নিজ আবাসে ফিরে এলো সাক সুরিন ওরফে মুথু রাজা। ক্লান্ত পর্যদুস্ত আহত সাক সুরিন ২২ বছর আগে থাই রাজার উপহার হিসেবে গিয়েছিল এক অচিন দেশ শ্রীলংকায়। দুটি দেশই হাতিকে ধর্মের দিক থেকে অত্যন্ত পবিত্র প্রাণী হিসেবে গন্য করে। তাই বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে ২০০১ সালে থাই রাজ পরিবার সাক সুরিন ওরফে মুথু রাজা সহ মোট তিনটি হাতিকে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে উপহার দিয়েছিল আরেক বৌদ্ধ দেশ শ্রীলঙ্কাকে।
কথা ছিল সেখানে মুথু রাজার কাজ হবে মন্দিরের পুজার সামগ্রী বহন করা। কিন্ত ভাগ্যে তার সেই সন্মান জুটেনি, জুটেছিল ভারী ভারী কাঠের গুড়ি বহন করার কাজ। দীর্ঘদিন এই কঠিন কাজ করতে গিয়ে তার স্বাস্থ্য ভেংগে পরে, আহত হয় সামনের এক পা। সেই সাথে জোটেনি পর্যাপ্ত খাবার।
এভাবে ২২ বছর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে শেষ পর্যন্ত তার স্থান হয়েছিল এক বৌদ্ধ মন্দিরে। সেখানেও পুজার সামগ্রী বহন করার বদলে জুটেছিল নানা রকম ভার বহনের কাজ। সেই সাথে কঠোর নির্যাতনে পর্যদুস্ত । সারা শরীরে ঘা, ভাংগা পায়ে শিকল পরা সাক সুরিন যখন মৃতপ্রায় তখন শ্রীলংকায় থাকা এক পশু প্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সব কিছু জানিয়ে থাইল্যান্ডকে অনুরোধ করে হাতিটিকে ফিরিয়ে নিতে।
প্রায় ছয় মাসের আলোচনার পর থাইল্যান্ড হাতিটিকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়। বিশেষ বিমানে তার জন্য তৈরি বিশাল লোহার খাচায় করে চারজন থাই মাহুত আর একজন পশু চিকিৎসক সহ সাক সুরিন অবশেষে তার নিজ ভুমে ফিরে আসে।
তাকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় চিয়াং রাই এ। সেখান থেকে নেয়া নেয়া হয়েছে লাম্ফং, রাখা হয়েছে ৩০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে। তার দেখভাল করার জন্য রয়েছে দক্ষ মাহুত আর চিকিৎসক।
উপহারের জিনিস ফিরিয়ে নিতে নেই তারপর ও প্রথা ভেংগে আহত সাক সুরিনকে বাচানোর জন্য ফিরিয়ে আনলো থাইল্যান্ড। তাকে আনতে এত যে টাকা খরচ হলো তারপর ও রাজনৈতিক ডামাডোলে অস্থির আপামর থাই জনগন দারুণ খুশী। এই ঘটনার জন্য শ্রী লংকার প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের রাজা মহাভাজিরালিংকর্ন এর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। সাক সুরিনকে ফিরিয়ে আনা ও তাকে সেটেল করার জন্য ১৯.৫ মিলিয়ন বাথ এর ফান্ড গঠন করা হয়েছে। তারপর ও সবাই সাক সুরিনকে পেয়ে খুশি।