somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক সাহসীনির গল্প

০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মায়ের কোলে ফুলের মত ফুটফুটে ছোট্ট মেয়েটি দেখছেন সে এখন বড় হয়েছে, ইউনিভার্সিটিতে পড়ে

ছবিতে মায়ের কোলে যে ফুটফুটে সুন্দর মেয়েটিকে দেখছেন তার সাথে আমার খুব ভাব, অবসরে আমার সাথে গল্প গুজব করে, আমাকে মামা বলে ডাকে। একে নিয়েই আমি প্রাখানং এর ভুতের মন্দির দেখতে গিয়েছিলাম । একদিন বেশ রাতে তার সাথে লাউঞ্জে দেখা, ব্যাগটা কাধে নিল জিজ্ঞেস করলাম কই যাও এত রাতে ? বল্লো ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছে বাসে করে। বাসে যাবে শুনে আমিতো চমকে গেলাম । এত রাতে একা একা বাসে যাবে ভয় করবে না ! বল্লো 'না কেন' ! মেয়েটি যেন অবাক হয় । তারপর হাত নেড়ে বেড়িয়ে গেল বাস স্টপেজের উদ্দেশ্যে।
দুদিন পরে আবার দেখা হলে জানতে চাইলাম ঠিক মত বাসায় সে পৌছেছিল কিনা।বললো " ভয় নেই, কোন অসুবিধা হয় না আমার"। তারপর যোগ করলো "মেয়েদের প্রতি কোন রকম অশ্লীল আচরনে আমাদের সরকারের জিরো টলারেন্স সেতো তুমি জানোই, এছাড়াও আমি অনেক সাহসী"।
'কি রকম সাহসী তুমি! তুমি হলে শুকনা পাতলা এক সুন্দরী মেয়ে'। আমার কথা শুনে মেয়েটি হো হো করে হেসে উঠিলো তারপর বললো
"তাহলে শোনো সে এক কাহিনী বলে মেয়েটি শুরু করলো, "আমি যখন ক্লাস ফাইভে পড়ি তখন আমার বাবা বদলী হয়ে আরেক প্রভিন্সে যায় আর সেখানে এক প্রাথমিক স্কুলে আমি ভর্তি হই । পড়ালেখায় আমি খুব ভালো ছিলাম এতে স্কুলের কিছু কিছু ছেলেমেয়ে আমাকে হিংসে করতো । আমি চুপচাপ থাকতাম। কিছুদিন পরেই ক্লাশের কিছু ছেলে আমাকে দেখলেই চুল ধরে টানতো, ঠাস করে গালে চড় বসিয়ে দিত, পিঠে কিল মারতো, একদিন তো ধাক্কা দিয়ে আমাকে মাটিতেই ফেলে দিল, কপাল কেটে রক্ত পরছে। সহ্য করতে না পেরে মায়ের কাছে কাঁদতে কাঁদতে সব খুলে বলেছি, "মা আমি এই স্কুলে আর পড়বো না"। মা পরদিন ক্লাশ টিচারের কাছে ব্যাপারটি নিয়ে আলাপ করে। টিচার ঐ ছেলেগুলোকে কোন শাস্তি তো দিলই না উলটো ওদের জানায় যে মেয়েটির মা ওদের বিরুদ্ধে কাল নালিশ করে গেছে।
ছেলেগুলো এরপর আমাকে যেন পেয়ে বসলো যখন তখন ঠাসঠাস চড় থাপ্পর। এর বছর খানেক পর একদিন বাসায় ফেরার পথে ওরা আমাকে মারতে মারতে নাক মুখ ফাটিয়ে দিল। ঠোট নাক দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পরছে, আমি কোন মতে বাসায় ফিরে আসি। আমার মা আমার অবস্থা দেখে কোন কথা না বলে শক্ত মুখ করে আমার হাত মুখ ধুইয়ে তখনি আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে সেখানকার তায়েকান্দো সেন্টারে ভর্তি করে দিল। আমি সেখানে আস্তে আস্তে মার্শাল আর্টে মোটামুটি তখন দক্ষ হয়ে উঠেছি। একদিন স্কুলের মাঠে আমি দাড়িয়ে আছি হঠাৎ ঐ ছেলেগুলোর মাঝে একজন পেছন থেকে এসে আমার গলা পেচিয়ে ধরে। আমি চকিতে সরে গিয়ে সাপের মত তাকে পা দিয়ে পেচিয়ে এনে তার গলার কন্ঠা ( থাইরয়েড) বরাবর আমার হাতের সাইড দিয়ে এত জোরে আঘাত করি যে সে তৎক্ষনাত অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। সাতদিন সে হাসপাতালে ছিল, কিন্ত মামা আমি তাকে অত জোরে আঘাত করি নি , যদি তাই করতাম তবে কিন্ত সে বাচতোই না "। এখন আমি তায়েকান্দো আর কারাতে এক্সপার্ট তাই আমার এত সাহস, তুমি জানো এরপর থেকে এত বছর পর্যন্ত কোন লোক আমার দিকে খারাপ ভাবে তাকানোর সাহস পায়নি " ।
আজ সেই মেয়েটার কথা মনে পরছে । আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয় আমাদের মেয়েদেরও বাচার একমাত্র পথ নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা । অথবা দ্রুত বিচারের আওতায় এনে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির মাধ্যমে এই জঘন্য অপরাধের হাত থেকে মুক্তিলাভ। ঘরে বন্দী হয়ে থেকেও তো মুক্তি নেই । মামা চাচা খালাতো ভাই বন্ধু বান্ধব কাকে বিশ্বাস করা যায় !!


দ্বিতীয় ছবিটি নেট থেকে । প্রথম ছবিটি সেই মেয়েটির ছবি ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:১৬
৩৬টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×