল মনে করতে ঠিক ঘুমাবার আগের ঘটনা গুলা।
“ বাবা বা মার কিছু একটা হয়েছিল। আর কারা যেন এসেছিল ? “ রফিক আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগল।

“ম্যাও ম্যাও।” শব্দ শুনে পেছনে তাকাল। “ হুলো , হুলো “ চিৎকার করে হুলোকে কোলে তুলে আদর করতে লাগল। হুলোর গা অদ্ভুত সোনালী একটা আভা ছড়াচ্ছে। হুলোটা কোল থেকে লাফ দিয়ে নেমে গেল। দৌড়ে রফিকের রুমের ভেতর চলে গেল। এরপর একটানা ম্যাও ম্যাও ম্যাও। রফিক বুঝল ওটা কিছু বলতে চাইছে।
রফিক রুমে গিয়ে খাটের তলায় উঁকি দিল। হুলো চুপচাপ বসা। পাশে একটা লম্বা তলোয়ার ঝকঝক করছে।

“ জোসেফাত! “ আনন্দে সে লাফ উঠতে গিয়ে খাটের কোনায় মাথাটা একটু ঠুকে গেল। ( আনন্দ বা বিশ্বয় প্রকাশের ক্ষেত্রে জোসেফাত শব্দটা ব্যাবহার করা হয়েছে)। সে জানে এখন কি করতে হবে। কেউ তাকে বলছে ভেতর থেকে। সে শুনতে পাচ্ছেনা ঠিকই কিন্তু অনুভব করতে পারছে। ভাষা যেন লিখা বা বলার চাইতেও যেন বেশি অনুভবের বিষয়।

রফিক একহাতে তলোয়ার ও অন্য হাতে হুলোকে নিয়ে উঠানে আসল। সে আবারও বিস্ময়ে চিৎকার দিয়ে উঠল “ জো ও ও ও ও ও ও সে এ এ এ এ ফা আ আ আ আ আ ত্‌”

ছবিঃ গুগল

চারিদিকে একটা চোখ ধাঁধানো আলো জ্বলে উঠল। কিছুক্ষণ পরে সে আবিষ্কার করল, তার সারা শরীরে বিচিত্র একধরনের ধাতুর তৈরী বর্ম। প্রচণ্ড শক্ত কিন্তু তার পড়ে মোটাও ভারী লাগছে না বা শারীরিক অসুবিধা লাগছেনা। তার সামনে বিশাল আকৃতির হুলো। হুলোর পিঠ ও পিছের দুই পায়ের পাশে লম্বা লম্বা দুইজোড়া মেটালিক পাখা। ওর মাংসের শরীরের সাথেই লাগান পাখা গুলা। রফিকের ডান হাতে সেই তলোয়ার। কিছুক্ষণ পরপরই সেটাটে বিদ্যুৎ খেলছে। সে জানে তার এখন প্রচন্ড শক্তি , তাকে যেতে হবে গ্রহ যুদ্ধে। Inter Galactic War । সে হুলোর পিঠে চড়ে বসে। মাথার শক্ত হেলমেটটার ভেতর থেকে ঘড়্‌ ঘড়্‌ শব্দ আসছে।

ঘড়্‌র র র র র র র। ঘড়্‌ র র র র র র র র।

“ রাফ্‌ ৩১৩ তুমি কি শুনতে পাচ্ছ ? আমি কমান্ডার হাউল বলছি। আমি হাল্ক X990Z এর কপট্রনে কোঅরডিনেট পাঠিয়ে দিয়েছি। তুমি তাড়াতাড়া এনিমি মাদার সীপের ২২৭ তম স্টেজে অ্যাটাক কর। আমি সময় মত তোমার সাথে যোগাযোগ করব। গুড লাক্‌। কমিউনিকেশান টারমিনেটেড“
রফিক বুজতে পারল তার নাম এখন রাফ্‌ ৩১৩ আর সে বসে আছে হাল্ক X990Z এর পিঠে। কিন্তু কীভাবে বুঝল সেটা আজানা।


রাফ্‌ ৩১৩ পৃথিবী ছাড়িয়ে মহাকাশে চলে এসেছে। এনিমি মাদার শিপটা খুব একটা দূরে নেই। মাদার সীপের ২২৭ নাম্বার স্টেজকে সর্বশক্তি দিয়ে হিট করতে হবে। মাদার সিপটাকে কোন ভাবেই পৃথিবীতে নামতে দেয়া যাবে না। পৃথিবী তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে। সে তার সোর্ডটার লাল বাটনটায় চাপ দিল। মহাজগতের সমস্ত বিদ্যুৎ তার ওপর এসে পড়তে লাগল আর সে শক্তি সঞ্চয় করতে লাগল। প্রচণ্ড থেকে প্রচণ্ডতর শক্তি। সে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
“ আচ্ছা এই সব হচ্ছেটা কি ?” রাফের মনে বারবার এই প্রশ্নটা আসতে থাকল।

মাদার সীপের খুব কাছে রাফ্‌। সে এখন ২২৭ নম্বার স্টেজকে প্রচণ্ড শক্তিতে আঘাত করবে। আর মাত্র কয়েকটা মুহূর্ত। মাত্র কয়েক মুহুর্ত। রাফ মাথাসহ হেলমেট নিচু করল আর বাম হাত দিয়ে হাল্ককে একটু আদর করল। এই তো এখনই …………………………………...।

বেশ কিছুক্ষণ পার হয়ে গেছে। রাফ্‌ বা হাল্ক কেউই একটুও নড়ছে না । আনিমি মাডার সিপটাও তাদের মাথার ওপর স্থির। রাফ্‌ নড়াচড়ার চেষ্টা করল। মোটেও পারল না। যতদূর পারল আড়চোখ দিয়ে তাকাল। হাজার হাজার এনিমি সীপ , তার মত হাজার হাজার যোদ্ধা , অদ্ভুত রঙের সব গ্রহ- নক্ষত্র। কিন্তু সব স্থির হয়ে আছে। নট- নড়ন নট-চড়ন।

“ এই গুলো হচ্ছেটা কি ?” রাফের মানে প্রশ্ন। সে কোনভাবেই নড়তে পারছে না।” এই গুলোর কোনই মানে হায় না !!!”
(চলবে)

ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:০২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×