মেয়েটির কোমর যখন চলন্ত বাসে লোকটা বারবার স্পর্শ করছিল তখন আমি পেছনের সিটের ছিলাম।কিন্তু মেয়েটার অসহায় মুখটা আমার চোখে ভাসলেও আমি কিছু বলিনি।
মেয়েটা যখন বাস থেকে ভিড় ঠেলে নামলো তখন কন্ডাকটারের মেয়েটাকে আস্তে করে গুতো দেওয়াটাও আমার চোখ এড়ায়নি।কিন্তু আমি কিছু বলিনি।
মেয়েটা যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো তখন বখাটেদের অশালীন মন্তব্য আমি নিজ কানে শুনেছি।কিন্তু মেয়েটার পেছনে থাকার পরও আমি প্রতিবাদ করিনি।
মেয়েটা প্যাড কিনতে যাওয়ার পর দোকানের অন্য সব কাস্টমার যখন মুখ চেপে হাসছিল তখন আমি জ্বরের ওষুধ কিনতে ঠিক মেয়েটার পাশেই দাড়িয়েছিলাম।কিন্তু মেয়েটার অস্বস্থিভরা মুখটা দেখেও আমি তাদের তখন কিছু বলিনি।
মোড়ের চায়ের দোকানে মেয়েটার প্রতি অশালীন মন্তব্য করা ছেলেগুলার পাশে আমিও বসে চা খাচ্ছিলাম,কিন্তু আমি তাদের কিছু বলিনি।
আমার পাশে বসা ভদ্রলোক সামনের সিটে বসা মেয়েটার কাধে বার বার হাত রাখছিলেন কিন্তু আমি দেখার পরও কিছু বলিনি।
বাসে মেয়েটার পেছনে দাঁড়ানো ছেলেটার মেয়েটার সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে বারবার ধাক্কা খাওয়াটা আমি পাশের সিটে বসেই দেখছিলাম।কিন্তু আমি কিছু বলিনি।
আপনারা কি ভাবছেন?এত সব ঘটনা দেখেও আমি চুপ করে আছি?প্রতিবাদ করিনি?
আপনারা যদি এটা ভেবে থাকেন তাহলে ভুল ভাবছেন।দিনশেষে হাজার শব্দে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আমি মেয়েদের পক্ষে কথা বলেছি।সেইসব লোকদের আমি অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছি।নারী অধিকার নিয়ে স্লোগান দিয়েছি।সাথে পেয়েছি হাজার হাজার লাইক কমেন্টস।
এরপরও আমি বসে থাকিনি ফেসবুকে বসে মেয়েদের নিরাপদ থাকার টিপস দিয়েছি।পয়েন্ট করে করে তাদের কুংফু শিক্ষা দিয়েছি ফেসবুকে।লিখে প্রকাশ করা না গেলেও ভিডিও বানিয়ে দিয়েছি।তবুও আমার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া একেরপর এক ঘটনার প্রতিবাদ করিনি।
প্রতিবাদ করেছি,চোখের সামনে ধর্ষণ হওয়ার পর সেই পশুগুলা নিয়ে পোষ্ট দিয়েছি ফেসবুকে।ধর্ষিতা মেয়ের ছবি ভাইরাল করে দিয়েছি ফেসবুকে।যাতে করে আর বাইরে বের হতে না পারে।সবাই যেন বলে ওই তো ওই মেয়েটাকেই ধর্ষণ করা হয়েছিল।এটাই ধর্ষিতা মেয়ে।
দিনশেষে আবার হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে পোষ্ট দিচ্ছি,ধর্ষকের বিচার চাই।
সবশেষে বলতে হচ্ছে,আমরাই বাংলাদেশি আমরাই বাঙালি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:০৪