আজব একটা শিরোনাম তাই নয় কি ! আসলেও তাই। অন্যান্য দিনের মতই গতকাল সকালে অনলাইন পত্রিকাগুলোতে চোখ বুলাতে গিয়ে যুগান্তরের একটি আর্টিকেলের শিরোনামে চোখ আটকে গেল ফুলের গন্ধ শুকে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তরুনীর । পেপারে ছবি দেখে অজ্ঞাতসারেই বলে উঠি আরেহ এই ফুলতো আমার অনেক পরিচিত। তাড়াতাড়ি পড়তে শুরু করলাম, সংবাদে লেখা আছে কানাডার টরেন্টোর রাফেলা নামের এক তরুনী রাস্তার পাশে নজর কাড়া এই ফুল দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁর গন্ধ নিতে যায়। তারপরই শুরু হয় তাঁর খারাপ লাগা, এমন কি সে নড়াচড়া বা চিৎকার করতেও পারছিল না, বাসায় ফিরে অজ্ঞান হয়ে পড়ার অবস্থা। যাই হোক সুখের কথা কথা মেয়েটি পরে সুস্থ হয়ে যায়। এর পর তিনি সবাইকে রাস্তার পাশে ফুল দেখলে ছুটে গিয়ে গন্ধ শুকতে বারন করেছেন ।
এঞ্জেলস ট্রাম্পেটের ঝোপ, ভু পিং প্যালেস, চিয়াং রাই
এই যে ফুলটি তাঁর উজ্জ্বল রঙ আর সৌন্দর্য্যে দিয়েই কিন্তু মানুষকে মুগ্ধ করে টেনে নিচ্ছে তাঁর কোলের কাছে। শুধু তাইই নয় সেই সাথে তাঁর নামটিও যে ভারী সুন্দর দেবদুতের বাশী ইংরেজী নাম এঞ্জেলস ট্রাম্পেট। কিন্ত এই স্বর্গীয় বাশীতে না আছে সুমিষ্ট কোন মধুর সুর না আছে নিদেনপক্ষে কোন স্বর্গীয় সুগন্ধি! তাঁর বদলে এতে আছে কিনা তিনটি ভয়ংকর বিষাক্ত উপাদান যা হলো আয়ট্রোপাইন, হায়োসাইসামিন আর স্কোপোলামাইন। আর এই স্কোপোলামাইন এতটাই বিষাক্ত যে বিশেষজ্ঞরা এর নাম দিয়েছে শয়তানের নিঃশ্বাস। এর নিঃশ্বাসে মানুষ অসুস্থ হয়ে পরে আর সময়মত চিকিৎসা না নিলে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। ফুলটি আমাদের অতি পরিচিত ধুতুরা গোত্রের।
গেট পেরিয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন পথ ধরে প্রাসাদের দিকে এগিয়ে চলেছি
আমার মনে পরে চিয়াইং মাই বেড়াতে গিয়ে একদিন সারাদিন দই সুথেপ আর দই পুইতে কাটিয়েছি। থাই ভাষায় দই মানে পাহাড়। যাই হোক সেই পুই পাহাড়ে উঠতে গিয়েই আচমকাই সাক্ষাৎ হলো এক রাজপ্রাসাদের। উবার চালককে দাড়াতে বলে টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকতেই মনে হলো হাল্কা ঠান্ডা হাওয়ার সাথে সাথে চারিদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন এক ফুলের রাজ্যে এসে হাজির হয়েছি।
অত্যন্ত সাদামাটা ভুপিং প্রাসাদ
ঐতিহ্যবাহী থাই রীতিতে তৈরি সাধাসিধে এক রাজপ্রাসাদ নাম তার ভুপিং যা ছিল রাজা ভুমিবলের প্রিয় এক শৈলনিবাস। চারিদিক জুড়ে শুধু সবুজ গাছ- ফুল আর ফুলের মতই রংবেরঙ্গের সব্জী। এখানেই পথের পাশে দেখা হয়েছিল দেবদুতের বাশীর সাথে যার মাঝে রয়েছে শয়তানের নিঃশ্বাস। পথের দুপাশে অজস্র সাদা আর হলুদ রঙের নজরকাড়া ফুল এঞ্জেল ট্রাম্পেটস গুলো তখন মাথা ঝুকিয়ে যেন আমাদের অভিবাদন জানাচ্ছে ।
নীচে সব ছবি ভু পিং প্রাসাদের আঙ্গিনা থেকে তোলা,কুয়াশা আর রোদের ফাকে ছবিগুলো তোলার জন্য অনেক ছবি ঘোলা এসেছে ।
রডোড্রেনড্রন
গোলাপ
| সাদা লিলি
রডোড্রেনড্রন
মৌসুমী ফুলের সমাহার
ফুল আর ফুলের মতই সুন্দর বাধাকপি
দাতরাঙ্গা
আমাদের অতি পরিচিত ফুলটির নাম মনে পরছে না
রাজপ্রাসাদের অদুরে পাহাড় আর তাঁর গা বেয়ে অসংখ্য ফুল আর ফলে ভরা গাছ
পাহাড়ে উঠে গেছে সিড়ি আর এর উপরে কৃত্রিম লেকের পাশে রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য রয়েছে দু একটি ছোট ছোট কাঠের কটেজ।
এই লেকে রাজা ভুমিবলের সৃষ্ট সুরের তালে নেচে উঠে পানির ফোয়ারা
হা মং কফির দোকানের বাইরে সাইনবোর্ড, দই পুই, চিয়াং মাই
শয়তানের নিঃশ্বাসের জন্যই কি না জানি না সেখান থেকে বেরিয়ে অবধি মাথাটা ঝিম ঝিম করছিল যা কাটলো পুই পাহাড়ের বিখ্যাত মং কফি খেয়ে।
তথ্য সুত্র যুগান্তর পত্রিকা।
ছবি আমাদের ক্যামেরা আর মোবাইলে তোলা শুধু লেকের ছবিটি নেট থেকে ।
আমরা যখন গিয়েছি তখন ফোয়ারাগুলো সাময়িক বন্ধ ছিল
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫২