somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুয়েট তার কৃতি ছাত্রদের কি প্রাপ্য সম্মানটুকু দিয়েছে??আসুন দেখি

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ সহব্লগার মো: সালাউদ্দিন ফয়সালের ফজলুর রহমান খান - সময়ের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া এক কৃতি বাঙ্গালী পোস্টটি পড়ার পর বিষয়টি হঠাৎ খেয়াল করলাম। বাংলাদেশে এমনিতেই জ্ঞানীগুণী মানুষের অভাব। তারওপর কালেভদ্রে যে কয়জন জন্মান তাদের সাথেও আমরা এমন ব্যবহার করি যাতে সম্মান নিয়ে বাচার জন্য তারা দেশ ছেড়ে পালান। এরপর তাদের মৃত্যুর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শোক বাণী দেন আর তাদের মরণোত্তর একটা একুশে পদক বা অন্য একটা পদক দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করা হয়।এটা অনেক পুরনো ব্যাপার।তবে দুঃখ লাগল বুয়েটও এই ট্র্যাডিশন থেকে বের হতে পারেনি দেখে। বলতেই পারেন বুয়েট যেহেতু বাংলাদেশে, সেহেতু কি করে বুয়েট এই রীতির বাইরে যাবে??? উত্তরে বলতেই হবে বুয়েট বিভিন্ন সময়ে দেখিয়েছে গড্ডালিকা প্রবাহে তারা ভেসে যায় না।উদাহরন হিসেবে বলতে পারি বুয়েটের ভার্তি পরীক্ষা বা টার্ম পরীক্ষার কথা।বুয়েটের প্রশ্নপত্র ফাস হয়েছে বা কোন শিক্ষক কোন ছাত্রকে অসদুপায় অবলম্বনে সহায়তা করেছেন- এমনটাঙ কখনো বুয়েটে ঘটেনি, আশা রাখি ভবিষ্যতেও ইনশআল্লাহ ঘটবে না।

প্রসঙ্গে ফিরে আসি।তবে তার আগে একটা ঘটনা বলে নেই।বুয়েটে প্রথম ক্লাসের দিন আমাদের মাননীয় ভিসি স্যারের পক্ষ থেকে নবীন বরন দেয়া হয় অডিটোরিয়ামে। ভিসি স্যার যখন ভাষন দিচ্ছিলেন তখন হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। আমরা সবাই ব্যাঙ্গাত্মকভাবে চেচিয়ে উঠি। একটু পর বিদ্যুৎ ফিরে এলে ভিসি স্যার বললেন, আমরা ইঞ্জিনিয়াররা নিজেরাই নিজেদের কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট করিনা।ফলে সমাজে ডাক্তাররা ব্যাপক সম্মানিত হলেও সাধারন মানুষের কাছে ইঞ্জিনিয়াররা সম্মান কম পায়। ব্যাখা করতে গিয়ে তিনি বললেন সামান্য কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় আমরা সবাই দুয়োধ্বনি দিলাম, কিন্তু একবারও আমরা ভেবে দেখলাম না আমাদের ২৪ ঘন্টা কারেন্ট দেয়ার জন্য তারা কতটাইনা পরিশ্রম করছেন। অথচ আমরাই হবু ইঞ্জিনিয়ার।

এত কথা বলার কারন একটাই আমরা যোগ্য লোককে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেই না। আজকে ফয়সাল সাহেবের পোস্টটা পড়তে গিয়ে তাই আরেকবার অনুভব করলাম। ফজলুর রহমান খান বিশ্বখ্যাত একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার- স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর আইনস্টাইন বলা হয় এই বাঙ্গালীকে।আকাশচুম্বী ভবনের মূলতন্ত্র টুবুলার ডিজাইনের ফাদারও বলা হয় তাকে।১৯৬০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আকাশচুম্বী সুউচ্চ ভবনগুলো তার টিউব স্ট্রাকচারাল সিস্টেমকে অনুসরন করেই বানানো।অথচ তার নামে বুয়েটের কোন হলের নামকরন করাই হয় নাই!তার নামে বুয়েটে কোন বৃত্তি দেয় হয় বলেও আমার জানা নাই।


অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার।এম্নিকেরে আরো অনেক বিশ্বকাপানো বুয়েটিয়ানের কথা বলা যেতে পারে। যেমন ডক্টর ফজলে হোসেন- যাকে বলা হয় ফ্লুইড ম্যাকানিক্সে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যাক্তি বা রাগিব হাসান- বাংলা উইকিপিডিয়ার জনক।তাদের জন্য বুয়েট স্পেশাল কিছু করেছে বলে আমার জানা নাই।

যা করা যেতে পারেঃ আমার প্রস্তাবনাঃ

** প্রথম আইডিয়া অবশ্যই হলের নামকরন করা। বুয়েটের ম্যাক্সিমাম ছেলেপেলে হলে থাকে, সুতরাং হলের নামকরন তাদের নামে হলে ছেলেপেলেরা তাদের নাম জানবে, তাদের চিনবে।রশীদ বা তিতুমীর হলে ঢোকার পথেই যার নামে হলের নামকরন করা হয়েছে তার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরলে ছেলেরা তাদের কীর্তি সম্পর্কেও জানতে পারবে।তবে দুঃখজনক হলেও সত্য একমাত্র ছাত্রী হল ছাড়া বাকি ৭ টা হলেরই নামকরন বহু আগেই হয়ে গেছে। তাই এই কৃতি ব্যাক্তিদের কারো নামে ছাত্রীহলের নামকরন করা যেতে পারে। তবে বহুকাল থেকেই দাবী চলে আসছে ছাত্রী হলের নামকরন সাবেকুন নাহার সনির নামে হতে হবে। এই দাবীর প্রতি আমারো পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।সেক্ষেত্রে বিখ্যাত কারো নামে নামকরন সম্ভব না।

তবে আশার কথা হল বুয়েটে প্রতিবছর সীট বাড়ছে। শুরুতে যে বুয়েটের সীট সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪০ তা এখন বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৬৫ তে এবং সামনে গ্লাস এন্ড সিরামিক্স সহ আরো কিছু ডিপার্টম্যান্ট খোলা হবে। ফলে প্রতি ব্যাচে ছাত্র সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে যাবে।বুয়েটে বর্তমানে যে কয়টা হল রয়েছে তাতে এতগুলো ছাত্রকে একোমোডেট করা সম্ভব হবে না। ফলে নতুন হল তৈরী করতেই হবে। সেক্ষেত্রে এসব হলের নাম এনাদের নামে রাখা যেতেই পারে।

** আরেকটা কাজ করা যেতে পারে আর তা হল আমাদের সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামের কোন নাম নাই। এই অডিটোরিয়ামের নামও কোন বিখ্যাত বুয়েটিয়ানের নামে রাখা যেতে পারে।

**কৃতি বুয়েটিয়ান খুজলে অনেকই পাওয়া যাবে। তাই প্রত্যেক হলের প্রবেশপথে একটা করে মনুমেন্ট তৈরী করে তাতে ওই হলের কৃতিছাত্রদের নামের একটা লিস্ট তৈরী করা যেতে পারে।

** বুয়েটের ওয়েবসাইটেও তাদের কৃতিছাত্রদের নিয়ে একটা সেকশান তৈরী করা যেতে পারে।

**আরেকটা অপশান হতে পারে এইসব কৃতি ব্যাক্তিদের নামে বিভিন্ন বৃত্তি চালু করা।

** তবে সবচেয়ে ইফেক্টিভ মনে হয় বুয়েটের প্রথম দিন ভিসি স্যারের নবীন বরনের সময় একটা ভিডিও ক্লিপ তৈরী করে এসব কৃতি ব্যাক্তিদের সাথে নবীন্দের পরিচয় করিয়ে দেয়া আর তাদের পথে চলার জন্য নবীনদের উদ্বুদ্ধ করা।

** এছাড়া বিভিন্ন ডিপার্টম্যান্ট যেসব ডে(day)র আয়োজন করে থাকে তাতেও নিজ নিজ ডিপার্টম্যান্টের কৃতি ছাত্রদের নিয়ে ডকুমেন্টারী তৈরী করা যেতে পারে।

আজকে এতটুকুই। মাথায় আপাতত আর কোন প্রস্তাব আস্তেছে না। আপ্নারা কমেন্টে কোন প্রস্তাব থাকলে উল্লেখ করতে পারেন।

ফজলুর রহমান খান - সময়ের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া এক কৃতি বাঙ্গালী
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৭
৫৩টি মন্তব্য ৫১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×