somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ এ .বি.(A.B.) (সায়েন্স ফিকশান )

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃগুগল
উৎসর্গঃ শ্রদ্ধেয় প্রিয় আইউব বাচ্চু (মরহুম )

LINA-177.F. হ্যাঁ লিনা । আর ১৭৭ হল ওর মডেল । F দিয়ে ফিমেল বুঝাচ্ছে। সাহারা মরুভূমির বালুর উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। সাথে আরও ৩৭ জন ।তাদের সবাই আস্ট্রোফিজিসিস্ট বা জোতিপদার্থবিদ। তাদের মাঝে ৩টি রোবট রয়েছে। লিনা আর্ধ মানবী আর বাকিটা রোবট, মুখের কিছুটা লিবিয়ান মুসলিম রীতিতে ঢাকা। ওর মস্তিষ্কের কিছুটা অংশ নিয়ন্ত্রণ করে কম্পিটার সিস্টেম জিটা- ZZXTC+। দুই বছর আগে খুব খারাপ একটা গাড়ী দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। ওকে বাঁচানোর সম্ভবনা বলতে গেলে ডাক্তারদের ছিলই না যদি না স্পারসো রোবট ল্যাবের গবেষক আহমেদ ফরিদ পার্সিয়াল মেটালিক বডি ও অপারেটিং সিস্টেম ZZX ওর মধ্যে ইমপ্ল্যান্ট করে না দিতেন। কাজটা অনেক ঝুঁকির ছিল। পুরাপুরি সফল না হলেও লিনার ব্রেনটাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছিল।ওর মস্তিষ্কের সাথে রোবটিক অংশের আর্টিফিসিয়াল নার্ভ গুলো কানেক্ট করা যাচ্ছিল না সরাসরি। তাই ড. ফরিদকে ZZX এর সাথে বাড়তি বায়ো-ইলেকট্রিক চিপ TC+ লাগাতে হয়েছিল। এর পরও আর্টিফিসিয়াল নার্ভগুলোকে মস্তিষ্ক পুরাপুরি কন্ট্রোল করতে পারছিল না। শেষমেশ লিনা বেঁচে উঠেছিল ঠিকই কিন্তু শরীরের সব নার্ভ একসাথে ঐকতানে না থাকায় চলাফেরায় খুব সমস্যা হচ্ছিল। তবুও ও মানিয়ে নিয়েছিল সুন্দর ভাবেই।

ওদের গন্তব্য মাগরেবের অ্যাটলাস মাউন্টেইনের চূড়ায় অবস্থিত বাইতুল মাগরেব আবজারভেটরি। পশ্চিমারা অবশ্য এটাকে চেনে দি গ্রেইট ম্যাগ ল্যাব হিসেবে। মাহাকাশ পর্যবেক্ষণ ছাড়াও রয়েছে বিশাল অত্যাধুনিক গবেষনাগার। পাহাড় কেটে কেটেই ওর মাঝে বানানো হয়েছে ল্যাব। এই ল্যাবেই প্রথমবারের মত কোয়ান্টাম ব্লাকহোল তৈরী করা সম্ভব হয়েছে। সেটার পর পরই সারা পৃথিবীতে ও মঙ্গলের বিজ্ঞানীদের কাছে খুব গুরূতবপূর্ণ হয়ে উঠে এই ল্যাব । এই আবিষ্কারের পর পরই মঙ্গলের অলিম্পাস-মনস্‌ সুপারস্টেটের অ্যামাজন স্টেটে কোয়ান্টাম গ্রাভিটেশানাল কন্ট্রোল ল্যাব বানান হয়। প্রচীন কেচ্ছা-কাহিনীতে স্পেস শীপ দিয়ে স্পেসটাইম ফুটা করে দুনিয়ার এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ভ্রমণের যে সব রসালো কাহিনী বর্নিত হয়েছে সেই টেকনোলজি এখন মানব জাতির খুব কাছে চলে এসেছে , অন্তত থিউরেটিক্যালি।

ছবিঃগুগল

ওরা যাচ্ছে মরক্কের পাশের সাহারার উপর দিয়ে। নাইট জার্নি ,তাই আকাশে বহু তারা চোখে পড়ছে। কোনোটা জ্বলজ্বল করছে , কোনটা স্থির উজ্জলতা নিয়ে চুপচাপ আকশের ময়দানে যেন জিরাচ্ছে। সাহারার ওপরে আজকে চাঁদ নেই। তবে ওদের নাইট ভিশন হেলমেট থাকায় কোনই সমস্যা হচ্ছিল না। যদিও গ্রুপ লিডার টনি ইচ্ছা করেই হেলমেট পরছে না, হেলমেটে এয়ার কুলিং ব্যাবস্থা থাকা সত্বেও। হাল্কা আলোর একটা টর্চ দিয়েই উনিই এগুচ্ছেন। ওদের সাথে যেই ৩টা অত্যাধুনিক রোবট আছে তাদের ভয়ে মরু দস্যু বা হিংস্র অর্গানিক বা মেটালিক জন্তু ধারের কাছে ঘেঁষার সাহস করবে না। ১০কি.মি. ব্যাসার্ধের একটা বৃত্তাকার এলাকাকে জালিয়ে-পুরিয়ে দেবার জন্য দুইটা রোবটই যথেষ্ঠ। তার ওপর বাড়তি আরো একটা রয়েছে। ২৯৯৯ সালের সাহারাকে এখন পুরাদস্তুর মরুভূমি বলা যায় না । সেটার ৬৭% সাভানায়(savanna) পরিনত হয়েছে। প্রতি ৪১,০০০ বছর পরপর সাহারা মরুভূমি থেকে সাভানায় পরিণত হয়। মূলত দক্ষিন-আফ্রিকার মৌসুমী বায়ু প্রাবাহের বিশেষ পরিবর্তনের কারনে সেটা ঘটে থাকে। ওরা আসলে একটা অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে যাত্রাটা শুরু করেছে। একটা রেডিও সিগন্যালেই সেকেন্ডের মাঝেই সুপার জেট ওদের জন্য দি ম্যাগ থেকে পাঠান হবে। কিন্তু সেটার দরকার হবে না কারণ তারা যাত্রাটা খুব উপভোগ করছে।

টনির বয়স ৭০। তিনি উত্তর আমেরিকার কলোরাডোর একটা ইউনিভার্সিটির অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের প্রফেসার। লিনার প্রতি ওর একটা গভীর আবেগ রয়েছে। মেয়েটার বয়স ৩৩ সেইসাথে লিবিয়ান । অ্যানি বেঁচে থাকলে এখন বয়স লিনার মতই হত। অ্যানি টনির একমাত্র মেয়ে ছিল। মেয়েটাকে সে অনেক বেপরোয়া আদর করত। অ্যানি ছিল পেশায় মাউন্টেইন বায়োলজিস্ট। সেই সাথে মাউন্টেন হাইকিং ছিল তার নেশা । সেইটাই ওর কাল হয়েছিল। রকি মাউন্টেন বেয়ে উঠার সময় মাত্র ৩০ ফিট উচ্চতা থেকে ও পড়ে গিয়ে মাথায় দারুন আঘাত পায়। মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণ শুরুর একপর্যায়ে ওর আর বেঁচে উঠা সম্ভব হয়ে উঠে নি।

টনি আর ওর সাথে একটা রোবট হাঁটছে সবার পিছে পিছে । আরেকটা রোবট সবার সামনে। তৃতীয়টা দলের মাঝ দিয়ে চলছে। টনি হাঁটার গতি একটু বাড়িয়ে লিনার সাথে এসে যোগ দিল । " মাই চাইল্ড ইজ্‌ এভরিথিং অল রাইট ? " টনি জিজ্ঞাস করল।
" ইয়েস বস ।" লিনা বলল।
" তোমাকে খুব চার্মিং লাগছে ? "
" ইয়েস। ভেরি ইয়েস।"
"কোন কারণ আছে নাকি ?"
" অবশ্যই। টনি আপনিতো জানেন আমার ব্রেইন আমার মেটালিক অংশের আর্টিফিসিয়াল নার্ভগুলার সাথে ঠিকঠাক খাপ খাওয়াতে পারছিল না, তাই না!"
" হুম্‌।"
" আমি তো রেগুলার এক্সারসাইজ করতাম। নিউরো-মেডিসিনগুলাও সুন্দর টাইম করে খেতাম। "
" হ্যাঁ, হ্যাঁ আমি জানি। তুমি রেগুলার মেডিটেশানও কর , প্রেয়ার আই মিন প্রর্থনাও কর। সেই সাথে এক মাস পর পর তোমার রোবটিক পার্টের সুপার কন্ডাক্টিং পাওয়ার ফ্লুইড পাল্টাও । আর মেটালের মসৃণতার জন্যও অ্যালয়(alloy) ব্যাবহার কর।"
"আপনি তো একদম গুড বয়। সবমনে রাখেন।"

ছবিঃগুগল

"অ্যানি থাকলেও কি হত ! " টনি মনে মনে ভাবে আর রাতের আকশের দিকে আবার তাকায়। একটু পরপরই কিছু কিছু আলোর বিন্দু রাতের আকাশের এমাথা থেকে ওমাথায় চলে যাচ্ছে। ওগুলা কর্মক্ষম স্যাটালাইট হতে পারে আবার জাঙ্কও হতে পারে। ২৯৯৯ সালের পৃথিবীর আকাশ হাজার হাজার স্যাটালাইটে ভরা। তাদের একটা বড় অংশের আয়ুকাল শেষ হয়ে যাওয়াতে সেগুলো মহাকাশের আর্বজনায় পরিণত হয়েছে। সাহারা থেকে সেই সব আর্বজনা খালি চোখে দেখতে খুব একটা মন্দ লাগে না। লিনার হেলমেেটে হঠাৎ টনির দৃষ্টি পড়ল। হেলমেটের ডান পাশে হাল্কা সবুজ আলো জ্বলছে। টনি বুঝল ও গান শুনছে।

"বস্‌ , আপনাকে একটা খুব মজার জিনিস বলি। আমি কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই আশা করি হিউম্যান-আইডি কার্ড পেয়ে যাব।" লিনা হেলমেটটা খুলে বলল।
" ওয়াট ? কিন্তু কি ভাবে! তোমার নার্ভগুলোর ইফিসিয়েন্সি তো ৭০% এর নিচে। তুমি কি নতুন কোন আপারেশানের দিকে যাচ্ছ?”
"মোটেও না। ইফিসেয়েন্সি এখন ৮২% ।" লিনা হাসতে হাসতে বলল।
"বল কি ? কীভাবে ?"
"আমি হাসপাতাল থেকে রিলিজের আগের দিন ড. ফরিদ আমাকে একটা সাজেশান দিয়েছিল। আমাকে বলেছিল প্রতি দিন একটু করে মিউজিক শুনতে। যেটাই ভাল লাগে শুনতে। "
" হ্যাঁ , বুঝতে পারছি উনি মিউজিক থেরাপির কথা বলেছেন। ডিপ্রেশানের রোগীদের ক্ষেত্রে সেটা অনেক সময় কাজে দেয়। তোমার কি ডিপ্রাশানের সমস্যা হয়েছিল বা এখন হচ্ছে ?"
" না সেই রকম কিছু নয়। আপনি তো জানেন আমিই ফাস্ট হিউম্যান যে অর্ধেক রোবটিক বডি নিয়ে বেঁচে আছে ।"
" হুম্‌। ড. ফরিদ খালি তোমার ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে।"
" যেহেতু এর আগে কেউ সারভাইব করে নাই, কাজেই আমার ভবিষ্যত অবস্থার অনেক বিষয়ই গবেষকদের আজানা। তারা সর্বোচ্চ থিওরেটিক্যালি প্রেডিক্ট মানে ভবিষ্যৎ বানী করতে পারবে। "
" হুম রাইট।"
" ড. ফরিদের একটা হাইপোথিসিস ছিল। সেটা হল গিয়ে মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে নার্ভের হিলিং ক্যাপাসিটি বেড়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।"
" দ্যাটস্‌ ইন্টারেস্টিং।"
" রাইট। তাই আমি ইউ ভিশান টিউব সার্চ করে করে অনেক জাত-বেজাতের মিউজিক বা গান শুনার অভ্যাস করি। আর সেটা করি ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে। ইউরোপ , আমেরিকার সব দামী দামী শিল্পীর মিউজিক ট্রাই করেছি। আধুনিক বা প্রাচীন কোনটাই বাদ দেই নাই। মঙ্গলের মিউজিক গুলায় ট্রাই করেছি কিন্তু ওদের সিগন্যালে ভিশন টিউবে অনেক সময় ধরে বাফারিং হয়। বিরক্ত হয়ে সেইগুলি বাদ দিয়েছি। আমি যেহেতু লিবিয়ান তাই আরবের কোন মিউজিক বা সঙ্‌ তো বাদ যায়ই নাই । আচ্ছা আপনি কি বাংলা বা বেঙ্গল ল্যাগুয়েজের নাম শুনেছেন? ”
“ বেঙ্গলি ? দাড়াও দাড়াও। …………...। ইয়েস ইয়েস ইস্ট-পাকিস্তানের বেঙ্গলিরাই তো বিশ্বে প্রথম যারা তাদের ভাষার জন্য ফাইট করেছে ১৯৫০ বা ৬০ এর দিকে। “
“ ইয়েস। ইউ আর আবসুলুটলি রাইট। তবে ইন্ডিয়ান আসামেও সে রকম একটা ঘটনা ঘটেছিল তবে সেটা রেকগ্‌নিশান তেমন পায় নাই।”
“ কিন্তু সেগুলার সাথে তোমার নার্ভ হিলিং-এর সম্পর্ক কোথায়? “
“ সেটাই তো বলছি।”
“ আমি ইউ ভিশান টিউবে বাংলার বিভিন্ন মিউজিক সার্চের সময় একজন চমৎকার মিউজিসিয়ানের হদিস পাই। তার নাম আইউব বাচ্চু। সংক্ষেপে এ.বি. ।প্রথমে তার গান ও গানের ব্যাকগ্রাউন্ডের মিউজিক শুনে খুব ভাল লাগল। আমার হেলমেটে অ্যারাবিক ট্রান্সলেশানের অপশান্‌ চালু করে দেই। ওনার কিছু গান আনন্দের , কিছু দুঃখের , কিছু ভালবাসার। গানের লিরিক্স আর মিনিং গুলা শুনলে বুঝা যায় যে উনি প্রচণ্ড আবেগ নিয়ে সেগুলা রচনা করেছিলেন। “


A.B. (1962-18 oct 2018) ছবিঃগুগল


“ সেটা তো অনেকেই করেছেন। তো ? “
“ হুম্‌। কিন্তু উনার গুলা আমার আর্টিফিসিয়াল ও বায়ো নার্ভগুলার জাংশানগুলাকে প্রচন্ড এক্সাইটেড করে।”
“ ওয়াট? মানে তোমার ব্রেইন তোমার রোবটিক আংশের উপর কন্ট্রল বাড়াচ্ছে তাই না ?”
“ একদম তাই । “
“ কন্ট্রলের পরিমাণ কত বাড়ানো যাবে বলে তুমি মনে কর?”
“ আপনি নিশ্চয় জানেন যেহেতু এটা কার্নো-সিস্টেম না তাই ১০০% কখনই সম্ভব না। কিন্তু এখানে যেহেতু সুপার- কন্ডাক্টিং ফ্লুইড ব্যাবহার করা হয়েছে থিউরেটিক্যালি ইফিসিয়েন্সি , মানে দক্ষতা ৯৭% বাড়ানো সম্ভব।”
“ তোমারটা তো বললে ৮২% । তা তুমি তোমার আগের হিউম্যান আইডিটা কবে পাচ্ছ? “
“ আলরেডি সেটা প্রসেসিং-এ আছে ।আমি এক সপ্তাহ আগেই এপ্লাই করেছি। আপনি তো জানেন ৭৫% এর উপরেই খালি হিউম্যান আইডি কার্ড পাওয়া যায়।“
“ অবশ্য কলোরাডোতে সেটা ৭২ % হলেই চলে। যাই হোক তোমার ব্যাপারটা শুনে দারুন লাগছে। তাহলে তুমি কি বলতে চাচ্ছ যে এ.বি -এর লিরিক্স গুলা তোমার জন্য মিরাক্যাল?”
“ মিরাক্যাল কি না , সেটা তো বলতে পারব না। তবে কাজে দিচ্ছে।”

ছবিঃ গুগল

ডক্টর ফরিদ কি জানে? “
“ ইয়েস। উনি এখন ওনার হিউম্যান সাইবারনেটিক্স ল্যাবে কোয়ান্টাম কম্পিউটারে এ.বি -এর মিউজিক , ভয়েস , ভোকাল ইমোশন সহ আরো অনেক কিছু আন্যালাইজ করছেন।”
“ওনি কিছু পেলেন ? “
“উনি ধারণা করছেন ভোকাল ইমশনের(emotion) সাথে বি.এ.আই.সি.এস(B.A.I.C.S) -এর হারমনি বা ঐকতানের খুব ডিপ্‌ রিলেশান আছে।”
“ বটে. আচ্ছা বি.এ.আই.কে.এস - টা কি ? “
“ বায়ো আর্টিফিসিয়াল কমপ্যাক্ট(compact) সিস্টেম। এটাকে অনেকে বেইকস্‌ নামেও বলে।”
“বটে। আচ্ছা আমাকে একটা গান পাঠাও তো। শুনে দেখি।”
“o.k. পাঠাচ্ছি। আচ্ছা কি টাইপের পাঠাব মানে ……...।”
“ইমোশোনাল টাইপের। “
“ নস্টালজিক হতে চাচ্ছেন ?”
“ হা হা হা। সেই বয়স আছে নাকি? “
টনি মনোযোগ দিয়ে গানটা শুনছে। কিছুক্ষণ পরে হেলমেটে ট্রান্সলেশানের অপশানটা চালু করে দিল।

“সুখেরই পৃথিবী, সুখেরই অভিনয়
যত আড়াল রাখো, আসলে কেউ সুখী নয়
নিজ ভুবনে চির দুখী, আসলে কেউ সুখী নয়

তোমার দরজার ওপাশে একজন
ভাবছ সে সুখী মিথ্যে আয়োজন
নিজ ভুবনে চির দুখী, আসলে কেউ সুখী নয়

আশা দুরাশায় দুলছে কেনো মন
সুখের চাদরে জড়ানো প্রিয়জন
নিজ ভুবনে চির দুখী, আসলে কেউ সুখী নয়”

ছবিঃ গুগল

টনি অনেকটা চমকে উঠল। এ.বি তো মনে হচ্ছে তার কথাই বলছে। মেয়েটা মারা যাবার পর টনির সহধর্মীনি জিসা তাতিয়ানা প্রচন্ড শকে পুরাপুরি মেন্টালি ইম্বেলেন্সড্‌ হয়ে পড়ে।
“ তাতিয়ানা কেমন আছে মেন্টাল হসপিটালে! অনেক দেখতে ইচ্ছা করে। মেয়েটা তো ছিল পুরাই মায়ের কপি।” -বিড়বিড় করে বলল টনি।

তীব্র দুঃখে যেন টনির ভেতরটা হাহাকার করে উঠল। সবাই টনিকে অনেক এনার্জিটিক বলে। কিন্তু সেই খালি জানে তার ভেতরটা কীভাবে ভেঙ্গেচুড়ে যাচ্ছে। ভাল থাকার অভিনয় করতে আর ভাল লাগে না। টনির চোখে পানি চলে আসছিল। লিনা যাতে ব্যাপারটা না বুঝে তাই একটু পিছিয়ে পড়ে হেলমেট খুলে ফেলল।

“ স্যার আপনি ঠিক আছেন।” সবার পিছে থাকা রোবটা কাছে আসে জানতে চাইল।
“ হ্যাঁ আমি ঠিক আছি। পুরাপুরি একদম। “

টনি আবারও গতি বাড়িয়ে লিনার কাছাকাছি চলে আসে। এই অর্ধ-রোবট মানবীর মাঝে যেন অ্যানির একটা ক্ষীণ প্রতিচ্ছায় টনি দেখতে পায় ।

“ আচ্ছা লিনা নাইট সম্পর্কিত কোন গান আছে ?”
“ আপনি কি এ.বির গানের কথা বলছেন? “ লিনা জিজ্ঞাস করল।
“ হুম্‌।”
“ দাঁড়ান আমি পাঠাচ্ছি।”
গানটা কিছুক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনল। এরপর ট্রান্সলেটরটা অন্‌ “

“এখন অনেক রাত
খোলা আকাশের নীচে
জীবনের অনেক আয়োজন
আমায় ডেকেছে
তাই আমি বসে আছি
দরজার ওপাশে............ দরজার ওপাশে.........”


রাতের সাহারার ওপর দিয়ে একদল অভিযাত্রী হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে। তার প্রতেকেই পৃথিবীর মানবজাতির প্রতিনিধি যারা এখন মঙ্গলে সদর্পে রাজত্ব করে চলেছে। যারা এখনও আবেগ অনুভূতি দ্বারা তাড়িত হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের রাজত্বে বহু বহুদূরে এগিয়ে গেলেও প্রতিনিয়ত নিজ জগতে মানবতার অর্থকে নতুন নতুন রঙে খুঁজে ফিরে।


ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:০৬
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×