অনেক ক্যাচাল হয়েছে এবার আসুন রিয়েল লাইফ জোকস শুনে একটু হাসির চেষ্টা করি
১ নম্বর
ঢাকার এক কোচিং সেন্টার, আমরা কয়েকজন মা ছেলেপুলেদের পড়তে দিয়ে বসে থাকি । আমাদের জন্য একটা রুম বরাদ্দ। কার্পেট করা সোফা দিয়ে সাজানো। সেখানে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে আমার বেশ কিছু বন্ধু জুটে গেল।কেন জানিনা আমাকে সবাই খুব পছন্দ করতো
একদিন আমি বসে আছি এমন সময় সেখানে গড়ে উঠা আমার এক নতুন বান্ধবী তার মেয়েকে ক্লাসে দিয়ে আমার পাশে এসে বসলো। উনি আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়, অনেক বড়লোক, ওনার তিন ছেলে বড় বড় আর টু তে পড়া এই এক মেয়ে। বড় ছেলে ইন্জিনিয়ার আর ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষে পড়ে এমন এক মেয়েকে ভালোবেসেছে, পরে বাবা মাই বিয়ে দিয়ে দেয়। বউ পড়া লেখা করুক এটা তার একটুও পছন্দ না। বিভিন্ন ভাবেই সে এটা বলতো। বউটা পড়তে চা্য যা তাঁর ভালোলাগে না ইত্যাদি।
সেদিন এসে উনি আমার পাশে বসলো, মনমরা চেহারা।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে ভাবী?
বল্লো 'কিচ্ছু না'
তবে এমন মন খারাপ করে আছেন কেনো ?
"কি আর বলবো আফনাকে.... আমার ফুতের বউটা.. বুইচ্ছেননি ভাবী... ভীষন ছালাক মাইয়া
আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, 'কেন সে আবার কি চালাকি করলো !!
আমার বিস্ময়ের জবাবে উনি জিহ্বা দিয়ে টকাশ্ করে একটা শব্দ করে বল্লো, "সেটাই তো ধইত্তে পাইত্তেছিনা
তার করুন চেহারা দেখে আমার খুব খারাপ লাগছিল,তাকে সাহায্য করার জন্য জিজ্ঞেস করলাম,
' কেন সেকি আপনার ছেলে অর্থাৎ তার স্বামীকে হাত করে ফেলেছে
উনি একেবারে রাগত গলায় বলে উঠলো, 'না না কি বলেন আফনে! আমার ফুত আমার জন্য ফাগল, এখনও আমার হাতে নলাত তুলি ভাত খায়
আমি আবার বল্লাম 'তাহলে কি আপনার এই একমাত্র মেয়েকে সে পছন্দ করেনা' !
"না না হেতি আর মাইয়ারে খুব বালোবাসে, সাথে লই শুই থাকে"।
মনোবিশারদ জুন " তাহলে সে কি আপনার বাকী দুই ছেলেকে অপছন্দ করে" !
"আন্নে যে কি কন! কাল রাইতেই হেতি আর দুই ফুতের লাই চার হাজার টাকার ফিজা আর পল প্রুটস কিনি আইনছে"
তার চেহারা দেখে অসীম মমতায় অদম্য কৌতুহলী আমি এরপর জিজ্ঞেস করলাম, ' তাহলে সেকি আপনাকে অবহেলা করছে'
"না না হেতি সব সময় আমার খোজ রাখে আই কি খাই না খাই"।
যাকে বলা যায় শার্লক হোমসের মত আমিও নাছোড়বান্দা!
শেষ চেস্টা হিসেবে প্রশ্ন করলাম 'তবে! তবে কি সে আপনার স্বামীকে বাবা বাবা ডেকে পটিয়ে ফেলেছে (যেটা অনেক মেয়েরাই করে থাকে)।
কথাটা বলা মাত্র উনি যেন তেলে বেগুনে জলে উঠলো, চোখ দুটো পাকিয়ে আমার দিকে ভয়ংকর এক দৃষ্টি হেনে বল্লেন,
" আন্নে কি কইলেন! আমার স্বামীকে ফটান এত্ত বড় বুকের পাডা,এত্ত শাবাস আছেনি হেতির
আমি ভয় পেয়ে গলাটা নামিয়ে আস্তে করে জানতে চাইলাম, 'তাহলে কি চালাকি করলো সে !
মুখটা করুন করে গলা নামিয়ে আবারও জিভ দিয়ে চকাস্ করে একটা হতাশার শব্দ উচ্চারন করে বল্লো,
"সেটাই তো ধইত্তে হাইত্তেছিনা
২ নং গল্প
আমার প্রতিবেশীনি তুহিন নামে এক বাচ্চার মা খুব মিশুক আমার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক।স্বামী সরকারী চাকরী করে। যাইহোক একদিন আমার বাসায় রাইস কুকার দেখে বল্লো “ভাবী এরকম একটা জিনিসের আমার খুব শখ”। তখন বাংলাদেশে রাইস কুকারের এত অঢেল প্রচলন ছিল না। আমি বললাম “ভাই যখন গতবছর জাপানে অফিসিয়াল ট্যুরে গেল তখন বলে দিলেন না ক্যানো ! ভদ্র মহিলা ম্লান গলায় জানালেন তখন তাঁর একটুও মনে পরে নাই। তারপর বলতে লাগলো "জাপানে যাবার দুই তিনদিন পর তুহিনের আব্বা ফোন করছিল,তবে আমি কথা বলি নাই, আখতার (ওনার দেবর)ভাইই কথা বলছে”। তারপর আমার একটু কাছে এসে লাজুক হেসে জানালো বুঝলেন না ভাবী আমি আবার ইংরাজীতে টকিং করতে পারি না তো"
৩ নং
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার দুই সহপাঠী বন্ধু , দুজনই আমেরিকা প্রবাসী, বাংলাদেশে বেড়াতে এসে আমাদের সাথে এক গেট টুগেদারে। এক জনের নাম শাহেদ আরেক জনের নাম কামাল। শাহেদ দুটো ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারে, একটা হলো ইংরেজী আরেকটা হলো নোয়াখালী এর মধ্যে আর কিচ্ছু নেই, তবে হিন্দী সিনেমার কল্যানে কিছু কিছু হিন্দী জানে। কিন্ত কামাল শুধু বাংলা আর ইংরেজী।
যাই হোক একবার ওরা দুই বন্ধু শাহেদ আর কামাল, সাথে কামালের স্ত্রী সহ শশুর বাড়ির লোকজন সহ নায়েগ্রা ফলস দেখতে গিয়েছে। কামালের শ্বশুরের সাথে শাহেদের আবার খুব ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক। তারা দুজন হিন্দীতে বাতচিৎ করে কিন্ত কামাল তার এক লাইনও বুঝেনা
কামালের ভাষায় বলছিঃ
বুঝেছো, বোটে করে নায়েগ্রা ফলসের কাছে গিয়ে আমরা তো সবাই তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ। এমন সময় আমার শ্বশুর মশাই আমাকে ডেকে বল্লেন, 'কামাল বেটা জলদি করকে এক তাসবীর লাও'।
ওনার কথা শুনে আমিতো পাগলের মত ব্যাগ হাতড়াচ্ছি। মনে মনে ভাবছি শ্বশুর মশাই নিশ্চয় এত সুন্দর এই সৃস্টি দেখে তসবীহ পড়ে সৃস্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন, ব্যাগ ভরা হাবিজাবি জিনিস কিন্ত তার ফরমায়েশী জিনিস আর খুজে পাইনা।
এমন সময় শাহেদের ডাক শোনা গেল ' কিরে কামাইল্লা কি করস তুই! এত দেরী করস কিল্লাই!
আমি ভয়ে ভয়ে বল্লাম "দোস্ত তসবীহ তো খুজে পাচ্ছিনা"।
নায়েগ্রা ফলসের গর্জন ছাপিয়ে শাহেদের গর্জন শোনা গেল 'এরই (গালি) হেতে তো তোরে একখান তসবীর, তসবীর মানে ছবি তুইলবার লাই কইছে, আর তুই তসবীহ বিচরাস কিত্তো
দ্বিতীয়টি ছাড়া বাকি দুটো রিপোস্ট। ছবিটি আমার আকা আর ঘটনাগুলো আমার জীবনের
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০২১ রাত ৯:৫১