সুখ, ভালোবাসা, দীর্ঘ জীবন আর আনন্দের প্রতীক চন্দ্রমল্লিকা
ক্রিসেন্থিমাম বা সংক্ষেপে মাম যাকে আমরা বাংলায় বলি চন্দ্রমল্লিকা। সারা পৃথিবী জুড়ে দেখা গেলেও অসাধারন শৈল্পিক রূপের এই চন্দ্রমল্লিকার আদি নিবাস কিন্ত পুর্ব এশিয়া আর উত্তর পুর্ব ইউরোপ। ১৫ শতাব্দীতে প্রথম চন্দ্রমল্লিকার চাষ হয় চীনে। জাপানের রাজকীয় সীলমোহরের প্রতীক চন্দ্রমল্লিকার চাষ জাপানে প্রথম শুরু হয় নারা আর হেইয়ান পিরিয়ড অর্থাৎ ৮ শতাব্দীর প্রথম থেকে ১২ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত।পরবর্তীতে যা জাপানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং চেরী ফুলের সাথে ক্রিসেন্থিমামও লাভ করে জাতীয় ফুলের মর্যাদা।
মেরুন চন্দ্রমল্লিকা
হাজার রকম বুনো প্রজাতি ছাড়াও চীন আর জাপানের হাত ধরেই পরবর্তীতে ৩৬ প্রজাতির চন্দ্রমল্লিকায় নিয়ে আসা হয় বিভিন্ন রঙ, আকা ও ভিন্নতায় এক নতুন চমক।সেই সাথে এক স্বর্গীয় সৌন্দর্য্যকেও।এশিয়াতে আবির্ভাব হলেও পরবর্তী এই ফুল তার নির্মল ও সেই সাথে নজরকাড়া সৌন্দর্য্যের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পরে।
১৭৯৮ সনে কলোনেল জন স্টিভেন্সের হাত ধরে ইংল্যান্ড থেকে আমেরিকায় ডার্ক পার্পেল নামের চন্দ্রমল্লিকার প্রথম প্রবেশ। আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ শীতকালীন এই ফুলগাছটিকে তাদের বাগানের সৌন্দর্য্যের জন্য পরিচর্যা করছে টবে কিম্বা মাটিতে, যেমন আমি। গাছটি বহু বর্ষজীবি, ফুল ফুটে শেষ হয়ে গেলেও পরবর্তীতে ঐ গাছ থেকেই নতুন শাখা বিস্তার করে আবার ফুলে ফুলে ভরে উঠে রূপসী চন্দ্রমল্লিকা।
শুভ বিদায় অর্থ বহন করছে এই হলুদ ক্রিসেনথিমাম
পুর্ব এশিয়ার মানুষের দৃঢ় বিশ্বাস যে চন্দ্রমল্লিকা বিশেষ করে শ্বেত চন্দ্রমল্লিকা মানুষের জীবনে সুখ, ভালোবাসা, দীর্ঘ জীবন আর আনন্দের প্রতিনিধি। কিন্ত পাশ্চাত্যের বিশেষ করে আমেরিকায় চন্দ্রমল্লিকা ফুলের অনেক অর্থ রয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা অনুপ্রেরনাদায়ক,যেমন কোন অসুস্থ কারো সুস্থতা কামনা করে পাঠানো হয়ে থাকে চন্দ্রমল্লিকা।
সাদা ছোট আকারের চন্দ্রমল্লিকা
এর রঙ হলুদ
আবার এই অসাধারন সুন্দর ফুলটি বিশেষ করে সাদা ক্রিসেন্থিমাম ইউরোপে মৃত ব্যাক্তির শেষ আশ্রয়স্থলে উৎসর্গ করা হয় এবং একে মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। সাদা ও হলুদ ক্রিসেনথিমাম এশিয়ায় বিদায় বার্তা হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে । এশিয়ায় ক্রিসেন্থিমামকে দীর্ঘ এবং সুখী জীবনের প্রতীক হিসেবে দেখে থাকলেও তারা বিশ্বাস করে যে কেউ যদি মৃত ব্যাক্তির কবর থেকে এই ফুল বাসায় নিয়ে আসে তবে সে দুর্ভাগ্যকে সাথে করে নিয়ে আসে।
সাদা আর হলুদ পাশাপাশি টবে
এই ফুল দিয়ে বানানো চা বেশ জনপ্রিয় বিশেষ করে পুর্ব এশিয়ায়। এছাড়াও তারা তাদের দেশের বিভিন্ন রান্নায়ও এই ফুলের ব্যাবহার করে থাকে। থাইল্যান্ডে অনেক রান্নায় অপরাজিতা ফুলের ব্যবহার দেখেছি, বিশেষ করে খাবারে রঙের জন্য।
এটা ক্রিসেন্থিমামের চা, মনে হয় না এই চা আমি খেতে পারবো
যাই হোক সংক্ষেপে অনিন্দ্য সুন্দর এই ফুলটির পরিচয় দিলাম। এবার দেখি আমার ছোট্ট বারান্দায় এই রূপসীদের।
পর্তুলিকার পাশে বুলবুলি
যদিও শিরোনামে ওনাদের নাম নেয়া হয়নি তারপরও এরা আমার সন্মানিত মেহমান । একটা আবার বাড়িউলিকে উকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। এরা দুজন ঝুটি শালিক
পর্তুলিকা
কসমস
হলুদ কসমস
কাসাভার ফুল । একরকম আলু জাতীয় খাবার, আফ্রিকায় ক্ষুধা নিবারনে এর বহুল ব্যবহার রয়েছে।
এই কাচামরিচ বুনে কৃষকদের মাথায় হাত । অল্প কিছু মরিচ ধরেই গাছের আগা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে
লোকজন দিয়ে জিনিস কিনলে এই অবস্থাই হয় । পিয়াজ নিয়ে আসছে পুরনো যাতে কলি উকি দিচ্ছে । তাই একে বুনে রাখলাম ডিম রাখার প্লাস্টিকের কেসে অল্প একটু মাটি দিয়ে । দিনে দিনে বেশ বড় হয়ে উঠছেন তেনারা
চায়ের ছবি ছাড়া আর সব ছবি আমার ছোট্ট বারান্দার আমার মোবাইলে তোলা। তথ্য নেট থেকে
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৫