২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় আর এস এস এবং শিবসেনার পান্ডারা ইশরাত জাহান নামে এক নারীর পেট কেটে তার গর্ভস্থ সন্তানকে পুড়িয়ে মেরে হিংস্র উল্লাস প্রকাশ করে। এই পাশবিক ঘটনায় সেদিন বিশ্ববিবেক শিউরে ওঠে। নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায় সর্বত্র। মানবতার এই লাঞ্চনা কোন শুভবুদ্ধির মানুষ সেদিন মেনে নেয় নি। আমাদের দেশের কতিপয় বুদ্ধিজীবীদেরও সেই বর্বরতার প্রতিবাদে ফেটে পড়তে দেখেছিলাম।
২০১৫ সালে এসে দেখা গেল, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা লাথি মেরে এক সংখ্যালঘু নারীর গর্ভস্থ সন্তানকে হত্যা করেছে। বুদ্ধিজীবীরা বলেন আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক দল।আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দুরা রামরাজত্বে বাস করে।তো শাসক শ্রেণী ও চাটার দল ঘোষিত এবং কথিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দেশে আমরা দেখতে পেলাম মায়ের গর্ভে জন্মের অপেক্ষায় থাকা সংখ্যালঘুর ভ্রুণটিও আর নিরাপদ নয়।সংখ্যালঘু নির্যাতনের বেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি,জামাত সবাই এক শিবিরের সৈনিক। ফেনীর ঘটনার পর বোঝা গেল শিবসেনার পান্ডাদের সাথে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের পার্থক্য কেবল হিংস্রতা আর পাশবিকতা প্রদর্শনের মাত্রায়।
ফেনীর ঘটনায় এই দেশে তেমন কোন আলোড়ন তৈরি হবার সম্ভাবনা দেখছি না। মূর্তি ভাঙা হয়, মন্দির পোড়ানো হয়, সম্পত্তি দখল করা হয়, দেশছাড়া করা হয়, এবার জন্মের আগেই বিনাশ করে ফেলা হচ্ছে। এইসব কী আর এমন ঘটনা! এসব তো স্বাভাবিক ঘটনা! সরকার বেকায়দায় পড়বে সুতরাং দলদাস বুদ্ধিজীবীরা একটা তুচ্ছ বিবৃতি পর্যন্ত দিতে ইচ্ছুক নন। পুরন্দর ভাটের কবিতা মনে পড়ে যায়...
"কি নির্জীব কি নির্জীব
নির্ঘাৎ ওটি বুদ্ধিজীব"।